রক্ত গোলাফ

0 13
Avatar for jabed526
4 years ago

#রক্তগোলাপ🌹

#Farhana_Chobi

#সূচনা_পর্ব

"আর কতো মার্ডার করবি ছন্দ ? এবার তো থেমে যা দোস্ত""

বন্যার কথা শুনে ছন্দ পাগলের মতো হাসতে লাগলো যেন বন্যা কোন জোকস শুনালো ওকে...ছন্দের এমন পাগলের মতো হাসতে দেখে বন্যা প্রচন্ড রেগে যায় বডি ওয়াস টা হাতে নিয়ে ছুড়ে মারে ছন্দের দিকে ছন্দ হাসতে হাসতে বন্যার ছড়া বডি ওয়াস টা ক্যাচ করে ধরে ফেলে ছন্দ ...এতোক্ষনে বন্যা ছন্দের বাথটপে পানিটার দিকে খেয়াল করে সাদা গোলাপের পাপড়ি গুলো লাল হয়ে আছে ৷ বন্যা ভয়ে ভয়ে একটু একটু করে ছন্দের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো ... ছন্দ বন্যাকে এভাবে আসতে দেখে কাপাল কুচকে বন্যার দিকে তাকিয়ে বলে.....

"" এদিকে আসছিস কেন তুই ?? দেখছিস না আমি গোছল করছি...""(কপাট রাগ দেখিয়ে বললো ছন্দ)

""" হ্যা দেখছি তুই গোছল করছিস কিন্তু পানি দিয়ে নয় রক্ত দিয়ে তাই না???""(বন্যা)

""" যখন সব টা জানিস তাহলে কেন জ্বিগাসা করছিস ?? "" (ছন্দ)

"" আজ যাকে খুন করলি সে কে..??? তার পরিচয় কি ...???""

"" রাহা তোর ভাইয়ের এক্স গার্লফ্রেন্ড ছিলো.....""

কথাটা বলে বাথটপে রক্তগোলাপে চোখ বন্ধ করে ডুব দিলো ... এদিকে ছন্দের কথা শুনে বন্যার যেন মাথাটা ঘুরে গেল... বন্যা ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে ছন্দের রুমের টিভিটা অন করে ... প্রত্যেকটা নিউজের এই খুনের নিউজ দেখাচ্ছে .... পুলিশ সঠিক ভাবে কিছু-ই বলতে পারছে না দেখে রিপোটাররা যা নয় তাই পুলিশদের নামে বলছে৷ তাই ডি আই জি কেসটা সলভ করার দ্বায়িত্ব সিনিয়র অফিসার আয়ান চৌধুরী বর্ন কে দেওয়া হয়েছে ৷

এ-ই টুকু নিউজ শুনে বন্যা সেন্সলেস হয়ে গেল.... অন্যদিকে ছন্দ মন মতো রক্তগোলাপ দিয়ে শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে দেখে বন্যা সেন্সলেস হয়ে পরে আছে আর অন্য দিকে শহরে বিশেষ বিশেষ জায়গায় ডেড বডির ভিন্ন ভিন্ন শরীলের টুকরো পেয়ে পুরো শহর যেন আতংকিত হয়ে পরছে... পুলিশ তদন্ত করে কোন সূত্র না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে......সব নিউজের এখন পুলিশের ব্যার্থতা নিয়ে নিউজ করা হচ্ছে....

ছন্দ রহস্যময় হাসি দিয়ে টিভি অফ করে বন্যার চোখে মুখে পানির ছিটে দিয়ে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করে.....

""" তুই ঠিক আছিস বেবি..???""

""" তোর মতো যার সাইকো বেস্টু আছে সে কি কখনো ঠিক থাকতে পারে বলে তোর মনে হয়???""(বালিশে হেলান দিয়ে বললো বন্যা)

""" হিহিহি তোর কপাল ভালো আমার মতো এতো নিশ্পাপ কিউট একটা বেস্টু পেয়েছিস৷ এখন এতো কথা না বলে চেন্জ করে আয় বাইরে খেতে যাবো প্রচন্ড খিদে পেয়েছে....""

