রুপসাঃ আয়েশা আত্মহত্যা করছে।
মিজানঃ তোমার কি মাথা ঠিক আছে রুপসা কি সব উল্টোপাল্টা কথা বলছো।
রুপসাঃ আমি কোন উল্টাপাল্টা কথা বলছিনা। গতকালকের ম্যাসেজগুলো দেখার পরে আয়েশা সারারাত কান্না করেছে আর সকালে আমরা ঘুম থেকে উঠে দেখলাম আয়েশা ফ্যানের সাথে দড়ি লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
মিজানঃ বিষয়টা কি আর কেউ জানে?
রুপসাঃ না আমি, নুসাইবা ও মেঘলা ছাড়া আর কেউ জানে না।
নিহালঃ বন্ধু আমার তো মাথা কাজ করতেছে না এখন কি হবে, আমাদের সবার ক্যারিয়ার তো এখানেই শেষ হয়ে গেল।
মিসবাহঃ একটা ম্যাসেজের জন্য আয়েশা এত বড় স্টেপ নিয়ে ফেলতে পারল আমার তো এখনো বিশ্বাসই হচ্ছে না।
আমিঃ তোরা প্লিজ একটু থাম।
মিজানঃ এখন থেমে লাভ কি আগে যদি ম্যাসেজটা না দিতি তাহলে এত বড় প্রবলেম হতো না।
আমিঃ বাহ তোদের মত বন্ধু লাগবে না তোরা যা ব্যাপারটা আমি একাই হ্যান্ডেল করব।
মুখ থেকে এমন কথা বের হলেও বেচারা দুর্বল মনের অবস্থা অনেক খারাপ কি করবো কিছু বুঝতে পারছি না। একটা সামান্য ম্যাসেজের জন্য আত্মহত্যা করে নিল আমি ভাবতেই পারছিনা।
মিজান, নিহাল ও মিসবাহ তিনজনের অবস্থাও খারাপ।
নিহালঃ আমার মনে হচ্ছে ব্যাপারটা পুলিশকে জানালে ভালো হবে।
মিসবাহঃ তোর কি মাথা ঠিক আছে পুলিশকে জানালে আমরা নিজেরাই ফেঁসে যাবো।
হঠাৎ খেয়াল করলাম নুসাইবা, মেঘলা ও আয়েশা হাসতে হাসতে আমাদের দিকে আসছে। আর তাদেরকে দেখে রুপসাও হাসতে লাগল।
আয়েশাঃ রুপসা তুই যে এক্টিং করলি তোকে আমি পুরস্কার দিব।
রুপসাঃ পুরস্কার আমাকে না বরং তোকে দিতে হবে। কারণ তুই না থাকলে এত বড় প্ল্যান করতে পারতাম না। ধন্যবাদ।
নুসাইবাঃ সবার চেহারার অবস্থা দেখার মত হয়েছে।
মেঘলাঃ তুই ঠিকই বলেছিস।
মিজানঃ রুপসা তারমানে তুমি এতক্ষণ আমাদের সাথে মশকারি করেছো।
রূপসাঃ জি এতক্ষণ দুষ্টুমি করেছি।
আয়েশাঃ তো মিস্টার বাহাদুর কেমন দিলাম?
আমিঃ আপনি যা করেছেন মোটেও ভালো করেননি।
আয়েশাঃ বাহ রে আমি যা করেছি ভালো করিনি আর আপনি যে আমাকে ফালতু ম্যাসেজ দিয়েছেন সেটা কি ভালো করেছেন।
আমিঃ আমি মোটেও আপনাকে ফালতু ম্যাসেজ দেই নি বরং যা লিখেছি মন থেকে লিখেছি। এবং সত্য কথাটাই লিখেছি।
আয়েশাঃ রাখেন আপনার সত্য কথা আপনার মত ক্যারেক্টারলেস ছেলে আমি এই পৃথিবীতে দেখিনি।
আমিঃ আমি এমন কী করেছি যার জন্য আমাকে ক্যারেক্টার লেস বলতে হবে?
