চারপাশে আঁধার নেমে এসেছে । গোধূলির শেষ আলোটুকুও বিলীন হয়ে গেছে পশ্চিম আকাশে । কিছুক্ষণ আগে কুরিয়ার থেকে নিয়ে আসা বইটা মোড়ক থেকে বের করতে আমি ব্যস্ত । এমন সময় আর্তনাদ ভেসে এলো । সেই আর্তনাদে অসহনীয় কষ্ট । না, মানুষের আর্তনাদ না । একটা কুকুরের আর্তনাদ ।
কুকুরের আর্তনাদ নিয়ে মানুষ সাধারণত ভাবে না । আর্তনাদ এর কারণও জানে না বা জানার চেষ্টা করে না । কিন্তু আর্তনাদের কারণটা যদি মনুষ্য সৃষ্ট হয় তবে জানাটা অসম্ভব নয় । যেমন আর্তনাদের কারণ সম্পর্কে আমি অবগত । সন্তান হারানোর জন্য তার এই আর্তনাদ । বাচ্চাগুলোকে তার থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে । মেরে ফেলা হয়নি, দূরে রেখে আসা হয়েছে । কি মানুষকে দোষী মনে হচ্ছে? তাহলে ঘটনাটি শুনুন ।
কুকুরটি একটা মানুষকে কামড়ে দিয়েছে । একটা দোকানী, নাম তৌকির । একটা বাড়িতে পেঁয়াজ দিতে এসেছে । বাড়ির মালিক টাকা দিয়ে বলেছে, পেঁয়াজ বাড়িতে পৌঁছে দিতে । সেই পেঁয়াজ দিতে এসেই কুকুরটির অতর্কিত আক্রমণের শিকার হয় তৌকির । পায়ে কামড়ের স্থানে গভীর ক্ষত হয়েছে । হাত দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করেছে । হাতেও নখ দিয়ে আঁচড় দিয়েছে। দ্রুত হাসাপাতালে নেওয়া হয়েছে তাকে । এরপর থেকে সবাই কুকুরটার ওপরে ক্ষেপে আছে । ওইটার জন্য অন্য একটা কুকুর মানুষের রাগের শিকার হয়েছে । কয়েকবার পালিয়ে বেঁচেছে কুকুরটি । অবশেষে কুকুরটিকে বাগে না পেয়ে সবার পরামর্শে বাচ্চাগুলো দূরে ফেলে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । এই ধারণা যে বাচ্চাগুলো দূরে রেখে আসলে সেও চলে যাবে । খড়ের স্তুপের নিচে বাচ্চা নিয়ে থাকত সে । সেখান থেকে বাচ্চাগুলো বস্তায় ভরে দূরে রেখে আসা হয়েছে । এখন আর্তনাদ করে বেড়াচ্ছে ।
কুকুরের কামড়ে আহত তৌকির ও তার পরিবার নিয়ে চিন্তিত সবাই । দোকানের কেনা-বেচা মূলত তার আয়ের উৎস । এই পরিস্থিতিতে একে তো উপার্জন বন্ধ হবে তার ওপরে চিকিৎসার খরচ । নিম্নবিত্ত পরিবার তাদের । শুনলাম প্রতিটা ইনজেকশানের মূল্য ৯০০ টাকা । এমন ইনজেকশান বেশ কয়েকটি দিতে হবে । যেটা তাদের পরিবারের জন্য বহন করা কষ্টকর । আমি কুকুরটার আর্তনাদে মনোযোগ দিলাম কিছুক্ষণ । তারপর আপনকাজে মনোযোগ দিলাম । এই আর্তনাদ কানে পৌঁছাতে সক্ষম হলেও মনে পৌঁছাতে অক্ষম ।
খাদিজার আম্মু : তোমার পান্জাবিতে
এতো রক্ত লেগে কেন,,, কি করেছো তুমি...!!!
খাদিজার বাবা মাথা নিচু করে আছে কোন
কথা বলছেনা।মনটা অনেক ভার করে আছে,
খাদিজার আম্মু : কি গো চুপ করে আছো কেন কি হয়েছে বলো।
খাদিজার আম্মু : আর বলিও না আজ একটা মেয়েকে দুজন ছেলে তুলে নিয়ে যাচ্ছিলো।
আমি তখন আসতেছিলাম,দেখে মনে হলো মুসলিম পরিবারের মেয়ে......!!!
আর ছেলে দুটো মেয়েটার সর্বনাশ করতে চেয়েছিল বাট আমার কারণে পারেনি।
যদি সময় মতো না আসতাম তাহলে কি হতো ভাবতে পারছো।
________________
নাসরিন ফোনটা রিসিভ করেই শুনতে পেল জাফরীর কন্ঠ।নাসরিন উত্তেজিত সুরে বললেন
জাফরী তুই কই...!!!
