বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায় দেশি ফলগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ- লুকলুকি, ডেউয়া, ডেফল, করমচা, জংলিবাদাম, কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, গোলাপজাম, তুঁত, তিনকরা, সাতকরা, আদা জামির, জামির, মনফল, অরবরই, আঁশফল, তারকা ফল, গাব, বিলাতি গাব, আতা, শরিফা, কাউফল, তৈকর, ডালিম, চালতা, ডুমুর, বৈঁচি, টকআতা, পানিফল, সিঙ্গাড়াফল, জিলাপিফল, পদ্মফল, মাখনা, রুটিফল, বকুল, ফলসা, চুকুর, চিকান, পানকি চুনকি, টুকটুকি বা টাকিটাকি, বিলিম্বি, ডালিম, ক্ষুদিজাম ফল।
১. গোলাপজাম :
বিলুপ্ত প্রায় ফল হল গোলাপজাম। এই ফল পাকলে গোলাপের মত কিছুটা গন্ধ বের হয় বলেই সম্ভবত এ নাম। বৃহত্তর সিলেট এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে বাড়ীর আশেপাশে একসময় প্রচুর দেখা গেলেও এখন সব অঞ্চলেই হারিয়ে যেতে বসেছে। এটি মূলত দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার গাছ। গাছ দীর্ঘদিন বাঁচে (প্রায় ৪০/৫০ বছর) এবং ফল দান করে। গাছ মাঝারী আকৃতির। গাছ লাগানোর ২/৩ বছর পর থেকেই ফল সংগ্রহ করা যায়। গোলাপজাম গাছে মাঘ-ফাল্গুন মাসে ফুল আসে এবং বৈশাখ থেকে শ্রাবণ মাসের মধ্যে ফল পাকে। গোলাপজামের ফুলও খুবই দৃষ্টিনন্দন।
২. কেয়া বা কেতকী :
কেয়া গুল্মজাতীয় সুগন্ধি উদ্ভিদ। কেয়া গাছ লম্বায় ১০-১২ ফুট হয়ে থাকে। এর কাণ্ড গোলাকার এবং কণ্টকময়। গাছের প্রধান কাণ্ড থেকে অনেক শাখা-প্রশাখা বের হয়। গাছগুলো প্রায় বক্র হয়। গাছের নিম্নদেশ থেকে মোটা শাখা পর্যন্ত বেশ কিছু মূল বের হয়ে মাটিতে ভিত্তি তৈরি করে।
এগুলোকে ঠেসমূল বলা হয়। এই মুল গাছের কাণ্ডকে দৃঢ়ভাবে মাটির সাথে যুক্ত করে এবং গাছের ভারবহনে সহায়তা করে। এ গাছগুলো পরস্পরের সাথে জড়াজড়ি করে নিবিড় এবং দুর্গম পরিবেশ তৈরি করে।
৪. বেতফল :
বেত গাছের ফলকে বেতফল, বেত্তুন, বেথুন, বেথুল, বেতগুলা, বেতগুটি, বেত্তুইন ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। এটি বাংলাদেশ, ভুটান, কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ভারত, জাভা ও সুমাত্রা অঞ্চলের উদ্ভিদ।
বেতফল গোলাকার বা একটু লম্বাটে গোলাকার, ছোট ও কষযুক্ত টকমিষ্টি। এর খোসা শক্ত হলেও ভেতরটা নরম। বীজ শক্ত। কাচা ফল সবুজ ও পাকলে সবুজাভ ঘিয়ে বা সাদা রঙের হয়। এটি থোকায় থোকায় ফলে। প্রতি থোকায় ২০০টি পর্যন্ত ফল হয়। বেতগাছে ফুল আসে অক্টোবর মাসে আর ফল পাকে মার্চ-এপ্রিল মাসে। এটি অপ্রচলিত ফল হলেও অনেকের কাছে খুবই প্রিয়।
৫. আঁশফল বা কাঠ লিচু :
