মানুষের মহৎ কর্ম গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো রক্তদান । রক্ত মানব দেহের অপরিহার্য উপাদান ও শক্তির উৎস। বেঁচে থাকার জন্য রক্ত শ্বাস-প্রশ্বাসের মতোই প্রয়োজনীয় । মানবদেহের রক্তের অভাব ঘটলে তার জীবন সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে । তাকে বাঁচাতে অপরের দেহের একই গ্রুপের রক্ত রোগীর দেহে সঞ্চালন করা অত্যাবশ্যক হয়ে পড়ে । আবার কখনো রোগীর অপারেশনের সময় রক্তের অভাব পূরণের প্রয়োজন দেখা দেয় । এসব ক্ষেত্রে অপরের রক্তদানের প্রয়োজন হয়।এছাড়া ক্যান্সার কিডনি প্রতিস্থাপন এবং ডেঙ্গু জ্বরের মতো ঘাতক ব্যাধি থেকে একজন মুমূর্ষ রোগীকে বাঁচাতে ও রক্তের প্রয়োজন হয়ে পড়ে । ভিয়েনার চিকিৎসাবিজ্ঞানী কার্ল ল্যান্ড স্টীনার সর্বপ্রথম রক্তের গ্রুপ নির্ণয় গবেষণা করেন। তবে রক্তের গ্রুপ নিয়ে প্রথম কৃতিত্ব বিজ্ঞানী ল্যান্ডডুইচ এর।1875 সালে তিনি রোগ আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তের গ্রুপের সঙ্গে সুস্থ ব্যক্তির রক্তের গ্রুপ মিলিয়ে অসুস্থ ব্যক্তির দেহে রক্ত সঞ্চালন করেন। সেদিন থেকেই যাত্রা শুরু হয় রক্তদান কর্মসূচি।বর্তমানে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান এমনকি অনেক মহৎ নারী-পুরুষ স্বেচ্ছায় রক্তদান কার্যক্রম এগিয়ে এসেছে। রক্তদাতাকে অবশ্যই সুস্থ সবল এবং 18 থেকে 57 বছর বয়সী হতে হবে । রক্তদাতার শরীরে তাপমাত্রা হতে হবে 99 ডিগ্রীর সেলসিয়াস নিচে । রক্তচাপ থাকতে হবে 100/60 থেকে 200/90 এর মধ্যে। একজন সুস্থ মানুষ প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর রক্ত দান করতে পারে । আমাদের দেশে রক্তদান সম্পর্কে অনেকেই মধ্যেই অমূলক ধারণা বিদ্যমান। রক্তদানের কথা শুনলে অনেকেই ভয়ে চমকে ওঠে। অনেকে মনে করে রক্তদান স্বাস্থ্যহীন ঘটায়। এসব ধারণার নিতান্তই অমূলক।আমাদের দেহে প্রতিদিন রক্ত সৃষ্টি হচ্ছে এবং পুরনো রক্ত অকেজো হয়ে পড়ছে।একজন সুস্থ সবল মানুষের দেওয়া এক ব্যাগ রক্ত বাঁচাতে পারে একজন মুমূর্ষু রোগীর জীবন।
0
8