জাফরী : আমি হাসপাতালে।
নাসরিন : দাড়া আমি যাচ্ছি...!!!!
নাসরিন রেহেনা সহ এগারো জন চলে গেল হাসপাতালে।নাসরিন হাসপাতালে গিয়ে তাকিয়ে দেখছে জাফরী বেডে সুয়ে আছে।
মাথায় একটু আঘাত...!!!!
নাসরিন উত্তেজিত সুরে বললো জাফরী কি হয়েছে দোস্ত।তোর এই অবস্থা কি করে হলো।
জাফরী ভালোকরে কথা বলতে পারছেনা
নার্স : ম্যাডাম ওনাকে একটা হুজুর রেখে গেল
নাসরিন : কি নাম তার বাড়ি কই
নার্স : তা জানিনা কিন্তু হুজুরটা খুব বকাবকি করতেছিল।আর বলল নিজেকে রক্ষা করতে পারে নাহ।তো একা একা রাস্তায় বের হয় কেন।
এই বকা দিয়ে হাসপাতালে সিপট করে চলে গেল
নাসরিন : আচ্ছা জাফরী তোর কি হয়েছিল বলতো।
জাফরী : আমি যখন লিফট থেকে নামলাম তখন দুইজন লোক মুখ বাধা ছিলো তাদের।
তারা আমাকে বেহুশ করে তারপর জানি না কি হয়েছে.........!!!!!
নাসরিন : দুজন ছেলে তোকে বেহুশ করলো
আবার একজন হুজুর তোকে সম্মানের সহিত
হাসপাতালে ভর্তি করে দিলো।
এর মানে টা কি...???
জাফরী : তা তো জানি না।
নাসরিন : তুই দেখেছিস ওই হুজুর টাকে
জাফরী : নাহ দেখতে পাইনাই আমি তো তখন অচেতন ছিলাম।
নাসরিন : ছেলে দুটোকে দেখেছিলি।
জাফরী : নাহ তাদের মুখ ঢাকা ছিলো।
নাসরিন : তাহলে এসবের মানে কিহ....!!!
আমি সিওর নয়ন এসব করেছে।
___________
দুজন ছেলে এসে বলছে নয়ন ভাই আমরা
জাফরীকে গাড়ি করে নিয়ে আসতেছিলাম
এমন সময় তিনজন হুজুর আমাদের কাছে
কেড়ে নিয়েছে.....!!!!
নয়ন : তোমাদের যে দশ হাজার টাকা দিয়েছিলাম
টাকা ফেরত দাও।
তোমরা স্থানীয় লোক হয়ে মেয়েটাকে আনতে পারলে না। সামান্য দুই টাকার মৌলভীর ভয়ে তোমরা ওকে ছেড়ে পালিয়ে গেলে ছিহ।
আমার টাকা ফেরত দাও.......!!!!!
একজন ছেলে দৌড়ে এসে বলছে নয়ন ভাই
আমি সেদিন বলেছিলাম মেহেদিকে দেখেছি।
আমি খোজ নিয়ে দেখেছি লোকটি আমাদের আশেপাশে আছে।
নয়ন : কি সুরু করলি আবার.......
আরে ভাই ওকে নিজে হাতে কবর দিয়েছি
ও কি করে ফিরে আসবে বলতো।
ছেলেটা : কালকে আপনাকে বাজারে দেখিয়ে দেব নিজের চোখে দেখিয়েন।
নয়ন : আচ্ছা আমিও দেখবো...!!!!
ওটা মেহেদি নাকি অন্য কিছু!!!
____________
খাদিজার আব্বু মন খারাপ করে বসে আছে।
ছাদের উপরে বসে থেকে চিন্তা করছে...!!!
আমাকে এমন লাগছে কেন, কালকে রাত্রিবেলা
মেয়েটাকে কোলে করে নিয়ে গেলাম।কিন্তু মেয়েটার মুখটা এতো বার বার মনে পড়ছে কেন....!!!
যেন মেয়েটাকে আগে কোথাও দেখেছি,
যেন মেয়েটাকে আমি বহুদিন ধরে চিনি।
আর মনটা এতো ছটফট করছে কেন...!!!!
আর ওই মেয়েটার মুখটা এতো মায়া লাগছে কেন আমার,,, কি হয়েছে আমার।
ধ্যাত এসব শয়তানের ধোকা, একটা বেগানা নারীর কথা বার বার মনে পড়ছে।
খাদিজার আব্বু বার বার মনকে শান্তনা দেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু কিছুতেই মনটাকে শান্ত রাখতে পারছেনা।যেন ওনাকে আগে থেকেই চিনি।
যেন অনেক কাছের মানুষ,,,ধ্যাত এসব কেন মনে হচ্ছে আমার....!!!!!