আঁশফল লিচু পরিবারের একটি সদস্য। ফলের উপরিভাগ মসৃণ, ফলের রঙ বাদামি, আকার গোল এবং লিচুর চেয়ে অনেক ছোট হলেও ফলের শাঁস অবিকল লিচুর মতো এবং ফল খেতে প্রায় লিচুর মতো বা লিচুর চেয়ে বেশি মিষ্টি। আঁশফলে প্রচুর পরিমাণে শর্করা ও ভিটামিন ‘সি’ থাকে। এ ফলের শাঁস সাদা, কচকচে। আঁশফলের বীজ গোলাকার চকচকে কালো এবং শাঁস বীজকে আবৃত করে রাখে এবং সহজেই বীজ থেকে আলাদা করা যায়।
বাংলাদেশে বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে এ গাছ দেখা যায়। গাছ ৮ থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এ গাছের ঠান্ডা সহ্য করার ক্ষমতা কম। চাষের জন্য বিশেষ কোনো মাটির প্রয়োজন না হলেও দো-আঁশ মাটিতে এটি ভালো জন্মে। সাধারণত এপ্রিল-মে মাসে বীজ সংগ্রহ করতে হয়।
৬. কাউ বা কাউফল:
কাউ বা কাউফল এক ধরণের অপ্রচলিত টক স্বাদের ফল। এর অন্যান্য নাম হলো- কাউয়া, কাগলিচু, তাহগালা, ক্যাফল, কাউ-গোলা ইত্যাদি। এর গাছ মাঝারি আকৃতির বৃক্ষ জাতীয়, ডালপালা কম, উপরের দিকে ঝোপালো। গাছের রঙ কালচে। সাধারনত জঙ্গলে এই গাছ দেখা যায়। ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ ও পাকলে কমলা বা হলুদ হয়। ফলের ভেতর চার-পাঁচটি দানা থাকে। দানার সাথে রসালো ভক্ষ্য অংশ থাকে, যা চুষে খেতে হয়।
৭. কেওড়া ফল :
কেওড়া ফল দেখতে অনেকটা ডুমুরের মতো। ভিতরে বড় বিচি থাকে। টক স্বাদের এই ফলটি বহু কাল আগে থেকেই বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের জনপ্রিয় খাদ্য। কাঁচা ফল লবণ সহকারে খাওয়া যায়। এই ফল থেকে কেওড়াজল তৈরি করা হয় যা বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও ফল দিয়ে টক রান্না করা হয়।
৮. ডেউয়া ফল :
অনেক স্থানে এটিকে ডেউফল, ডেলোমাদার, ঢেউয়া নামেও ডাকা হয়। সাধারণ গ্রামাঞ্চলে এই ফল বেশি দেখতে পাওয়া যায়। আগে গ্রামাঞ্চলে এই ফলের চাষ হলেও বর্তমানে এর চাষ অনেক কমে গেছে।
ডেউয়া গাছ চিরসবুজ বৃক্ষ প্রজাতির হয়ে থাকে। গাছ ২০-২৫ ফুট উঁচু হয়। ডেউয়া ফল কাঁঠালের মতো একটি গুচ্ছ ফল। এ ফলের বাইরের দিক অসমান। ভেতরে কাঁঠালের মতো কোয়া থাকে। কাঁচা ফল সবুজ, তবে পাঁকলে হলুদ বর্ণ ধারণ করে।
৯. শরীফা/ মেওয়া :
‘‘শরীফা’’ সুস্বাধু ফল। দিনে দিনে কালের গর্ভে হারিয়ে যাবার বাকী এই ফলটি। ‘ শরীফা’ পাতাঝরা ছোট আকারের গাছ। বাড়ির আঙ্গিনায় কিংবা পার্শ্বে , কখনো বা বাগানের সম্মুখ স্থানে, কারো রান্নাঘরের পার্শ্বেই শোভা পায় এই গাছটি। অনেকেই মনে করেন, কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের অনেক আগেই পর্তুগিজরা প্রশান্ত মহাসাগরীয়র কোনো এক দ্বীপ থেকে ভারতবর্ষে আতা নিয়ে আসেন। প্রাপ্ত তথ্যে আরো জানা যায় বর্তমানে থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ ফলের বাণিজ্যিক চাষ হয়। কিন্তু হারিয়ে যাচ্ছে মীরসরাইয়ের মতো গ্রামীণ জনপদ সহ দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে।
