ভূমিকম্প শব্দটার সাথে আমরা সবাই পরিচিত। বলতে গেলে বেশ ভয়ানক ভাবেই পরিচিত। এইতো কিছু দিন আগেই বাংলাদেশে ৫.৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়ে গেলো। আমরা সবাই দেখে আসছি ভূমিকম্প হয়। কিন্তু কেন হয় তা কি আমরা জানি? বা রিখটার স্কেলের কত মাত্রাতে আসলে কি বুঝায়? আমরা অধিকাংশই জানি না। তাহলে চলুন আজ জেনে নেয়া যাক ভূমিকম্প হওয়ার পেছনে কারণ, রিখটার স্কেলের পরিমাপ এবং আরো কিছু তথ্য।
১৯১২ সালে জার্মান বিজ্ঞানী আলফ্রেড ওয়েগনার বিভিন্ন গবেষণা করে একটি তত্ত্ব প্রকাশ করেন। তত্ত্বটির নাম হল “কন্টিনেন্টাল ড্রিফট” । এ তত্ত্ব অনুসারে , এক সময় পৃথিবীর মহাদেশ গুলো একসাথে ছিলো। কিন্তু পরে তা বিভক্ত হয়ে একে অপর থেকে দূরে সরে গেছে। আমদের পৃথিবীর ভূ পৃষ্ঠ অনেক গুলো খন্ড বা প্লেটে বিভক্ত। এই প্লেট গুলোকে বলা হয় “টেকটনিক প্লেট”। এই প্লেট গুলো একে অপরের সাথে পাশাপাশি অবস্থান করে। কিন্তু এরা স্থির নয়। এরা একে অপরের সাপেক্ষে কখনো কাছাকাছি আসে। কখনো কখনো দূরে সরে যায় আবার কখনো কখনো নিজেদের মাঝে সংঘর্ষ হয়। বিপুল পরিমাণে শক্তি বহন করা দুটি টেকটনিক প্লেট যখন একে অপরের সাথে ধাক্কা খায় তখন এ শক্তি বাইরে নির্গত হয় যা পৃথিবীর উপরিভাগকে কাঁপিয়ে দেয়। কম্পন আকারে এ শক্তি মাটিতে ছড়িয়ে পড়ে। তখনি ভূমিকম্প হয়।
যে খানে টেকটনিক প্লেটের সংযোগস্থল আছে সেখানটাকে বলা হয়ে থাকে “ফল্ট লাইন”। আর এ ফল্ট লাইনেই ভূমিকম্প বেশি হয়। ফল্ট লাইনের বিচ্যুতির ফলে যে শক্তি নির্গত হয় তা সিসমিক তরঙ্গ রূপে মাটির ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সব দিকে ছড়িয়ে পড়ে । যে কেন্দ্রে ভূমিকম্প উৎপন্ন হয় তাকে হাইপোসেন্টার (Hypocenter) বলে । আর তার ঠিক উপরে ভূপৃষ্ঠে অবস্থিত বিন্দুটিকে বলা হয় এপিসেন্টার (Epicenter). উৎপত্তিস্থলে ভূমিকম্পের তীব্রতা থাকে সবচেয়ে বেশি।
ভূমিকম্প যখন সৃষ্টি হয় তখন তিন ধরণের তরঙ্গ বা ওয়েভের সৃষ্টি হয়। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলে যে ওয়েভ সৃষ্টি হয় তাকে বলা হয় প্রাইমারি ওয়েভ বা P wave. এটি সবচেয়ে দ্রুত গতিতে আশে পাশে ছড়িয়ে পড়ে। এর পর দ্বিতীয় একটি ওয়েভের সৃষ্টি হয় যাকে বলে সেকেন্ডারি ওয়েভ বা S wave. তৃতীয় ওয়েভটির নাম হল সার্ফেস ওয়েভ। এই সার্ফেস ওয়েভটিই ভূপৃষ্ঠে এসে আঘাত হানে। আর তখনি আমরা ভূমিকম্প অনুভব করতে পারি।
সারা পৃথিবীতে বছরে প্রায় ছয় হাজার ভূমিকম্প হয়। এর বেশির ভাগের পেছনেই দায়ী হয় ফল্ট লাইনের এদিক সেদিক হওয়া। তবে এটি ছাড়াও আরো কিছু কারণ আছে। যেমন আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের ফলে ভূমিকম্প হয়ে পারে।এ ছাড়াও নিউক্লীয় বোমার বিস্ফোরণের ফলেও ভূমিকম্প হতে পারে।
Yes.... That's information is true... 😍😍😍😍😍