জন্ম: 25 মে, 1951 । একদিন জলি জিজ্ঞেস করলো, বড় হয়ে তুমি কী হতে চাও? অ্যম্বিশান ইন লাইফ নিয়ে রচনা লিখেছি বটে, কিন্তু কী হতে চাই তা নিয়ে কখন ও চিন্তাভাবনা করিনি। আসলে অ্যম্বিশান এর ধারণাটাই স্পষ্ট ছিল না। তাই খুব একটা চিন্তা ভাবনা না করে বললাম, নাবিক হতে চাই। সেটা আবার কী? কারণ, সবাই হয় ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা বিএনপি হতে চায়, নাবিক হওয়ার ব্যাপারটা সে শোনেইনি। এই জিহাজের নাবিক বা কাপ্তাই হওয়া। উত্তর দিই আমি। তাতে লাভ?
না, লাভ আর কী? বিভিন্ন দেশ ঘুরে বেড়াবো। সে অনেকক্ষণ তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলো, আসলেই তার প্রশ্নটি আমি বুঝেছি কি না। আমার আব্বু ওআমাকে কখনো বলেননি আমাকে কি হতে হবে। আমার ভাইদের ও না। দু একবার কথাই কথাই বলেছিলেন, ব্যারিস্টার হলে মন্দ হয় না। 40 দশক পর্যন্ত বিখ্যাত মানুষরা ব্যারিস্টার ছিলেন। তাছাড়া পাকিস্থানে স্হপতি কায়েদে আযম ও ব্যারিস্টার ছিলেন। তাঁর ব্যক্তিত্ব, চরিত্র, পাকিস্তান অর্জনে দক্ষতা বিষয়ে আমাদের পড়তে হতো। সুতরাং ব্যারিস্টার হওয়ার স্বপ্ন ও যে অনেক দেখতেন না তা নয়। উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকলে, পড়াশোনা সেই একটি বিষয়েই নির্দিষ্ট রূপ নেয়। আমার যখন নাবিক ছাড়া আর কোন অ্যম্বিশান মাথায় ঢোকেনি, সুতরাং আমি আর এ ব্যাপারে মাথা ঘামায়নি । মাথা ঘামাতে লাগলাম বরং লেখালেখি নিয়ে। শুনেছিলাম, জাহাঙ্গীর চাচা 13 বছর বয়সেই লেখক বা কবি হিসেবে পরিচিত হয়েছিলেন আর সেই সময় তো অতি পরিচিত। তাঁর তখন দু তিনটি বই বেরিয়েছে, কিন্তু দৈনিক বাংলার রবিবাসরীয় পাতায় তাঁর লেখা প্রায়ই ছাপা হয়। আব্বা ও কিছুটা লেখালেখি করছেন। ঝুনু চাচাতো পরীক্ষা দিয়ে চাটগাঁর এসেছেন। সারাদিন দেখতাম তিনি ইংরেজি সাহিত্যের অনুবাদ করেছেন। সেগুলো খুব সম্ভব চাটগাঁর পত্রিকার বা সাময়িকীতে ছাপা হতো। হয়তো, সামান্য মজুরিও পেতেন।