আজকে ভার্সিটিতে ক্লাস শেষে যখন বের হতেই তকন দেখি আকাশটা ঘন কালো মেঘে ছেয়ে গেছে মনে হচ্ছে প্রচণ্ড বৃষ্টি হবে তাই এই আবহাওয়াতে একদম বাসায় যাওয়া যাবে না। এমনিতে আমার এই আবহাওয়া খুব ভাল লাগে তবে এই তাড়াতাড়ি বাসায় যাওয়ার তারাই কিছু ভালো লাগছে না। তাই এই বৃষ্টি মাথায় নিয়েই রওনা হতেই দেখি এর মধ্যে ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়তে শুরু হয়ে গেলো।
এই রেহ! আমি তো ছাতা আনতেই ভুলে গেছি তাই আরসামনে এগিয়েও কোনো লাভ নেই। এই জন্য আমি আবার ভার্সিটিতে গিয়ে ঢুকলাম।
মনে মনে ভাবছি কোথায় যাব ।এমন সময় হঠাৎ মনে হলো যে আমি তো ক্লাসেও যেতে পারি তাই যেই ভাবা, সেই কাজ।
তবে আমি ক্লাসে গিয়েই অবাকের চেয়েও কুব বেশি অবাক হলাম আর আমার বেশ হাসিও পাচ্ছিল ! দেখলাম একটা মেয়ে কান্না করছে এটা দেখে তো আমার খুব হাসি পাচ্ছিল কিন্তু তবুও হাসি চাপাতে পারছি না আমি।
--আমি জিজ্ঞেস করলাম কিরে ইনসিয়া , এভাবে কাঁদছিস কেন।
তখন ইনসিয়া আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকলো অবশ্য এর একটা কারণ ও আছে আর এমনিতে ইনসিয়ার সাথে সাধারণত কেউ কথা বলে না! আমিও তো এই টানা দুই বছর যাবত একসাথে ক্লাস করছি তবুও আমারো ওর সাথে কোনোদিন কথা বলা হয়নি। তবে ও অবশ্য অনেক বড়লোক আর অনেক মেয়ে তার সাথে ভাব জমানোর চেষ্টা করে তবে কেউই অরণীর সত্যিকারের বন্ধু না।
--ইনসিয়া বললো জানিস সূর্য, আমাকে না রনি অনেক বাজে বাজে কথা শুনিয়েছে আজ!
আর এতক্ষণ পরে আমি এখন ইনসিয়ার কান্নার অর্থ খুঁজে পেলাম। রনি আমাদের ক্লাসের সবচেয়ে স্মার্ট ছেলে ওর সাথে কথাবার্তায়, চালচলনে কেউই তুলনা দিতে পারে না আর ও অনেক ধনীও।
যখন থেকে আমি ভার্সিটির প্রথম ক্লাস শুরু করেছি আমি সেদিন থেকেই দেখছি, ইনসিয়া রনির পিছনে ঘুরছে। কিন্তু রনি তাকে তো কোনো পাত্তা দিচ্ছেই না, উল্টো যা নয় তাই বলে যায় মেয়েটাকে। এমনকি ওর ইচ্ছে মত ওকে দিয়ে এটা ওটা করিয়ে নিচ্ছে এমনকি ক্লাসের যত এ্যাসাইনম্যান্ট আছে সে সব তো ইনসিয়া ওকে করে দেয়। এতকিছুর পরেও মেয়েটাকে বাজেভাবে গালিগালাজ করে এই রণি। শুধু ইনসিয়ায় বোকাসোকা আনস্মার্ট একটা মেয়ে বলে এই রনি না পারেও বটে!
তবে আমি রনিকেও কোনো দোষ দেওয়া যায় না কারণ সে আমাদের ক্লাসেরই সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ে ঝর্ণাকে পছন্দ করে। এই ঝর্ণা আর রাজকে আমি প্রায়ই সনয় একসাথে ঘুরতে আর আড্ডা দিতে। এতকিছুর পরেও দেখছি অরণী হাল ছাড়েনি!
--আমি জিজ্ঞেস করলাম কি বলল রাজ তোকে আজকে?
--ইনসিয়া বললো আমি আজকে রাজকে আমার মনের কথা আর আমার ফিলিংসের কথা সব বলেছি কিন্তু ও আমাকে কি বলল জানিস?
এটা বলে সে আবারো ফোঁপাতে শুরু করল।
--আমি বললাম আরে বলনা! এত নাটক করছিস কেন রে।
--তখন ইনসিয়া বললো রণি বলেছে যে কোনোদিন পেঁচা দেখেছ? আমি বললাম কেনো ও বললো আয়নায় গিয়ে দেখ তাহলেই খুব ভালোকরে দেখতে পাবে! এই বলে সে তার বন্ধুদের সাথে সবাই মিলে হাসাহাসি করেছে।
এই কথা বলে অরণী আবার খুব কাঁদতে শুরু করল। তখন আমি ওর দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলাম আর বললাম,
--শুন ইনসিয়া তোকে কি বলি কি হয়েছে জানিস? আমরা না সবাই সবসময় সোনার হরিণের পিছনে ছুটতে থাকি এমন কিছু যা আমাদের কোনোদিনই হবার নয় কিন্তু আমরা তার দিকেই হাত কারাই। যেমনটা তুই আমাকেই ধর নে না , আমি ভার্সিটির প্রথম দিন থেকেই ঝর্ণার উপরে ক্রাশ খেয়েছিলাম। কিন্তু তারপর আস্তে আস্তে যখন দিন গেল তখন নিজে থেকেই বুঝলাম, ওর পিছনে ছুটে কোনো লাভ নেই। এই জণ্য এখন আমার আর ওকে নিয়ে মনের মাঝে কোন ফিলিংস কাজ করে না।
--তখন ইনসিয়া বললো কিন্তু আমি যে রনিকে সত্যিই খুব ভালবাসি আর আমি ওকে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারি না..