আর ওনার মুখটা এতো মায়াবি লাগতেছে কেন
আচ্ছা আমিতো মেয়েটাকে হাসপাতালে ভরতি করে দিয়েছি।
যাই গিয়ে দেখি মেয়েটার কেমন হালত..!!!
খাদিজার আব্বু বাসা থেকে বের হতে যাবে
এমন সময় স্ত্রী ডাক দিয়ে বলছে খাদিজার আব্বু কই যাচ্ছো।
স্বামী : কালকে যে মেয়েটাকে হাসপাতালে রেখেছি ওর একটু খোজ নিতে যাবো।
স্ত্রী : ওহ
স্বামী : মুখটা ভার করলে যে
স্ত্রী : নাহ কিছু না।আপনি যান।যেহেতু মেয়েটাকে বখাটে ছেলের হাত থেকে রক্ষা করেছেন
তার খোজ নেয়াটাও তো আপনার দায়িত্ব তাইনা।
আমি আপনাকে বিশ্বাস করি.....!!!
আমি বলছি আপনি যাবেন..!!
স্বামী : হুমমমম আমি আসছি তাহলে
এক ঘন্টার ভিতরেই ফিরে আসব...!!!!
স্ত্রী : হুমমমম
খাদিজার আব্বু বের হয়ে চলে গেল
হাসপাতালে গিয়ে মেয়েটির খোজ নিচ্ছে
কালকে যে নার্স এর কাছে দিয়েছে
সেই নার্স কে গিয়ে বললো ম্যাডাম কালকে যে মেয়েটাকে ভর্তি করে দিলাম সেই মেয়েটাকে কোন বেডে রাখছেন..!!!
নার্স : হুজুর মেয়েটা তো কাল রাতেই চলে গেছে
খাদিজার আব্বু : কিহ
নার্স : কারণ মেয়েটার অনেক বান্ধবী আছে তারা সবাই ডাক্তার,এবং মেয়েটাও ডাক্তার।
খাদিজার আব্বু : মেয়েটা ডাক্তার (মনে মনে)
নার্স : হুজুর কিছু ভাবছেন
খাদিজার আব্বু : নাহ কিছুনা। আচ্ছা ঠিক আছে ধন্যবাদ।
নার্স : মেয়েটা বার বার আপনার কথা বলছিলো
যে আমাকে রক্ষা করলো তার মুখটা দেখতে পারলাম নাহ।
খাদিজার আব্বু : কপালে নাই দেখা করা,,, তাই
হয়তো আমিও এসে দেখা করতে পারলাম নাহ
নার্স : আপনি যদি বলতেন সকালে আসবেন
তাহলে বলে দিতাম।আর যেতোনা।
খাদিজার আব্বু : আচ্ছা ঠিক আছে নো প্রবলেম
আচ্ছা ভাল থাকেন ম্যাডাম।
এই বলে খাদিজার বাবা হাসপাতাল থেকে বাড়ি এসে দেখছে স্ত্রী কান্না করতেছে।
খাদিজার আম্মু কিন্তু স্বামীকে দেখতে পায়নি।
পিছন থেকে যখন কাধে হাত রাখলো।
স্ত্রী মাথা ঘুরে তুমি এতো তাড়াতাড়ি।
খাদিজার আব্বু : কান্না করছো কেন কি হয়েছে
_________________
নাসরিন : কিরে মন খারাপ করে কেন
মাথায় যে আঘাত পেয়েছিস, ওষুধ একটু খেতে হবেতো নাকি।
জাফরী : দোস্ত যে লোকটা আমাকে হাসপাতালে দিয়ে গেল ওই লোকের মুখটা যদি দেখতে পাইতাম।
নাসরিন : লোকটা তোর মন চুরি করে নিলো নাকি।
জাফরী : ধ্যাত কি বলিস,, কোন পর পুরুষ আমার মন চুরি করতে পারবে নাহ।
কিন্তু লোকটাকে দেখতে পেলে খুব ভাল হতো।
কেন যেন মনটা একটু ছটফট করছে...!!!
এই কথা বলতেই বান্ধবীরা হাসাহাসি শুরু করে
দিলো।আরেহ তুই কি জাফরী নাকি অন্য কেউ তোর ভিতরে ভর করছে।
তুই যাকে চিনিস না, জানিস না, তাকে দেখার জন্য মনটা ছটফট করছে।দারুণ ব্যাপার।
জাফরী : ধ্যাত তোরা কি যে বলিস না।
________________
খাদিজার আম্মু : তোমাকে হারানোর ভয়টা আমার এদানিং বেড়ে গেছে।
তোমাকে ছাড়া থাকতে পারব না গো...!!!
আমার কেউ নেই একমাত্র তুমি ছাড়া!!
