ব" নামক দুই অক্ষরে একটি শব্দ "বাবা", যদিও শব্দটা খুবই ছোট কিন্তু এর অনুভূতিটা আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বলে মনে হয়।একে ঘিরে সৃষ্টি হয় কত ভালবাসা, সুখ,দুঃখ,অভিমান,রাগ আরও কত কি! কিন্তু দিনশেষে সব তো ভালবাসাতেই মিশে যায়।প্রতিটি মানুষ তার বাবার সাথে হয়তোবা খুব ভাল বন্ধর মতো,হয়তোবা খুব বেশি ফ্রি না।এটা নির্ভর করে প্রত্যেকের অবস্হানের উপর।যাই হোক আমিও তার বাহিরে না।যদিও বাব খুব আন্তরিক, কিন্তু কেন জানি আমি খুব বেশি খোলামেলা ভাবে কথা বলতে পারিনা! এটা কি লজ্জা না ভয় আজও আমার অজানা।তাই অনেক অনুভূতি,আবেগ,ভালবাসা,দুঃখ,অভিমান সব বলা হয়ে উঠেনা।তাই এগুলি বলার প্রচেষ্টায় কিছু বাক্য ব্যায় করি।আমার শৈশবে পুরো সময়টা বাবাকে কাছে থেকে খুব বেশি পাওয়া হয়নি,কারণ তিনি প্রাইভেট কম্পানিতে জব করার কারনে বাড়ি থেকে দূরে অবস্থান করতে হয়েছিল। সেজন্য আমার খুব অভিমান হত,দুঃখও লাগত সবার বাবা কত আদর করে আর আমার বাবা কাছে নাই! কিন্তু বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নাই ক্লাস ৫ এ উঠার পরই বাবা বাড়িতে চলে আসেন।তখন কিযে আনন্দ হয়েছিল সে কি করে বলি! তখন বাবাকে বলতে ইচ্ছে করছিল বাবা এ বাবা আমি না তোমাকে খুব বেশি ভালবাসি,কিন্তু বলা হয়নি। ক্লাস ৫ এ থাকার সময় বাবা বলছিলেন তোমাকে এ+ পেতে হবে,আমি তো বুঝিইনা যে এ+ কি।ভেবেছিলাম যে খুব মজার একটা জিনিস।কিন্তু যখন বললেন খুব ভাল করে পড়তে হবে নইলে এ+ পাবেনা।তখন আকশ থেকে পড়লাম! বেশি পড়াকে এ+ বলে! পরিক্ষার আগে বাবা শুধু শুধু পড়তে বলতেন,আমার যে কি মন খারাপ হতো তা আর বলার নয়! সবাই খেলাধুলা করে আর আমি? ইচ্ছে হতো বাবাকে খুব গালাগালি করি! বাবা তোমাকে বলা হয়নি যে,আমাকে মাফ করে দিও,কারণ আমি তোমাকে মনে মনে গালি দিতাম খেলতে যাবার জন্যে।তারপর পিএসসি পরিক্ষার রেজাল্ট আউট হল।রেজাল্ট দেখে আব্বুর মন এত খারাপ হল তা বলার নয়! আমি ক্রিকেট খেলা থেকে দৌড়ে আসি, আব্বুকে দেখি খুব মন খারাপ,উনার বন্ধর ছেলে এ+ পেয়েছে আর আমি পাইনি।তা শুনে আমারও মন খারাপ হয়ে গেল।তখন ভেবেছিলাম যে আজ দিনটা বুঝি আমার জন্য খুব খারাপ যাবে।কিন্তু কি অদ্ভুত কিছুই বললেন না।শুধু বললেন যে এখন খারাপ হইছে পরে ভাল করবে।তখন যে আমার কেমন অনুভূতি হয়েছিল লিখে প্রকাশ করার নয়! মনে হয়েছিল বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলি বাবা আমি আরও ভালভাবে পড়াশোনা করব,তুমি মন খারাপ করোনা প্লিজ।কিন্তু তাও বলা হয়নি। তিনি কখনো আমাকে লাঠি তিয়ে মেরেছেন কিনা আমার মনে নাই।