স্কুলের স্মৃতি গুলো

0 33
Avatar for Shamima
4 years ago
Sponsors of Shamima
empty
empty
empty

স্কুল সময়ের সবারই কম বেশি কিছু মজার মজার স্মৃতি রয়েছে। যা কখনো ভোলার নয়। এই স্মৃতিগুলো এমন যে, বারবার সেইদিন স্কুলের সময়গুলোতে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে। তেমনি আমারও রয়েছে স্কুল সময়ের বেশ কিছু স্মৃতি।

স্কুল সময়ের আমার সবচেয়ে বেশি স্মৃতি রয়েছে ক্লাস নাইন আর টেন এর। কারণ এ সময়ে পুরনো বান্ধবী সহ ক্লাস নাইনের কিছু নতুন বান্ধবী ও ভর্তি হয় আমাদের স্কুলে। সবাই মিলে বড় একটা গ্যাঙ ছিলাম আমরা। সব বান্ধবীর মধ্যে দুইজন ছিল সেরা। যাদের সাথে আমি উঠতে বসতে ওদের সাথে থাকতাম আর সবকিছু ওদের সাথে শেয়ার করতাম। ওরাও সবকিছু শেয়ার করতো। এমন সম্পর্ক ছিল যে বান্ধবী কম বোন বেশি ছিলাম। অনেক মজা আর মস্তিতে কেটেছে আমাদের স্কুলের সময় গুলো। এখন আমি ইউনিভার্সিটিতে পড়ি। কিন্তু মনে হয় এই সেদিনের কথা যখন আমি স্কুলে পড়তাম।

সকাল সাতটায় আমরা বাসা থেকে বের হতাম স্কুলে যাওয়ার জন্য। আমার বাসার নিচে ওরা এসে জমা হতো। আমি নিচে নামার পর সবাই একসাথে সারা রাস্তা গল্প করতে করতে স্কুলে যেতাম। কোন কোন দিন যদি কারো দেরি হয়ে যেত, তাহলে আমাদের সবারই একসাথে দেরি হতো ওই এক জনের জন্য। আর থাকতে হতো স্কুলের লেট লাইনে। লেট লাইনে থাকলে বিভা ম্যাডামের বেতের বারি ছাড়া ক্লাসের ভিতরে ঢুকতে পারতো না কেউ। কিন্তু আমরা চুরি করে ম্যাডামকে ফাঁকি দিয়ে ক্লাসের ভেতরে ঢুকে পরতাম।

ক্লাসের মধ্যে সেকেন্ড বেঞ্চ ছিল আমাদের দখলে। আমি জবা মিম এই তিনজন বসতাম একসাথে সব সময়। টিফিন আওয়ারে সবাই একসাথে নিচে নামতাম ফুচকা মামার ফুচকা খেতে। আর ঝাল মুড়ি তো আছেই। ফুচকা মামার থেকে বোতলে বোতলে করে কত টক যে খেয়েছি আমরা সবাই তার ইয়ত্তা নেই। এই টক ছিল পুরো স্কুলের খ্যাতনামা টক। যা সবাই বোতলে বোতলে করে খেতো। বোতলে টক খাওয়ার মজাই ছিল আলাদা😁। এরপর ছুটির সময়ে ৭-৮ জন মিলে দল বেঁধে সারা রাস্তা গল্প করতে করতে বাসায় যেতাম। আমাদের সবার বাসা ছিল একই এলাকায়। আমাদের মধ্যে জবার গলার আওয়াজ ছিল সবচেয়ে উঁচু, কথা বললে মনে হত যেন রাস্তা ফেটে যাচ্ছে 😅।

তারপর আসতো কোচিং এ যাওয়ার সময় টা। আমাদের কোচিং ছিল স্কুলের ভিতর দিয়ে যাওয়ার পথে। যাওয়ার পথে আমরা স্কুলের পুকুর পাড়ে বসে আড্ডা দিতাম আর কারো হোমওয়ার্ক বাকি থাকলে এখানে বসেই শেষ করে নিতাম😅। কেউ কিছু না বুঝলে তাকে বুঝিয়ে দিতাম আর নিজেও বুঝে নিতাম। পুকুরপাড়ের নির্মল বাতাস আর গাছের ছায়ার নিচে বসে থাকাটা অনেক অনেক মিস করি। কত গল্প কত কথায় মেতে উঠতাম এই জায়গায়। এখন মনে হয় কোথায় যে হারিয়ে গেল সোনালী সেই দিনগুলি।

একবার ক্লাস টেনের ফেয়ারওয়েল এর জন্য আমাদের তিনজনের (জবা, মিম আমি) ওপর দায়িত্ব পড়ে পার্টির কেক অর্ডার দেওয়া ও নিয়ে আসার। আমরা সেদিন তিনজন মিলে এক রিকশায় করে বেইলি রোড যাই কেক অর্ডার করার জন্য। যাওয়ার পথে সেকি ঝুম বৃষ্টি!!! তিনজন ভিজে একদম পান্তা হয়ে গেছিলাম। ভিজে ভিজে কেকের শোরুমে ঢুকেছিলাম। আমাদের তিনজনকে দেখার মত অবস্থা হয়েছিল 😂। কেক অর্ডার করে ফেরার সময় আমরা তিনটে পেস্ট্রি কেক নিয়েছিলাম। অনেক কষ্টে ডাবল দামে আরেকটি রিকশ ভাড়া করি বাসায় আসার জন্য। তিনজন রিকশায় উঠলে যেহেতু রিক্সার হুড লাগানো যায় না, তাই মিমের ছাতা ফুটানো হয়েছিল। এত বৃষ্টি আর বাতাসে মিমের ছাতাও টেকেনি। মিমের ছতা উল্টে গিয়েছিল🤣। এটাও সেকি মজার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল বলার বাইরে। হাহাহা। এরকমভাবে ভিজে ভিজে আমরা তিনজন মিলে জবার বাসায় উঠি। জবার বাসায় তিনজন ভেজা জামা কাপড় চেঞ্জ করে যার যার বাসায় চলে যাই, যেন মায়ের বকা না খেতে হয়😜। দিনটি খুবই মজার ছিল। এখনো অনেক মনে পড়ে।

7
$ 0.01
$ 0.01 from @Sajib
Sponsors of Shamima
empty
empty
empty
Avatar for Shamima
4 years ago

Comments