আয়েশাঃ একটা মেয়েকে বাজে ম্যাসেজ দিয়েছেন এর চেয়ে বড় কি প্রমাণ দিব।
আমিঃ আমি একটা ম্যাসেজ দিলে ক্যারেক্টারলেস আর আপনি পুরো ভার্সিটির সামনে বিনা কারণে আমাকে থাপ্পর মারলে সেটা কিছু না।
আয়েশাঃ আমি পরবর্তীতে সরি বলেছি।
আমিঃ আপনি থাপ্পড় মেরেছেন এটা পুরো ভার্সিটির সবাই জানে কিন্তু সরি বলেছেন সেটা আমি ছাড়া কেউ জানে না।
আয়েশাঃ ওই লাস্ট ওয়ার্নিং আপনাকে যদি আমি আমার আশেপাশে আর দেখি তাহলে খবর আছে।
আমিঃ ওকে আই লাভ ইউ।
আয়েশাঃ ওই অসভ্য আমি আই লাভ ইউ কবে বললাম। আমি বললাম আপনাকে যদি আমার আশেপাশে আর ঘুরঘুর করতে দেখি তাহলে আপনার খবর আছে।
আমিঃ ওকে আই লাভ ইউ টু।
আয়েশাঃ অসভ্য মানুষ।
আমিঃ আই লাভ ইউ থ্রি।
আয়েশাঃ ওফ অসহ্য এই তোরা চল।
আমিঃ ওকে ধন্যবাদ আই লাভ ইউ ফোর।
মিজানঃ তোর এসব আজাইরা কথা বাদ দে রুপসার কথা শুনে তো আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম।আজকে রুপসার খবর আছে।
আমিঃ রুপসাকে কিছু বলিস না আমি জানি এই পুরো নাটকটি আয়েশা করেছে।
মিসবাহঃ কিছুক্ষণের জন্য আমারও মনে হয়েছিল আয়েশা সত্যি সত্যি আত্মহত্যা করছে।
নিহালঃ আমারতো মনে হয়ছে আমি না খেয়ে মরে যাব।
আমিঃ তোরা আসলেই বন্ধু নাকি শত্রু।
নিহালঃ এভাবে বলছিস কেন অবশ্যই আমরা তোর বন্ধু।
আমিঃ যদি প্রকৃত বন্ধু হতি তাহলে আয়েশাকে পটানোর জন্য টিপস দিতি না কি এসব উল্টাপাল্টা কথা বলতিস।
মিসবাহঃ এখানে সবার জীবন নিয়ে টানাটানি আর তুই আয়েশাকে পটানোর পিছনে পড়ে আছিস।
আমিঃ সত্যিকারের প্রেমিকরা কখনো সিচুয়েশন দেখে প্রেম করে না বরং তারা দিনরাত 24 ঘণ্টা প্রেম করে।
নিহালঃ আচ্ছা বন্ধু চাইলে দিনরাত 24 ঘণ্টা না বরং 48 ঘন্টা প্রেম করিস কিন্তু তার আগে কিছু খাওয়া আমার অনেক খিদা লাগছে।
মিজানঃ দিনরাত শুধু খাই খাই করস কেন তুই কি মানুষ নাকি বলদ।
মিসবাহঃ নিহাল এর কথা বলে লাভ নেই আমার নিজেরও অনেক খিদা লাগছে। সবাই না খেয়েই তো আসছি।
আমিঃ আচ্ছা তাহলে চল আগে সবাই ক্যান্টিনে গিয়ে খেয়ে আসি তারপর আশিক স্যারের গুরুত্বপূর্ণ কথাটা শুনতে যাব।
নিহালঃ সেটাই ভালো হবে।
তারপর আমরা সবাই ক্যান্টিনে খেতে গেলাম। মনে মনে চিন্তা করছি যে করেই হোক আয়েশাকে আমার মনের কথা বলতেই হবে। আর আয়েশা আমাকে ভালবাসে কিনা সেটাও জানতে হবে কিন্তু মেয়েটা একটু বেশিই বদমেজাজী।
মিজানঃ সবার খাওয়া-দাওয়া শেষ তাহলে এখন তাড়াতাড়ি ক্লাসে চল।
আমরা ক্লাসে ঢুকতেই দেখলাম আশিক স্যার আমাদের আগেই ক্লাসে ঢুকে গেছেন। আমরা ক্লাসে ঢুকে একটি বেঞ্চ খুঁজে চারজন সেখানে বসে পরলাম।
আশিক স্যারঃ প্রত্যেক বছর নতুন ছাত্র-ছাএীদেরকে ভার্সিটি পক্ষ থেকে একটি ট্যুরে নিয়ে যাওয়া হয় আর এই ট্যুরটা আমি প্ল্যান করি। যেখানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা হয় 30 থেকে 40 জন এবং এবারও একটি ট্যুর আমি প্ল্যান করেছি। যেখানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা হবে শুধুমাত্র 20 জন।
সবাইঃ স্যার কেন এবার এত কম কেন?