তখন আমি আর আমার হাসি ঠেকিয়ে রাখতে পারলাম না ওর সামনে হাসতে শুরু করলাম আর হাসতেই হাসতেই বললাম,
--যে শুন ইনসিয়া তাহলে তো তোকে একদম ম্যাডাম ফুলির মত চেঞ্জ করতে হবে নিজেকে। তুই যদি ঝর্ণার মত না হস তাহলে তো রণি তোর দিকে ফিরেও তাকাবে না রে ..
আমি বুঝতে পারলাম আমার কথায় ইনসিয়ার চোখ চকচক করছে!ও আমাকে জিজ্ঞেস করল,
--আমি কিভাবে নিজেকে চেঞ্জ করব সূর্য? বলনা প্লিজ !
তখন আমার হাসি এখন আর থামছেই না। এই পাগল মেয়েটা আমার মজাকেও যে সত্যি ভাববে, তা কে জানত?
তখন আমি কতক্ষণ হাসার পর ওকে খুব সিরিয়াস লুক নিয়ে বললাম,
--দেখ ইনসিয়া তোকে তোর পুরো গেট আপে চেঞ্জ আনতে হবে! আর তর এই খ্যাত মোটা ফ্রেমের চশমা তার সাথে এই অতি সাধারণ লুক, সব বদলাতে হবে তোকে।
--আমি আর বললাম যে তোর চেহারা তো ঠিকই আছে আর গায়ের রঙও ভাল তবে তুই তো একটু সাজিসও না রে। আর তোর এত লম্বা চুলে বেণী করিস কেন রে৷ তুই আসলেই একটা খ্যাতের ডিব্বা!
--তখন ইনসিয়া আমাকে জিজ্ঞেস করলো আচ্ছা, এগুলো চেঞ্জ করার জন্য কি কি লাগে?
--আমি তখন বললাম তোর সাইকিয়াট্রিস্ট আর ফ্যাশন ডিজাইনার।
--তখন ও আমাকে বললো এই সাইকিয়াট্রিস্ট আর ফ্যাশন ডিজাইনার? ওরা কি করবে রে ?
--আমি বললাম ওরা তোর এই বোকা বোকা ভাব আর তোর এই বোকা বোকা চেহারা চেঞ্জ করবে রে বুদ্ধু কোথাকার!
তখন বৃষ্টি থেমেছে এই জন্য আমি আর বসে থেকে এই বোকা মেয়েটার বোকা বোকা কথা আর শুনতে চাইলাম না তাই ইনসিয়াকে এখানে রেখেই আমি হাসতে হাসতে চলে এলাম বাসায়।
এর কয়েকদিন পর আমি দেখলাম ।
ইনসিয়া এখন আর রনির পিছনে যাচ্ছে না , বরং আমার পিছনে ঘুরছে এই মেয়ে । আর সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে হাসছে আমার তখন মনে হচ্ছিলো যে আমি একটা উটপাখির মত গর্তে করে সেখানে মাথা নিজেকে মাটি দিয়ে চাপা দেই!আমু তখন কি যে করব কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না ।
আর আমাদের ক্লাসের সবাই ভাবছে যে অরণী এখন রাজকে ছেড়ে আমাকে ধরেছে এমম সময় সুজন তো সরাসরি বলেই বসল,
--কিরে সূর্য, তোর তো দেখছি দারুণ লাভ হয়েছে রে দোস্ত!
--আমি বললাম কেনরে দোস্ত?
--সুজন বলল আরে ব্যাটা আগে মিষ্টি তো খাওয়া!
--আমি বললাম কেন রে কারণ না বললে মিষ্টি খাওয়াব কিভাবে আগে কারণ বল ?
--তখন ও বলল আরে ব্যাটা এত ধনী একটা মেয়েকে পটাইলি, এখন তো তুই সোনায় সোহাগা রে !
--আমি বললাম ধনী সেটা আবার কে?
--তকন আমার বন্ধু বললো কেন রে আমাদের ক্লাসের ধলা চশমা, ইনসিয়া !
--তখন আমি বললাম ফালতু কথা একদম বাদ দে। আমি গেলাম।
এই বলে আমি চলে আসলাম আর ভাবলাম ক্লাস এর ওদের কাছ থেকে কিভাবে পালাব? কি বলব ওদেরকে আমি?
তাই ভাবলাম আজকে আমাকে আবার ঐ পাগল মেয়ে ইনসিয়ার সাথে আমার কাছে যেতে হবে আর আজ আমি ,ওর মুখোমুখি হবোই ।
--আমি ইনসিয়াকে বললাম কি চাস রে তুই?
