বনী ইসরাইলদের নবী হযরত মুসা ( আঃ ) এর উপর নাজিলকৃত হিব্রু ভাষার কিতাব তৌরাত শরীফের মাঝে মাঝে হযরত মুহাম্মাদ ( সাঃ ) এর নাম লেখা ছিল । খামছা নামে এক ব্যক্তি ভাবলেন আমাদের নবী হলেন হযরত মুসা ( আঃ ) । এ কিতাবে হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) এর নাম আশা অবশ্যই ভুল । তিনি এ ভেবে । সারাদিন পরিশ্রম করে কিতাব হতে হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) এর নাম তুলে দিলেন । সকালে আবার দেখেন নামটি যথাস্থানে লেখা হয়ে গেছে । এভাবে কয়েকবার । চেষ্টা করার পর আল্লাহ তার উপর লানত নাজিল করল । এতে করে লােকটি সাপে পরিণত হয়ে গেল । আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করার পর আল্লাহ তাকে বললেন যার নামটি তুমি তোমাদের কিতাব হতে মুছে ফেলার ব্যর্থ চেষ্টা । একটি ঘটনা করেছিলে সেই আখেরী নবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) এর দর্শন যদি তােমার জীবনে তুমি পাও তাহলে তুমি মুক্তি পাবে । সেই থেকে সাপটি ধীরে ধীরে গিয়ে সাওর পর্বতে অবস্থান করে । মহানবী ( সাঃ ) তার জীবদ্দশায় একদিন হাজেরানে মজলিশে বললেন , হে আমার উম্মতগণ আমাকে আমার মাতৃভূমি মক্কা হতে মদীনায় হিজরত করতে হবে । উপস্থিত সকলে বলল ইয়া রাসুল্লাল্লাহ ( সাঃ ) আপনি কি হিজরত করবেন আপনার ইচ্ছায় না আল্লাহর হুকুমে । তখন নবীজী বললেন আল্লাহর হুকুমে । তখন ছাহাবারা বলল তাহলে আমাদের বলার কিছুই নাই । কে আমার সংগে যাবে ? তখন আবু বকর ( রাঃ ) বলে উঠলেন হুজুর আমি আপনার সংগে যাব । উত্তরে নবীজী বললেন তুমি তাহলে প্রস্তুত থেকো । আর হযরত আলী ( রা: ) কে বললেন , তুমি আমার আমানতের জিম্মাদার হবে । নির্দিষ্ট দিনে হযরত আলী ( রা: ) তার বিছানায় নবীর চাদর মুরি দিয়ে শুয়ে থাকলেন । প্রিয় পাঠক হযরত আলী ( রা: ) এর কি কখনও মৃত্যু ভয় ছিল না ? নবীকে তথা নিজ মুর্শিদকে কতখানি ভালবাসলে এটা করা যায় । হযরত আলী ( রা: ) বিছানায় শুয়ে আর কাফেরেরা তার চারদিকে ঘিরে ফেলেছে । একজন খোলা তরবারী নিয়ে হুংকার দিয়ে ঘরে ঢুকে যায় । হযরত আলী ( রা: ) কে জিজ্ঞাসা করে তােমাদের নবী কোথায় ? উত্তরে বলে জানি না । তখন কাফেরদের মধ্যে হাহাকার পড়ে যায় , হায় নবী পালিয়েছে । চারিদিক ছুটাছুটি করে না পেয়ে শত্রুরা ছুট দিল সাওর পর্বতের গুহার দিকে । গুহার নিকট যেয়ে দেখে মাকড়শা জাল বুনেছে এবং কবুতরে ডিম পেরেছে । তাই চতুর্দিক ঘুরা ফেরা করে না পেয়ে দিশেহারা হয়ে তারা ফিরে আসে । এদিকে গুহার ভেতরে ঢুকে আবু বকর ( রাঃ ) দেখে গুহার ভেররে অনেক গুলি ছিদ্র । সাথের রুমাল ছিড়ে ছিদ্রগুলি বন্ধ করে দেয় । একটা ছিদ্র বাকি থাকতে রুমাল শেষ হয়ে যায় । আবু বকর ( রাঃ ) ঐ ছিদ্রটি নিজ পায়ের আঙ্গুল দিয়ে বন্ধ করে রাখে । এগুলি করে সাপের ভয়ে ।এমন সময় একটি সাপ ছােবল মারে হযরত আবু বকর ( রাঃ ) এর পায়ে । তখন হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) ঐ পায়েরে উরুতে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিলেন । নবীর ঘুম ভেংগে যাবে এ ভয়ে হযরত আবু বকর ( রাঃ ) আর পা সরায়না । বিষের যন্ত্রনায় হযরত আবু বকর ( রাঃ ) চোখে জল এসে যায় । এক ফোটা গড়িয়ে পড়ে নবীর গায় । অমনি দয়াল নবী চেতন হয়ে যায় । আবু বকর ( রাঃ ) কে ডেকে বলেন কাঁদছ কেন আমাকে বল । হযরত আবু বকর ( রাঃ ) জানায় হুজুর সাপে ছােবল মেরেছে আমার পায় । নবীজী নিজের থুথু মােবারক আবু বকরের পায়ে লাগিয়ে দেয় । হযরত আবু বকর ( রাঃ ) সাথে সাথে ভাল হয়ে যায় । তখন হারিছা সাপটি বলে নবীগাে আপনার দর্শনের আশায় যুগ যুগ ধরে এখানে আছি । কিন্তু আবু বকর বড়ই নির্দয় । আপনার দেখার বাসনায় আমি তাকে ছােবল দিয়েছি , আমাকে মাফ করে দিন । আমিও ছিলাম একজন মানুষ । তৌরাত কিতাব হতে আপনার নাম মুবারক মুছে ফেলার কারণে আমার এ পরিণতি । আমি আমার মুক্তির আশায় এ কাজটি করেছি , আমাকে আপনি মুক্তি দিন । তখন হারিছা মুক্তি পায় ।
🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🌺🌺🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