খাদিজার আব্বু স্ত্রীর গালে একটা চুমু দিলো
চুমু দেয়াতে চোখের গড়িয়ে যাওয়া পানি
স্বামীর ঠোটে গিয়ে লাগলো,
দুইহাত দিয়ে।মুখটা চেপে ধরে কপালে একটা চুমু দিয়ে বলছে তোমাকে কখনো ছেড়ে যাবোনা।
কারণ তোমাকে ছাড়া আমিও থাকতে পারবনা গো।
তুমি আমার সব, তোমাকে রেখে যদি চলে যাই
তাহলে আমার মাথার ক্ষত জায়গায় কে
ফু দিয়ে দেবে।
কে আমার ওই ক্ষত জায়গায় চুমু দেবে বলো।
স্বামীর মুখে এই কথা শোনার পর খাদিজার আম্মু আরো জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলো।
দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে আছে......!!!
আই লাভ ইউ.........
_____________
নয়ন আর নয়নের বন্ধু বাজারের এক কোনায় দাড়িয়ে আছে।
নয়ন : কি রে কই মেহেদি
ছেলেটা : ভাই বিশ্বাস করেন আমি কোন মিথ্যা কথা বলি নাই।
জানিনা এখনো কেন আসতেছেনা।
____________
খাদিজার আব্বু : শুধু জড়িয়ে ধরে কান্না করলে হবে।বাজারে তো যেতে হবে ব্যাগটা দাও
খাদিজার আম্মু : নাহ ছাড়ব না তোমাকে।
সারাজীবন এইভাবে ধরে রাখতে চাই।
খাদিজার আব্বু : আচ্ছা ধরে থেকো আমি দাড়িয়ে আছি।বাড়িতে সদায় পাতি না আনলে রান্না করবে কি দিয়ে।তোমার মেয়ে না খেয়ে কষ্ট পাবে তো।
ছাড়ো বাজার যেতে হবে...!!!!
খাদিজার আম্মু : একটা সুখবর আছে
স্বামী : কি সু খবর
স্ত্রী : আমার পেটে তোমার নতুন মেহমান আসতে চলেছে।
স্বামী : কিহ তাইনা কি,, হুররে,,,,,,,
স্ত্রী : কি করছো পড়ে যাবো তো নামাও আমাকে
স্বামী : কেন নামাবো আমাদের নতুন মেহমান আসতে চলেছে।
আজ আমি খুব খুশি....!!!!! আজ সবাইকে মিষ্টি খাওয়াবো।
স্ত্রী : এবার তো কোল থেকে নামাও
যাও বাজারে যাও।
আর আমার জন্য একটু টক কিছু নিবা
কেমন
স্বামী : ওকে সোনা....!!!!
________________
নয়ন : বাদ দে ভাই,, তোর বাটপারি গল্প বাদ দে
ছেলেটা : আরে ভাই আরেকটু ওয়েট করেন..,,,
নয়ন : আরে ভাই মেহেদি বেচে থাকবে কি করে
ও তো মারা গেছে....!!!!
দুজনে তর্ক করতেছে,এমন সময় খাদিজার আব্বু
বাজারে ঢুকলো।
কিন্তু দুজনে তর্ক করতে করতে হঠাৎ নয়ন নজর করে দেখলো সেই অবিকল একটা (মেহেদি)
এইটা দেখার পর নয়নের চোখ বড় বড় হয়ে গেল
মুখে একই রকমের দাড়ি,একই রকমের মোটা,
একই রকমের চলাফেরা সাইচ।
এ আমি কি দেখছি,আমি কি কোন স্বপ্ন দেখছি নাতো।সেই আগের মেহেদি দেখছি।
এটা কি করে সম্ভব।নিজের হাতে মেহেদিকে
কবর দিয়েছি।আজ সেই মেহেদি আমার সামনে দাড়িয়ে।এটাই যদি মেহেদি হয় তাহলে
ও এখানে কি করছে......!!!!
ওর বাড়ি তো বাংলাদেশে....
বড় আপা বিছানার উপর থেকে শাড়িটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে আম্মাকে বললেন তার জন্য ঠিক করা ছেলে তার সাথে বিয়ের আগে শারিরীক সম্পর্ক করতে চেয়েছে৷ আম্মা নির্বিকার ভাবে শাড়িটা তুলে নিয়ে পাশের রুমে চলে গেলেন। বড় আপা হাতের উলটাপিঠ দিয়ে চোখের পানি মুছে আমাকে বললেন, " তুই ই বল চারু এই ছেলেকে কি বিয়ে করা যায়? বাবা মা তো আমার কথা শুনছেই না। তুই একটু বুঝিয়ে বল না।"
বড় আপার কথা শুনে আম্মার মত আমিও চুপ করে রইলাম। একবার ইচ্ছা হলো বড় আপাকে বলি যে, "আপা তুই দুনিয়ার সবাইকে মিথ্যে বললেও আমার চোখ ফাঁকি দিতে পারবি না" কিন্তু তাও বড় আপার মুখ চেয়ে চুপ করে রইলাম।
.