-ইনসিয়া বললো কি রে এতবার তোকে আমি ডাকি তবুও , তোর কি কানেও ঢোকে না নাকি? নাকি তউই কানে তুলো দিয়ে রেখেছিস?
--আমি বললাম দেখ আমি কানে ভালই শুনি। তুই কি বলবি সরাসরি বল তো।
--তখন ইনসিয়া সরাসরি বলল সরাসরি বলার জন্যই তো তোর পিছনে এতদিন ঘুরছি!
--আমি বললাম আরে বলনা!
--তকন ঐ বললল সেদিন তুই যে সাইকিয়াট্রিস্ট আর ফ্যাশন ডিজাইনারের কথা বলেছিলি, ইটা একটু খুলে বল না আমাই ।
-- তখন আমি তাকে এই ব্যাপারে বললাম যে সাহায্য করলে তুই আমাকে আমার ব্যাপারে সাহায্য করবি?
--তখন ও বললো আচ্ছা করব।
--তকন আমি বললাম এই শোন, আমি যেটা এতদিনে বুঝেছি, তা হল, তোর সবকিছুতেই স্মার্টনেসের অভাব আছে যেমন তোর চলাফেরা, কথাবার্তায় চেঞ্জ আনার জন্য একটা সাইকিয়াট্রিস্ট আর গেট আপে চেঞ্জ আনার জন্য একটা ফ্যাশন ডিজাইনার লাগবে এটার কথাই আমি সেদিন বলেছিলাম।
তখন কোনোমতে একটা কিছু ইনসিয়াকে বুঝিয়ে দিলাম এর কারণহলো আমার এখন দরকার ওর কাছ থেকে দূরে থাকার আর এর জন্যই তো আমি ক্লাসমেটদের বিরক্তিকর হাসাহাসি থেকে বাঁচাতে চায়ছি ।
তকন ইনসিয়া আমার কথা শুনে বলল,
-- আমি সেটা নাহয় বুঝলাম আর আমার পরিচিত একজন সাইকিয়াট্রিস্ট আছে কিন্তু ফ্যাশন ডিজাইনার কোথায় পাই দোস্ত বল না।
তখন আমি আমার পকেট থেকে আমার চেনাজানা এক আপুর কার্ড বের করে ইনসিয়ার হাতে ধরিয়ে দিলাম আর তাকে বললাম এটা আমার চেনাজানা একজনের কার্ড তাই আমি সবসময় পকেটেই রাখি।
তকন ইনসিয়া আমার দিকে তাকিয়ে একটু হালকা করে মুচকি হাসল। আমি তো এতদিনে ওর হাসি দেখিনি আজ দেখে সত্যি খুব অবাক হলাম আর তাকিয়ে রইলাম। মেয়েটার হাসিটা তো খুব সুন্দর একেবারে যেন বুকে গিয়ে বিঁধে যে দেখবে সে তো মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকবে , এমন সময় আমি হঠাৎ শুনলাম ও বলছে,
--কিরে,তুই কিছু বলছিস না যে?
তকন আমি ওর কা শুনে বাস্তবে ফিরে এসে বললাম,
--আমি আর কি বলব?
--ইনসিয়া বললো জিজ্ঞেস করছিলাম, তোকে কি ব্যাপারে যেন সাহায্য করার কথা বলছিলি। কাজটা কি বল ?
-- তখন আমি বললাম ও, হ্যা। কাজটা হল, এই এক বছর তুই আমার সামনে ভার্সিটিতে আসতে পারবি না বুঝতে পারছিস। তোর যদি কোনো দরকার হয় তাহলে তুই আমাকে ফোনে বলবি, আর সবার সামনে কোনো কথা বলতে পারবি না। তুই তো দেখছিসই, সবাই আমাদেরকে নিয়ে কেমন উল্টাপাল্টা গুজব ছড়ায়, এতে তোরই ক্ষতি হবে দোস্ত ।
--তখন ইনসিয়া বলল আচ্ছা ঠিক আছে। আর কিছু করতে হবে ?
--তখন আৃি বললাৃ আমার জন্য এইটুকু করলেই চলবে রে ।
এটা বলে আমি আমার মোবাইল নাম্বারটা ইনসিয়ার হাতে দিয়ে চলে আসলাম।
তখন প্রায় রাত ১ টা বাজে এমন সময় হঠাৎ দেখি আমার মোবাইলে অচেনা একটা নাম্বার থেকে মেসেজ এসেছে। আমি দেখলাম তাতে লেখা-
'তুই কি সত্যিই মনে করিস আমি চেঞ্জ হতে পারবো?-ইনসিয়া ।
আমার কেন যেন ওর প্রতি এতটা মায়া হলো যে আমার মনে হলএই পাগল মেয়েটাকে সাহস দেই।তাই ঐ মুহূর্তে আমি ওকে সাহস দিয়ে মেসেজ পাঠালাম, যে 'আমার বিশ্বাস, তুই একদিন নিজেকে চেঞ্জ করে খুব সহজেই রনির মনে জায়গা করে নিতে পারবি। তখন দেখবি, তুই না, রনিই তোর পিছে পিছে ঘুরবে!'
