#সেলিব্রেটি_স্বামী #পর্ব_০৪ #Mst_Liza উনি জুতা পরা অবস্থায় আমার পায়ের উপরে উঠে হেঁটে আমার বুক পর্যন্ত এসে দাড়ায়। আমার ভেতরটা ব্যাথায় ফেটে যাচ্ছে।কিন্তু শরীর আমার নিস্তেজ।কিছু করতে পারছি না শুধুই শুনছি।উনি আমার মুখের উপরে জুতা পরা পা নিয়ে আসতেই আমি নিজের চোখদুটো বন্ধ করে দিয়।আর উনি লাফ দিয়ে নেমে যায় আমার উপর থেকে। -তোকে বিয়ে করে একদিন থেকে ভালোই হয়েছে।সেদিন যে থাপ্পড়টা দিলি তুই আমায়? তারপর গল্পটা সাজালাম।মিডিয়াতে জানিয়ে দিলাম স্ট্রাটার্স দিয়ে প্রথম থাপ্পড়ে বোরখাওলীর সাথে প্রেম।আর আগামী সপ্তাহে বিয়ে। সকলে ভাবে আমাদের মধ্যে অনেক প্রেম।আমাদের প্রেমের কাহিনী শুনে কত বড় বড় রোমান্টিক মুভির অফার দিয়েছে কতজন; তোকে যে কি বলবো না? মেরে ফেলার হলে তো তোকে আগেই মেরে ফেলতাম।কিন্তু যেই সার্ভিসটা দিচ্ছিস তাতে আর মারলাম না।তুই বেঁচে থাক আর চার দেয়ালের মধ্যে এই যন্ত্রণাটা ভোগ কর। কথাগুলো বলে আমাকে একটা লাথি দিয়ে উনি বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরলেন। আমি ব্যাথায় কাতরাচ্ছি।শরীরের যন্ত্রণায় ছটফট করছি।আমার দিকে তাকিয়ে দেখার ইচ্ছাটাও উনার নেয়। বরংচ বিছানায় শুয়ে আমার কান্নার কুনকুন শব্দ নিয়ে আমাকে বকা দিচ্ছেন।উনার ঘুমের নাকি খুব ডিস্টার্ব হচ্ছে? উনার ভয়ে নিজের মুখটা টিপে কাঁদছি। নিজের কান্না ভেতরে দমিয়ে রাখার চেস্টা করছি।সারাটা রাত আমি নিচে পরে থেকে ছটফট করেছি।আর উনি নাক ডেকে রাতে শান্তির ঘুম ঘুমিয়েছেন বিছানায়। ফজরের আজান কানে ভেসে আসে। আমি বুঝতে পারি সকাল হয়ে গেছে।উঠে বসার শক্তিটুকুও আমার নেয়। বুঝতে শিখেছি ধরে জীবনে কখনো এক ওয়াক্ত নামাজ কাযা দিয়েছি কিনা তাই নিয়ে সন্দেহ।কিন্তু আজ? আমি কিভাবে নামাজ পরবো? নামাজ না পরলে যে আমি আমার কস্টগুলো স্রষ্টাকে বলতে পারবো না।আর স্রষ্টা ছাড়া দুনিয়ায় এমন কেউ নেয় যে আমার কথা শুনবে। আমি উঠতে না পেরে মাটিতে গড়িয়ে দেয়াল পর্যন্ত আসি।তারপর তায়াম্মুম করে ওজু করে নিয়।আল-কোরআনের একটা আয়াত আছে।সেটা মনে পরে আমার,, কেউ যদি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে না পারে, বসে পড়বে! বসে না পারলে, শুয়ে পড়বে! শুয়েও না পারলে, ইশারায় নামাজ পড়বে!(বুখারী শরীফঃ১০৬৬) তবুও শরীরে নিশ্বাস থাকা পর্যন্ত অবশ্যই নামাজ পড়তে হবে। (15-সূরা হিজর 99) আমি শুয়ে নামাজ পরে নিয়।