ব্রেকআপ

0 4
Avatar for abir997
4 years ago

প্রথম ব্রেকাপের পর ফাহাদের চোখগুলো উপড়ে ফেলেছিলাম। ছেলেটার মায়াবী চোখদুটো দেখে যে কেউ প্রেমে পরতে বাধ্য।প্রায় ২ মাস হসপিটালাইজড থাকার পর মারা যায় সে।দ্বিতীয় ব্রেকাপের পর আবীরকে আর কেউ খুজে পায় নি।সবাই ভেবেছিল হয়তো সে সবকিছু ছেড়ে কোথাও চলে গিয়েছে নয়তো আত্মহত্যার করেছে।কিন্তু আমি জানি ওর শরীরটা আমি টুকরো টুকরো করে বস্তা ভরে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছিলাম।তৃতীয় বার বেশি কিছু করিনি। টগবগে ফুটানো গরম পানিতে মরিচের গুড়া মিশিয়ে হাত পা বেধে ঢেলে দিয়েছিলাম নীরবের গায়ে।পোড়া চামড়া আর গলা খসে পড়া মাংস গুলোতে ধানী লঙ্কা গুড়ো ছিটিয়ে দিয়েছিলাম।

আরহাম,রায়েদ,আয়াজ আর নিলয়ের বেলায় একটু ভিন্নতা ছিল। কারো শরীর এসিড ঢেলে ঝলসে দিয়েছিলাম,কারো চামড়া তুলে মাংসের মধ্যে পোকামাকড় ছেড়ে দিয়েছিলাম,কারো বা শরীরের মাংস কেটে কুচি কুচি করে তার চোখের সামনেই কুকুরকে খাইয়েছি।

অভ্রর ঠোটদুটো খুব সুন্দর ছিল।প্লেবয় হলেও ছেলেটা কখনো স্মোক করেনি।ওর ঠোট দুটো প্রথমে সেলাই করে দিয়েছিলাম তারপর ব্লেড দিয়ে পুরো ঠোট টা কেটে উঠিয়ে নেই।আহান এর সারা শরীরে অসংখ্য পেরেক গেথে দিয়েছিলাম।প্রতিটা পেরেকের মাথায় সায়ানাইড মেশানো ছিল।ড্রিল মেশিনের আঘাত সহ্য করতে পারেনি বেচারা রেহান।মাথার মধ্যে মেশিন চালানোর ১০ সেকেন্ডের মধ্যে ঘেলু বের হয়ে মারা গিয়েছিল সে।

এতটুকু লিখেই কলমটা নামিয়ে রাখলাম। আর লিখতে ইচ্ছা করছে না।ডায়েরীটা বন্ধ করে কফির মগটা হাতে নিয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে দাড়ালাম।ঠান্ডা বাতাসে বেশ ভালোলাগছে এখন।মৃদু বাতাসে চুলগুলো উড়ছে। কখনো বা আছড়ে এসে মুখের উপর পড়ছে।আমি আনমনে সেগুলো ঠিক করছি আর ডায়েরিতে লিখা ছেলেগুলোর কথা ভাবছি। তাদের কারো সাথেই আমার কোন সম্পর্ক ছিল না।তাদের কারো কারো ফুল নামটা পর্যন্তও জানি না আমি।গার্লস গ্রুপে একবার এক মেয়ে ব্রেকাপের পোস্ট দিয়েছিল।টানা দশ বছর প্রনয়ের পর ছেলে অতীত ভুলে নতুন সম্পর্কে জড়িয়েছে।রাগে সেদিন কমেন্ট করেছিলাম

-এমন জানোয়ারদের মেরে ফেলা উচিত।

.

.

আমার কমেন্টের রিপ্লাই না দিয়ে সেদিন সে ইনবক্সে নক দিয়ে বলেছিল যাভাবেই হোক সে ফাহাদকে মারতে চায়। আমি যেন সব ব্যবস্থা করে দেই।হঠাত একটা প্রস্তাবে প্রথমে বেশ ভড়কে গিয়েছিলাম আমি।ফেক আইডি চালানোর সুবাদে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় কেউ জানত না। সেই সুযোগে আমিও রাগ মিটিয়ে নেই ফাহাদের উপর।আমি ভেবেছিলাম হয়তো এইখানেই শেষ। কিন্তু না! ফাহাদকে মারার পর ব্যাপারটা ব্যাপক আকার ধারন করতে লাগল।কারো দীর্ঘ সম্পর্কের ব্রেকাপ হলেই আমাকে জানাতো।রীতমতো ট্রেন্ড হয়ে দাড়িয়েছিল।আমি কে,কি করি,কোথায় থাকি তার চেয়ে বেশি ব্রেকাপের পর কিভাবে মারব, ডেড বডি পাবে কি না এসব নিয়ে কৌতুহলের মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল।ধীরে ধীরে গ্রুপের বাইরেও ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে গেল।কিন্তু এসব কে করে বা কিভাবে হয় কেউ জানতে পারেনি হয়তো বা কেউ জানায় নি ।ইদানীং ব্রেকাপের সংখ্যা কমে এসেছে। যেকোন ছেলেই এখন ব্রেকাপ করার আগে দুইবার ভাবে।ব্রেকাপের পরে এরকম পরিনতির কথা কল্পনা করলে যে কারোরই রূহ কেপে উঠবে।যতই হোক ব্যক্তিগত ইমোশন নিয়ে খেলার অধিকার কেউ কাউকে দেয় নি,কখনো দিবেও না ।কফির মগে শেষ চুমুকটুকু দিয়ে রুমে আসতেই ফোনটা কেপে উঠল।ছোট ছোট দুইটা কম্পন ক্ষুদে বার্তার আগমন জানান দিচ্ছে।ফোন হাতে নিয়ে ম্যাসেজ বক্স ওপেন করতেই দুই লাইনের একটা বার্তা চোখের সামনে ভেসে উঠল

-আমি আর তোমার সাথে রিলেশনে থাকতে পারব না।আমাকে ক্ষমা করে দিও।

আড়াই বছরের সম্পর্কটাকে রুদ্র এভাবে মাঝপথে ছেড়ে চলে গেল ভাবতেই চিনচিন করে একটা তীব্র ব্যাথা অনুভব করলাম নিজের মধ্যে।ফোনটা রেখে কলমটা হাতে নিলাম আবার।রুদ্রের হাতের আঙ্গুলগুলো আমার খুব পছন্দ ছিল।ভাবছি ওর হাতদুটো কেটে বয়ামে ভরে রাখব।ডায়েরিটা খুলে একটা নতুন পাতায় কয়েকটা শব্দ গুছিয়ে নিলাম।একফোটা পানি গড়িয়ে পরল চোখ বেয়ে।

5
$ 0.00
Sponsors of abir997
empty
empty
empty
Avatar for abir997
4 years ago

Comments