তখন ইনসিয়া রিপ্লাই দিল, 'তুই আমার এই বিপদের সময় একজন ভাল ফ্রেন্ডের মতো আমাকে সাহস যোগাচ্ছিস সত্যি আমার এই সাহসটা খুব দরকার ছিল রে।'
তারপর দিন থেকেই আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম যে , ক্লাসে স্যার ইনসিয়ার রোল ডাকলে একটা বোরকা পড়া মেয়ে এটেনডেন্স দিলো। তখন আমি বুঝলাম যে আমার সাথে যাতে দেখা না হয় তাই ইনসিয়া বোরকা পড়া শুরু করেছে। এটা দেখে আমি সেদিন বাসায় ফিরে অনেক হাসছিলাম তখণ কারণ এতট সহজ সরল মেয়ে আসলে আমি আমার জীবনে এই পর্যন্ত দেখিনি!
তকন এর কয়েকদিন পর দেখি ইনসিয়া আর কারো সাথেই মিশছে না! সে সবার থেকেই কেমন যেনো আলাদা হয়ে চলছে।তখন আমি তিন্নি কে যে ইনসিয়ার খুব ভাল ফ্রেন্ড তাকে জিজ্ঞেস করলাম আমি জিজ্ঞেস করতেই সে খুব রেগে বলল,
--যে ওই ম্যাডাম ফুলির কথা বলছিস তুই ? ওকে তো এখন আমরা আর ভালমত চিনতেই পারিনি যে, ও এত দেমাগি! জানিস তুই কি হয়েছে?
-- আমি বললাম কি হয়েছে রে ?
--তখন সে বললো ইনসিয়া সেদিন এসে আমাদেরকে বলেছে, যে ও নাকি নিজেকে চেঞ্জ করে ম্যাডাম ফুলি হবে! তখন আমরা আর কি বলব? এটা শুনে তো সবাই হাসতে হাসতেই গড়াগড়ি খাচ্ছি। তখন আমি বললাম, যা কখনো সম্ভব না, তা করার চেষ্টাও করিস না, পস্তাবি আরো বললাম তুই হবি চেঞ্জ? আয়নায় নিজের চেহারা দেখেছিস তুই ? ও তখন কি বলল আমাকে জানিস?
--কি বলল?
--ও আমাকে বলল যে, আমরা নাকি কেউই ওর দুঃসময়ের বন্ধু না এটা বলে কাঁদতে কাঁদতে ইনসিয়া চলে গেল! সত্যি ন্যাকা একটা।
তখন আমি তিন্নির এই কথা শুনে দীর্ঘশ্বাস ফেললাম আর আমার আর বুঝত বাকি রইল না,ইনসিয়া নিজেকে পরিবর্তন করার জন্য সবকিছু বিসর্জন দিচ্ছে! আমার কেন যানি না ইনসিয়ার কথা ভেবে ওর জন্য খুব মন খারাপ হতে লাগল যে, আর ভাবতে লাগলাম যে ওর এখন থেকে পুরো একাই চলাফেরা করতে হবে!
তখন একবছর পার হয়ে গেলো।
সত্যি বলতে এতটা তাড়াতাড়ি যে কিভাবে একবছর পার হয়ে গেলো আমি টেরই পেলাম না!আর এমনিতে এই বছরটায় আমি অনেক ব্যস্ত সময় কাটিয়েছি অবশ্য কেনো জানি না এই ব্যস্ত সময়ের মধ্যেও বারবার ইনসিয়ার কথা খুব মনে হয়েছিলো আমার ! সেই ইনসিয়ারসরলতা, প্রথমে আমি খেয়াল করা সেই মিষ্টি হাসি, আর ওর বোকা বোকা কথা, সবকিছুই,যেনো আমাকে বারবার ওর কথা মনে করিয়ে দিতে লাগলো।
আর এদিক দিয়ে ইনসিয়া তার এই এক বছরের পুরো সময়টা নিজেকে একাকিত্ব কাটিয়েছে এটা বেবে কেন্যনিনা ওর প্রতি আমার যেন মায়া হতে লাগলো।
আমার এই এক বছরে যে ইনসিয়ার সাথে একেবারেইকোমো যোগাযোগ হয় নি , তা নয়।প্রায়ই সময় আমি ওর খোঁজখবর নিয়েছি সরাসরি না নিলেও । টেক্সট করে। ওকে সাহস যুগিয়েছি আর ওর হতাশা কাটানোর চেষ্টা করেছি আর আমি মাঝে মাঝে ওকে মজার কথা বলে হাসানোরও চেষ্টা করেছি।আর ইনসিয়া যদি কোনো সমস্যায় পরেছে তাহলে আমাকে মেসেজ দিত।
আজ কে ভার্সিটি বন্ধ তাই আমি টিউশনি করানোর জন্য বিকালে বের হচ্ছি এমন হময় হঠাত দেখি মোবাইলে একটা ইনসিয়ার মেসেজ এসেছে। সেখানে সে লিখেছে -
'আজ তো এক বছর পার হলো এখন তো তুই আমার সাথে সরাসরি দেখা করতে পারবি নাকি কথাও তো বলতে পারবি তোর কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না তো !'
তখন আমি তাকে এর রিপ্লাইয়ে 'না' লিখে পাঠিয়ে দিলাম। এরপর ইনসিয়ার আর কোনো মেসেজই আসল না!
তার দুইদিন পরে
আজ আমাদের ভার্সিটিতে গিয়ে আমি দেখি একটা নতুন মেয়ে আমাদের ক্লাসে এসেছে আমি ভাবতে লাগলাম ভার্সিটির কোর্সের মাঝখানে কিভাবে নতুন স্টুডেন্ট ভর্তি হতে পারে, এটা তো কোনোভাবেই এটা আমার মাথায় ঢুকল না। তারপর এই নতুন মেয়ের চেহারাটাও খুব চেনা চানা মনে হচ্ছে আর কাড সাথে যলনো মিল আছে আমি ঠিক বুঝতো পারছি না!
আমার মতো সবাই খুব আগ্রহ নিয়ে এই মেয়েটাকে দেখতে থাকলো । আমার মতো সবার মনেই হয়তবা এই একই প্রশ্ন,যে কে এই স্মার্ট মেয়ে টা যে কি না আমাদের ক্লাসের ঝর্নাকেউ হার মানিয়েছে!
এমন সময় স্যার ক্লাসে এসে ডুকলো আর যখন রোল ডাকছেন, তখন আমি সহ সবাই খুব সাগ্রহের সাথে মেয়েটার রোলের জন্য অপেক্ষা করছিলাম ।তখন স্যার ইনসিয়ার রোল ডাকলো আর তখন সেই মেয়েটা এটেনডেন্স দিল!আমরা সবাই খুব অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল ওর দিকে আর আমি তো এতক্ষণে খেয়াল করলামযে , হ্যা, এটাই তো সেই ইনসিয়া ! আর ঐ ইনসিয়া যতই চেঞ্জ করুক, ওর তো চেহারার কোনো পরিবর্তন হয়নি তাই তো ।
যখন আমাদের ক্লাস শেষ হলো তখন আমি বের হয়ে যাচ্ছিলাম , এমন সময় ইনসিয়া আমাকে পিছন পিছন ডাকছে।
--ইনসিয়া বললো এই সূর্য, একটু দাঁড়া না ।
আমি তখন পিছন ফিরে বললাম,
--কিরে কি বলবি বল।k
--তখন ইনসিয়া চমাকে বলল আমি তোর সাথে বাসায় যাব। তুই কি আমাকে বাসায় পৌঁছে দিতে পারবি না ?
তখন আমি আমার চারদিকে তাকিয়ে দেখলাম, তখনো সেই এক বছর আগের মতই সবার দৃষ্টি আমার দিকে কিন্তু কেনো জানি না সে দৃষ্টিতে এখন আর আগের মতো কোনো বিদ্রূপ নেই,শুধু আছে হিংসা।
তখন আমি ইনসিয়াকে কিছু বলতে যাব, ঠিক সেই মূহুর্তে দেখি, রনি ইনসিয়া কে ডাকছে! আর ইমসিয়া সেটা শুনে প্রায় না শোনার ভান করে আমাকে টেনে নিয়ে সেখান থেকে চলে গেলো
তখন সেই দিনগুলো থেকে দেখা গেল যে ইনসিয়া সারাক্ষণ আমার সাথেই থাকেছে ! ওর ক্লাসের সবাই যেনো এখন ওকে ফ্রেন্ড বানাতে চায়ছে আর ওর সাথে অনেক মিশতে চায়, কিন্তু কেনো জানিয়া ইনসিয়া কাউকেই পাত্তা দেয় না।এমনকি এই সময়ের মধ্যে অনেকে ওকে প্রপোজও করে ফেলেছে তবুও ইনসিয়া সারাক্ষণ আমার সাথেই আঠার মত লেগে থাকে।
আর এটা দেখে বাকি সবাই কেমন যেনো আমার দিকে হিংসুটে চোখে তাকায় এটা দেখে আমার অবশ্য খুব ভালই লাগে! জানি না কেন মাঝে মাঝে মনে হয় ইনসিয়া যদি সবসময়ের জন্য এভাবেই আমার সাথে আঠার মত লেগে থাকত! কিন্তু তার কিছুক্ষণ পর আমি নিজেকে সামাল দেই কারণ এটা কখনওই হওয়ার নয় যে ।এর কারণ আমি মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির আর তার ওপরে আবাররণির জন্যইইনসিয়া নিজেকে এতটা পরিবর্তন করেছে সে অনেক পছন্দ করে রাজ কে আর আমাকে সে কখনোই পছন্দ করবে না।
এমনি করে ৪ সপ্তাহ কটে যাবার পর।
রনি এতদিনে ইনসিয়াকে কিছু বলার সু্যোগ পেলো না তার কারণ রণি ডাকলেই ইনসিয়া কেনো জানি না আমাকে নিয়ে প্রায় কোনোরকমে পালিয়েছে চলে আসে ! তবে আজকে আর রনির সহ্য হল না তাই সে ইনসিয়া বের হওয়ার আগেই রণি বের হয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে রইলো সে যেই দেখলো ইনসিয়া বাইরে বের হয়েছে তখনি রনি তার হাতটা ধরে বলল,
--ইনসিয়া চল আমার সাথে।i
কিন্তু ইনসিয়া বলল, আমি যাব কিন্তু আমার সাথে সূর্যও যাবে!