আশিক স্যারঃ এটা ভার্সিটির ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত তাই আমি আর কিছু বলতে পারছিনা। আমি তোমাদের ব্যাচ থেকে বাছাই করে 20 জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে বগুড়ার মহাস্থানগড়ে যাব। এই ট্যুরটি হবে দুই দিনের যেখানে একদিন যাওয়া আসার জন্য সময় লাগবে। আরেকদিন মহাস্থানগড় ঘুরানো হবে। আমি তোমাদের মধ্য থেকে অলরেডি 20 জনকে সিলেক্ট করে ফেলেছি আর আমি যাদেরকে সিলেক্ট করেছি তাদের মোবাইলে ইতিমধ্যে ম্যাসেজ চলে গেছে।
এতোটুকু বলে আশিক স্যার ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেলেন আর আমিও সেদিনের মতো ক্লাস করে হোস্টেলে চলে আসলাম।
মিজানঃ অনেকক্ষণ ধরে দেখছি তুই কি যেন চিন্তা করছিস, বল তো কি চিন্তা করছিস?
আমিঃ আমি চিন্তা করছি কিভাবে আয়েশার কাছে যাওয়া যায়।
মিসবাহঃ এটাতো একদম সিম্পল যদি আয়েশার কাছে যেতে চাস তাহলে ব্যক্তিগতভাবে আয়েশার সাথে সময় কাটাতে হবে।
আমিঃ পেয়ে গেছি।
নিহালঃ কি পেয়েছিস বিরিয়ানি!
আমিঃ ওই খাদক সবসময় খাবারের কথা বলবিনা আয়েশার সাথে ব্যক্তিগতভাবে সময় কাটানোর আইডিয়া পেয়ে গেছি।
মিসবাহঃ কিভাবে?
আমিঃ মহাস্থানগড়ে ট্যুরের মাধ্যমে।
মিজানঃ কিন্তু মহাস্থানগড়ের ট্যুরের জন্য তো আমাদেরকে সিলেক্ট করা হয়নি।
আমিঃ আগে বল আয়েশা, নুসাইবা, মেঘলা ও রুপসাকে কি সিলেক্ট করা হয়েছে?
মিসবাহঃ হ্যাঁ ওদের চারজনকে সিলেক্ট করা হয়েছে এবং 20 জন ছাত্র-ছাত্রী মধ্যে 13 জনই মেয়ে।
মিজানঃ আশিক স্যার ১ নাম্বার এর লুচ্চা।
আমিঃ প্ল্যান রেডি হয়ে গেছে।
নিহালঃ কিসের প্ল্যান আমাকে একটু বল?
আমিঃ এখন কাউকে কিছু বলব না কালকে সকালে আমরা সবার আগে ক্যাম্পাসে যাব আর আশিক স্যারকে নিয়ে প্ল্যান শুরু করে দেবো।
ঠিক আমার প্ল্যানের মতো সকাল সকাল আমরা চারজন সবার আগে ঘুম থেকে উঠে ক্লাস শুরু হওয়ার আগেই ক্যাম্পাসে চলে গেলাম। ক্যাম্পাসে আসার পর বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না একটু পরেই আশিক স্যার চলে আসলো।
আমিঃআসসালামু আলাইকুম স্যার।
আশিক স্যারঃওয়ালাইকুম আসসালাম কেমন আছো তোমরা?
