কিয়ামুল লাইল

2 7
Avatar for Sunshine11
4 years ago

যারা তাহাজ্জুদ পড়তে পারেন না, তারা অন্তত কিয়ামুল লাইল আদায় করুন। কিয়ামুল লাইল তুলনামূলক সহজ। তাহাজ্জুদের সমান না হলেও এর অনেক গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে।

❑ কিয়ামুল লাইলের পরিচয়:

‘কিয়ামুল লাইল’ শব্দ দুটোর অর্থ হলো, রাতের দাঁড়ানো। অর্থাৎ, রাতে ইবাদতের জন্য দণ্ডায়মান হওয়া, অবস্থান করা।

ইশার নামাজের পর থেকে ফজরের ওয়াক্ত শুরুর পূর্ব পর্যন্ত রাতের যেকোনো সময় ইবাদতের জন্য দাঁড়ানো বা জেগে থাকাকে কিয়ামুল লাইল বলে। সেই ইবাদত হতে পারে—নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, যিকর, দু‘আ, ইলম চর্চা করা ইত্যাদি। তাহাজ্জুদের জন্য ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়া শর্ত হলেও কিয়ামুল লাইলে এই শর্ত নেই। তাই, কিয়ামুল লাইল আদায় করা অনেক সহজ।

❑ কিয়ামুল লাইলের মর্যাদা ও গুরুত্ব:

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি রাতের বেলা সিজদারত থাকে বা (ইবাদতে) দাঁড়ানো থাকে, আখিরাতের ব্যাপারে শঙ্কিত থাকে এবং নিজ রবের অনুগ্রহ প্রত্যাশা করে, সে কি তার সমান, যে এমনটি করে না?’’ [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৯]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমাদের নিয়মিত কিয়ামুল লাইল আদায় করা উচিত। এটি তোমাদের পূর্ববর্তী নেককার লোকদের অভ্যাস। এই নামাজ তোমাদেরকে আল্লাহর নিকটে পৌঁছে দেবে, ভুল-ত্রুটিগুলো মিটিয়ে দেবে, গুনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখবে এবং শরীর থেকে রোগ দূর করবে।’’ [তিরমিযি, আস-সুনান: ৩৫৪৯; হাদিসটি সহিহ]

খুব ভালোভাবে জেনে রাখতে হবে—ঘুম থেকে জেগে নামাজের মাধ্যমে তাহাজ্জুদও আদায় হয় আবার কিয়ামুল লাইলও আদায় হয়। কিন্তু ঘুম থেকে না জেগে ইবাদত করলে শুধু কিয়ামুল লাইল হয়; তাহাজ্জুদ হয় না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবিগণ রাতে ঘুম থেকে জেগে ইবাদত করতেন। তাই এটিই সর্বোৎকৃষ্ট পদ্ধতি। কিন্তু কেউ রাত জাগতে না পারলে ইশার পর বা ঘুমানোর আগে ২/৪/৬/৮/১০ রাকাত নফল পড়ে ঘুমাতে পারেন। তাহাজ্জুদের সমান না হলেও কিয়ামুল লাইল হিসেবে এর অনেক প্রতিদান পাওয়া যাবে। পাশাপাশি ইশার পর বা ঘুমানোর আগে তিলাওয়াত, যিকর, দরুদ, দু‘আ, ইস্তিগফার, ইলম অর্জন ইত্যাদি নেক আমলও কিয়ামুল লাইল হিসেবে গণ্য হবে।

❑ একটি রূপরেখা:

যারা শেষ রাতে ওঠতে পারেন না, তাই রাতের প্রথমাংশে বা ঘুমানোর আগে উত্তমরূপে কিয়ামুল লাইল আদায় করতে চান, তারা ইশার নামাজের পর কয়েক রাকাত নফল নামাজ পড়ে নিন। এরপর অথবা ঘুমের আগে কুরআনের কিছু অংশ তিলাওয়াত করুন। বিশেষত সূরা মুলক ও সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত গুরুত্বের সাথে পড়ুন। কুরআন থেকে ১০০ আয়াত পড়তে পারলে সর্বোত্তম কাজ হবে। এর বিশাল ফজিলতের কথা হাদিসে এসেছে। এরপর কিছু সময় দরুদ-ইস্তিগফার ও দু‘আ করুন। সর্বশেষ, ঘুমানোর পূর্বের আমলগুলো করতে করতে অজু অবস্থায় ঘুমিয়ে যান। ঘুমের সময় তাহাজ্জুদের জন্য উঠার পাক্কা নিয়ত করে ঘুমাবেন। তাহলে, উঠতে না পারলেও শুধু সৎ নিয়তের কারণে তাহাজ্জুদের সওয়াব পেয়ে যাবেন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি রাতে (তাহাজ্জুদের) নামাজ আদায়ের ইচ্ছা করা সত্ত্বেও ঘুম তাকে পরাজিত করে দিলো, তার আমলনামায় রাতে নামাজ আদায়ের সওয়াবই লিখা হবে। তার জন্য ঘুম (আল্লাহর পক্ষ থেকে) সাদাকাহ হিসেবে গণ্য হবে।’’ [আবু দাউদ, আস-সুনান: ১৩১৪; নাসায়ি, আস-সুনান: ১৭৮৩; হাদিসটি সহিহ]

......................,,..........,,.............,,..........................

2
$ 0.01
$ 0.01 from @TheRandomRewarder
Sponsors of Sunshine11
empty
empty
empty
Avatar for Sunshine11
4 years ago

Comments