15
5

বিশ্বের সকল বার্সেলোনা সমর্থক উৎকণ্ঠায় ছিলেন গত কয়েক ঘন্টা। দিনের শুরুতেই জানানো হয়েছিল আজ বার্সেলোনায় থাকবেন কিনা সে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন লিওনেল মেসি। তাদের অপেক্ষা ফুরিয়েছে, কিন্তু তাতে দুশ্চিন্তাটা উল্টো কান্নায় রূপ নিয়েছে। কারণ, এবার আর ইঙ্গিতে নয়, বার্সেলোনাকে সরাসরি মেসি জানিয়ে দিয়েছেন থাকবেন না আর।

Zero width embed
আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম 'টিওয়াইসি স্পোর্টস' জানিয়েছে, বুরোফ্যাক্সের (প্রত্যায়িত পত্র) মাধ্যমে বার্সাকে মেসি জানিয়েছেন তিনি ক্লাব ছাড়তে চান। পত্রিকায় ওপর ভরসা না রাখতে চাইলে কার্লোস পুয়োল আছেন। বার্সা কিংবদন্তি টুইট করেছেন, 'সম্মান ও প্রশংসা লিও, আমার সমর্থন রইল বন্ধু।' সে টুইটে হাততালি দিয়েছেন লুইস সুয়ারেজ। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই আর্তুরো ভিদালের ইঙ্গিতপূর্ণ টুইট, 'দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে বাঘ হাল ছাড়ে না, লড়াই করে।' বার্সেলোনা পরিচালকদের নানা অন্যায়ের প্রতিবাদে মেসির এমন কড়া প্রত্যাঘাতের প্রতিই যে ইঙ্গিত সেটা বুঝতে কারও অসুবিধা হচ্ছে না। তাহলে তো হয়েই গেল, মেসি বার্সেলোনা ছাড়ছেন-এটা নিশ্চিত।
[bad iframe src]
তবে আইন ব্যাপারটা অত সহজে হতে দিচ্ছে না। বার্সেলোনার সঙ্গে মেসির চুক্তির একটি শর্ত ছিল, প্রতি মৌসুম শেষে মেসি চাইলেই ক্লাব ছাড়তে পারবেন। আর ছাড়ার ইচ্ছে না দেখালে এক মৌসুমের জন্য আবার চুক্তিবদ্ধ হবেন। ফলে নতুন দলবদল মৌসুমে বার্সেলোনার অনিচ্ছায় মেসিকে কেউ নিতে চাইলে মেসির বাই আউট বা রিলিজ ক্লজ ৭০ কোটি ইউরো দিয়ে নিতে হবে। নেইমারের ক্ষেত্রে যেমন ২২ কোটি ২০ লাখ ইউরো দিয়েছিল পিএসজি।
মেসির যুক্তি যেহেতু নতুন মৌসুম শুরু হয়নি, তাঁর আগের শর্ত এখনো প্রযোজ্য। ফলে আজ এক বুরোফ্যাক্সের (প্রত্যায়িত পত্র) মাধ্যমে তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে সে চুক্তির কথাই মনে করিয়ে ক্লাব ছাড়ার কথা জানিয়েছেন। আগের মৌসুম শেষ হয়েছে, এখনো নতুন মৌসুম শুরু হয়নি, তাই নিজের ইচ্ছায় ক্লাব ছাড়তে পারবেন মেসি। আবার সে চুক্তিকেই নিজেদের মূল অস্ত্র মানছে বার্সেলোনা বোর্ড।
[bad iframe src]
Zero width embed
মেসির চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছে বার্সেলোনা। এরপরই জরুরি এক আলোচনায় বসেছে তারা। বার্সেলোনা পরিচালকেরা মেসিকে ছাড়তে রাজি নন। তাদের দাবি, প্রতি বছরের মতো মেসির ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছের কথা জানানোর সময় শেষ হয়েছে গত মে মাসে। ১ জুন থেকে তাই ২০২০-২১ মৌসুমের জন্য বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে আছেন মেসি। তাই তাঁকে ক্লাব ছাড়তে হলে নতুন ক্লাবকে অবশ্যই ৭০ কোটি ইউরো খরচ করতে হবে।
ওদিকে মেসির আইনজীবীর যুক্তি করোনা ভাইরাসের কারণে এ মৌসুমে মে মাসে লিগ ও চ্যাম্পিয়নস লিগ শেষ হয়নি। অস্বাভাবিক এক মৌসুমে আগের নিয়ম খাটে না। বরং যে মাসে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে, সেটাকেই আগের মৌসুমের শেষ মাস ধরতে হবে। যেহেতু বার্সেলোনা আগস্টেও আগের মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলেছে, মেসির চুক্তির শর্তের মেয়াদ আগস্টের শেষ অর্থাৎ ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। আর মেসি যেহেতু এর আগেই আইনি পত্রের মাধ্যমে নিজের ক্লাব ছাড়ার কথা জানিয়েছেন, সেহেতু বাধাহীনভাবে ক্লাব ছাড়তে পারবেন মেসি।
[bad iframe src]
বার্সেলোনা বোর্ড যদি মেসির ক্লাব ছাড়ার প্রস্তাবে রাজি না হয়, সেক্ষেত্রে দুই পক্ষের মধ্যে লড়াইটা আদালত পর্যন্ত গড়াবে। তাতে সম্পর্কের ফাটল বাড়বে, কমবে না। আর মেসিও ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্তে অটুট থাকবেন। গত ২০ বছর যে ক্লাবের হয়ে নিজের সর্বস্ব দিয়েছেন, তাদের সঙ্গে কাটানো শেষ সময়টুকু অযথা তিক্ততায় ভরে উঠবে। ক্লাবের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়ের সঙ্গে এমন আচরণ কোনো সমর্থকই মেনে নেবেন না। আজ পরিচালকদের আলোচনা শেষে মেসিকে আটকানোর উপায় সম্ভবত একটিই, আর তা হলো বোর্ড সভাপতি জোসেপ বার্তোমেউ ও তাঁর দলবলের ক্লাব থেকে সরে যাওয়া।
কিন্তু ক্লাবের স্বার্থকে ঠেলে ফেলে নিজের লাভকে সবসময় বড় করে দেখা বার্তোমেউ এমন সিদ্ধান্ত নেবেন, এমন আশা কড়া বার্সেলোনা সমর্থকও হয়তো করছেন না।

The best football player ❤❤