আমিঃআমরা অনেক ভালো আছি।
আশিক স্যারঃ তো এত সকাল সকাল এখানে কি করছো এখনো ক্লাস শুরু হতে অনেক দেরি আছে।
আমিঃ আসলে স্যার ট্যুরের ব্যাপারে কথা বলতে আসছি।
আশিক স্যারঃ হ্যাঁ বলো কি বলবে।
আমিঃ স্যার আসলে আমরা চারজনও ট্যুরে যেতে চাই কারণ আমাদের চারজনের বান্ধবীরাও ট্যুরে যাচ্ছে।
আশিক স্যারঃ দেখো ইতিমধ্যে আমি 20 জনকে সিলেক্ট করে ফেলেছি আমার পক্ষে আর কাউকে সিলেক্ট করা সম্ভব নয়।
আমিঃ স্যার আপনি চাইলে সব পারবেন কারণ আপনি এই ট্যুরটি প্ল্যান করেছেন। এখন যদি আপনি চেয়ারম্যান স্যার কে বলেন আরও চারজনকে আপনি সাথে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন তাহলে চেয়ারম্যান স্যার অবশ্যই আপনাকে পারমিশন দেবেন।
আশিক স্যারঃ কিন্তু আমি তোমাদের চারজনকে কেন নিয়ে যাব?
আমিঃ এটার জন্য।
আশিক স্যারঃ এটা কি?
আমিঃমেমোরি কার্ড।
আশিক স্যারঃ কিসের?
আমিঃ আপনার ভিডিওর।
আশিক স্যারঃ আমার কিসের ভিডিও! কি সব আবোল তাবোল বকছো।
আমিঃ সরি স্যার আসলে আপনার আর নুসরাত ম্যামের ভিডিও এটা।
আশিক স্যারঃ দেখো এখন কিন্তু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে।
আমিঃস্যার এখন বাড়াবাড়ি হচ্ছে না বরং বাড়াবাড়ি গতবছর হয়ে গেছিল যখন রাতে আপনি আর নুসরাত ম্যাডাম এক কেবিনে ছিলেন।
আশিক স্যারঃ দেখো বাহাদুর তুমি কিন্তু অনেক বাড়াবাড়ি করে ফেলছো।
আমিঃ স্যার আমি মোটেও বাড়াবাড়ি করছি না বরং এই ভিডিও একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে।
আশিক স্যারঃ আচ্ছা তুমি কি প্রমাণ করতে চাইছ আমি ক্যারেক্টার লেস?
আমিঃ আমি কিছুই প্রমাণ করতে চাইছি না এই ভিডিও অনেক আগেই আমার কাছে সবকিছু প্রমাণ করে দিয়েছে।
আশিক স্যারঃ দেখো ভিডিওটা আমাকে দিয়ে দাও না হলে অনেক খারাপ হবে।
আমিঃ স্যার ভিডিওটা আপনাকে না দিলে আমাদের কিছু হবে না বরং আপনার অনেক কিছু হয়ে যাবে।
আশিক স্যারঃ আমার কি হবে?
আমিঃ স্যার ভিডিওটা আমরা ভাইরাল করে দেব।
নিহালঃ স্যার ভিডিওটা আমরা হোয়াটসঅ্যাপে সবাইকে ফরওয়ার্ড করে দিব।
মিজানঃ স্যার আপনি চাইলে ভিডিওটা আমরা ফেসবুকেও আপলোড করতে পারি।
মিসবাহঃ সবচেয়ে ভালো হবে ইউটিউবে ছেড়ে দিলে।
আমিঃ এই তোরা সবাই চুপ আমাদের স্যার কি এত ছোট মানুষ, আমাদের স্যার অনেক মহান একজন মানুষ।
আশিক স্যারঃ একমাত্র তুমি আমাকে বুঝ আর কেউই আমাকে বুঝে না দেখছো এরা কত খারাপ মানুষ শুধু আমাকে ভাইরাল করতে চাই।
আমিঃ হ্যাঁ স্যার এরা একদম আপনাকে বুঝেনা শুধু আমি বুঝি। আমি আপনার এই ভিডিওটা টিভিতে টেলিকাস্ট করব তাহলে কিছুক্ষণের মধ্যেই পুরো বাংলাদেশে আপনি ভাইরাল হয়ে যাবেন।
আশিক স্যারঃ একটু বেশি হয়ে গেল না।
আমিঃ স্যার আপনি চাইলে কিন্তু সবকিছু সমাধান করতে পারেন।
আশিক স্যারঃ কিভাবে?
