বছর চার-পাচেক আগের ঘটনা !
সময়টা খুব খারাপ যাচ্ছিলো । সুইসাইডাল কখনোই ছিলাম না । কিন্তু সেসময় বড্ড কেয়ারলেস ছিলাম । অনেকটা বাচলে বাচলাম , মরলে মরলাম টাইপ মনমানসিকতা ছিল ।
এমনই এক সন্ধ্যার ঘটনা ! বিষন্ন মনে ব্যাস্ত ঢাকা-টঙ্গী মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে একমনে সিগারেট পোড়াচ্ছিলাম । এমন সময় একজন বৃদ্ধ এলেন আমার কাছে টাকা চাইতে । পকেট থেকে অল্পকিছু টাকা বের করে দিয়ে ওনাকে বিদায় করলাম । ঘটনাক্রমে যেদিক থেকে গাড়ী আসছিলো তার সাথে কিছুটা কৌনিক ভাবে দাড়ানোর কারনে পেছন থেকে গাড়ী আসার শব্দ পেলেও গাড়ী দেখা যাচ্ছিলো না ।
বিষন্নতা দুশ্চিন্তায় এতটাই বেখেয়ালী হয়ে গিয়েছিলাম যে এটাও দেখিনি রাস্তায় গাড়ীর ভীড়ের কারনে একটা লং-লাইন চেয়ার কোচ রাস্তা ছেড়ে ফুটপাথ দিয়ে অশ্বের বেগে পেছন থেকে আমার দিকে ছুটে আসছে । হঠাত লক্ষ্য করলাম মিনিটখানেক আগের সেই বৃদ্ধ চাচা তড়িঘড়ি করে হাপাতে হাপাতে আমার দিকে ছুটে এসে আমার হাত ধরে টান দিলেন । ওনার টানে আমি আমার জায়গা থেকে কিছুটা সরে এলাম ।
ঢাকা শহরে ধান্দাবাজের অভাব নেই এই চিন্তা থেকে ঝটকা দিয়ে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিলাম । তাছাড়া ওনার জরাজীর্ন জামা কাপড় আর গরীবি হাল দেখেও হয়ত নিজের ভেতরে কিছুটা অহংবোধ কাজ করেছিল । আমার ঝটকা সামলাতে না পেরে তিনি একটা রিক্সার সাথে লেগে মারাত্মক আঘাত পান ।
কিন্তু আমার হুশ ফিরল যখন মাত্র ২/৩ সেকেন্ড পর ঠিক সেই জায়গাটা দিয়েই অতোবড় চেয়ার কোচটা উন্মত্ত বেগে চলে গেল ঠিক যেখানে আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম । পুরো ঘটনাটা ঘটতে জোর ৭ বা ৮ সেকেন্ডের বেশী সময় লাগেনি । বুঝতে পারলাম যাকে আমি আঘাত দিয়ে ফেলেছি , একটু আগেই তিনি আমার জীবন বাচিয়েছেন ।
আর কিছু ভাবার মতো শক্তি ছিল না আমার তখন । চাচাকে ধরে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ড্রেসিং করিয়ে ওসুধ কিনে তার ঘরে পৌছে দিয়ে আসলাম । এরপর যতদিন টঙ্গীতে ছিলাম , প্রায়ই চাচার খোজ নিতাম । অনেকদিন হলো চাচার সঙ্গে দেখা নেই ।
এই ঘটনাটা মনে হলে আজো খুব অপরাধবোধে ভুগি । যে মানুষটা আমার প্রান বাচাতে চাইলেন আর আমি কিনা তাকে দারিদ্র্য , বেশভুষা , সামাজিক ভুল ধারনার বশবর্তী হয়ে আঘাত দিলাম ! চাচার সাথে এই ঘটনার পর যতদিন দেখা হয়েছে , বারবার সেদিনের জন্য আমি ক্ষমা চেয়েছি । তিনি আমাকে সন্তুষ্টচিত্তে জানিয়েছেন তিনি আমাকে ক্ষমা করেছেন ।
কিন্তু আমার অপরাধবোধ আজও আমার পিছু ছাড়েনি । সেদিনের পর থেকে অমন কোন মানুষ আমার সাথে কথা বলতে আসলে আর অবহেলা করিনা , যত ব্যাস্ততা বা সমস্যা থাকুক অন্তত দু-মিনিট দাঁড়িয়ে কথা বলি । হয়ত এটা মহত্ব দেখাবার জন্য করি না , নিজের অপরাধবোধ কিছুটা কমাবার জন্যই করি ।
দোয়া করি সেই চাচা যেখানেই থাকুন না কেন , আল্লাহ তাকে খুব ভাল রাখুন !
Thanks for reading this article for so long.
If you like it Upvote Can give.
শালা মুর্খের বাচ্চা কুয়োরা থেকে লেখা চুরি করে পোষ্ট করিস । নিজেরা তো আর মাথা খাটায় কিছু করতে পারবি না । এমন চুরি ছ্যাচ্চোড়ি করে , কপি পেস্ট মেরে পেট চালাবি । নাহলে তো পেটে ভাত জুটবে না , না খেয়ে মরবি অথবা রাস্তায় ভিক্ষা করতে হবে ।