নামাজ শেষে নিরবে কাঁদি আর স্রষ্ঠার দরবারে দু'হাত তুলে লুটিয়ে পরি।স্রষ্ঠাকে সুধায়, হে আল্লাহ! তোমার মতোন আর কে আছে যে আমাকে বুঝবে? নিশ্চয় তুমি যা করো তার মধ্যেই বান্দার সুখ নিহিত থাকে। আমাকে বোঝার আর কেউ নাই। তাই তোমাকেই বলি, এই নির্মম অত্যাচার, এই নির্দরতা থেকে আমাকে মুক্তি দাও।না চাইতেও যাকে আমার জীবন সঙ্গী রূপে নিয়ে এসেছো হয় তার থেকে আমাকে পরিত্রাণ পাইয়ে দাও না হয় তার ভেতরে সঠিক বুঝ দান কর।-আমিন। আমার মোনাজাত শেষে ঘাঢ় ঘুরিয়ে দেখি উনি বিছানার উপরে বসে আছেন।কিছু একটা ভাবছেন।আমার দিকে ঘুরে তাকাবে আমি বুঝতে পেরে আমার মুখটা শাড়ির আঁচল দিয়ে ঢেকে নিয়।ঘুমের ভাঙ ধরে শুয়ে থাকি সেখানেই। উনি ধীর পায়ে এসে আমার পাশে বসেন।আমার খুব ভয় হতে থাকে। ভয়ে আমি নিজের চোখদুটোও শক্ত করে বন্ধ করে রাখি।উনি আমায় অবাক করে দিয়ে কোলে তুলে নেয়। তারপর বিছানায় শুইয়ে দিয়ে আমার সারা শরীরের ক্ষত গুলোতে আলতো হাত বুলায়।ক্ষত গায়ে তার স্পর্শ পেয়ে আমার যেন আরও বেশি ব্যাথা করছে।কিন্তু চিৎকার করার সাহস পাচ্ছি না।উনি যদি আমাকে হাতটা চলে আসে। আমি খুব শক্ত করে উনার পিঠ চেপে ধরি। -আমার ব্যাথা করছে খুব।পারছি না আর নিতে। আমার কন্ঠ পেয়ে উনি আমায় ছেড়ে দিয়ে আমার উপর থেকে উঠে আসেন।এক দৃষ্টিতে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকেন উনি। আর আমি উনার দিকে তাকিয়ে কাঁদি।উনি কিচ্ছু বলে না।শুধু চুপ হয়ে থাকেন।কিছুক্ষণ পর খুব জোড়ে খাটের পায়ার সাথে নিজের হাতে একটা ঘুষি মেরে আমার গালটা এসে শক্ত করে চেপে ধরেন উনি। -তুই ভাবলি কিভাবে তুই বললেই আমি তোকে ছেড়ে দেবো? সুপারস্টার আহান খান আমি।নিজের যা ইচ্ছা শুধু মাত্র তাই করি।কাউকে মানি না।কাউকে শুনি না।আজ পর্যন্ত কেউ আমার দিকে তাকিয়ে কখনো চোখ রাঙিয়ে কথা বলে নি।আর তুই কিনা সকলের সামনে আমার গালে চর মারলি? এতো সাহস তোর? কি ভাবিস তুই নিজেকে? উনি আমার হাত দুটো বিছানার সাথে খুব শক্ত করে চেপে ধরে। -আমার খুব কস্ট হচ্ছে আহান! আপনার মনে কি একটুও দয়া-মায়া নেই? উনি আমার গালে একটা চর বসিয়ে দেয়। চুলের মুঠি টেনে ধরে বলে, -না, ওসব আমার মনে নেই।আর তোর প্রতি আমার করুণাও হয় না।তোকে কস্ট দিতে পারলেই আমার শান্তি।শরীরের তৃপ্তি। কথাটা বলে একটানে উনি আমার ব্লাউজের হাতা দু'পাশ থেকে টেনে ছিঁড়ে ফেলেন।