অস্ট্রেলিয়ার এক দল বিজ্ঞানী দাবী করেছেন, মৌমাছির বিষাক্ত নির্যাস ক্ষতিকর স্তন ক্যান্সার সেল ধ্বংস কারতে সক্ষম।
এরই মধ্যে গবেষণাগারের পরীক্ষায় তারা সফলও হয়েছেন। তবে এতে আরও পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করেন ওই বিজ্ঞানীরা।
মৌমাছির ওই বিষাক্ত নির্যাসের উপাদানটির নাম ‘মেলিটিন’। এ মেলিটিন দুই রকম ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সক্ষম। যার একটি স্তন ক্যান্সার। এখন পর্যন্ত এর চিকিৎসা বেশ জটিল।
যে দুই ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে মেলিটিন কাজ করে, চিকিৎসকরা তাকে বলেন, ‘ট্রিপল-নেগেটিভ’ এবং ‘এইচইআরটু-এনরিচড’।
বিশ্বব্যাপী নারীরা সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত হন স্তন ক্যান্সারে। যুগ যুগ ধরে গবেষণাগারের পরীক্ষায় অনেক ধরনের রাসায়নিক উপাদান ক্যান্সার সেলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে সক্ষম বলে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্ত মানবদেহে প্রয়োগের পর ভিন্ন ফল লক্ষ্য করা গেছে।
মৌমাছির শরীরের বিষ নিয়ে গবেষণায় অতীতেও দেখা গেছে, এই বিষের মধ্যে ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান আছে। যা ‘মেলানোমা’ ধরনের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে কার্যকারী।
ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ায় ‘হ্যারি পারকিনস ইনস্টিটিউট’-এ এই গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে ‘ন্যাচার প্রিসিশিন অঙ্কোলজি’ জার্নালে।
গবেষণায় কী পাওয়া গেছে?
৩শ’র বেশী পুরুষ ও নারী মৌমাছির উপর এ পরীক্ষা চালানোর পর গবেষক দলের প্রধান কিয়ারা ডুফি বলেছেন, নারী মৌমাছির বিষাক্ত নির্যাসকে আমরা খুবই শক্তিশালী দেখেছি। দেখা গেছে এক ঘণ্টার মধ্যে ক্যান্সার কোষগুলোকে তারা ধ্বংস করে ফেলেছে। এতে তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও লক্ষ্য করা যায়নি।
গবেষকরা আরও লক্ষ্য করেন, বিষাক্ত ওই পদার্থের মধ্যকার ‘মেলিটিন’ ক্যান্সার সেলের বৃদ্ধিকেও আটকে দেয়।
এখন পর্যন্ত ‘ট্রিপল-নেগেটিভ’ স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসায় অস্ত্রোপচার বা রেডিও থেরাপি অথবা কেমোথেরাপি দেয়া হয়।
এ আবিষ্কার কি ভবিষ্যতে কাজে লাগবে?
ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার প্রধান বিজ্ঞানী পিটার ক্লিনকেন এটাকে যুগান্তকারী আবিষ্কার বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেছেন, মানবদেহের কোনো চিকিৎসায় প্রকৃতির কোনো উপাদান ব্যবহার করতে হবে, সেটা এ গবেষণা দেখিয়ে দিচ্ছে।
তবে গবেষকরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ক্যান্সার চিকিৎসায় এ আবিষ্কারকে একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের বলে ধরে নিতে হবে। ক্যান্সার চিকিৎসার ওষুধ আবিষ্কারে আরও অনেক গবেষণা করতে হবে।
thank u