মেয়েটিঃ আমার সাথে ১৫ দিন কাটানোর পর এখন যখন আমি প্রেগনেন্ট হয়ে গেলাম তুমি আমাকে অস্বীকার করছো বাহাদুর। সত্যি বলছি আমার পেটে যে বাচ্চা আছে সেটার বাবা তুমি। প্লিজ আমাকে অস্বীকার করো না।
আমিঃ আমার মনে হচ্ছে আপনার কোথাও ভুল হয়েছে। আমি তো আপনাকে চিনি না আপনার বাচ্চার বাবা হব কেমনে?
মেয়েটিঃ দেখো বাহাদুর প্লিজ এভাবে অস্বীকার করোনা। আমরা একসঙ্গে টানা ১৫ দিন ছিলাম। আর তুমি এখন আমাকে চিনতে পারছ না। আচ্ছা তুমি কি শুধু আমার শরীরকে ভালোবাসতে। আমার মনের কি তোমার কোন মূল্য নেই?
আমিঃ আরে ম্যাডাম আপনি সত্যিই ভুল বুঝছেন আমি আপনাকে চিনিনা। সিকিউরিটি! সিকিউরিটি! সিকিউরিটি!
হঠাৎ আমার কেবিনের ভিতরে মিজান, মিসবাহ ও আরেকটি মেয়ে ঢুকলো। তিন বছর পর তাদের সাথে দেখা। ভার্সিটির শেষ দিন তাদের সাথে দেখা হয়েছিল তারপর আর তাদের সাথে দেখা হয় নি।
মিজানঃ তুই ভয় পেয়ে গেছিস তাই না?
আমিঃ তোরা এখানে!
মিজানঃ আমরা এখানে কেন সেটা পরে বলবো আগে বল তোর থেকে রূপসার এক্টিং কেমন লাগছে?
আমিঃ রুপসা কোথায়?
মিজানঃ আরে এই মেয়েটা।
তার মানে এতক্ষণ যে মেয়েটা আমাকে তার বাচ্চার বাবা বলে সম্বোধন করেছিল সেটা আমার ক্লাসমেট রূপসা। অবিশ্বাস্য রকম ব্যপার আমি রূপসাকে চিনতেই পারিনি।
রূপসাঃ সরি রে তোর সাথে একটু দুষ্টুমি করলাম।
আমিঃ তোরা হঠাৎ করে আমার অফিসে কিন্তু কেমনে আর আমার অফিসের ঠিকানা পেয়েছিস কিভাবে? আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না এখানে কি হচ্ছে? আমাকে একটু বুঝিয়ে বলবি।
মিজানঃ আরে তুই বস তোকে সব কিছু বলতেছি। আগে আমার বউয়ের সাথে পরিচয় হয়ে নে। এর নাম নুসাইবা আমার বউ আর এটা আমাদের বাচ্চা আকিব।
নুসাইবাঃ আসসালামুয়ালিকুম ভাইয়া।
আমিঃ ওয়ালেকুম আসসালাম।
মিজানঃ আর এই হল আমার বউ আমার কলিজার টুকরা আমার জীবনসঙ্গী রূপসা।
রূপসাঃ আর পাম দিতে হবে না। বাহাদুর তো আমাকে চিনতে পারল না।
আমিঃ সত্যি বলছি তোকে চেনাই যাচ্ছে না। তুই আগের থেকে হালকা মোটা হয়ে গেছিস আর আরো সুন্দর হয়ে গেছিস। তাই জন্য তোকে চেনাই যাচ্ছে না।
রুপসাঃ থাক থাক এখন আর এগুলো বলতে হবেনা আমি এখন দুই বাচ্চার মা। যখন সময় ছিল তখন যদি এই মিষ্টি মিষ্টি কথা গুলো বলতি তাহলে এতদিন আমার বাচ্চার বাবা তুই হতি।
আমিঃ মিজান দেখছিস তোর থেকেও কিন্তু আমার ডিমান্ড বেশি।
মিজানঃ ডিমান্ড থাকলে হয়না রে ভাই কাজ করতে হয়।
আমিঃ কিন্তু তোরা দুজন তো সবসময় ঝগড়া করতিস তাহলে বিয়ে হলো কেমনে?