দাঁত দিয়ে কামড়ে সামনের হুকগুলো সব খুলে ফেলেন। তারপর পৈচাসিক রূপে ঝাপিয়ে পড়ে আমার শরীরের উপর। আমার বুকে অজস্র কামড় দিতে থাকেন উনি।আমার খুব যন্ত্রণা হয়।তাতে উনার কি! উনি আমার গলায়, বুকে, ঠোঁটে কামড়ে কামড়ে ক্ষত বিক্ষত করে ফেলছে।দুই ঘন্টা ধরে উনার এই শারীরিক অত্যাচার চলছে।তারপর উনি ক্লান্ত হয়ে গেলেলার কোণ ঘেঁষে সূর্যের হালকা কিরণ এসে পরেছে রুমে।আমার দু'চোখের পানিতে বালিশ ভিজে যাচ্ছে।ওয়াশরুম থেকে সাওয়ার নিয়ে বের হয়েছেন উনি।আমার দিকে রাগি দৃস্টিতে তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরে আছেন।কিছুক্ষণ পর খেয়াল করেন আমি নিরব।উনি এগিয়ে এসে আমার হাত খুব শক্ত করে খামছে ধরে আমাকে টেনে উঠিয়ে বসান।আর বলেন, -এখনো শুয়ে আছিস তুই? কিছুক্ষণ পরই সব প্রেস, মিডিয়া চলে আসবে।বিয়ের সময় তো বোরখা পরে ছিলি।তোকে দেখার জন্য কত মানুষ মরিয়া হয়ে আছে সেটা কি তুই জানিস? আর তাও শুধুমাত্র এই সুপারস্টার আহান খানের ওয়াইফ বলে। এখন যা! ওঠ! গিয়ে রেডি হয়ে নে! আমার মুখের উপরে তোয়ালে ছুড়ে মারলেন উনি।তারপর একটা প্যাকেট এনে আমার সামনে রাখলেন। -সাওয়ার নিয়ে এটা পরে নিস। আমি কিচ্ছু বলছি না।এক ধ্যানে তাকিয়ে আছি উনার দিকে।আর ভাবছি একটা মানুষ কতোটা নির্দয়, নিষ্ঠুর আর পাষাণ হতে পারে? -হে আল্লাহ! এতো নোংরা কেন এই লোকটা? (মনে মনে) -কিছু বললি? -হুমমম। আমার দিকে তাকান আহান। আপনার মনে কি এতোটুকুও অনুশোচনা নেয়? সারাটা রাত যেই অত্যাচার চালিয়েছেন আমার শরীরের উপর।তারপরও বলছেন আমাকে রেডি হয়ে প্রেস, মিডিয়ার সামনে নিয়ে যাবেন? উনি আমার হাত মোচড় দিয়ে আমাকে নিজের বাহুতে চেপে ধরেন।দাঁত কটমট করে বলেন, -এই!! কোন কথা না বলে তোকে আমি যেটা বলেছি সেটা কর! -কিভাবে করবো আহান? আমি তো পারছি না উঠে দাড়াতে।একটু ভালো ভাবে দেখুন না কি করেছেন আপনি আমার সাথে? উনি আমার দিকে তাকিয়ে হাতটা ছেড়ে দেয়। মুখে আঙুল ভরে দিয়ে দাঁত দিয়ে হাতের নক কামড়াতে থাকে আর কিছু একটা ভাবতে থাকে।তারপর আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলে, -না, এই অবস্থায় তোকে প্রেস, মিডিয়ার সামনে নেওয়া যাবে না।তুই আগে একটু সুস্থ হ। আমাকে বিছানায় ধাক্কা দিয়ে চলে যান উনি।উনি যাওয়ার পর আমি বিছানায় আবার শুয়ে পরি।কম্বলটা গলা অবদি উঠিয়ে নিয়ে হিচকি তুলে কাঁদতে থাকি।কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পরি আমি।যখন ঘুম ভাঙলো চোখের সামনে মাকে দেখতে পেলাম।মা আহানের রুমের আলমারি খুলে ভালো ভালো শাড়ি, গহনা একটা ব্যাগে ভরছে।আমি ব্যাথায় উঠতে পারছি না।তাই শুয়ে থেকেই বলছি, -একি মা! এসব কি করছো তুমি? -থাপ। দেখছিস না কি করছি? এতো বড়লোক জামাই পেয়েছি।সুপারস্টার আহান খানের শ্বাশুড়ি মা বলে কথা।একটু সাজ পোশাকের দরকার আছে না? আমি কম্বলটা আমার বুকে ভালোভাবে জড়িয়ে নিয়ে আস্তে করে উঠে বসলাম।মাকে বললাম, -মা প্লিজ এটা করো না।উনার কাছে তুমি ছোট হয়ে যাবে।তোমাকে চোর ভাববেন উনি।প্লিজ মা ওগুলো রেখে দাও। মা এগিয়ে এসে আমার গালে একটা জোড়ে থাপ্পড় মেরে বসে। -বেয়াদ্দপ মেয়ে।নিজের মাকে চোর বলিস। এই সব তুই একা ব্যবহার করবি তাই না? এতো শাড়ি, গহনা পারবি তুই একা পরে শেষ করতে? শোন আমি এই সব নিয়ে যাচ্ছি।দেখেই যখন ফেলেছিস তখন তোকে বলেই নিয়ে যাচ্ছি।তাই একদম চুরি বলবি না। তোদের অনেক টাকা আবার কিনে নিস। মায়ের থাপ্পড়ে আমার একটুও খারাপ লাগছে না।কারণ এমন থাপ্পড় আগে কত খেয়েছি,, মায়ের হাতে।আমার এসব সহে গেছে।আমি আবার মাকে বলি, -এগুলো নিও না মা।যেখানের জিনিস সেখানেই রেখে দাও।প্লিজ মা আমায় ভুল বুঝো না।এটা জানাজানি হলে উনার পরিবার তোমার অসম্মান করবে।তোমাকে নানান কথা শোনাবে।আমি সইতে পারবো না মা রেখে দাও ওগুলো। আমার কথার কোনো তোয়াক্কা না করেই মা ওগুলো নিয়ে বেড়িয়ে যায়। মা যাওয়ার পর পরই উনি রুমের ভেতরে ঢোকে।হয়তো মায়ের হাতের ব্যাগটা উনি দেখে নিয়েছেন। আল্লাহ! এখন কি হবে? উনি তো আমাকেও ভুল বুঝবে।নানান কথা শোনাবে। (মনে মনে) আমাকে অবাক করে দিয়ে উনি বলে ওঠেন, -কিরে, আর কতক্ষণ এইভাবে বিছানায় পরে থাকবি? যে কেউ রুমে এসে গেলে কি বলবে? যা সাওয়ার নিয়ে কাপড় পরে নে। একটু চুপ থেকে, আচ্ছা! তুই উঠতে পারবি নাকি ওয়াশরুমে আমি নিয়ে যাবো? আমি উনার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। কোনো কথা বলছি না।যেভাবে অত্যাচার করেছেন উনি আমার উপর তা মনে পরলেই প্রচন্ড রাগ হচ্ছে।কিন্তু উনাকে কিছু বলার সাহস আমার নেয়।উনি যে আমার স্বামী।উনার পায়ের কাছেই আমার জান্নাত। উনি আমার শরীর থেকে কম্বলটা ফেলে দেয়।তারপর আমার শরীরে কাল রাতের পড়নের শাড়িটা দিয়ে ঢেকে আমাকে কোলে তুলে ওয়াশরুমে নিয়ে যায়। চলবে,,,,,
0
4