""" তুই কিউট ঠিকি কিন্তু নিশ্পাপ না ছন্দ তুই ভয়ঙ্কর এতোটা ভয়ঙ্কর যে কাউকে মৃত্যু দিতে তোর হাত কাঁপে না৷(মনে মনে)

চেন্জ আমি করে আছি বাট বাইরে না গেলে হয় না ?? না মানে পুলিশ বা ভাই যদি তোকে চিনে ফেলে..??""

বন্যার এমন কথা শুনে ছন্দ হো হো করে হেসে উঠে বন্যার মাথায় চাটি মেরে বলে..."" তুই কি আমাকে চিনিস না ?? জানিস আজ পর্যন্ত যে কটা মাডার্র করেছি তারা কেউ আমার ফেস দেখতে পাইনি ইভেন নো ক্লু তাহলে পুলিশ বা তোর হাদারাম মার্কা ভাই আমাকে চিনবে কি করে...???"""

ছন্দের মুখে নিজের ভাইয়ের সম্পর্কে খারাপ কথা শুনে বন্যা মুখ ফুলিয়ে রইল... পৃথিবী এদিক থেকে ওদিক উলটে যাক কিন্তু বাবার মতো বড় ভাইয়ের সম্পর্কে কোন বাজে কথা হোক বা সেটা মজা করে বলা যাই হোক না কেন বন্যা তা সহ্য করতে পারে না৷ এতোটাই বর্ণ কে ভালোবাসে বন্যা....

বন্যার মুখ ফুলিয়ে থাকতে দেখে ছন্দ বুজতে পারে সে কি বলে ফেলেছে বন্যার সামনে দ্যা গ্রেট আয়ান চৌধুরী বর্ণে সে হাদারাম বলেছে তাও তার চাম্চি বন্যার সামনে .. ছন্দ তার কান দুটো ধরে কাদো কাদো ফেস করে বন্যা কে বলে.....

""" সরি দোস্ত , আমি ভুলে গেছিলাম কার সামনে কি বলছি ৷ এ ই শেষ বারের মতো ক্ষমা করে দে আমাকে...."""(কিউট ফেস করে)

"" উফফ একটু রাগ দেখাবো তার ও জো নেই মেয়েটা যা ড্রামা করতে পারে না বাবা ...(মনে মনে)

হয়েছে আর ড্রামা করতে হবে না চল আমার ও ভিষন খিদে পেয়েছে.......আমি দু মিনিটে চেন্জ করে আসছি তুই গাড়ি বের কর""

কথাটা বলে বন্যা ড্রেস নিয়ে ওয়াসরুমে ঢুকে গেলো.... ছন্দ হেয়ার ড্রাইয়ার দিয়ে চুল গুলো শুকিয়ে হালকা সেজে নিয়ে পার্স নিয়ে বেরিয়ে পরে গেরেজ থেকে গাড়ি বের করার জন্য....

.

.

.

.

""" ওয়াও ছন্দ এই রেস্টুরেন্ট টা তো বেশ সুন্দর নো কোলাহল অনলি ফাকা ফাকা বেশ ভালো লাগছে....""

""" শুধু পরিবেশ টা ভালো লাগালে-ই চলবে বেবি খেতে ও তো হবে নাকি ৷ আমি বিরয়ানি আইসক্রিম আর টিক্কা অর্ডার দিচ্ছি ...পেট পূজো তো করতে হবে ..""