এই শরীফা ফলের অন্য নাম সীতাফল বা মেওয়া। গাছের কান্ড সোজা, কাষ্ঠল। উচ্চতায় ৩ থেকে ৫ মিটার। শীতকালে পাতা ঝরে যায় এবং বসন্তে নতুন পাতা গজায়, ফুল ধরে। ফুল এককভাবে বা গুচ্ছাকারে পাতার কক্ষে বা পুরনো শাখায় ফোটে। গাছে ফল ধরতে ৩ থেকে ৪ বছর সময় লাগে। ফুল ধরার প্রায় ৫ মাস পরে ফল পাকে। কাঁচা ফল খাওয়া যায় না। পাকা ফলের বীজ কালো এবং কাঁচা ফলের বীজ সাদা। একটি ফুলের মুণ্ড গর্ভাশয়গুলো থেকে একগুচ্ছ ফল হয়। পাকা ফল বলকারক, বাত-পিত্তনাশক, তৃষ্ণা নিবারক ও বমিরোধক। সীতাফলের শিকড় রক্ত আমাশয় রোগে উপকারী। অপরিপক্ব বীজ, পাতা, শিকড় ও ফলের মিহি গুঁড়া কীটনাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। চীন ও ফিলিপাইনে মানুষেরা মাথার উকুন দমনে সীতাফলের বীজের গুঁড়া ব্যবহার করে। শসা ও কুমড়ার জমিতে পাতার নির্যাস ব্যবহার করলে ৯১ ভাগ লাল পোকা দমন সম্ভব। একসময় বাড়ির আশপাশে, জঙ্গলে, রাস্তার ধারে ছোট ছোট সীতাফলের গাছ দেখা যেত। বর্তমানে আগের মতো আর চোখে পড়ে না।
১০. আতা :
আতা বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত ফল । যদিও বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ হয় না । ছায়াযুক্ত যে কোন মাটিতে এর গাছ জন্মায় । আতা দেখতে অনেকটা হ্রৎপিণ্ডাকার, উপরিভাগ মসৃণ ও জালের আকারে রেখাম্কিত থাকে ।
১১. দেশী গাব :
গ্রামাঞ্চলে একসময় প্রচুর গাব গাছ দেখা যেতো, যদিও গাব গাছ নিয়ে মানুষের রয়েছে উনেক ভয় , অন্ধকার যুগে মানে যখন বিদ্যুৎ পর্যাপ্ত ছিলনা তখন তাদের ধারণা ছিল গাব গাছে ভূত-পিচাশ বাস করে। এর সত্যতা পাওয়া না গেলেও ঘন পল্লবের পরিপক্ক একটি গাব গাছ ৩০/৩৫ মিটার লম্বা আর ৬৫/৭০ মিটার ব্যাসের হয়ে থাকে, দেশী গাব গাছ বহুবর্ষজীবী, এটি খুবই ধীরে ধীরে বাড়ে। গাব গাছকে নিরাপদ মনে করে পেঁচার মত সহজ সরল প্রাণী বাস করে, রাতের বেলায় পেঁচাকে ভূত পিচাশ ভেবে ভয় পায় না এমন লোকের সংখ্যা খুবই কম।
দেশী গাবের ফল গোলাকার । খেতে হালকা মিষ্টি ও কষযুক্ত সবুজ ফল পাকলে হলুদ বর্ণ ধারন করে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মতে আকার, আকৃতি ও খোসার বর্ণভেদে বেশ কয়েক ধরনের গাব ফল বৃক্ষ দেখা যায়। গাব গাছ যথেষ্ট প্রতিকূলতা (খরা, লবণাক্ততা, ঝড়-ঝঞ্ঝা, ছায়া প্রভৃতি) সহ্য করতে পারে এবং অযত্নে অবহেলায়ও এটি বেশ ভালো ফলন দেয় এবং এর মাধ্যমে পুষ্টি ঘাটতি অনেকাংশে পূরণ করা সম্ভব। বাণিজ্যিকভাবেও ফলটি স্থায়ী বাগানের উপাদান হিসেবে এবং মূল্যবান ফলবাগানের উইর্ন্ডবেকার হিসেবে চাষ করা যায়।