মিজানঃ আসলে সেই দিনের পর থেকে আমাদের দুজনের জীবন বদলে গেছে।
আমি একটি দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললাম,
আমিঃ সেই দিন।
মিসবাহঃ আচ্ছা সেই দিন কি হয়েছিল? তুই কি আয়েশাকে বলতে পারছিলি তোর ভালোবাসার কথা? আর কাউকে কিছু না বলে সে শহর ছেড়ে এখানে কেন এসেছিস?
আমিঃ এনিওয়ে, আমার বাসায় চল তারপর সব কথা হবে।
মিসবাহঃ না আগে বল সেই দিন,,,
মিসবাহ কিছু বলতে যাবে তার আগে মিজান তাকে থামিয়ে দিল।
মিজানঃ আরে সব কথা জিজ্ঞেস করিস কিন্তু তার আগে বাহাদুরের বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয় তারপর বাকি কথা হবে।
অতঃপর আমরা সবাই গাড়িতে বসলাম গন্তব্য আমার বাসা।আমি বাহাদুর চৌধুরী। এসকে গ্রুপ এন্ড ইন্ডাস্ট্রির মালিক আর কিছুক্ষণ আগে যে তিনজনের সাথে কথা বলছিলাম তারা হল আমার ভার্সিটি লাইফের বেস্ট ফ্রেন্ড। তিন বছর আগে ভার্সিটির শেষ দিন তাদের সাথে দেখা হয়েছিল তারপর আজকে দেখা হয়েছে। তারা এখানে কি জন্য এসেছে সেটা জানিনা কিন্তু তারা আসাতে যতটুকু না খুশি হয়েছি বরং তার চেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছি। কারণ তারা আসার ফলে সেই দিনের স্মৃতিগুলো আমার মনে পড়ে গেল।
আমিঃ ওই তোরা গাড়ি থেকে নাম আমরা পৌঁছে গেছি।
মিজানঃ বন্ধু তোর ঘরটা সেই এত বড় ঘরে কি তুই একা থাকিস?
আমিঃ না রে আম্মু সহ থাকে।
আমি মনে করেছি আম্মু মিজান, মিসবাহ কে চিনবে না কিন্তু আম্মু ঠিকই তাদের চিনে ফেলেছে।
আম্মুঃ কিরে তোরা কেমন আছিস আর এত বছর পর আমাদের কথা মনে পড়েছে তাই না?
মিজানঃ আন্টি আসলে এতদিন বাহাদুরের প্রোপার অ্যাড্রেস আমাদের কাছে ছিল না আর আমরাও সময় পাইনি তাই।
আম্মুঃ আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে আগে তোমরা ফ্রেশ হয়ে আসো তারপর কথা হবে।
তারপর সবাই ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে আড্ডা দিতে বসলাম।
মিজানঃ আজকে এতদিন পর যখন বাহাদুরকে পেলাম তাহলে আজকে সবাই সারারাত আড্ডা দেবো।
রুপসাঃ আড্ডা দেবো সেটা ঠিক আছে কিন্তু আগে এটা বল যে তুই বিয়ে করিস নাই কেন?
আমিঃ করবো, করবো এখনো অনেক সময় আছে।
রূপসাঃ এক কাজ কর আর বিশ বছর অপেক্ষা কর তারপর না হয় আমার মেয়ের সাথে বিয়ে করিস। আমার মেয়েকে বলব তুই আমার এক্স বয়ফ্রেন্ড তোর যেন ভালোভাবে খেয়াল রাখে।
রূপসার কথা শুনে সবাই হাসতে লাগলাম এভাবে প্রায় অনেকক্ষণ আমরা সবাই আড্ডা দিলাম।এতদিন কে কোথায় ছিল?কি কাজ করে? হঠাৎ করে মিসবাহ যা বলে উঠলো তা শুনে মন খারাপ হয়ে গেল।
মিসবাহঃ আচ্ছা ভার্সিটির শেষ দিন অর্থাৎ সেই দিন এমন কি হয়েছিল যার জন্য তোকে আর কেউ খুঁজে পাইনি। জানিস সেই দিনের পর থেকে তোকে অনেক খুজেছি কিন্তু পাইনি। বছর দুয়েক আগে একটা ম্যাগাজিনে তোর ছবি দেখার পর তোর সম্পর্কে খোঁজ পেলাম কিন্তু তখন নুসাইবা প্রেগনেন্ট থাকায় আসা হয়নি আর এখন সবাই সময় করে আসলাম। আমি অনেকক্ষণ ধরে খেয়াল করছি আয়েশার ব্যাপারে কোন কথা বললে তুই সেটা এড়িয়ে যাচ্ছিস। সেই দিন কি তুই আয়েশাকে তোর ভালোবাসার কথা বলতে পারিস নি আর আয়েশা কি তোর ভালোবাসা একসেপ্ট করেনি? সেই দিন এমন কি হয়েছিল আমার থেকে জানতে হবে।