""" পেটুক একটা "" (বির বির করে)

ছন্দ আর বন্যা গল্প করতে করতে খাবার খাচ্ছিলো তখনি ছন্দ খেয়াল করলো কেউ ওকে দেখছে ৷ ছন্দ এদিক ওদিক ভালো করে তাকিয়ে যখন কাউকে দেখতে পেলো না তখন হঠাৎ করে-ই ধপ করে ছন্দের পাশে কেউ বসে পরলো ৷ ছন্দ পাশে না তাকিয়ে শরীরের গন্ধে পেয়ে-ই বিরবির করে বলে ওঠে বর্ণ .... বন্যা অবাক হয়ে তার ভাই কে দেখছে ... ডিউটিতে থাকা কালিন বর্ণ কখনো বন্যা বা ছন্দের সাথে বাইরে দেখা করে না আর আজ করলো তাও ফলো করে ... ভাবতে- ই বন্যার গলাটা শুকিয়ে আসছে....

""" কি রে শাকচুন্নির দল আমাকে একা ফেলে রেখে তোরা বিরয়ানি গিলছিস...??""(বর্ণ)

""" আমরা যদি শাকচুন্নি হই তাহলে তো তুই শাকচুন্না আর তোকে রেখে খাবো না তো তোকে নিয়ে খাবো ..??""(ছন্দ)

""" ছন্দ রেসপেক্ট দিয়ে কথা বল, ভুলে যাস না আমি তোর পাঁচ বছরের বড় আর সাথে তোর হবু জামাই...(.মজা করে) সাথে পুলিশের একজন বড় কমকর্তা ৷ তোদের এই ভাষা কেউ শুনলে পুলিশদের আর মান সন্মান অবশিষ্ট থাকবে না৷"""

""" তোদের পুলিশের মান সন্মান আছে বলছিস...??""(ছন্দ)

""" থাকবে না কেন..??""

""" হিহিহি থাকলে কি আর তোরা একটা খুনি কে ধরতে পারতি না..?? একটা খুনি শহরে সবার রাতের ঘুম হারাম করে তোদের চোখের সামনে লাগাতাম একশ বার টা মাডার্র করলো আর তোরা কি করছিস মুখে আঙুল দিয়ে বসে বসে দেখছিস?? সেই মাডার্রার কে ধরতে পেরেছিস ..?? আচ্ছা ছেড়ে দে ধরার কথা কোন ক্লু পেয়েছিস কিনা বল..???"""

""" না পাই নি তবে খুব তারাতারি পেয়ে যাবো কারন এই কেস টা হেড কমিশনার আমাকে দিয়েছেন আর তুই তো জানিস এই আয়ান চৌধুরী বর্ণ কখনো তার দ্বায়িত্ব পালনে পিছ পা হয় না ওই সাইকো সিরিয়াল খুনি কে তো আমি ধরবোই....""(চোখ মুখ শক্ত করে বললো বর্ণ)

বর্ণের কথা শুনে বন্যার গলায় খাবার প্রায় আটকে যাওয়ার মতো অবস্তা আর অন্যদিকে ছন্দের ঠোটের কোনে লেগে থাকা বাকা রহস্যময় হাসি দেখে বন্যার প্রান যায় যায় অবস্তা.....

"" তো স্যার আপনি এখানে কেন..??""(ছন্দ)

""" কারন আমি আমার হবু বউয়ের সাথে লান্চ করবো তাই...""

বর্ণের কথা শুনে বন্যা খুক খুক করে কেশে ওঠে...

"" ছিঃ ভাইয়া বোনের সামনে বসে প্রেম করতে লজ্জা লাগে না তোর...??""

""" কেন তুই যখন কাব্য কে নিয়ে আমার সামনে বসে প্রেম করতিস তখন কি আমি তোকে এই কথা বলতাম... ছিঃ বনু ছিঃ ভাইয়ের সামনে প্রেম করতে লজ্জা লাগে না..??"""

""" ভাইয়য়য়য়য়য়য়া ""(জোরে চিৎকার করে)

"" গাধী চুপ কর আশে পাশের সবার ডিসট্রাব হচ্ছে তো..."""