১২. পানিফল :
পানিফল বা শিংড়া নামে পরিচিত এটি। প্রায় ৩,০০০ বছর আগে চীনে এই ফলের চাষ হতো। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে এই ফল বেশি দেখতে পাওয়া যায়।
পানিফলের গাছ একটি জলজ উদ্ভিদ। পানিতে জন্মায় এই উদ্ভিদ এবং পানির নিচেই এই ফল হয়। ফলের গায়ে শিংয়ের মতো কাটা থাকে। তাই একে শিংড়া নামেও ডাকা হয়। কাঁচা ফল পানসে মিষ্টি স্বাদের। ফলের ভিতরের শাঁসটি খেতে হয়। কাঁচা, সিদ্ধ দু-ভাবেই খাওয়া যায় এই ফল। নানা ঔষধি গুণ রয়েছে এই ফলের।
১৩. অরবরই :
রবরই আমাদের দেশের একটি অপ্রচলিত ফল।এ ফলটি নোয়াড়, লবণী ও হরীফুল, নলতা, লেবইর, ফরফরি, নইল, নোয়েল, রোয়াইল, রয়েল, আলবরই, অরবরি নামেও পরিচিত। ছাল কিছুটা রুক্ষ। পাতা সরল, একান্তর, পুষ্পবিন্যাস পার্শ্ববর্তী ও গুচ্ছবদ্ধ। ফুল একলিঙ্গী ও একই গাছে সহবাসী।এটি ক্ষুদ্রাকৃতির গোলাকার হলুদ বর্ণের বেরি জাতীয় ফল।দেখতে হাল্কা হলুদ রং এর এই ফল এর ত্বক খাঁজ কাটা থাকে।পাতাবিহীন শীর্ষ শাখায় গোলাপি বর্ণের ফুল হয় এবং তা থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ক্ষুদ্রাকৃতির অরবরই জন্মে।জানুয়ারী মাসে গাছে ফুল আসে এবং এপ্রিল মাসে ফল পরিপক্ক হয়।মে মাসে আবার ফুল আসে এবং আগষ্ট মাসে ফল পরিপক্ক হয়।
১৪. বিলিম্বি ফল :
বিলিম্বি ফলটি অনেক স্থানে ‘বেলুম্বু’ কিংবা ‘বিলম্ব’ নামেও পরিচিত। টক স্বাদের এই ফলটি আগে বাংলাদেশের বহু স্থানে দেখতে পাওয়া গেলেও বর্তমানে এটি নির্দিষ্ট কিছু স্থানে ছাড়া তেমন দেখতে পাওয়া যায় না।
বিলিম্বি গাছ খুব বেশি বড় হয় না। গাছের পাতাগুলো হয় কামরাঙা গাছের মতো। বিলিম্বি ফলের আকার কিছুটা লম্বাটে, অনেকটা পটলের মতো। গাছে প্রচুর পরিমাণে ফল হয়। গাছের ডাল, এমনকি কান্ডেও ফল হয়। গাছ থেকে প্রায় সারা বছরই ফল পাওয়া যায়। বিলিম্বি ফল স্বাদে খুবই টক। এ ফল কাঁচা খাওয়া যায়। তবে এটি বিভিন্ন রান্নাতেই বেশি ব্যবহৃত হয়। রান্না করলে এর টকের পরিমাণ কমে যায়। কাঁচা ফল লবণ ও মরিচ সহযোগে খেলে বেশ ভালো লাগে। আর রান্নার ক্ষেত্রে ডাল কিংবা মাংসে বিলিম্বি ব্যবহৃত হয়।
১৫. বৈঁচি ফল :
দক্ষিণাঞ্চলের জনপ্রিয় একটি ফল এই বৈঁচি। বরিশাল অঞ্চলে কাঁটাবহরি নামে পরিচিত এটি। এছাড়াও অনেক স্থানে বুঁজ, ডঙ্কার ফল ইত্যাদি নামেও ডাকা হয় বৈঁচিকে। ঝোপ ঝোপ কাঁটাযুক্ত গাছ হয় বৈঁচির। ঘন ডালপালা, হালকা সবুজ গোলাকার পাতা হয় এই গাছে। গাছের গায়ের কাঁটা হয় প্রায় ৩/৪ ইঞ্চি লম্বা। কাঁটা খুব সুঁচালো ও বিষাক্ত।
