অহংকারী_মেয়ে

0 6
Avatar for Sohagshekh
4 years ago

-- এই ছেলে কি দেখতে পাস না চোখে।

মেয়েটি ঠাস করে আমার গালে মেরে চোখের উপর পড়ে থাকা চশমাটা ছুঁড়ে ফেলে দিলো, আমার চশমাটা পড়ে যেতেই আমি সব কিছু অন্ধকার দেখতে লাগলাম, মেয়েটি এবার আমার জামার কলার ধরতে যাবে ঠিক তখনি ওই মেয়ের এক ফ্রেন্ড...

-- এই ছি, এই ছেলেটার শরীরে স্পর্শ করছিস, ওয়াক থু। দেখিস না এক জামাকাপড় পড়ে প্রতিদিন কলেজে আসে।

কথাটা শুনে নিজের খুব কষ্ট হলো।

-- ঠিকি বলেছিস রিতা, আমরা সব কত বড়োলোক বাপের মেয়ে আর এই ছেলেটার শরীরে হাত দিলে তো আমাদের সম্মান নষ্ট হয়ে যাবে।

-- একদম দোস্ত, ক্ষাত একটা।

-- এই এখনো তুই দাঁড়িয়ে, হ্যাঁট কুত্তা।

আমি এখনো দাঁড়িয়ে আছি কারন আমি চশমাটা চারিদিকে খুঁজছি কিন্তু খুঁজে পাচ্ছিনা।

-- এই ফালতু ছেলে এখান থেকে যা।

-- এই তিশা ছেলেটার দিকে গোটা কয়েক টাকা ছুঁড়ে মার নাহলে এ দেখি যাবে না, পুরাই ভিখারির বাচ্ছা।

কথাটা শুনে চোখে পুরা পানী এসে গেলো, এবার ওই তিশা নামের মেয়েটি আমার দিকে টাকা ছুঁড়ে দিলো, আমি চশমাটা খুঁযে পেয়ে যেতেই আমি চুপচাপ চলে এলাম কারন এই কলেজে আমাকে নিয়ে সবাই মজা করে কারন আমি গরীব, আমি গরীব বাবা মায়ের সন্তান।

আর ওইখানে ঘটনাটা ঠিক আমার দোষ ছিলো না তিশা নিজেই এসে আমাকে ধাক্কা মেরেছিলো। আমার নাম অভ্রনীল আর কিছু জানা লাগলে প্রোফাইলে আসেন। আমি আমাদের গ্রামে খুব মেধাবি ছাত্র ছিলাম, কিন্তু এই কলেজেও থাকতে চাই কিন্তু সবাই আমাকে নিয়ে এতোটাই মজা করে ধারনার বাইরে।

আমি এবার ক্লাস রুমের দিকে এগোচ্ছি সবাই আমাকে দেখে খুব হাসছে, এটা আজ না প্রতিদিনি হয়, আমি মাথা নিঁচু করে ক্লাস রুমে ঢুকে লাস্টের বেঞ্চে বসি তাই বসে পড়লাম, ক্লাস সেরে রুমে এলাম নিজেকেই রান্না করতে হয়, আবার রান্না করে খাওয়া সেরে ২টা টিউশন আছে সেগুলা করে বাসাতে ফিরতে হয় মোটামুটি রাত ১০টা বেজে যায়। আমার টিউশন এর টাকাতে আমাদের সংসার চলে কোনোমতে। আমি এখন ছাদে বসে আছি বই নিয়ে, আর পড়ছি পড়া শেষ করে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে উঠে আবার কলেজের দিকে রওনা হলাম, আমি গরীব বাবা মায়ের সন্তান, তাই আমাকে হেঁটেই কলেজে যেতে হয় একটাকাও বাজে খরচ করিনা।

আমি এবার কলেজের গেটে ঢুকতে যাবো ঠিক তখনি দেখি তিশা আর ওর ফ্রেন্ডরা আমার সামনে এসে দাঁড়ালো আর আমাকে দেখে অনেক মজা করতে লাগলো, আমি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি আর সব মুখ বুঁজে সহ্য করছি, ওদের খিল্লি আর থামে না, এবার আমি....

-- আমাকে যেতে দিন প্লিজ। (আমি)

-- এটা কি তোর বাপের রাস্তা নাকি, অন্যদিকে যা যদি যাওয়ার হয়।

-- না না বাপির হতে যাবে কেন? আর অন্যদিকে রাস্তা নেই তো।

-- তাহলে এখানে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক।

-- প্লিজ আমাকে যেতে দিন, ক্লাস মিস হয়ে যাবে।

-- আচ্ছা যেতে পারিস তবে একটা শর্তে

-- কি বলুন আপু।

-- তিশার স্যান্ডেলগুলা তোর রুমাল দিয়ে পরিষ্কার করে সেই রুমাল তোর মুখে লাগাতে হবে।

কথাটা শুনে আমি আশ্চর্য হলাম, সত্যিই বড়োলোকের মেয়েরা অনেক অহংকারী। টাকাই দুনিয়ার সব।

-- আচ্ছা আপু।

আমি এবার তিশার স্যান্ডেল গুলা পরিষ্কার করে থাকলাম, তিশার স্যান্ডেল গুলা দেখে মনে হচ্ছে ওনার যা জুতার দাম তা দিয়ে হয় তো আমাদের মতো গরীবদের ২ মাসস অনায়াসে এ যাবে। আমি ওর স্যান্ডেলের দিকে একভাবে তাকিয়ে রইলাম। আর ভাবতে লাগলাম আমিও যদি বড়ো লোক হতাম, না বড়ো লোকরা খুব অহংকারী হয়, আমাকে যেন কে পিছন থেকে কলার ধরে তুললো, দেখি প্রফেসার এই কলেজের। আমি সালাম দিলাম, কিন্তু আমার গালে একটা কষে থাপ্পড় মারলেন উনি.....

