লোকসাহিত্যে 'ধাঁধা' অন্যতম প্রাচীন শাখা হিসেবে বিবেচিত। রূপকের সাহায্যে এবং জিজ্ঞাসার আকারে কোন একটি ভাব সুক্ষ্ম বুদ্ধি ও চিন্তার অনুশীলনের মাধ্যমে ধাঁধাঁয় রূপায়িত হয়ে ওঠে। এতে বুদ্ধিবৃত্তি বিকাশের যে নিদর্শন পাওয়া যায় তাতে তাকে আদিম জাতির সৃষ্টি মনে না করে বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন মানবমনের সৃষ্টি বলে অনুমিত হয়। মানুষ সুপ্রাচীন কাল থেকে ধাঁধাঁর ব্যবহার করে আসছে। প্রত্যেক দেশের প্রাচীন সাহিত্যেই ধাঁধার অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়। প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে ধাঁধাঁ বা হেঁয়ালী ব্যবহারের প্রাচুর্য ছিল।
ধাঁধাঁর মাধ্যমে জ্ঞান বুদ্ধির চর্চা হয়ে থাকে। অল্প কয়টি কথায় সাধারণত কবিতার আকারে কাউকে কোন প্রশ্ন করা হলে তা ধাঁধাঁ হিসেবে বিবেচিত হয়। তখন প্রশ্নের উদ্দিষ্ট ব্যক্তিকে এর সঠিক উত্তর দিতে হয়। ধাঁধা জিজ্ঞাসা এবং সে সবের উত্তর দানের। মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে বুদ্ধিবৃত্তির পরিচয় মিলে।
দৈনন্দিন জীবনের বিচিত্র উপকরণ থেকে ধাঁধার বিষয়বস্তু আহরিত হয়। এই ক্ষেত্রে মানব জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা ও অনুসন্ধিৎসার পরিচয় প্রকাশ পায়। প্রশ্নকর্তা নিজে উত্তর গােপন রেখে ধাঁধাঁর মাধ্যমে জবাব আশা করে। জবাব দিতে পারলে চালাক এবং না দিতে পারলে বােকা প্রমাণিত হয়। ধাঁধার উত্তরদানে ব্যর্থ হলে তা হাসির উপকরণ হয়ে ওঠে। ধাঁধার সঙ্গে আছে মানুষের হাস্যরসবােধের সম্পর্ক।
ধাঁধাঁর উত্তর জনশ্রুতিমূলক হয়ে থাকে। সাধারণত উত্তর জানা না থাকলে প্রশ্নকর্তার সম্মুখে বিব্রত হতে হয়। তবে ধাঁধার মীমাংসা জনশ্রুতিমূলক বলেই তার জবাবদান সম্ভবপর। আগে থেকে জানা না থাকলে লোকসাহিত্যের ধাঁধার উত্তর বের করা কঠিন। কারণ ধাঁধাঁর মধ্যে বক্তব্য সাধারণত সঙ্গতিপূর্ণ থাকে না।
Wow nice...