এটা বলে আমার হাত ধরে প্রায় টানতে টানতে রণি যেখানে ইনসিয়াকে নিয়ে যাওয়ার কথা, সেখানে আমাকে নিয়ে চলল। আমি তারপর রনি কে বলল,
-- ইনসিয়া বললো রণি এবার যা বলার তোমার বল, সার্যকে সামনে রেখেই তোমাকে বলতে হবে।
তখন রণি আমার দিকে ক্ষুব্ধ দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো আর ও বলল,
-- ইনসিয়াআমি তোমাকে খুব ভালবাসি। তুমি কি এখনো আমাকে আগের মত ভালবাসো?
রনির এই কথা শুনে প্রথমদিকে ইনসিয়া না করে দিলো এটা শুনে রনি ইনসিয়াকে অনেক কাকুতিমিনতি করে তারপর পর ইনসিয়া শেষ পর্যন্ত রাজি হয়ে যায় ।
তখন আমি এটা শেষ হলে বাসায় ফিরে আসলাম আর এক অদ্ভুত ধরণের অনুভূতিতে নিজেকে আবিষ্কার করলাম! কেনো জানি না রণির সাথে ইনসিয়ার এই প্রেমটা আমি মানতে পারছিলাম না কেনো জানি না আমি খুশিও ছিলাম ইনসিয়ার জন্য কিন্তু মনে এক অদ্ভুত অনুভব হচ্ছিল। কেনো জানি না মনে হচ্ছিল, আমি কি জেনো হারিয়ে ফেলেছি কি যেন হারিয়ে গেছে আমার কাচ থেকে ! মনের মাঝে খুব শূন্য শূন্য লাগছে সবকিছুই ।তাহলে কি আমি সেদিনই ইনসিয়ার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম, যেদিন প্রথম ওর মিষ্টি হাসিটা খেয়াল করেছিলাম?তবে এখন আমি আর বুঝে কি করবো ? আমি তো এতদিন নিজেই নিজেকে বুঝতে পারিনি আমার যা হওয়ার সব তো হয়েই গেছে এখন তো সব শেষ এখন আমার কেদে কি হবে !
ইনসিয়াকে এখন আমি প্রতিদিনই রনির সাথে বের হতে দেখি সে এখন আর আমাকে সময় দেয় না তা না ও কিন্তু ক্লাসে সারাক্ষণই আমার সাথেই থাকে কিন্তু ক্লাসের পর সে রণির জের সাথে যায় কিন্তু কেনো যানি না আমার সবসময় এমন মনে হয় যে , আমার সাথে ইনসিয়ার সেই কাটানো সময়গুলো খুব তাড়াতাড়িই যেনো কেটে যায়! এমনকি এখনো প্রতিদিন ইনসিয়ার সাথে আমার মেসেজের মাধ্যমে কথা হয় ইনসিয়া আমাকে প্রায়ই বলে যে তুই একটা সুন্দর দেখে মেয়ে দেখে প্রেম বা বিয়ে করে ফেল। কিন্তু আমি ইনসিয়াকে কিভাবে বোঝাবো আমি তো ওর মাঝেই আটকে গেছি সারা জীবণের জন্য। আমার মনে হয় ইনসিয়াই যেন আমার প্রথম আর সত্যিকারের প্রেম, এটা কি আমি তাকে কখনো ইনসিয়াকে বলতে পারব? নাকি এটা নিজের মধ্যে চেপে রেখেই আস্তে আস্তে নিজেকে নিঃশেষ করে দেব আমি ?
এভাবে প্রায় আরো এক বছর কেটে যাবার পর।
আজ ১৪ই ফেব্রুয়ারি এই সময় সবাই যার যার ভালবাসার কাছে যাচ্ছে তাদের মাঝে আজ সুখ খুঁজে নিচ্ছে তারা ! কিন্তু এখন যে আমি যাচ্ছি ইনসিয়ার বাসায়ইনসিয়ার দাওয়াতে। সে ক্লাসের সবাইকেই আজকে দাওয়াত দিয়েছিলো ।ইনসিয়ার বাবা মা নাকি ওকে চাপ দিচ্ছে বিয়ে করার জন্য আর তাইইনসিয়া আজ সবাইকে ডেকেছে তাদের বাসায় যেনো সবার সামনে সে রনির সাথে তার রিলেশনশিপের কথা এনাউন্স করতে পারে। এমনি তে আমি প্রথমে যেতে চাইনি এই পার্টিতে যেতে ভেবেছিলাম কি দরকার আমার ঐখানে গিয়ে কাটা ঘায়ে আরও নুনের ছিটা লাগানোর? পড়ে আমি ভাবলাম শেষ পর্যন্ত ইনসিয়ার অনুরোধে যদি না যায় তাহলে সে মনে মনেখুব কষ্ট পাবে ।
তাই ইনসিয়ার বাসায় গেলাম আর আমি গিয়ে একটা অনেক বড় ধাক্কা খেলাম ইনসিয়ার বাসা দেখে এতটা সুন্দর গোছগাছ বাসা আমি আগে খুব কমই দেখেছি!তাই বাসাটায় ঘুরে দেখতে ইচ্ছে হলো এমন সময় ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ করেই আমি দেখলাম ইনসিয়াকে। আমি তাকে দেখলাম ইনসিয়াকে এতটা সুন্দর লাগছে যে ওকে দেখে কেউ যেনো চোখ পেরাতে পারবে না এমন কি আমি নিজেও চোখই ফেরাতে পারছিলাম না ওর দিক থেকে!ইনসিয়া এখন আর সেই আগের মোটা ফ্রেমের চশমা পরা মেয়ে নেই সে এখন এটার পরিবর্তে লেন্স পরে আর ইনসিয়া শাড়ি পরেছে ওকে দেখতে খুব সুন্দর লাগছে ওর খোঁপা করে তাতে খোঁপায় ফুল গুঁজেছে! এতেই যে ওকে এতটা অপূর্ব লাগছে!
