আমরা অনেকেই সাজগোজ বা পরিপাটি থাকাটা শুধুৃ মাত্র নিজের বয়ফ্রেন্ড বা স্বামীকে খুশি জন্য করে থাকি।একবার কী এভাবে ভেবে দেখেছি????নিজে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ভালোবেসে একটু নিজেকে দেখি না।একটু কাজল দেই,লিপস্টিক দিয়ে নিজেকে রাঙাই।মাসে একবার পার্লারে যাই না কেন শুধু নিজের জন্য।প্রতিটি বয়সের একটি নিজস্ব সৌন্দর্য থাকে।সেটাকে উপলব্ধি করে নিজের প্রতি যত্নশীল হতে তো ক্ষতি নেই।আমি স্ত্রী,আমি মা,আমি বৌমা।আমার কাছে সবার অনেক চাওয়া।একটা সময় সন্তান নিজের পথ বেছে নেয়।সবাই পর হতে থাকে। সারাদিন খেটে যে সংসারটি আগলে রেখেছেন তার বিনিময়ে কী পাচ্ছেন? না আমি বলছি না সংসার,ধর্ম ছেড়ে স্বাধীনচেতা বা বিপরীত হতে।তবে নিজের প্রতি যত্নশীল না হওয়াটা এক প্রকার দাসত্ব ছাড়া আর কিছুই না।
এখন শহরের জীবনে সেই আগের কঠিন জীবন নেই।আমার জানা আছে এমন অনেক গৃহিণী আছেন যারা সন্তান স্কুলে যাওয়ার পর ঘুম দেন।তারপর কাজের লোক এসে সব গুছিয়ে দেওয়ার পর,কাজ করেন।আবার বাচ্চাকে স্কুল থেকে নিয়ে এসে খেয়ে দেয়ে আবার একটা শান্তির ঘুম।তারপর বিকেল থেকে সিরিয়াল দেখা শুরু।তারা একটি গল্পের বই পড়েন না গান ও শুনেন না।তবে আমি সবার কথা বলছি না।কিছু মায়েদের কথা বলছি।এদের সাথে না সন্তানদের সখ্যতা গড়ে ওঠে না স্বামী বা তার পরিবারের কেউ।
আমাকে ভুল বুঝবেন না।আমি সবার কথা বলছি না।অনেকেই আমরা বাচ্চাদের সময় দেই।আদরে,যত্নে লালন পালন করি।বাচ্চাদের সিকিউরিটি বা স্কোপের অভাবে কাজ করিনা। কিন্তু সময়টা নষ্ট করিনা।অনেকে এখন লিখালিখি করেন।তাদের একটি নিজস্ব পরিমন্ডল আছে,আছে নিজস্বতা।তাদের সুন্দর উপলব্ধিময় লিখা বা ভালোবাসার কথা মনটা জুড়িয়ে যায়। তারা তাদের ভেতরের আমিকে আবিষ্কার করতে জানে এবং নিজেকে মূল্যায়ন করতে জানে।
আবার অনেকেই আছেন যৌথ পরিবারের ঠেলা সামলাতেই শেষ। পরিবারের সবার জীবন খেদমত করতেই জীবন শেষ।কিন্তু তার শ্বশুর শ্বাশুড়ী,স্বামী, সন্তান কেউই তার খবর রাখেন না।কিন্তু তাই বলে নিজের খাবারটা আমি কেন সময় মতো খেয়ে নিবো না?আমা, স্বামী,সন্তানদের পছন্দের খাবার কেন শুধুই সাজিয়ে রাখব??তাই বলে কী নিজের পছন্দের খবর নিব না?একটা সময় নিজের অধিকার ছেড়ে দিতে দিতে ভুলেই যান যে আসলে কি হওয়ার ছিল???আপনি কি বুঝতে পারছেন,আমি অসুস্থ হলে বা অপুষ্টিতে ভুগলে তাতে কারো কোনো মাথ ব্যাথা নেই।হাজার হাজার উদাহরণ আছে খুব অল্প বয়সে মা বিধবা হয়ে সন্তান নিয়ে জীবন কাটিয়ে দেন। কিন্তু হাতে গুনে কয়েকজন স্বামী পাবেন যারা সন্তানদের নিয়ে জীবন পার করে দিয়েছেন।