.
আমি একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। বড় আপা নীরু, আমি, ছোট বোন নিশু, আব্বা আম্মা আর দাদুকে নিয়ে আমাদের পরিবার। আমার বড় আপা নীরু অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ছে। গায়ের রংটা একটু চাপা হলেও মুখ অবয়ব দারুণ। বিশেষ করে বড় আপার চোখদুটো ভীষণ সুন্দর সেই সাথে কালো লম্বা সিল্কি চুল। সম্ভবত কলেজে ওঠার সময় থেকে বড় আপা নিষাদ নামের এক ছেলেকে ভালোবাসে। বড় আপার এ প্রেমের কথা বাসার কারো অজানা নয় কিন্তু সবাই এমন ভাব করে থাকে যেন কিছুই জানেনা। নিষাদ ভাইয়াকে আব্বা আম্মা পছন্দ করে না । বিশেষ করে আম্মার পছন্দ না। আমাদের পাশের ফ্লাটের ছাদের চিলেকোঠার মতন একটা রুমে সে ভাড়া থাকে। নিষাদ ভাইয়া স্কলারশিপ পাওয়া মেধাবী স্টুডেন্ট ছিলো। হুট করে তার যে কি হলো কেউ জানে না। দুম করে পড়ালেখা বন্ধ করে দিলো। দুয়েকটা টিউশনি করে নিজের খরচ চালিয়ে নেয় আর সারাদিন এদিক ওদিক ঘুরে তার পরিবার সম্পর্কে কিছু জানিনা আমি। এরকম ছন্নছাড়া কাউকে কি পছন্দ করতাম আমি।
.
.
ছাদের এক কোনে দাঁড়িয়ে কাপড় মেলে দিচ্ছিলাম। তখনি বড় আপা এলেন। আঁচলের তলায় লুকানো একটা বাটি৷ নিশ্চয়ই সেই বাটিতে নিষাদ ভাইয়ার জন্য তরকারি। এটা বড় আপার স্বভাব। বাসায় ভালোমন্দ কিছু রান্না হলে বড় আপা আচঁলের তলায় লুকিয়ে এনে ছাদের কোনায় এসে নিষাদ ভাইয়াকে দিয়ে যায়। আমাদের ছাদ আর নিষাদ ভাইয়াদের বাসার ছাদ একদম কাছাকাছি। চাইলে এক ছাদ দিয়ে অন্য ছাদেও যাওয়া যায়। নিষাদ ভাইয়া ছাদের কার্ণিশে দাঁড়িয়ে আছেন। আমার চোখে চোখ পড়তেই বড় আপা লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিলেন। তরকারির বাটিটা নিষাদ ভাইয়াকে দিয়ে কি মনে করে আমার কাছে এসে বললেন, "চারু নিচে যাবি না?"
" হ্যাঁ আপা তুই যা আমি আসছি।" বড় আপা ছলছল চোখে আমার দিকে তাকিয়ে নিচে চলে গেলেন।
.
.
আজ আপার গায়ে হলুদ। হলুদ শাড়িতে আপাকে ভীষণ সুন্দর লাগছে। বিষণ্ণ মুখে আপা সাদামাটা একটা হলুদের স্টেজে বসে আছেন। চারপাশে আত্মীয় স্বজনের ভীড়। আপা বারবার ভীড়ের দিকে তাকিয়ে কাউকে খুঁজে চলছেন। আমি জানি আপা নিষাদ ভাইয়াকে খুঁজছেন। প্রথমে বড় চাচী আপাকে হলুদ লাগালেন তারপর একেএকে সবাই।
হলুদের অনুষ্ঠান একরকম শেষ হয়ে গেলো। আর দুদিন পরেই বিয়ে। বড় আপা রুম থেকে বের হয় না। আমি চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা দিয়ে কোলের উপর একটা বই নিয়ে আড়চোখে আপার ছটফটানি দেখি। আমার বারবার মনে হতে থাকে আপা নিষাদ ভাইয়ার সাথে পালিয়ে যাবে। কিন্তু আব্বার মানসম্মানের দিকে তাকিয়ে আপা কি পারবে পালিয়ে যেতে। মাঝরাতে আমার ঘুম ভেঙে যায়। আপা বেলকুনির দরজার কাছে বসে আছে। আমি আস্তে আস্তে আপার কাছে গিয়ে মাথায় হাত রেখে বলি আপা তুই নিষাদ ভাইয়ার সাথে পালিয়ে যা। হঠাৎ কি হলো জানি না। আপা ঠাস করে আমার গালে এক চড় মারলেন। আঠারো বছরের জীবনে আপা কখনো আমার গায়ে হাত তুলেনি। গলার স্বর গম্ভীর করে বললেন, "শুতে যা চারু।"
.
