জীবানানন্দ দাশ তাঁর অসংখ্য কবিতায় প্রকৃতির রূপের বর্ণনা করেছেন। প্রকৃতির রূপ, রস, ছন্দ, সৌন্দর্যের গান গেয়েছেন তিনি। কখনো তিনি চোখ জুড়িয়েছেন অপরূপ সৌন্দর্য দেখে, আবার কখনো মন প্রাণ শীতল করেছিলেন বাংলার নয়নাভিরাম সৌন্দর্য দেখে। তাইতো তিনি বার বার মরে গিয়েও ভোরের কাক হয়ে কিংবা হাঁস হয়ে কার্তিকের নবান্নের দেশে ফিরতে চেয়েছেন। সত্যিই, বাংলাদেশের অপরূপ রূপে মুগ্ধ না হয়ে থাকতে পারে না কোনো মানুষ। প্রকৃতির প্রতি ধাপে ধাপে যেন সৌন্দর্যের ডালা সাজানো রয়েছে।
বাংলাদেশে অসংখ্য পর্যটন স্থান রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি স্থান হলো নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলায় অবস্থিত আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যান। এটি ধামইরহাট সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। ধামইরহাট সদর থেকে পূর্ব দিকে রয়েছে একটি পাকা রাস্তা এবং পরের রাস্তাগুলো কাঁচা। রাস্তার দুপাশের বাঁশঝাড়গুলো আপনার মনকে আন্দোলিত করবে। হাঁটতে হাঁটতে সামনে গেলে দেখতে পাবেন শালবন। শালবনটি আলতাদীঘি শালবন নামে সকলের কাছে পরিচিত।
প্রায় দুইশো বছরের পুরনো এই বনভূমি ৬৫২ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত। ভারত সীমান্তের কাছে নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলার এই বনভূমি অন্যরকম আকর্ষণ। শালবন ও অন্যান্য উদ্ভিদে পরিপূর্ণ এই বনের মাঝখানে রয়েছে একটি বিশাল দীঘি যার আয়তন প্রায় ৪৩ একর। ‘পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়’ ২০১১ সালে আলতাদীঘি শালবনকে আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করেছে।
এই বনের মধ্যে অসংখ্য গাছপালা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। বনের অন্যতম আকর্ষণ শালগাছ। এই শালগাছকে জড়িয়ে বেড়ে উঠেছে হিংলো লতা, অনন্তমূল, বন বড়ই ও নানা প্রকারের বনফুল। বনের ভেতর প্রবেশ করলে বাতাসে ভেসে আসে মিষ্টি ফলের ঘ্রাণ ও ফুলের সুবাস। হাঁটার পথের মাঝে মাঝে রয়েছে ঘন বেত। চারদিকে সবুজ আর সবুজ। সবুজের সমারোহে নিজেকে হারাতে চাইলে আপনি ভ্রমণ করতে পারেন আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যানে। এই বনে হাজার রকমের গাছ ও পশুপাখি রয়েছে। রয়েছে অসংখ্য পাখি। বনের ভেতরে প্রবেশ করলে পাখির কলকাকলিতে মুগ্ধ হবেন।
Nice