এমন সময় আমাকে ইনসিয়া দেখেই তার চিরচেনা সেই মিষ্টি হাসিটা দিয়ে আমাকে একটা বড় উপহার দিল, যেই হাসিটা দেখেই আমি তাড প্রথম প্রেমে দূর্বল হয়ে পড়েছিলাম।
তখন আমিও ইনসিয়ার দিকে তাকিয়ে মলিন হাসি হাসলাম আর বললাম চলো নিচে যায়। এমন সময় তার বাবা মা এল আর সবাইকে আপ্যায়ন করতে শুরু করলো এমনিতে খুব হাসিখুশি তাঁরা আর তারা তাদের মেয়ের পছন্দকেই অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেনতারা।
এর একটু পরেই এলো ইনসিয়া তার পাশেই ছিলো রণি দাঁড়িয়ে।ইনসিয়া এখানে এসে বলল,
-- যে আজকে ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ভালবাসা দিবস আর আমি এই আজকের দিনে আমার পছন্দের সেই মানুষের কথা আপনাদের সকলকেই বলতে চাই, আমি যাকে বিয়ে করব বলে ঠিক করেছি তার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চায় আমি তাকে আমার সেই একাকিত্বের এক বছরে মাঝে চিনতে পেরেছি, আর বুঝতে পেরেছি যে তাকেই আমার দরকার আমি তাকেই চায় ! এমনকও আমি মনে করি তার চেয়ে যোগ্য আরকোনো ভাল ছেলে হয়তবা আমার জন্য কেউই হবে না। আমি এখন আপনাদের সামনে এভাবে এসেছি যার উৎসাহ প্রদানের জন্যই সে আমাকে এতদূর অতিক্রম করেতে সাহায্য করেছে আমাকে নিজের মাঝে পরিবর্তন আনতে পেরেছি যার সাহায্যে । যার হয়তোবা কোনো টাকা নেই কিন্তু তার মধ্যে আছে মেধ, এমনকি তার মাঝে আছে মানুষকে উপকারের মন.
ইনসিয়ার কথাগুলো আমি ঠিক শুনতে পাচ্ছি কিনা তা আমি নিজে টের পাচ্ছি না,ল আমি শুধু নিচের দিকে তাকিয়ে আছি ল আর প্রমাদ গুনছি এর পর কিছুক্ষণ পরেই ইনসিয়া যে আর আমার থাকবে না এটা আমি কিভাবে মেনে নিবো । রনির সাথে সে সুখের সংসার করবে তার সাথেই সে থাকবে সুন্দর ফুটফুটে বাচ্চা এমন আরো অনেক চিন্তা তখন আমার মাথাই গুরছিলো এখন আর কিছুই করতে পারছি না আমি, চলে যাব ভাবছিলাম । কিন্তু আমি কি করবো এতজনের মানুষের সামনে থেকে আমি কি করে চলে যায় এটা কি ঠিক হবে?
তারপর ইনসিয়া আরো বলতে শুরু করলো যে ,
--আপনারা কি কেউ জানতে চাইবেন না যে সেই মানুষটা কে যে ত্এতটা কেয়ারিং সে ছেলেটা কে আসলে তার নাম কি ? আপনাদের নিশ্সেচয় তার নাম শুনতে ইচ্ছে তাহলে আমি আপনাদের বলতে চায় সে হচ্ছে আমাদের ভার্সিটিতে আমার ক্লাসেই পড়ুয়া সূর্য! আর আমি তাকেই অনেক ভালবাসি।
তকন আমি ইনসিয়ার দিকে তাকালাম আর ওর কথা গুলো শুনে যেন আমি নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না!আমি ভাবতে থাকলাম আর ইনসিয়া আমার দিকে তাকিয়েই মিষ্টি হেসে বলতে লাগল,
--সূর্য তুমি হয়তো এটাই ভেবেছিলে যে আমি রনিকে ভালবাসি? তাই না কিন্তু তুমি একদম ভুল ভেবেছ! কারণ আমি রনিকে কখনোই ওভাবে ভালবাসতে পারিনি যেভাবে আমি তোমাকে এই একটা বছর ভালবাসা শুরু করেছিলাম! এমনকি তুমি যানে আমি যখন থেকে মানুষ চিনতে শিখেছি, ঠিক তখনই থেকেই বুঝেছি যে রনি নয় আমি তো তোমার জন্য যোগ্যো আর আমি কখনো রনির প্রেমে পড়েনি,রনিও আমাকে ভালোবাসে নি সে প্রেমে পড়েছে আমার স্মার্টনেসের আর সে এই প্রমে তো রাস্তার অহরহ ছেলেরাই পড়ে। কিন্তু আমি যে এই ভালোবাসা চায় না আমি চায় তুমার মতো একজন কে যে আমার তুমি ছিলে আমার বিপদে সাহস যোগানোর জন্য পাশে থাকবে সত্যিকারের বন্ধু হয়ে। যখন আমিনএকা ছিলাম তখন আমি আমার সেই একাকিত্বের এক বছরেই তোমার প্রেমে পড়েছি, সূর্য। এখন বলো তোমার কি এর বিরুদ্ধে কোনো অবজেকশন আছে?