সাধারণত ফাল্গুন-চৈত্র মাসে এ গাছে ফুল ধরে। জ্যৈষ্ঠ মাসে ফল পাকে। ফল দেখতে অনেকটা বরইয়ের মতো। কাঁচা ফল হয় সবুজ রঙের তবে পাকলে তা জামের মতো রঙ ধারণ করে। খুবই মজার স্বাদ বৈঁচির। টক মিষ্টি স্বাদের এই ফলের স্বাদ পরিচিত অন্য কোনো ফলের মতো নয়। ভিন্ন স্বাদের এই ফলটি আগে গ্রামগঞ্জের শিশু-কিশোরের খুবই প্রিয় ছিল।
১৬. মাখনা ফল :
দেখতে কুৎসিত হলেও এই ফলটি কিন্তু বেশ উপকারী। এর ওপর থেকে মোটা আবরণটুকু ফেলে দেওয়ার পরেই দেখা মেলে বাদামের দানার মতো বিন্দু বিন্দু ফলের অস্তিত্ব।হাওর-বিলের বহু পরিচিত ফল বলে হাওরপাড়ের বাসিন্দারা মাখনাকে ‘সুস্বাদু’ হিসেবে অভিনন্দিত করে রেখেছেন।পাতা এবং ফুলে রয়েছে রঙের দারুণ বৈচিত্র্য। এর পাতাগুলো ঢাল আকৃতির এবং কুঁচকানো। পাতাটির উপরেরভাগ ঘন সবুজ নিচের অংশ কালচে ও নীলাভ বেগুনি রঙের। পাতার প্রস্থ প্রায় ১ দশমিক ২ মিটার।
১৭. বকুল ফল :
১৮. চুকুর ফল :
চুকাই বাংলাদেশের বিলুপ্তপ্রায় ফলগুলোর একটি। উপগুল্মজাতীয় এ উদ্ভিদের পাতা ও ফল টক স্বাদযুক্ত ও ফল গাঢ় লাল বর্ণের।
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এটি বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমনঃ সিলেটে হইলফা, খুলনায় অম্বলমধু, ঢাকা ও মানিকগঞ্জে চুকুল, কুমিল্লায় মেডস নামে পরিচিত। এছাড়া চুকুর, চুকা চুকিকা, টেঙ্গাপাতা, চুকাপাতা ইত্যাদি নামেও পরিচিত।
১৯. পানকি চুনকি ফল :
২০. পদ্মফল :
পদ্মচাকা বা পদ্মফল হলো শাপলা গাছের এক ধরনের ফল যা খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। শাপলা গাছের আগায় ফুল থেকে ধীরে ধীরে এই পরিনত হয়|
বর্ষা মৌসুমে ব্যপকভাবে শাপলা জন্মায়। বর্ষা থেকে শরতের শেষ পর্যন্ত নদী-নালা, খাল-বিল, জলাশয়ের নিচু জমিতে এমনি এমনিই জন্মায় পদ্মচাকা।
২১. শালুক ফল :
শালুকগাছের গোড়ায় কতগুলো গুটি একত্র হয়। সেটাই শালুক ফল। কালো আবরণের খোসার ভেতরে থাকে এ সুস্বাদু ফল। গ্রামাঞ্চলে শালুক বেশ জনপ্রিয়। এটি সেদ্ধ করে বা আগুনে পুড়িয়ে ভাতের বিকল্প হিসেবে খাওয়া যায়। বর্ষা থেকে শরতের শেষ পর্যন্ত নদী-নালা, খাল-বিল, জলাশয়ের নিচু জমিতে প্রাকৃতিকভাবে জন্মায় এ শালুক।
২২. চালতা :
চালতা একটি বুনো ফলের নাম । এটা অনেকটা গোলাকৃতির, সর্ম্পূণরুপে সবুজ অথবা কিছুটা হলুদাভ সবুজ বর্ণে ফল । আমাদের দেশের শহর ও গ্রামের অনেকেই কম বেশী এ ফলটির সাথে পরিচিত,যদিও কেউ কেউ এ ফলটি খেতে পছন্দ করেন না । ফুলের মাংসল,পুরূ বৃত্তাংশ সমূহ স্থায়ীভাবে ফলের বীজ ও স্বচ্ছ তরল শাঁস অংশকে ঢেকে থাকে । ফুলের পুরু,মাংসল বৃত্তাংশের স্বাদ টক এবং মূলত:এই বৃত্তাংশই খাবার হিসেবে ব্যবহ্রত হয় । চালতার শাঁস অংশ ভক্ষণযোগ্য হলেও এটি স্বাদহীন হওয়াতে সাধারনত:খাওয়া হয় না
Thanks to everyone for reading this article