.
দুদিন পর আপার বিয়ে হয়ে গেলো। অবাক করা বিষয় হলো দুদিনে আমি একবারো নিষাদ ভাইয়াকে দেখিনি। আপার সাথে আমিও এসেছি আপার শ্বশুরবাড়ি। দুলাভাই বেশ সুন্দর আর নির্ঝঞ্ঝাট মানুষ কিন্তু কেমন জানো একটু চাপা স্বভাবের। সহজে কারো সাথে তেমন কথা বলেন না। শুধু দুলাভাই না তাদের পরিবারের সবাই একটু বেশিই চুপচাপ। কেউ কোনো দরকার ছাড়া কারো সাথে কথা বলে না। কারো মুখে সহজে হাসিও থাকে না। কেমন একটা কাঠিন্য লেগে থাকে সবসময়। আর সবচেয়ে অবাক করার মত কথা হলো বিয়ে বাড়ি হলেও বাইরের কোনো আত্মীয় স্বজন নেই। তাদের বাড়িটাও কিরকম যেন নিস্তব্ধ। এতবড় বাড়িতে শুধু দুলাভাই, তার মা বাবা আর এক ছোটো ভাই আর একজন কাজের লোক। গ্রামের এত ভিতরে যে পৌঁছাতে পৌঁছাতে অনেক রাত হয়ে গিয়েছে। আর তাদের বাড়িটা এত বিশাল যে মনে হয় কোনো রাজবাড়ি। কথায় কথায় আমি আপার শ্বাশুড়ির কাছে জিজ্ঞেস করলাম, আচ্ছা আপনাদের বাড়িতে কোনো অতিথি নেই কেন?
"আসলে আমাদের খুব একটা আত্মীয় স্বজন নেই। যারা আছেন তারা অনেক দূরে থাকে তাই এখানে আসতে পারে নি।" আপার শ্বাশুড়ি ঠান্ডা গলায় উত্তর দিলেন।
সবাই খাওয়ার পরে আমার রুমটা দেখিয়ে দেয়া হলো। তখন অনেক রাত হয়ে গেছে। আমি দোতালায় উঠে প্রথমে চমকে গেলাম। সবগুলো ঘরের দরজা একই রকম। আমাকে বলেছিলো দোতালায় উঠে চার নম্বর রুমটা আমার। নিজের মাথায় একটা চাটি মেরে বললাম ধুর চারু বাম দিক থেকে নাকি ডান দিক থেকে তাই ই তো তুই জিজ্ঞেস করিসনি। পাশ থেকে কেউ একজন বললো, "এই যে মিস চারুলতা তোমার রুম ঐপাশের টা। এটা আমার।" আমি চমকে ঘুরে তাকিয়ে দেখলাম দুলাভাইয়ের ছোট ভাই দিহান হাসিমুখে তাকিয়ে আছে। গোপনে একটা নিশ্বাস ফেললাম যাক এ বাড়ির একজন মানুষ অন্তত হাঁসতে জানে। আমাকে পাশ কাটিয়ে দিহান তার রুমে ঢুকে গেলো।
.
.
বিছানায় শুয়ে শুয়ে আমি ভাবছি আপার কথা। আমাদের পরিবারে কথা। হুট করে আব্বা এরকম একটা পরিবারে আপার বিয়ে দিয়ে দিলেন। ভালোকরে খোঁজ খবর ও নিলেন না। তারপর আপাকে একদিন দুলাভাইয়ের সাথে দেখা করতে পাঠালেন আর তার পরের সপ্তাহেই বিয়ে। যদিও দুলাভাইদের অবস্থা আমাদের থেকে ভালো। এতবড় বাড়ি, বাড়িভর্তি সব দামী আসবাবপত্র। অভাব শুধু মানুষের। একসময় নাকি এরা জমিদার ছিলেন। বিছানা ছাড়া নতুন কোথাও ঘুম আসেনা আমার। এপাশ ওপাশ করতে করতে এসবই ভাবছিলাম। তারপর কখন যেন গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলাম। প্রায় শেষরাতে আমার ঘুম ভেঙে গেলো। মনে হলো কেউ একজন আমার পা ধরে টানছে। ধড়মড় করে উঠে বসলাম আমি। এদিকে ইলেক্ট্রিসিটি নেই। মোমবাতি আর দিয়াশলাই আমার মাথার কাছেই ছিলো। বড় একটা মোমবাতি জ্বালালাম। দরজা ভেতর থেকেই বন্ধ আছে। পুরো রুমে কেউ কোথাও নেই। নিজের বোকামির জন্য নিজের বিরক্ত লাগলো। ঘুম আসছিলো না আর। ঘরের জানালাটা খুলে দিলাম। বাইরে চাঁদের আলোয় বাড়ির পেছনটা দেখা যাচ্ছে। পেছনে দীঘীতে শান বাঁধানো বড় ঘাট। দীঘের পানিতে চাঁদের আলো এত চমৎকারভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে যে সবকিছু স্বর্গীয় লাগছে। এদিক ওদিক দেখতে দেখতে আমার চোখ গেলো দীঘির পাশের কৃষ্ণচূড়া গাছের দিকে। তারপর যা দেখলাম নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারলাম না। হঠাৎ কে যেন পেছন থেকে আমার কাঁধে হাত রাখলো। একটা বরফ শীতল ঠান্ডা হাত আস্তে আস্তে আমার গলার দিকে এগোতে লাগলো