আমিঃ আমাদের চারজনকে ট্যুরে নিয়ে।
আশিক স্যারঃআচ্ছা ঠিক আছে তোমাদের চারজন কেও ট্যুরে নিয়ে যাব।
আমিঃ স্যার শুধু ট্যুরে নিলে হবে না বরং আমাদের চারজন কে আমাদের চারজনের বান্ধবীদের সাথে সিট দিতে হবে।
আশিক স্যারঃ এটা কোনদিনও সম্ভব না।
আমিঃ স্যার আপনি চাইলে কিন্তু সব সম্ভব আর আমরা চাইলে কিন্তু আপনার ভিডিওটা ভাইরাল করা সম্ভব এখন সিদ্ধান্ত আপনার।
আশিক স্যারঃ আচ্ছা আমি ব্যবস্থা করতেছি তোমাদের চারজনের বান্ধবীদের নাম বলো? আমি তোমাদেরকে দুটো কেবিন দিয়ে দিব।
আমিঃ না স্যার এটাও হবে না আমাকে এবং আয়েশাকে আলাদা একটা কেবিন দিতে হবে। যেখানে শুধু আমরা দুজন থাকবো।
আশিক স্যারঃ দেখো এটা কোন ভাবেই আমার পক্ষে সম্ভব না।
আমিঃ স্যার আপনার থেকে সম্ভব করতেই হবে।
আশিক স্যারঃ তুমি যদি চাও তোমার জন্য অন্য একটা ব্যবস্থা করতে পারি।
আমিঃ অন্য ব্যবস্থা বলতে?
আশিক স্যারঃ একটা কেবিনে চারজন থাকতে পারে। তুমি চাইলে ১টি কাপল আছে ওরকম কেবিন দিতে পারি।
আমিঃ স্যার আমি রাজি কিন্তু আরেকটা প্রবলেম আছে।
আশিক স্যারঃ কি প্রবলেম আবার?
আমিঃ স্যার আয়েশা আমার সাথে এক কেবিনে থাকার জন্য কোনদিন রাজি হবে না।
আশিক স্যারঃ কিন্তু কেন আর আয়েশাতো তোমার বান্ধবী তাইনা?
আমিঃ স্যার আমি আয়েশা কে ভালোবাসি সেটা ঠিক আছে কিন্তু আয়েশা আমাকে ভালোবাসে কিনা সেটা আমি জানি না।
আশিক স্যারঃ তাহলে ভুলে যাও কারণ আয়েশা প্রচুর বদমেজাজী মেয়ে। আয়েশা কখনোই তোমার সাথে যাওয়ার জন্য রাজি হবে না।
আমিঃ স্যার আপনি চাইলে সব সম্ভব।
আশিক স্যারঃ দেখো একটা ভিডিওর কারণে তুমি আমাকে এত ভয় লাগাতে পারো না।
আমিঃ আসলেই স্যার এত ভয় লাগানো উচিত না বরং ভাইরাল করে দেওয়া উচিত এই নিহাল তোর একটা মামা আছে না যে টিভি চ্যানেলে কাজ করে, তাকে কল দে।
আশিক স্যারঃ আরে বাবা এতো ছোট কথাই রাগ করতে হয় তুমি সবকিছু আমার উপর ছেড়ে দাও। আয়েশা তোমার সাথে অবশ্যই যাওয়ার জন্য রাজি হবে।
আমিঃ ধন্যবাদ স্যার।
আশিক স্যারঃ তাহলে এক কাজ করো আজকে বিকেল পাঁচটার দিকে হলে চলে আসিও। কারণ যারা যারা ট্যুরে যাবে সবাই বিকেলের দিকে হলে থাকবে।
আমিঃ ওকে স্যার তাহলে বিকেল পাঁচটার দিকে দেখা হবে।
আশিক স্যারঃ ভিডিওটা তাহলে আমাকে দিয়ে দাও।
আমিঃ না স্যার ভিডিওটা আমার কাছেই থাকুক কারণ ভবিষ্যতে আরো অনেক কাজে লাগতে পারে।
আশিক স্যারঃ আচ্ছা তোমাকে একটা রিকোয়েস্ট করলাম প্লিজ আমার রিকোয়েস্ট টা রাখিও। এই ভিডিওটা কাউকে দেখাইও না প্লিজ।
আমিঃ ওকে স্যার দেখাবো না কিন্তু এতগুলো কথা বললাম একটা কথা তো মনের মধ্যে থেকেই গেল।
আশিক স্যারঃ কি কথা?