আর এটা শুনে পাগলির দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে মাথা নেড়ে 'না' বোঝালাম আর ভাবতে থাকলাম এই বোকা মেয়েটা যে কখন আমাকে ভালবেসেছে, আমি টেরই পাইনি!
তখন রনি ? সে তো আমার দিকে এমন ভাবে ক্ষুব্ধ দৃষ্টি মেলে তাকিয়ে আছে যেনো মনে হচ্ছে ও আমাকে হাতের কাছে পেলে সে আর আমাকে আস্ত রাখবে মা একদম চিবিয়ে খাবে!
ঠিক তখবই অরণী এসে আমাকে বলল,
--কি হল সূর্য ? তুমি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছ কেন? কিছু একটা তো বলো!
তখন আমি এতটাই খুশি হয়েছিলাম যে আনন্দে কি বলব তার ভাষয় খুঁজে পাচৃছিমান লা তবুও আমি বললাম,
-ইনসিয়া তুই আমাকে তুমি করে বললি কে রে ?
--এমন সময় ইনসুয়া বললো একম থেকে তুমিও তাই করবে আর এর কারণ হলো আগামী মাসেই আমাদের বিয়ে হবে বুজতে পেরেছো !আর তুমি নিস্চয় বউকে ফ্রেন্ডের মত করে তুই করে ডাকতে পারবে না তাই না ! ডেটা ডাকলে তা একদম বেমানান লাগবে।
--তকন আমি বললাম কিন্তু আমি কি তোমাকে সুখী করতে পারব ইবসিয়া ?
--তখন ইবসিয়া বললো কপনো সুখ কি শুধুই টাকা-পয়সা দিয়ে হয় নাকি ? যদি তুমি আমার পাশে থাকো তাহলে আমি এমনিতেই কুব সুখী হব সূর্য। আর তুমি জানো আর বাবা মা তো আমি যাকেই বিয়ে করি না কেন, তাতেইতারা রাজি গবে এর কারণ হলো উনারা আমাকে অনেক বিশ্বাস করেন আর এটাও জানেন যে আমি তোমাকে ভালোবাসি ।
--তকন আমি বললাম তুমি দেখো ইবসিয়া আমি কখনোই তোমার বিশ্বাস ভাঙব না, দেখো।
এটা বলে আমি ইনসিয়াকে শক্ত করে আমার বুকে জড়িয়ে ধরলাম।
এখন প্রায় তিন বছর পার হয়ে গেছে।
--ইনসিয়া বলছে কি গো ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব, আপনি একটু তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতে পারেন না কি ? আপনি কি জানেন না কি এখন যদি আপনি একটু দেরি করে বাসায় ফিরেন তাহলে আমাদপর বাবু রাগ করে!
তখন সে অভিমানী গলায় অরণীর কথা শুনে হেসে বললাম আমি ,
-- না বাবু রাগ করে না তুমি আর আমার বাবুর মা রাগ করে না ?
--তুমরা দুজনেই!
--ও আচ্ছা কি করা যায় তাহলে তো রাগ ভাঙাতেই হয় চমাকে কিন্তু কিভাবে ভাঙাব এই রাগ?
--িিবসিয়া বললো যদি বাবুর বাবা সারাক্ষণ বাবুর মায়ের পাশে থাকে তাহলেই একমাএ দুজনেরই রাগ ভাঙবে।
--আমি বললাম আমি আছি তো, আর সারাজীবন থাকব।
এই বলে আমি ইনসিয়াকে একটা চুমু দিমান আর ওর দিকে তাকিয়ে বললাম ইনসিয়া তুমি যখন হাসো চমার কুব ভালো লাগে তাই তো তোনার দিকে তাকিয়ে সেই মিষ্টি হাসি হাসার জন্য এসব জরি যা দেখার জন্য আমি প্রতিনিয়ত ওকে খুশিতে রাখার প্রচেষ্টায় থাকি।
মনি এই ৪ বছরে প্রায় অনেক কিছু ঘটেছে আমাদের দুজনপর জীবনে, আর এই সবই ছিলো আমাদের সুখের ঘটনা।ইনসিয়া জীবনে আসার পর থেকে কেনো যানি না আমার জীবনে যেন সুখে ভরে যাচ্ছে জীবন আমার
এখন আমি অনেক বড় ম্যাজিস্ট্রেট হয়েছি।এমনকি আমি খুব ভাল বেতন ও পাই, আর সম্মান তো আছেই আর আমার ইনসিয়া তো কখনোই কম যায় না সে ও তো এখন একটা কলেজের প্রফেসর হয়েছে আমি চমার ইনসিয়া আমাদের এই সুখের সংসারে মাঝে একটা নতুন অতিথি আসতে চলেছে! আমার জীবনে এর চেয়ে আরো বেশি কিছু চায় না এই ।
ভালোবাসা সত্যি খুব সুন্দর যার সবাই বুঝতে পারে না।
Hmm onk sundor hoice