বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে সিন্ধু সভ্যতার আবিস্কার ভারতবর্ষের ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায়।
পৃথিবীর অধিকাংশ বড় বড় সভ্যতার মতো সিন্ধু সভ্যতাও নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল। সিন্ধু নদীর তীরে এ সভ্যতার জন্ম। এ সভ্যতার জন্ম আজ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বেকার। কিন্তু ভাবতে অবাক লাগে, বিংশ শতাব্দীর গোড়াতেও এই মহান সভ্যতা সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণাই ছিল না। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম ভারতের খ্যাতনামা প্রত্নতত্ত্ববিদ রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমান পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের লারকানা জেলার মহেঞ্জোদারো নামক স্থানে একটি বিরাট ধ্বংসস্তূপ দেখতে পান। একই বছর ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অপর সদস্য পন্ডিত দয়ারাম সাহনি একই ধরনের ধ্বংসাবশেষ পাঞ্জাব প্রদেশের মন্টগোমারি জেলার হরপ্পায় আবিষ্কার করেন। এরপর ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তৎকালীন অধিকর্তা স্যার জন মার্শালের তত্ত্বাবধানে মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পাতে খননকার্য শুরু হয়। এর ফলে ভারতীয় উপমহাদেশে এক প্রাচীন সুমহান সভ্যতার নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়।
ভারতীয় উপমহাদেশ সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতা হলো সিন্ধু সভ্যতা। এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত ৭০টি সিন্ধু সভ্যতার এলাকার মধ্যে হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোতে আবিষ্কৃত নগর দুটিই সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য।
একই পরিকল্পনা ও নকশায় হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো নগর দুটি নির্মিত হয়েছিল। গ্ৰীড পদ্ধতি অনুসারে ও সারিবদ্ধভাবে নির্মিত বাড়িঘর, প্রশস্ত রাস্তা ও রাস্তার তলদেশে হতে নির্মিত নর্দমা, উন্নত পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থা, রাজপথে বড় আবর্জনাকুন্ডু, নগরের অধিবাসীদের সুবিধার জন্য রাস্তার পাশে সমান দূরত্বে সড়ক বাতি স্থাপন, বৃহৎ স্নানাগার, হল ঘর ও শস্যাগার নির্মাণ। এসবই ছিল সিন্ধু সভ্যতার বৈশিষ্ট্য। এসকল নিদর্শন হতে প্রতীয়মান হয় যে, প্রাচীন সিন্ধু উপত্যকাবাসী অতি উন্নত জীবন যাপন করত।
Educational article