আমিঃ স্যার ভিডিওর কোয়ালিটি আরো ভালো হলেই পারতো।
আশিক স্যার কিছু না বলে লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে সেখান থেকে চলে গেলেন।
নিহালঃ তুই এত বড় বেইমান তোর কাছে এতো ভালো ভিডিও আছে আর আমাদেরকে একটুও দেখালি না।
মিজানঃ তোকে আমরা বন্ধু ভাবছিলাম আর তুই তো একটা বেইমান।
আমিঃ কিরে তোরা এগুলো কি বলা শুরু করেছিস। আমি আবার তোদের সাথে কবে বেইমানি করলাম।
মিসবাহ কবে বেইমানি করিস নি সেটা বল। তোর কাছে আশিক স্যারের ভিডিও আছে আর আমাদেরকে দেখালিও না।
আমিঃ কিসের ভিডিওর কথা বলছিস তোরা?
মিসবাহঃ আশিক স্যারের ভিডিও।
আমিঃ দেখ আমার কাছে কোন ভিডিও নেই।
মিজানঃ তাহলে তুই আশিক স্যারকে কিসের কথা বলেছিস?
আমিঃ আরে বোকা ভার্সিটির বড় ভাইদের মাধ্যমে জানতে পারছিলাম আশিক স্যার আর নুসরাত ম্যামের নাকি রিলেশন ছিল আর তাদের নাকি একটা ভিডিও আছে তাই আমি আশিক স্যারকে ভিডিওর কথা বলে শুধু ভয় লাগাইছিলাম আর তোরা যখন আমার সাথে সাথে বলেছিস তখন আশিক স্যার আরো ভয় পাইছে এবং আমাদেরকে ট্যুরে নিয়ে যেতে রাজি হয়ছে আর এটাই ছিল আমার প্ল্যান।
নিহালঃ মানে তোর কাছে কোন ভিডিও নেই?
আমিঃনা আমার কাছে কোন ভিডিও নেই।
নিহালঃ যদি আশিক স্যার ভিডিওটা দেখতে চাই।
আমিঃ আরে আমারে কি এতই বোকা পাইছোস আশিক স্যার যে কত বড় বলদা সেটা আমার ভালো করে জানা আছে। এখন এখানে দাঁড়ায় আর সময় অপচয় না করে তাড়াতাড়ি ট্যুরের প্ল্যান করতে হবে।
বিকেলে আমরা চারজন হলে গেলাম।হলে ঢুকতেই দেখলাম আয়েশা আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। আহারে মেয়েটা একটু বেশিই সুন্দর। এই মেয়েটাকে যতবারই দেখি ততবারই তার প্রেমে পড়ে যায়। কোন এক অজানা আকর্ষণ আমাকে তার দিকে টানে।
আশিক স্যারঃ তোমাদেরকে ট্যুর সম্পর্কে সবকিছু জানিয়ে দেওয়ার জন্য আজকে এখানে ডেকেছি। আমরা যেখানে যাব সেটার নাম হল মহাস্থানগড়। চট্টগ্রাম থেকে সেখানে যেতে কমপক্ষে 10 ঘণ্টার অধিক সময় লাগবে। তাই আমাদের ট্যুরটি হবে রাতের। ট্যুরটি শুরু হবে আগামী কাল রাত আটটা থেকে। রাতে শুরু করা একটাই কারণ যাতে আমরা বগুড়ার মহাস্থানগড়ে যেয়েই ঘুরা শুরু করতে পারি। এই নাও এখানে তোমাদের সবার টিকিট এবং কেবিনের নাম্বার দেওয়া আছে। এখন আমি বলে দিচ্ছি এক কেবিনে কার সাথে কে বসবে।
আশিক স্যার সবার নাম বললেন এবং শেষে আমার এবং আয়েশার নামও বললেন। আমি মনে করেছিলাম আয়েশা এটার বিরোধিতা করবে কিন্তু আজব হলেও সত্য আয়েশা কিছু না বলে চুপচাপ বসে থাকলো।
আশিক স্যারঃ ঠিক আছে এখন তোমরা আসতে পারো।
আমিঃস্যার আয়েশা মেনে গেল কিভাবে আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না।
আশিক স্যারঃ এগুলো সব আমার কেরামতি।
আমিঃ কিসের কেরামতি?
