কমেন্ট

---নিজের চেহারা আয়নাতে দেখতে সবসময় মডেলদের মত লাগে

----আর ভাবি যদি ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো যায় তবে কেমন লাগবে?

-পকেট থেকে ইস্মার্ট ফোনটি বের করে অগোছালো চুলগুলোতে ২ছিটা পানি মেরে স্নিকশর্ট নিয়ে দিয়ে দিলাম প্রোফাইল পিক ফেসবুকে!

--আসতে লাগল বাহারি কমেন্ট

--জটিল লাগছে মামা,ওয়াও!মানাইছে তোরে আরও ব্লা ব্লা!

---আমি তো এই লুল জেনারেশন এরই অংশ

কমেন্টের মাঝে একটি কমেন্ট যেন নজর কাড়ল! কমেন্টটি ছিল,আপনি আর কত লুলামি করবেন?

খাইছে আমারে! এই পাবলিক কেডা? সাথে সাথে ক্লিক করে আইডি তে প্রবেশ! ওহ,এইডারে তো চিনি না,কোন মিউচুয়াল ফ্রেন্ডও তো

না,এক্স গার্লফ্রেন্ডের ফেক আইঠি না তো??? যাই হোক,রিকুয়েস্ট দিলাম.. তারপর ঘুম।

সকালে উঠেই ফেসবুকে লগ ইন করেই দেখলাম মেসেজ সাথে মেয়েও অনলাইন! ভালো তো,ভাল না???

ওপাশঃ শুভ সকাল

এপাশঃ আমি কি আপনাকে চিনি?

ওপাশঃ না!

এপাশঃ তাহলে আমার ছবিতে উদ্ভট কমেন্ট করলেন কেন?

ওপাশঃ আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য!

এপাশঃ আপনি এতে কি পেলেন?

ওপাশঃ আপনার লুলামি!

এপাশঃ মানে বুঝলাম না!

ওপাশঃ মানে আপনি ফ্রেন্ডরিকু দিলেন সেটা করার জন্য এমন কমেন্ট করলাম।

এপাশঃ তো আপনার নামটা বলবেন?

ওপাশঃ রাখি

এপাশঃ এত তাড়াতাড়ি কই যাইতেছেন?

ওপাশঃ আরে বাবা আমার নাম রাখি!

এপাশঃ বাহ্ ভারি সুন্দর নাম! কে দিয়েছে?

ওপাশঃ জানি না তো,আপনার নামতো বললেন না ভাইয়া?

এপাশঃ ভাইয়া বল কেন সুন্দরী? আর কতজনের ভাই হতে হবে আমাকে বল ! আমি অর্ক! তুমি আমাকে এই নামে ডাকো কেমন?

রাখিঃ হাহাহা,মজা পেলাম শুনে!

অর্কঃ কোথায় থাকো?

রাখিঃ বলব না

অর্কঃ ওগো,ওমন করে বলে না,খারাপ লাগে শুনতে

রাখিঃ আচ্ছা আমি এখন যাই,পরে কথা হবে!

মেয়েটা চলে গেল,দেখতে কিন্তু জোস! ছবিগুলাতে যা লাগে ! বাপরে বাপ! এইবার একটারে পাইছি! পোলাপাইনের লগে ব্যাপক পার্ট

লওয়া যাইব ইস্টাটাস দিয়া দিলাম একটা,দিনিয়ার মানুষগুলো জানি কেমন,কেউ কাউকে দিখিনি কিন্তু সম্পর্কগুলা কেমন যেন

মধুর,ছন্দে ছন্দে গানে গানে! ট্যাগ করলাম ঐ মেয়েকে!

রাখি দেখলাম খুব সুন্দর ছবি আপলোড করছে,সাথে সাথে লাইক আর কমেন্ট করে আসলাম, তোমাকে বিধাতা অপরূপ সৌন্দর্য

দিয়েছেন! কি এক মায়ায় জড়িয়েছি আমি

১মাস ধরে কাঠ খড় পুরানো লাগল আমার রাখি কে নিজের বাগে আনতে! অনেক মুডি মেয়ে যেমন সে নিষ্পাপ তেমন তার চাহনি!

তার ওয়ালে পোস্ট করে তার ইস্টাটাসে লাইকে লাইকে ভরিয়ে দিলাম ফেসবুকিও জীবন! ছবিগুলোতেও পুরে দিতাম হার্ট এর প্রতীক

রাতে ফেসবুকে ঢুকতেই মেসেজবক্সে তার জমানো কথা দেখে মন ভরে গেল,শুরু হল কথা বলা,চলতে থাকল দিনের পর দিন রাতের পর রাত চ্যাট ! নাম্বার শুরুতে চাই নি! যদি না দেয়! নামটা বন্ধুমহলে ছড়িয়ে দিলাম সাথে সাথে ইস্টাটাস দিলাম আই এম ইন লাভ! রাখিই আমাকে চ্যাট এ জিজ্ঞেস করলঃ

রাখিঃ কাহিনী কি? আমাকে আগে বলনি কেন?

অর্কঃ কি বলব?

রাখিঃ বুঝি তো! মেয়েটা কে শুনি?

অর্কঃ আমার সামনে

রাখিঃ যাহ্ দুষ্টু! দুষ্টামি করো নাতো!

অর্কঃ না সত্যি বলছি! কালকে দেখা করবে,একটা কথা বলতে চাই

রাখিঃ কালকে? উমমম.. ওকে,কিন্তু কি পড়ে আসবা?

অর্কঃ আমাকে চিনবা তো?

রাখিঃ আমার হিরোকে আমি চিনব না? তা কি হয়?

৪দিন পর ফেসবুক আইডি একটিভেট করলাম,ওপেন করার সাথে সাথেই দেখলাম রাখির মেসেজ! সেদিন আমাকে দেখে দৌড়ায় পালালি কেন শয়তান? তুই না সেদিন ফেসবুকে বললি আমাকে ভালবাসিস আর ইস্টাটাস ও দিলি আর আমি দেখতে এতটাই খারাপ নাকি? আমার ছবি দেখোস নাই ফেসবুকে? তাহলে এমন করলি কেন? অনেকক্ষণ চিন্তা করে রিপ্লাই দিলাম,আন্তি আপনার ফেসবুকের ছবি আর বাস্তব ছবি আকাশ পাতাল পার্থক্য! ফেসবুকে আপনি যতটা চিকন বাস্তবে তার চেয়ে বেশী মোটা আমার আম্মা কিভাবে মোটী মেয়েকে বউ হিসেবে করবে বলেন ? আর আপনি তো ভালোই বানায়ে কথা বলেন ! মেসেজ দিয়া ব্লক দিয়ে দিলাম ,ঝামেলা শ্যাষ ! মেজাজ খারাপ করে খেইপা আরও ১০টা সুন্দরীরে রিকু পাঠাইলাম! যেইটা লাইগা যায় কপালে ! আসলে এই চ্যাটবক্সটা এমনই,সবসময়ই কোন না কোন মেয়ে সাথে থাকে লুলামির জন্য ! --এইটারে চ্যাটবক্স না বলে লুলামিবক্স বলা,আর আর ইনবক্স হল সকল লুলামির সাক্ষী --এরকম লুলামিতো চলতেই থাকবে , কারণ এই ভার্চুয়াল দুনিয়াটা এমনই .........