-- এই করতে আসো কলেজে, মেয়েদের ইন্সাল্ট করতে।(স্যার)

-- দেখুন না স্যার, আমার পা ধরে কি সব করছে, আর কতো কি খারাপ ভাষা বলছে। (তিশা)

-- জ্বি স্যার, আরো কতো কি খারাপ কথা বলেছে, ছি ওগুলো মুখে আনতে পারবো না।(রিতা)

আমাদের এসব কান্ড দেখে গোটা কলেজের সুডেন্ট, ছোটো বড়ো সব আমাদের চারপাশে দাঁড়িয়ে দেখছে, আর আমি মাথা নিচু করে শুনছি আর চোখের কোন থেকে ফোঁটা ফোঁটা করে পানী বের হচ্ছে। স্যার এবার চলে গেলো আরো অনেক কিছু বলে, আমি ক্যাম্পাসে গিয়ে অনেক কান্না করতে থাকলাম, কেউ কিছু বলে না কারন আমি গরীব। এই কলেজে চান্স পাওয়াটা আমার আম্মুর ইচ্ছা তাই আম্মুর ইচ্ছা পূরন করতে এখানে আছি, এই কলেজে সবাই বড়ো লোক তারমধ্যে সবথেকে বড়ো লোকের মেয়ে হলো ওই তিশা।

মেয়েটা অনেক দেখতে সুন্দর তবে মনটা খুব বাজে, খুব অহংকারী।

একটাও ক্লাস না করে কলেজ ক্যাম্পাসেই বসে আছি দেখি আবার ওই মেয়ে গুলো আমার দিকে আসছে, আমি এবার তাড়াতাড়ি উঠে এগোতে থাকলাম........

-- এই অভ্রনীল এই অভ্রনীল।

ওরা যতো জোরে নাম ডাকছে আমি আরো তাড়াতাড়ি ছুটতে লাগলাম,

-- এই দাঁড়াবি কিনা, নাহলে এই কলেজ থেকে তোকে বের করে দেবো। এই কথাটা শুনে খুব রাগ হলো, কোনোদিন মুখের উপর কথা বলিনি কিন্তু আজ বলতে বাধ্য হলাম

-- কেন বের করবেন হুম।

-- ওই পোলা এতো ভাব কিসের হুম, পড়িস তো এই ছেঁড়া জামাপ্যান্ট। শোন তোকে এই কলেজ থেকে কেন এই শহর থেকে তাড়িয়ে দিতে পারবো জানিস তো, আমাদের কাছে টাকা আছে।

জানি টাকাই এখন এই দুনিয়ার মালিক তাই কিছু না বলে আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম....

-- আচ্ছা, আমি এখন যাই।

-- কই যাবি এখনন, আমাদের জুতা গুলা পরিষ্কার করে দিয়ে যা।

-- দেখুন আপুরা আমি পারবো না আমার কাজ আছে।

-- আমরা ফ্রিতে করাই না কাউকে কোনো কাজ, টাকা দেবো।

-- সরি।

তিশা এবার আমার কাছে এসে আমার গালে অনেক গুলা থাপ্পড় মারলো, আমি গালে হাত দিয়ে দাঁড়াই রইলাম, আমার চোখ ছলছল করছে এখন.....

-- কর বলছি(তিশা)

আমি এবার সবার জুতা পরিষ্কার করে তিশার জুতায় গিয়ে হাত দিলাম। আমি পরিষ্কার কর‍তে করতে আমার হাত ওর পায়ে একটু লেগে যায়, তার জন্য আমার বুকে একটা জোর করে লাথি মেরে আমায় ফেলে দিলো , আর আমার কানের নীচে একটা সজোরে মেরে......

-- ছি তোর এই উদ্দেশ্য ছিলো। ছি ছি ছি আবার ফ্রেশ হতে হবে। দূর হো আঁটকুড়োর পোলা

আমাকে এবার সব মেয়ে গুলা যা ইচ্ছা তাই করলো, এমনকি আমার শরীরে থু থু পর্যন্তু ছিটে দিয়ে গেলো ওরা, আরর আমার দিকে একটা টাকার বান্ডিল ছুঁড়ে দিয়ে গেলো, আমি ওই টাকার বান্ডিলটা কুঁড়িয়ে নিলাম পরে দিয়ে দেবো, নিজে যতোটুকু রোজগার করতে পারি তাতেই খুশি। প্রতিদিন আমার এভাবেই ইন্সাল্ট করা হয়য় কি

2
$ 0.00
Avatar for Sohagshekh
4 years ago

Comments