আমিঃ আচ্ছা তাহলে এখন সবাই ঘুমিয়ে পড়। কালকে সকালে আবার আমার অফিসে যেতে হবে অফিস শেষ করে আমরা সবাই বেড়াবো।
মিসবাহঃ দেখ তুই আমার কথার উত্তর না দিয়ে যাবি না প্লিজ।
আমি আর কথা না বাড়িয়ে নিজের রুমে এসে শুয়ে পড়লাম। গত তিন বছর ধরে চেষ্টা করেছি সেই দিনের স্মৃতি ভুলে যেতে কিন্তু কিছুতেই ভুলতে পারছি না।
তিন বছর আগের ঘটনা, সেদিন আমার ভার্সিটির শেষ দিন ছিল। ভার্সিটি জীবনের শুরু থেকেই আমি একটা মেয়ের উপর ক্রাশ মেয়েটির নাম আয়েশা।আসলে ক্রাশ বললে ভূল হবে আয়েশা আমার পুরো পাঁচ বছরের ভার্সিটি জীবনের প্রথম ও শেষ ভালোবাসা। কিন্তু এই পাঁচ বছরে আমি অনেকগুলো মেয়ের প্রপোজাল পেয়েছি তার মধ্যে একজন ছিল রুপসা। রুপসা একদিন আমাকে সে আমাকে ভালোবাসে কিন্তু আমি তার প্রপোজাল রিজেক্ট করে দিয়েছিলাম এবং তাকে বুঝিয়ে বলেছিলাম যে আমি শুধু আয়েশাকে ভালোবাসি।
আয়েশা মেয়েটা বড়ই অদ্ভুত। সারাদিন শুধু লেখাপড়া, লেখাপড়া আর লেখাপড়া। পুরো পাঁচ বছর আয়েশা লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতাম। কখনো সরাসরি তাকে কিছুই বলিনি কারণ এই পর্যন্ত তাকে অনেক ছেলে প্রপোজ করেছে কিন্তু আয়েশা সবগুলো রিজেক্ট করেছে।তাই সবাই উপদেশ দিলেন ভার্সিটি শেষ হলে এবং একটা চাকরি পেলে তারপর আয়েশাকে প্রপোজ করতে। ভার্সিটির শেষ হওয়া সপ্তাহখানেক আগেই আমি চাকরি পেয়ে গিয়েছিলাম। তাই যেদিন ভার্সিটির শেষ দিন ছিল সেদিন আয়েশা কে প্রপোজ করার সিদ্ধান্ত নিলাম।
মিজানঃ আজকে ভার্সিটির শেষ দিন তুমি যদি আজকে আয়েশাকে তোর ভালোবাসার কথা বলতে না পারিস তাহলে কখনোই পারবি না।
মিসবাহঃ দেখ বেশি চিন্তা করিসনা আয়েশা ও তোকে পাঁচ বছর থেকে চিনে। তুই যদি এখন আয়েশাকে প্রপোজ করিস তাহলে অবশ্যই আয়েশা এক্সেপ্ট করবে।
রূপসাঃ দেখ সবাই তাদের ভালোবাসার মানুষকে পায় না তুই চেষ্টা কর দেখবি তুই তোর ভালোবাসার মানুষকে পাবি।
রূপসা কথাটার অর্থ আমি বুঝতে পারছিলাম কিন্তু আমার কিছুই করার নেই।
মিসবাহঃ তাহলে তুই আয়েশাকে প্রপোজ করিস এবং সে কি বলে সেটা আমাকে জানাইস। আমার থেকে ইমিডিয়েটলি যেতে হবে।
আমিঃ তুই কোথায় যাবি?
মিসবাহঃ দেখ আমিও চাকরি পেয়ে গিয়েছি তাই আমি আমার প্রেমিকার বাবার কাছে গিয়ে আমাদের ভালোবাসার কথা বলবো।
মিসবাহকে সাহায্য করার জন্য মিজান ও রূপসা দুজনেই চলে গেল আর আমি এদিকে আয়েশার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। সেদিন আয়েশাকে বড্ড বেশি সুন্দর লাগছিল। আয়েশার কাজল কালো চোখ। ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক। পরনে নীল কালার শাড়ি এবং হাতে কাচের চুড়ি। যেন স্বর্গীয় পরী।
আমিঃ আয়েশা আপনাকে একটা কথা বলতে চাই?
