ঘুম থেকে উঠে পত্রিকার দিকে তাকিয়েই লজ্জা পেলাম। এও কি সম্ভব! কীভাবে সম্ভব? এদেশে যেখানে পকেটমারের কাছে মোটামুটি মানের একটা পিস্তল থাকে, ছিনতাইকারীর কাছে কাটা বন্দুক থাকে, চাঁদাবাজের কাছে একে ৪৭ না হোক, ওরকম ভারী কিছু থাকে দু-একটা; সেখানে আমার ভাই, সিরাজগঞ্জের, স্যরি, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার শ্রমিক লীগের সভাপতি নাজমুল হক দেওয়ানের হাতে স্রেফ একটা রাম দা! প্রতিপক্ষকে ধাওয়া করছেন মামুলি লোহার পাত সদৃশ একটি জিনিস দিয়ে! সেটা দিয়ে কাজ সারতে হলে হাত উপরে তুলতে হয়, সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করে কোপ দিতে হয়, প্রচণ্ড ক্যালরি খরচ হয় সেই কাজ সম্পাদন করতে।
কষ্টও হয় অনেক।
আরো একটা ব্যাপার হচ্ছে, রাম দাটা ঠিক রাম দা নেই। করোনার এই মহাকালে যারা বলেছিলেন- আমরা করোনার চেয়ে শক্তিশালী, তারপর সেই যে ঘরের ভেতর লুকালেন, বের হলেন না আর, এই রাম দাও সম্ভবত লুকিয়ে ছিল। করোনায় কাটাকাটি কম ছিল, গলা কিংবা বুকের সঙ্গে ঠেকানোর কাজও কম ছিল, মানুষজন তেমন ঘর থেকে বের হননি, বসে থাকতে থাকতে মানুষের শরীরে জমে চর্বি, রাম দায়ে জমেছিল জং। তাড়াহুড়া করে অপারেশনে যাওয়ার জন্য ভাই আমার ধার দেওয়ারও সুযোগ পাননি। এটা দিয়ে কারো গলায় কোপ দিল, পুরোটা কাটল না, ঝুলে রইল! ওই অবস্থাতেই কোপ খাওয়া মানুষটা ফ্যাসফাসে গলায় বলল, ‘কিরে নাজমুইল্ল্যা, তোর তো ভবিষ্যত নাই। কোপ দিয়া একটা মানুষের গলাই কাটতে পারোস না, বড় কোনো নির্বাচনে জিতে গদিওয়ালা চেয়ারে বসে দুদিন পরপর বহু মানুষের গলা কাটতে হবে, তখন কী করবি রে পাগলা!’
অথচ একটা পিস্তল কিংবা কাটা রাইফেল হলে ট্রিগারে কেবল একটা আঙ্গুল, তারপর হাসতে হাসতে---ঠা ঠা...।
দেশের ক্ষমতাসীন দলের একটি অঙ্গ সংগঠনের সভাপতির হাতে এই আম-জাম্বুরা কাটার অস্ত্র দেখে লজ্জা বোধ করছি, তীব্র প্রতিবাদ করছি এবং বলিষ্ঠ আহ্বান জানাচ্ছি- এই মানির মান রক্ষার্থে অন্তত একটা চাইনিজ রিভলবার হাতে দেওয়া হোক তার।
নাহলে মান-সম্মান যে মাটিতে গড়াগড়ি খাবে!
এইডা কি ছিল ভাই৷ অনেক মজা পাইছি