আশিক স্যারঃ আমি আয়েশাকে বলেছি যদি সে এই ট্যুরে তোমার সাথে যেতে রাজি না হয় তাহলে তার প্র্যাকটিক্যাল নাম্বার কাটা যাবে।
আমিঃ অসংখ্য ধন্যবাদ স্যার আই লাভ ইউ।
আশিক স্যারঃতোমাকে স্বাগতম।
আমিঃ কিন্তু স্যার আরেকটা কথা বলাই হল না।
আশিক স্যারঃকি কথা?
আমিঃ স্যার ভিডিওর কোয়ালিটি আরো ভালো হলে পারতো।
আশিক স্যার আবারো কিছু না বলে সেখান থেকে চলে গেলেন আর আমরা চারজন ট্যুরের জন্য প্রস্তুত নিতে লাগলাম। পরের দিন ঠিক সময় মতো আমরা স্টেশনে পৌঁছে গেছি।
আশিক স্যারঃ আর একটু লেট হলে তো তোমরা আজকে ট্রেন মিস করতে।
আমিঃ কই স্যার আমরা তো সময় মত এসেছি।
আশিক স্যারঃ আমার মাথা এসেছো। ট্যুর আটটা বাজে শুরু হবে মানে ট্রেন সাড়ে সাতটা বাজে ছাড়বে। আজকে কোন কারণে ট্রেন 15 মিনিট লেট হয়েছে আর 15 মিনিট লেট হওয়াতেই তোমরা ট্যুরটা মিস করা থেকে বেঁচে গেছো।
আমিঃ যাক বাবা পৌঁছে গেছি এটাই বিশাল ব্যাপার।
আশিক স্যারঃ তোমার আগেই আয়েশা এসে গেছে কিছুক্ষণ আগে আমি তোমার কেবিনে গিয়েছিলাম কিন্তু গিয়ে দেখলাম সেখানে আয়েশা ছাড়া কেউ নেই। তার মানে তোমাদের সাথে যে কাপলটা ট্যুর করার কথা ছিল তারা আসবে না।
মিসবাহঃ বন্ধু এটাই তো চান্স।
মিজানঃ বন্ধু তুই তো ছক্কা মেরে দিলি।
আমিঃ কেন কি হইছে?
নিহালঃ দেখ একজন মেয়ের কাছে যাওয়ার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর নেই।
আমিঃ তোদের কথা ঠিক বুঝি নাই।
মিসবাহঃ দেখা আয়েশা আর তুই আট হতে দশ ঘন্টা এক কেবিনে থাকবি তার মানে বুঝতে পারছিস তোদের ভিতরে অনেক কিছু হতে পারে আর এই অনেক কিছুর মধ্যে যদি সামান্য একটা কিছুও হয়ে যায় তাহলে বুঝবি আয়েশাও তোকে পছন্দ করে।
আমি আর কিছু বলতে যাবো তার আগেই বন্ধুরা আমাকে ধাক্কা মেরে কেবিনে ঢুকিয়ে দিল আর তারাও তাদের কেবিনে চলে গেল। কেবিনের সিটের দিকে লক্ষ্য করে দেখলাম কেউ একজন সিটের উপর শুয়ে আছে কাঁথা গায়ে দিয়ে। আরেকটু ভালো করে লক্ষ্য করতেই দেখলাম কাঁথার ভেতর থেকে সামান্য কাপড় বের হয়ে গেছে আর এই কাপড়টা একজন মেয়ের কাপড় আমার আর বুঝতে বাকি রইল না যে আয়েশা শুয়ে আছে। আমি আয়েশার কাছে গিয়ে তার মুখ থেকে কাঁথা উঠাতে গিয়ে যা দেখলাম তা দেখে আমি রীতিমতো অবাক,,,
চলবে,,,,
Wow