বাংলাদেশ প্রতিদিন

0 9
Avatar for Tanjuma
4 years ago

সাজেক বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন। রাঙামাটির একেবারে উত্তরে এর অবস্থান। কিন্তু সড়ক পথে গেলে যেতে হয় খাগড়াছড়ি হয়ে। সাজেকে গিয়ে ‘সাজেক’ নামে কোন গ্রাম বা লোকালয় পাওয়া যাবে না, পাবেন, তিন পার্বত্য জেলার (সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম) সর্ব উত্তরের সর্বশেষ বিডিআর বিওপি এবং আর্মি ক্যাম্প! এটাই সাজেক পয়েন্ট। পাহাড়ের উপরিভাগ পরিস্কার করে আর্মি এবং বিডিআর-এর পাশাপাশি দু’টি ক্যাম্প।

সাজেক আর্মি ক্যাম্পের কাছাকাছি পাহাড়ী আদিবাসীদের দু’টি পাড়া আছে… রুই লুই এবং কংলাক। সাজেক পয়েন্টে যাবার একটু আগেই পরবে রুই লুই পাড়া। এই পাড়াটির উচ্চতা ১৭২০ ফুট। এটি ক্ষুদ্র জাতীগোষ্ঠী পাংখোয়া-দের বসতি। রাস্তার দু’ধারেই ঘর রয়েছে। চা খাওয়ার ছোট্ট দোকান রয়েছে। দেখতে পাবেন, পাহাড়ী মেয়েরা হাতে টানা তাঁতে কাপড় বুনাচ্ছে অথবা কেউবা মোটা বাঁশের পাইপে তামুক খাচ্ছে। পাহাড়ী জনপদের জীবন-যাত্রা দেখতে আপনার ভাল লাগবে।

সাজেক আর্মি ক্যাম্প হতে আরও তিন কিঃমিঃ কাঁচা রাস্তা পেড়িয়ে কংলাক পাহাড়। কংলাক পাহাড়ের নিচ পর্যন্ত চাঁদের গাড়ী চলাচল করে। তারপর খাড়া পাহাড় বেয়ে অনেকখানি উঠতে হবে হেঁটে। পাহাড়ের মাথায় বড় একটা পাথরের চাট্টান পেরিয়েই কংলাক পাড়া – ছবির মত সুন্দর একটি আদিবাসী গ্রাম !

প্রতিটি বাড়ীর সামনেই রয়েছে ফুলের বাগান। ১৮০০ ফুট উচ্চতায় এই পাড়ায় পাংখোয়া আর ত্রিপুরা জনগোষ্ঠির প্রায় ৩০টি পরিবারের বসতি। এখানে আপনি দেখতে পাবেন পাহাড়ের ঢালে ছোট্ট একটি চা বাগান, পাহাড়ের বিভিন্ন অংশে বিক্ষিপ্ত বেশ কয়েকটি কফি গাছ… আর পাহাড়ের ঢাল বেয়ে একটু নীচে নামলে রয়েছে কমলা বাগান। গ্রামের কারবারী (গ্রাম প্রধান) আপনাকে স্বাগত জানিয়ে বলতেই পারে… কি খাবেন….. টি, কফি অর অরেঞ্জ জুস?! এখানে আপনি দূর্লভ সুগন্ধি ‘আগর’ গাছেরও দেখা পাবেন। এক কথায়… চমৎকার একটি গ্রাম দেখার সৌভাগ্য হবে আপনার!

ভারতের মিজোরামের সাথে পাংখোয়াদের যোগাযোগ ও যাতায়াত রয়েছে, রয়েছে আত্মীয়তাও! এখানকার অনেক পাংখোয়া ছেলে-মেয়ে মিজোরামের ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলির বোর্ডিং-এ থেকে লেখাপড়া করছে। মিজোরাম সীমান্ত পেরুতে এদের কোন পাসপোর্টি ভিসা লাগেনা।

কিভাবে যাবেন

খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাবার রুটটা এমন... খাগড়াছড়ি – দিঘীনালা – বাঘাইহাট – কাসলং – মাসালং – সাজেক। খাগড়াছড়ি থেকে মাসালং পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিঃমিঃ রাস্তা ভাল। কিন্তু মাসালং থেকে সাজেক পর্যন্ত ১৭ কিঃমিঃ রাস্তা খুবই খারাপ। রাস্তা পাকা করার কাজ করছে আর্মি। রিস্ক নিয়ে অনেকেই মাইক্রেবাসে নিয়ে সাজেকে যায় বটে, তবে ফোর হুইল ড্রাইভ ভাল কন্ডিশনের গাড়ী ছাড়া এই চড়াই-উৎরাই ভাঙ্গা রাস্তা পার হওয়া খুবই কষ্টকর। বরং মাসালং থেকে চাঁদের গাড়ী ভাড়া নেয়া যেতে পারে। ভাড়া প্রতিদিনের জন্য ২০০০ টাকা। সাজেকে পৌঁছানোর আগে পাঁচ কিঃমিঃ রাস্তা আপনাকে একটানা শুধু উপরের দিকে উঠতে হবে।

রাতে থাকার জায়গা

সাধারণের রাতে থাকার জন্য কোন রেষ্ট হাউজ বা কটেজ গড়ে উঠেনি এখনও। একমাত্র থাকার জায়গা আর্মিদের রেস্ট হাউজ। ইসিবি ১৯ এর নির্মাণ করা দু’রুমের চমৎকার একটি রেস্ট হাউজ! তবে আর্মি রেফারেন্স ছাড়া এখানে জায়গা হবেনা আপনার। আর্মি রেফারেন্স থাকলেও অন্ততঃ ১৫ দিন আগে বুকিং দিতে হবে এখানে থাকার জন্য।

সাজেক ঘুরে দেখবার জন্য এক বেলাই যথেষ্ট! সাথে নিজেদের গাড়ী থাকলে সাজেক থেকে ফেরার পথে মারিশ্যা অথবা লংগদু ও মায়ানিমূখ দেখে আসতে পারেন। দু’টোই গুরুত্বপূর্ণ পাহাড়ী জনপদ! দিঘীনালা থেকে মারিশ্যা এবং লংগদু-এর রাস্তা ভাল।

খাগড়াছড়িতে কোথায় থাকবেন:

পর্যটকদের জন্য খাগড়াছড়িতে রয়েছে অনেক আবাসিক হোটেল। পর্যটন মোটেলে থাকতে পারেন, এছাড়া আছে জিরান হোটেল, হোটেল শৌল্য সুবর্ণ, থ্রী স্টার হোটেল, হোটেল লবিয়ত। কিছু হোটেল এর ফোন নাম্বার দেওয়া হলোঃ

পর্যটন মোটেলঃ ৬২০৮৪ ও ৬২০৮৫

হোটেল শৌল্য সুবর্ণঃ ৬১৪৩৬

জিরান হোটেলঃ ৬১০৭১

হোটেল লিবয়তঃ ৬১২২০

চৌধুরী বাডিং: ৬১১৭৬

থ্রি ষ্টার: ৬২০৫৭

ফোর ষ্টারঃ ৬২২৪০

উপহারঃ ৬১৯৮০

হোটেল নিলয়ঃ ০১৫৫৬-৭৭২২০৬

1
$ 0.00
Avatar for Tanjuma
4 years ago

Comments