আমার অভিমান হয় বাবার উপরে কেন আমাকে মারেননি!বাবার হাতে মার খাওয়া কতইনা মজার! কিন্তু তাও বলা হয়ে উঠলনা যে,বাবা তুমি আমকে মারনা কেন? তুমি বুঝি আমাকে খুব ভালবাস? ক্লাস ৫ এর পরে ঘটল অদ্ভুত কান্ড! বাবা বললেন যে তিনি আমাকে কোথাও আবাসিক একটা স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিবেন।শুনে আমার হার্ট এটাকের মতো অবস্থা! কেমন করে ধাকব বাড়ি ছাড়া।তখন যে বাবার উপর কি রাগ হয়েছিল তা বলে বুঝানো মুশকিল। কিন্তু তাও বলতে পারলাম যে আব্বু আমি দূরে কোথাও যাবনা! কিন্তু কিছু করার ছিলনা।ক্লাস ৬ গেল, ক্লাস৭ এ ভর্তি হলাম,তারপর একদিন বাড়িতে আসলাস।বাড়িতে আসার পরে কোনো এক কথার প্রসঙ্গে তিনি আমাকে বলেছিলেন যে,"আমরা মধ্যবিও পরিবারের তাই তোমাকে বলছি কোনোদিন টাকা পয়সা নিয়ে কোনো চিন্তা করবেনা,যতদিন বেচে আছি টাকা না থাকলে শরীরের চামড়া বিক্রি করে টাকা দিব তবুও ভাল করে পড়াশোনা কর"কথা শুনে আমার শরীরের লোম দাড়া হয়ে গেল।তখন বাবাকে বলতে ইচ্ছে করছিল বাবা তোমার চামড়া বিক্রি করতে হবেনা,আমি ভালভাবে পড়াশোনা করব কারণ আমি তোমাকে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ভালবাসি। কিন্তু তাও বলা হয়ে উঠেনি😭।এটাই বুঝি অনুপ্রেরণা! তখন স্কুলে রোল ১ হল বাবার সেকি খুশি কে দেখে? আমি বাবার খুশি দেখে কি আনন্দিত যে হয়েছিলাম তা বলার নয়,মনে হয়েছিল যে বাবাকে এক কেজি মিষ্টি এক সাথে খাইয়ে দিই (ছোট বলায় যেমন অনুভূতি ছিল)।যাই হোক তাও করা হয়ে উঠলনা।তারপর ভর্তি হলাম ৮ এ।জেএসসি পরিক্ষার আগে বাবা বলছিলেন এবার তোমাকে গোল্ডেন এ+ পেতে হবে।আমি বল্লাম ঠিক আছে। পরিক্ষা দিলাম ভালই হয়েছিল সব।এখন রেজাল্টের পালা মনেহয়েছিল এবারও কি বাবার কথা রাখতে পারবনা? কিন্তু না রেজাল্ট একদম গোল্ডেন এ+। রেজাল্ট দেখে আমি যত না খুশি হয়েছি তার ছেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলেন আব্বু।তখন আমার সে কি আনন্দ কে দেখে? কিন্তু তাও আমি বাবাকে শেয়ার করতে পারলাম না কেন পাড়লাম না তা আজও অজানা।তারপর ক্লাস নাইন এর মাঝামাঝি বৃওির রেজাল্ট প্রকাশিত হল আমি টেলেন্টফুল বৃওি পেয়েছিলাম।তা দেখে আব্বু যে কত খুশি হয়েছিল তা টাইপ করে বুঝানো সম্ভব না।কিন্তু আমিত এই অনুভূতিটাও প্রকাশ করতে পারলাম না আব্বুর কাছে।কেন পারলাম না তা আজও অজানা।( অসমাপ্ত আজ আর নয়)।আসলে বাবা বাবাই হয়,সব বাবাই চান তার সন্তান যেন সবচেয়ে ভাল কিছু করেন।বাবা-মা নামটি তুলনা করার মতো না।পৃথিবীর সকল বাবা ভাল থাকুক একটাই প্রত্যাশা।কিছু আনন্দ,
0
24