মাঝে মাঝে সবকিছু উপেক্ষা করি। উপেক্ষা করতে ইচ্ছে হয়। উদাস উদাস লাগে।নিজের খাপছাড়া আচরণে হতবাক হই নিজেই । ভাইয়ের ছোট ছেলে কান্না করে। আমি শুনেও শুনি না।দেখে ও এগিয়ে যাই না। বৃষ্টি এসে ছাদে শুকাতে দেয়া জামাকাপড় ভিজিয়ে দিয়ে যায়, আমি ব্যস্ত হই না। চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকি। বৃষ্টিতে সমস্ত শরীর ভিজে যায়, ঠান্ডা অনূভুতি বয়ে যায় শিরদাঁড়া দিয়ে। আমার ভালো লাগেনা তাড়াহুড়ো করে চলে যেতে। অসহ্য লাগে সবকিছু।
ছোট একটা চাকরি করি। অল্প বেতন। আমার অসুবিধা নেই। মায়ের ওষুধ কেনার পর যে টাকা থাকে তাতেই দিব্যি চলে যায়। বাড়ি ভাড়া দিতে হয়না।
বাড়িটা বাবার। বাবা মারা যাবার পূর্বে এই বাড়িসহ যাবতীয় সম্পত্তি তার দুই ছেলের নামে করে দিয়েছেন। ভাইয়েরা দয়া করে এবাড়িতে থাকতে দিয়েছে এই তো অনেক।মা আর আমি একরুমে থাকি। বাকি সব ঘর দুই ভাইয়ের দখলে।বড় ভাইয়া ছেলে মেয়ে নিয়ে এখানে থাকলেও ছোট ভাইয়া থাকে না।তার রুমে তালা ঝুলিয়ে রাখা। মাঝে মাঝে মা খুব আফসোস করে নিজের হাতে গড়া সংসার। এখন কোন অধিকার নেই। প্রায়ই বলে,"এতো কষ্ট করে এই সংসার সাজিয়েছি কি এইদিন দেখার জন্য?"আমি কি বলবো বুঝি না।
অফিসে যাবার ঘণ্টাখানেক বাকি। রান্না শেষ করে রুমে আসি।
নিলু,এই নিলু?
বল, শুনছি'
আমার পাশে একটু বোস, বড্ড একা একা লাগে আমার,,
'আমার অফিসের বেলা হয়ে এলো।আর কিছু বলবে?' বিরক্ত হয়ে কথা টা বলি। রাতে ভালো ঘুম হয় নি। মাথা ঝিমঝিম করছে। অফিসে জরুরী মিটিং আছে। এইসময় তার সাথে অহেতুক কথা বলা কিভাবে সম্ভব।
'না'
মায়ের নিভিয়ে যাওয়া স্বরের ছোট জবাব।
অতকিছু খেয়াল করলে চলে? তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করে মায়ের দুপুরের খাবার এনে রুমে রাখলাম। অফিসের জন্য রেডি হয়ে বের হতে হতে জিজ্ঞেস করলাম, তোমার কিছু লাগবে?
কোন উত্তর পেলাম না। বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে রিকশা খুঁজতে লাগলাম।
বাসায় ফিরতে একটু দেরী হয়ে গেল। প্রতিটা সময় একটা ভয়ে থাকি। তাড়াহুড়ো করে বাসায় ঢুকি। আমাকে দেখে নিধির উচ্চস্বরে বকবকানি আরো বেড়ে যায়। নিধি আমার বড় ভাবী।
'দেখ, তোমার মা আজও আমার ছেলেকে কিসব বলছে, ছেলে তো কেঁদে কেঁদে হয়রান। বুড়ো হয়েছে তবু তেজ কমে নাই। কবে যে মরে আমাদের হাড় জুড়োবে কে জানে......
আমি রুমে চলে আসি। নিত্য দিনের ঘটনা এগুলো। শুনতে শুনতে মুখস্থ হয়ে গেছে। কতদিন আর ভালো লাগে,সহ্য হয়? কিছু বলতে পারি না। ঘরে ঢুকে ফুল ভলিউমে গান ছাড়ি।নিধির কথা যেন কানে না পৌঁছায়। ভাইয়া না আসা পর্যন্ত তার মাউথ রেকর্ডার চলতে থাকবে। কোন মানে হয়!