ছোট বেলায় মাকে দেখতাম একটি ভালে খাবার সবাই মিলে খেতে পাবর কিন্তু মা তবু খেতেন না,সন্তান-স্বামী আবার খাবে এই ভেবে।এটাই নাকি নারীর চিরাচরিত ধর্ম।কিন্তু সারাজীবন শুধু নিজেকেই বঞ্চিত করে যাবো কেন? সন্তান কিন্তু খেয়ে পরবর্তীতে মায়ের জন্য কিছু বাঁচিয়ে রাখে না।এমম মায়ের চেহারা থাকে ফ্যাকাশে,কপালের পড়ে অল্প বয়সেই ভাঁজ।হয়তো তখন স্বামীকে দেখতে লাগে ইয়াং।কারণ তিনি সময় মতো সব পাচ্ছেন।গর্ভে ধারণ করার মতো কঠিন কাজটিও তাকে করতে হয় না।ছেলেদের শারীরিক গঠন এমন অর্থাৎ তারা চল্লিশেও ফিট।কিন্তু অনেক নারীই চল্লিশেেে পান বয়স্কের উপাধি। এভাবেই হীনমন্যতার সূচনা।খাবার একটি অনেক বড় বিষয়।মায়েরাা সংসার এর সব হিসাব করতে করতে নিজের অপুষ্টির কথা ভুলে যান।অথচ সন্তান দাধী মায়ের ক্যালসিয়াম,ক্যালরির প্রয়োজন খুব বেশি।তা না হলে হবে কোমরে ব্যাথা,হাত-পা ব্যাথা সহ নানা জটিলতা।যা তালে অল্প বয়সেই বৃদ্ধাা বানিয়ে দিবে।মায়ের অযত্ন অবহেলায় তাকে তিলে তিলে ক্ষয়ে যেতে তার শরীর।অথচ তার যত্নে আপনি একটিভ থাকেন।তাই একটু নিজের যত্ন নিলে তো ক্ষতি নেই।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ওই খেলাটা না হয় একটু খেলি।জিজ্ঞেস করি আমি দেখতে কেমন আয়না? নিজের দিকে তাকিয়ে একটু হাসি।তারপর যত্ন করে নিজের কফিটা বানাই।মাঝে মাঝে নিজের জন্য গান বাজাই।নিজের জন্য নিজেই উপহার দেই।নিজেকে এভাবে প্রেজেন্টবল রাখাই হলো স্মার্টনেসের অংশ।
আমার নানি একটা সময় পর কুঁজো হয়ে চলতেন।শুনেছি নয়টি সন্তান জন্ম দিয়েছেন কিন্তু নিজের যত্ন নিজে করেননি।আর পরিবার তো করেই না।তার কাছে শুনেছি বিরাট সংসার,রাখাল বাড়ির আশ্রিতা সবার জন্যই রান্না করতে হতো।সব কিছুর তদারকি করতেই তার সময় চলে যেতো। মাঝে মাঝে খেতেই ভুলে যেতেন।আর সন্তান জন্ম নেওয়ার পর মাত্র ৩০ দিন সময় পেতেন কাজ থেকে অব্যাহতির।আবার নানী-দাদীরাই পরবর্তী সময় অন্য একটা মেয়েকে যে কিনা ছেলের বউ কিংবা ভাবীকে উদাহরণ দিবে,আমাদের সময় আমরা কতো কাজ করতাম বা তোমার এতো খাই খাই স্বভাব কেন।পরিবারের সবাই খাবে,তারপর সবার শেষেে তুমি খাবে।
মোট কথা আমি আমাকে ভালো না বাসলে অন্যদের থেকে আশা করি কেমনে?তাই সবার আগে আমি আমার।আমার ভালোর খেয়াল আমি মা রাখলে কে বাই রাখবে??? তাই আমরা আমাদের কথা ভাবি।এই জীবনটা অনেক বড়। তাই নিজেকে ভালোবাসো।নিজের জন্য করো একটু খানি।নিজে অসুস্থ হয়ে কিংবা স্বামী থেকে বয়সে ছোট হয়ে,, বয়স্কা উপাদান নেওয়ার কোমো কৃতিত্ব নেই।
আমরা মেয়েরাা কেমন জানি কারো ছত্রছায়া না হলে ভিষণ কষ্টেে থাকি। হ্যাঁ একা জীবনটা অনেক কঠিন।আমি আমার পরিচিত বা উচ্চ পদস্থিত নাীরকে দেখেছি,কেন তার সাথে তার স্বামী নেই।কেনই বা তার প্রিয় মানুষটি নেই।ফেসবুে একের পর এক স্ট্যাস্টাস দিয়ে থাকেন তার কষ্টকর জীবনের নিঃসঙতার করুণ কাহিনি ইতিবৃত্ত।কিন্তু এই জীবনকে মোকাবিলা করতে হবে। যদি তেমন দিন আসলে নয় কেন এভাবে ভাবি....
নিজেকে নিজে দেখা/নিজেকে ভালোবাসা/সময়টা শুধু নিজের জন্য/নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলা।