জন্ম 1 জানুয়ারি 1943 তিনি তো গ্রামের ছেলে। গ্রামের বাংলার বর্ষার সঙ্গে তুমি বেশ পরিচিত। আমি ও ছেলে। কিন্তু শৈশবের দিনগুলো আমার গ্রামে কাটলো অধিকাংশ সময় টাঙ্গাইল শহরের থেকেছি। তখন টাঙ্গাইল শহর ছিল গ্রামের মতো। গ্রামের বর্ষা আর শহরের বর্ষার মধ্যে কোন তফাত ছিলো না। শহরেও কদম গাছ ছিলো। বর্ষা এলেই কদম ফুটতো। বৃষ্টিতে ডুবে যেতো ডোবাবে নালা। নিচু এলাকায় পানি থইথই করতো। আমরা বৃষ্টিতে ভিজে আনন্দ করতাম। কাগজের নৌকা বানিয়ে ভাসিয়ে দিতাম উঠানোর পানিতে। শৈশবে কৈশোরের সেই বৃষ্টিতে ঝমঝম শব্দ এখনো বুকের মধ্যে বাজে। বৃষ্টি পড়লেই থমকে যাই। বৃষ্টির সেই সুর এখনো মনকে আমোদিত করে। হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে বৃষ্টির রানীর টপট পানির রাজ্যে। আমি যখন টাঙ্গাইল বিন্দুবাসিনী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়র ছাত্র। ষষ্ঠ কিংবা সপ্তম শ্রেণীতে পড়ি। একদিন শুনলাম আমাদের ইস্কুলে থেকে ম্যাগাজিন বের হবে। আমার মনের মধ্যে যখন বর্ষার রিনিঝিনি শব্দ। এক রাতে হারিকেন জ্বালিয়ে বসলাম কবিতা লিখতে। হ্যাঁ, লিখে ফেললাম একটি কবিতা। পরের দিন এটি হেড স্যারের কাছে জমা দিলাম। যথাসময়ে আমার ঐ বর্ষার কবিতা টি ছাপা হলো। চতুর্দিকে সাড়া পড়ে গেল। কবিতাটা দেখে আমার সহপাঠী মাহমুদুল আলম নিলু, শওকত তালুকদার , শ্যামলেন্দু, জিতেন্দ্র মোহন বিশ্বাস ,পিন্টু ,আশীষ মৈত্র ,শামসুল হক ও দিলীপ সাহা একটু উপহস করেই বলে ফেললো, কবি হয়েছে। পত্রিকাটি নিয়ে আমি বাড়ি গেলাম। মাকে দেখালাম, বাবাকে দেখালাম। তারা কবিতা দেখে ভীষণ খুশি হলেন। আমাকে বুকের কাছে টেনে নিয়ে আদর করলেন। বাবা সে সময়ের একটি কথা খুব মনে পড়ে। বাবা বলেছিলেন নজরুলের মতো তো আর হতে পারবে না। কিন্তু কবি হতে চাইলে আরো ভালো লিখতে হবে। তবে নবম অথবা দশম শ্রেণীতে পড়াকালীন লেখা একটি কবিতা এখানে আমার মনে পড়ছে। এটার কথা আমি ভুলিনি। বেশ বড় কবিতা ছিল এটি। দুটো পঙক্তি তোমাকে শোনাই।
ছায়া নয়, ছায়া পথে ভাসে মোর ভাষাহীন কথা
সারারাত ধরে তাই কবিতায় , কি যে ব্যাকুলতা।
এই কবিতাটি লেখার পর বাবা আমার উপর ক্ষেপে গিয়ে বলেছিলেন, সামনে ফাইনাল পরীক্ষায়, তুমি পড়বে ইংরেজি গ্রামার, করবে কেপি বসুর পাটিগণিত অথচ সেসব বাদ দিয়ে কাব্য চর্চা করছে।
Nice article