গাছ মানুষের পরম বন্ধু। গাছ ছায়া দেয়, জীবন রক্ষাকারী অক্সিজেন দেয়, হাইড্রোজেন গ্রহণ করে। ফল দেয়, ফুল দেয়। জ্বালানি ও আসবাবপত্রের জোগান আসে গাছ থেকে। জলবায়ুর তীক্ষ্ণতাকে উপশম, মাটি সংরক্ষণ, বৃষ্টি-বন্যা নিয়ন্ত্রণ, ঝড়-ঝঞ্ঝা, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধ, শীত-গ্রীষ্মকে অনুকূল রাখা এবং বাতাস ও পানির বেগকে আটকে দিয়ে ভূমিক্ষয় রোধ, পরিবেশ সংরক্ষণ ও মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে গাছ। কাজেই বৃক্ষরোপণকে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। জীবনধারণের জন্য বিশুদ্ধ অক্সিজেন বাতাসে ছেড়ে গাছ আমাদের বেঁচে থাকতে সহায়তা করে। আমরা অনেকেই জানি না, একটি গাছ বছরজুড়ে ১০টি এয়ার কন্ডিশনারের সমপরিমাণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ করে। ৬০ পাউন্ডের বেশি ক্ষতিকারক গ্যাস বাতাস থেকে শুষে নেয়। ৭৫০ গ্যালন বৃষ্টির পানি শোষণ করে। এক হেক্টর এলাকার গাছ তিন মেট্রিক টন বায়ু গ্রহণ করে। দুই মেট্রিক টন বিশুদ্ধ অক্সিজেন প্রদান করে।
আগামী প্রজন্মের কথা চিন্তা করে জেলা বা উপজেলার নার্সারি কিংবা বৃক্ষমেলা থেকে চারা সংগ্রহ করে ভেষজ-ফলদ-ঔষধি গাছ লাগাতে হবে। সরকারের উদ্যোগে গাছ লাগানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি অফিস, খাস জমি, রাস্তার দু’পাশ, নদীর দু’পার, রেল সড়কের দু’পাশ এবং উপকূলীয় এলাকায় প্রচুর গাছ লাগানোর সুযোগ আছে। হাওরে পানিসহিষ্ণু হিজল ও করচ গাছ লাগিয়ে বাগ বা জঙ্গল তৈরি করা যেতে পারে। রাজধানী ঢাকাসহ সব সিটি কর্পোরেশন, পৌর শহর, উপজেলা বা থানা পর্যায়ে শহরের ভেতরে রাস্তার মাঝখানে ডালপালা কম হয়, উঁচু ও দ্রুত বর্ধনশীল গাছ লাগালে পাঁচ বছরে আমাদের শহরগুলোও সবুজ হয়ে উঠবে।
জার্মানিতে শতকরা ১২ ভাগ ছাদ সবুজ এবং টোকিও আইনে সব নতুন ছাদের অন্তত ২০ ভাগ সবুজ রাখার কথা বলা হয়েছে। টোকিও সরকারের গবেষণা ও বিশ্লেষণ তথ্যে উল্লেখ করা হয়, যদি তাদের অর্ধেক ছাদ সবুজ হয় তাহলে প্রতিদিন এয়ার কন্ডিশনে ব্যবহৃত জ্বালানি বাবদ এক মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে। সিঙ্গাপুরে রুফটপ গার্ডেনিং বিষয়ক এক গবেষণা তথ্যে দেখা গেছে, পাঁচতলা বাণিজ্যিক ভবনের ছাদে একটি বাগান বছরে জ্বালানি খরচের ০.৬ থেকে ১৪.৫ ভাগ সাশ্রয় হতে পারে। অনেক উন্নত দেশে ভবন গরম ও শীতলকরণে ৩০ ভাগ বেশি কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন হয়ে থাকে।
Thik bolecen vai