মা শুকনো মুখে বসে আছে।তার স্বর এতটা উঁচু নয় যে ছেলে বউয়ের সাথে পাল্লা দিতে পারবে। পরাজিত হতে কারোরই হয়ত ভালো লাগে না।বয়স যতই হোক।মা বেশি হাঁটাচলা করতে পারে না, শুয়ে বসে থাকে।বড় ভাইয়ের ছয় বছরের মেয়ে আর চার বছরের ছেলে এসে এ ঘরের সবকিছু উল্টাপাল্টা করে দিবে।মা কিছুই বলতে পারবে না।বললেই লেগে যায় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। মাকে কতবার বলেছি চুপ থাকতে। কে শোনে কার কথা! বয়সের দোষ হয়তোবা।
ক্লান্ত শরীরে বিছানায় গা এলিয়ে দেই। বেঁচে থাকা অসহ্য লাগে।কি হবে এভাবে বেঁচে থেকে?
অনেকক্ষণ পর মায়ের কাছে আসি। এসময় তার মন খারাপ হয়ে থাকে। কাপড়ের প্রান্তে চোখ মুছছেন বারবার। পাশে বসতেই ধরা গলায় বলল, আমি মরলেই তোরা মুক্তি পাস তাই না?
আমি হকচকিয়ে গেলাম।মা কখনো এমন কথা বলে না।আজ কি হলো তার। কোন উত্তর দিতে পারলাম না। চুপ করে বসে থাকি। মনে মনে উত্তর খুঁজি। সত্যিই কি মা মারা গেলে সবাই মুক্তি পাবে? পাবে। ভাইয়া তাঁর ছেলে বউয়ের নালিশ থেকে মুক্তি পাবে। ছোট ভাই তার মাসে একবার করা ফোনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাবে। নিধি তার প্রতিদিনের বাক প্রতিদ্বন্দ্বী কে হারিয়ে সবচেয়ে বেশি খুশি হবে। আমি? আমি কি মুক্তি পাবো?
মাঝরাতে দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম থেকে উঠে কেউ আমাকে জাগিয়ে তুলবে না। অফিসে বসে কারো জন্য চিন্তা করতে হবে না। ক্লান্ত শরীরে কারো অহেতুক বকবক শুনতে হবে না। ওষুধের দোকানে গিয়ে বারবার টাকা গুনতে হবে না। বৃষ্টিতে ভিজলে কারো বকা খেতে হবে না।মহামুক্তি!
মায়ের স্পর্শ পেয়ে ভাবনা থেকে ফিরে এলাম। আমার থুতনিতে হাত দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, তোর কি শরীর খারাপ? মুখটা শুকনো শুকনো লাগছে? কিছু খাস নি এখনো তাই না?
'তোমার কাছে এমন মনে হচ্ছে, আমি ঠিক আছি।
তুমি খেয়েছ?'
'তোকে ছেড়ে খাই কি করে!কত কষ্ট হয় তোর.. আর আমার ছেলে দুটো, একবার জানতে ও চায়না কেমন আছি...'তার চোখ ভিজে ওঠে।
'তুমি চুপ করবে!
আর কিছু বলতে পারি না। বুকের ভেতর চিনচিন করে।কত কষ্ট করে সন্তান বড় করে মায়েরা।সেই সন্তান বড় হয়ে যখন মা'কে ভুলে যায়। সেই কষ্টের সান্ত্বনা আমি কিভাবে দিব?
'আমি মরলে সবাই বেঁচে যাবে' বিড়বিড় করে বলতে থাকে মা।
উঠে ছাদে চলে আসি। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করে। পারি না। ইচ্ছে করে ছুটে যাই মায়ের কাছে। তাকে বলি, আমাকে একা ফেলে চলে যেও না। তোমাকে অনেক ভালোবাসি, তুমি ছাড়া থাকতে পারবো না। তুমি যেমন আছ তেমনই থাকো। শুধু আমার মা হয়ে বেঁচে থাকো চিরকাল।'বলা হয় না।
আকাশে গোল চাঁদ উঠেছে। মেঘের আনাগোনায় জোৎস্না কে বিবর্ণ দেখাচ্ছে।রাতের আকাশে একটা নিঃসঙ্গ চাঁদ। আমার ভেতর এক টুকরো বিবর্ণ অনুভূতি।যার কোন বর্ণণা আমি দিতে পারবো না।
এই পৃথিবীতে কোনো এক তারা ভরা পূর্ণিমা রাতে তোমাকে তারার মাঝে খুঁজতে হবে ভাবতেই পারি না।
বিবর্ণ অনুভূতি।
শাকিলা বৃষ্টি
একটুকরো অনুভূতি লিখলাম কেমন হলো জানাবেন।