আয়েশাঃ বলুন।
আমিঃ আয়েশা আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি,,,
আমি আর কিছু বলতে যাব তার আগে আয়েশা আমাকে থামিয়ে দিলো।
আয়েশাঃ আপনি অপেক্ষা করুন আমি আসছি।
এতোটুকু বলে আয়েশা সেখান থেকে চলে গেল। আমি সারাদিন আয়েশার জন্য অপেক্ষা করলাম। অপেক্ষা করতে করতে প্রায় রাত হয়ে গেলো তাও সেখান থেকে গেলাম না। মনকে শান্তনা দিলাম হয়তো এখনই আয়েশা আসবে। এখনি সে এসে বলবে আমিও আপনাকে ভালোবাসি। কিন্তু না আয়েশা আসেনি। পাঁচ বছর যে মেয়েটার জন্য অপেক্ষা করেছি যে মেয়েটাকে ছাড়া অন্য কিছুই চিন্তা করিনি আজ সে মেয়েটা কিছু না বলে চলে গেল। আয়েশা যদি একটি বারের জন্য বলতো যে আমাকে পছন্দ করে না তাহলে আমি নিজ থেকেই সরে যেতাম কিন্তু কিছু না বলে আমাকে কষ্ট দেওয়ার কী দরকার ছিল? বুকে একরাশ কষ্ট নিয়ে সেই রাতেই আমি সেই শহর ছেড়ে দিলাম। সেই শহর ছেড়ে অনেক দূর মাকে নিয়ে এখানে চলে এলাম। শুরু হলো নতুন করে বাঁচার অধ্যায়। সব বন্ধুবান্ধবের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলাম কিন্তু তারপরেও প্রায় অনেকদিন বিভিন্ন ভাবে আয়েশাকে খোঁজার চেষ্টা করলাম কিন্তু আমি ব্যর্থ হলাম। তারপর শুধু একটা লক্ষ ঠিক করলাম জীবনে সফলতা অর্জন করা। ছোট একটা কোম্পানি থেকে আজ অনেক বড় কোম্পানির মালিকে পরিণত হয়ে গেলাম। পুরো জীবন বদলে গেল কিন্তু শুধু একটা জিনিস বদলানো না সেটা হলো সেই দিন। সেই দিনকে যতই ভোলার চেষ্টা করি ততই মনে পড়ছে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে খাবার টেবিলে এসে দেখলাম মিজান ও মিসবাহ চুপচাপ খাবার টেবিলে বসে আছে।
আমি; কি হল তোর এভাবে চুপচাপ বসে আছিস কেন?
মিসবাহঃ সরি রে, সেই দিনের কথা গুলো মনে করিয়ে তোকে কষ্ট দিলাম। আন্টি সব কিছু বলেছেন আমাকে ক্ষমা করে দিস আমি ইচ্ছে করে বলিনি।
আমিঃ আরে পুরোনো সব কথা বাদ দে এখন খাওয়া শুরু কর।
মিজানঃআজকে অফিস থেকে তাড়াতাড়ি চলে আসিস তারপর সবাই মিলে ঘুরবো।
আমিঃ সেটা তো অবশ্যই করবো কিন্তু আগে বল তোরা তোদের বিয়ে কেমনে হলো?
মিসবাহঃ তোর কি মনে আছে সেই দিন আমি তোকে বলেছিলাম যে আমি আমার প্রেমিকার বাবার কাছে যাচ্ছি আমাদের সম্পর্কের কথা বলার জন্য?
আমি; হ্যাঁ অবশ্যই মনে আছে।
মিসবাহঃ তারপর আর কি নুসাইবার বাবাকে যখন বললাম আমি নুসাইবা কে ভালোবাসি তখন তাী বাবা আমাদের সম্পর্কে সম্মতি দিলেন। তার ছয় সাত মাস পর আমরা দুজন বিয়ে করে ফেলি।
আমিঃ আর মিজান তোরটা কেমনে হলো?