বর্ণের ধমক শুনে বন্যা গাল ফুলিয়ে বসে রইল... বর্ণ ছন্দের প্লেট থেকে একটু একটু করে বিরয়ানি খেয়ে নিচ্ছে ছন্দ বারন করতে গিয়েও করলো না ৷

""তোদের খাওয়া শেষ হলে বাড়িতে ড্রপ করে দিয়ে আমি অফিসে যাবো....""

"" তার দরকার নেই ভাইয়া আমরা গাড়ি নিয়ে এসেছি সাথে করে ...""(ছন্দ)

ছন্দের কথা শুনে বর্ণ আর এক মুহূর্ত না দারিয়ে বেরিয়ে গেল... বর্ণের এমন ব্যবহার দেখে ছন্দ মাঝে মাঝে ভিষন কষ্ট পায়৷ ছন্দ বুজতে পারে না বর্ণ সত্যি ওকে ভালোবাসে নাকি ফান করছে...???

(ছন্দের পরিচয় টা দিয়ে দি... ছন্দের পুরো নাম সুবহা জাহান ছন্দ ,, বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে ছন্দ ,,অনার্স ৩য় বর্ষে, বাবা সাব্বির হোসেন আর মা সাদিয়া জাহান পাপড়ি...নাম করা বিজনেসম্যানদের একজন সাব্বির হোসেন আর সাদিয়া জাহান একজন নাম করা পলিটিশিয়ান ,,

বর্ণ পুরো নাম আয়ান চৌধুরী বর্ণ ,, লন্ডন থেকে ডিগ্রি নিয়ে শখের বসে পুলিশে জয়েন করে কিন্তু নিজে সাহস আর সততার জন্য অল্প সময়ে বর্ণের প্রমোশন হয়ে যায়... অল্প সময়ে বড় পোষ্টে জয়েন করে ...বর্ণের বাবা আজাদ চৌধুরী একজন পলিটিশিয়ান ছন্দের মা মিসেস হোসেন এর বেস্ট ফ্রেন্ড সে সুবাদে ছন্দ বর্ণ আর বন্যার ছোট বেলা থেকে এক সাথে বেরে ওঠা... বন্যার মা একজন বিজনেস অম্যান তাই বলতে গেলে রুটো পরিবার হাই সো সাইটি তে বি লং করে৷ এবার গল্পে ফেরা যাক)

"" কিরে ছন্দ কোথায় হারিয়ে গেলি..?? ভাইয়া তো সে-ই কখন বেরিয়ে গেছে..""

""" হুম কিছু না , আচ্ছা শোন বন্যা আমার কিছু কাজ আছে তুই লান্চ শেষ করে তোদের বাড়িতে চলে যাস সন্ধায় ওখানেই দেখা হবে৷ গাড়ির চাবিটা রইল ,বাই """

ছন্দ বন্যা কে আর কথা বলার সুযোগ না দিয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে যায়

.. বন্যা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আর না খেয়েই বিল পে করে চলে আসে.... অন্য দিকে ছন্দ ক্লাবে এসে কিছু ছেলে মেয়েদের সাথে ডান্স করতে লাগলো... এর মাঝে একটা ছেলে বার বার ছন্দের কোমরে টার্চ করছে ছন্দ ছেলেটার কাছ থেকে দুরে সরে গিয়ে ডান্স করলেও ছেলেটি ছন্দের পিছুন পিছুন গিয়ে আবার ও সেম কাজ করতে লাগলো তবে এবার আর ছন্দ তার জায়গা থেকে একচুল ও সরে যাই নি উলটো ছেলেটির সাথে ডান্স করতে লাগলো ........

.

.

.

( সারপ্রাইজ টা কেমন লাগলো জনগন??

চাইলে-ই মেঘ ফারহা কে দিতে পারতাম কিন্তু ডেভিল কিং বনাম ডেভিল কুইন গল্প টায় এরা আছে তো ভাবলাম নতুন করে বর্ণ ছন্দের জুটিটা আসলে কেমন হয়..?? )

#চলবে..................

1
$ 0.00
Avatar for jabed526
4 years ago

Comments