পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শেষ হওয়ার আগেই বিশ্বের প্রথম করোনা প্রতিষেধক আবিষ্কারের দাবি করে বসেছে রাশিয়া। তা নিয়ে নানা প্রশ্ন, বিতর্কের মধ্যেই আশার আলো দেখাচ্ছে ভারতে তৈরি কোভিড টিকা ‘কোভ্যাক্সিন’। প্রথম পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে এই টিকা ‘নিরাপদ’ বলে দাবি করলেন বিজ্ঞানী গবেষকরা। যদিও পরীক্ষামূলক প্রয়োগের সম্পূর্ণ ফল এখনও আসেনি। করোনার মোকাবিলায় কোভ্যাক্সিন কতটা কার্যকরী হবে, তা জানার জন্য শুরু হয়েছে স্বেচ্ছাসেবকদের নমুনা সংগ্রহ।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির (এনআইভি) সাহায্য নিয়ে এই টিকা তৈরি করেছে হায়দরাবাদের ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা ভারত বায়োটেক। প্রথম ধাপে মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে দেশের ১২টি কেন্দ্রে। তার মধ্যে রয়েছে দিল্লি ও পটনার এমস, রোহতকের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট (পিজিআই) অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস, নাগপুরের গিলুরকার হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মতো প্রতিষ্ঠান। প্রাথমিক ভাবে ৩৭৫ জন স্বেচ্ছাসেবক কোভ্যাক্সিনের ডোজ নিয়েছেন।
এই সব প্রতিষ্ঠানগুলির সূত্রে খবর, অগস্টের মধ্যেই প্রথম ধাপের ফল সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের কাজ সারা হয়ে যাবে। সেই রিপোর্ট দ্রুত জমা দেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে। তার পরে শুরু হয়ে যাবে দ্বিতীয় দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ।
তবে তার আগে প্রথম দফার এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগের একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ের ফল দেখে চিকিৎসক-বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এখনও পর্যন্ত এটা নিশ্চিত যে, এই টিকা নিরাপদ। কারণ টিকা নেওয়া ভলান্টিয়ারদের এক জনের শরীরেও কোনও অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায়নি। উল্লেখযোগ্য কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কারও শরীরে তৈরি হয়নি।
পিজিআই রোহতকে টিকা প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক সবিতা বর্মা বলেন, ‘‘এই টিকা নিরাপদ। আমাদের প্রতিষ্ঠানে যে সব স্বেচ্ছাসেবক টিকা নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত আমরা কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া পাইনি।’’ তবে টিকার কার্যকারিতা কতটা, তা এখনও বলার সময় হয়নি বলে জানিয়ে সবিতা বর্মা বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত আমরা এটা বলতে পারি যে, টিকা নিরাপদ। টিকার কার্যকারিতা জানতে দ্বিতীয় পর্যায়ে আমরা নমুনা সংগ্রহ শুরু করেছি।’’