মিজানঃ যেদিন মিসবাহ নুসাইবার বাবার কাছে গিয়েছিল তাদের ভালোবাসার কথা বলতে ঠিক সেদিন আমিও রূপসা কে প্রপোজ করে দিলাম আর রূপসা আমার উপর দয়া করে আমার প্রপোজ একসেপ্ট করে।তার এক সপ্তাহ পর আমরা বিয়ে করে নিলাম।
রুপসাঃ সবারটা তো শুনলি তুই কেন বিয়ে করছিস না সেটা বল?
আমিঃ এমনিতেই।
রূপসাঃ সত্যি করে বল তুই কি এখনো আয়েশার জন্য অপেক্ষা করছিস?
আমিঃ হ্যাঁ অপেক্ষা করছি তো কি হয়েছে?
রুপসাঃ তোর কি লজ্জা করেনা তুই একজন বিবাহিত মেয়ের জন্য অপেক্ষা করছিস।
আমি; বিবাহিত মানে!
রুপসাঃ আয়েশা বিবাহিত।
আমি; এই দেখ মসকারা করিস না প্লিজ।
রূপসাঃ আরে আমি মশকরা করছি না। আচ্ছা তুই কি সেই দিনের পর থেকে আয়েশাকে খোঁজার ন চেষ্টা করেছিস?
আমিঃ হ্যাঁ করেছি।
রূপসাঃ কিন্তু খোঁজ পাস নি তাইতো?
আমিঃ হ্যাঁ।
রূপসাঃ পাবি কেমনে আয়েশাতো এখানে সামান্তা নামে থাকছে। এখান সবাই আয়েশাকে সামান্তা নামে জানে। আমাদের ভার্সিটি শেষ হওয়ার পর থেকেই আয়েশা তার আসল আইডেন্টিটি লুকিয়ে সামান্তা নামে এই শহরেই থাকে।
আমিঃ কি বলিস আয়েশা এই শহরেই থাকে?
রূপসাঃ বেশি খুশি হয় লাভ নেই এখন সে অন্য একজনের স্ত্রী। কয়েক সপ্তাহ আগে আমি আয়েশার ফোন নাম্বার পেয়ে ছিলাম সেখানে কল দেওয়ার পর একজন ছোট বাচ্চা কল রিসিভ করল। কল রিসিভ করতেই তাকে যখন আয়েশার নাম জিজ্ঞেস করলাম সে বলল আয়েশা নাকি তার মা। আর তার মা এখন বাসায় নেই।
রূপসার কথা কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছিল না। যার জন্য জীবনের আটটি বছর অপেক্ষা করেছি। সে কিনা এখন বিবাহিত।
আমিঃ একবার বল যে তুই দুষ্টুমি করছিস।
রূপসাঃ আচ্ছা এই তোর কি মনে হয় আমি এই রকম সিরিয়াস মুহূর্তে দুষ্টুমি করব। তাই তোকে বলছি শুধু শুধু আয়েশার জন্য জীবন নষ্ট করিস না সে তো তোকে কষ্ট দিয়ে অন্যের সাথে সুখে জীবন যাপন করছে কিন্তু তুই কেন নিজেকে কষ্ট দিচ্ছিস।
আমিঃ আচ্ছা রুপসা আমি আয়েশার সাথে দেখা করতে চাই আমাকে আয়েশার বাসার ঠিকানা দে।
তারপর আমরা সবাই আয়েশার বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। যতদূর যাচ্ছিলাম মনে একটাই প্রশ্ন ঘুরছিল আয়েশা কি তাহলে কোনদিনও আমাকে ভালবাসেনি? তাহলে কি কোনদিনও আমি আয়েশার মনে জায়গা করে নিতে পারিনি? একটা বারের জন্য হলেও বলতে পারতো যে আমাকে ভালবাসে না। আয়েশা বিয়ে করে ফেলেছে এটা কোনোমতেই বিশ্বাস হচ্ছে না। আয়েশার বাসায় পৌঁছে গাড়ি থেকে নামতেই দেখলাম আয়েশা আমার সামনে!আয়েশা আমাকে এভাবে দেখে চমকে উঠলো। আমি একমনে আয়েশার দিকে তাকিয়ে আছি। খেয়াল করলাম একটি দু-তিন বছরের বাচ্চা দৌড়ে দৌড়ে আয়েশার কাছে গিয়ে তাকে বলল,
বাচ্চাটিঃ আম্মু আম্মু আমি আর হাটতে পারছি না আমাকে কোলে নাও।
তাহলে কি সত্যিই আয়েশা বিবাহিত!
চলবে,
পর্বঃ০১
Sera