part:০১
ক্লাস শেষ করে তাই বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম ডিপার্টমেন্টের মাঠে । সজিব, রুনু, মলি, আকিব রাফি সবাই রয়েছে । আমার মন মরা কেন কদিন ধরে ওরা বার কয়েক জানতেও চেয়েছে । অবশ্য প্রায় সপ্তাহ দুয়েক ধরেই আমার মন মেজাজের অবস্থা খুব বেশি ভাল না ! আমি কোন জবাব না দিয়ে কথার প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দেই । কথা আড্ডা চলতে থাকে ঠিক তখনই আমার নীষার দিকে যায় !
বাসা থেকে বের হওয়ার সময় দেখেছিলাম ও টিয়া রংয়ের একটা সেলোয়ার কামিজ পরে রেডি হচ্ছিলো ক্যাম্পাসে আসার জন্য ! সেই রংটা দেখেই ওকে দ্রুত চিনে ফেললাম ! অবশ্য আরেকটু হলে এমনিতেই চিনতে পারতাম । কারন ও আমাদের দিকেই আসছে ।
কেন ?
এই ঝামেলা এই খানে কেন ?
কাধে ব্যাগ, ওড়না ভাল করে গলায় পেঁচানো ! মুখে হালকা মেকাপও দিয়েছে । তবে ঠোটে লিপস্টিক দেয় নি ! আমাদের আড্ডার ঠিক সামনে এসেই থামলো ! কিছুটা সময় আমাদের দিকে তাকিয়ে রইলো আমার দিকে !
আস্তে আস্তে আড্ডার সবাই ব্যাপারটা লক্ষ্য করলো যে তাদের মাঝে একজন অপরিচিত মানুষ দাড়িয়ে আছে । রুনুই প্রথমে জানতে চাইলো
-কিছু বলবা ?
রুনু অবশ্য নীষাকে চিনে না ! তবুও ওকে তুমি করেই বলল ! বলতে গেলে আমরা ক্যাম্পাসের প্রায় সিনিয়ার ব্যাচ । আমাদের থেকে প্রায় সবাই ছোট ! তুমি করে বলাই যায় !
রুনুর দিকে না তাকিয়ে নীষা আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আমি বাসায় যাবো !
রুন যেমন অবাক হল আড্ডার বাকী সবাইই অবাক হল মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে কথা বলার জন্য ! তাও গলায় একটা আবদার মূলক কথা শুনে ! আমি নিজেকে যথা সম্ভব শান্ত রেখে বললাম
-আমিএখন বাসায় যেতে পারবো না ! একটু পরে আমার ক্লাস আছে !
নীষা বলল
-মিথ্যা কথা ! আমি তোমাদের ডিপার্টমেন্টে খোজ নিয়েছি ! সব ক্লাস শেষ হয়ে গেছে !
এতু টুকু একটা মেয়ে আমাকে তুমি করে বলছে এই ঘটনা আসলেই সবাইকে অবাক করলো । মলি বিশ্মিত কন্ঠে বলল
-এই অপু, মেয়েটা কে রে ? তোকে তুমি করে বলছে কেন ? চেনে তোকে ?
সজিব বলল
-আমিও চিনতে পারছি না ! আমি যতদুর জানি ওর এই বয়সী কোন কাজিনও নেই ! কে ?
পুরো আড্ডার ভেতরে একটা তোড়জোড় শুরু হয়ে গেল, মেয়েটা কে সেটা জানার জন্য ! আমার সাথে তার কি বা সম্পর্ক সেটাও জানার আগ্রহ সবার ! আমি কোন কথা না বলে চুপ করে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলাম ! বুঝলাম আমার ক্যাম্পাসেও আসা বন্ধ করতে হবে ! এই মেয়ের জন্য জীবন "ত্যাসপাতা" হইয়া গেল ! এই মাইয়া আর এই মাইয়ার বাপের জন্য !
রুনু এবার নীষার দিকে তাকিয়ে বলল
-এই মেয়ে তুমি কে বলত ? অপুর সাথে এই ভাবে কেন কথা বলছো কেন ?
নীষা খুব শান্ত কন্ঠে বলল
-আপনাদের বন্ধুকে জিজ্ঞেস করেন ! সে কিছু বলে নাই আপনাদের ?
এবার সন্দেহ আরও যেন একটু বেড়ে গেল ! রুনু উঠে গিয়ে নীষাকে ওর পাশে বসালো ! তারপর ওর চোখের দিকে কিছুক্ষান তাকিয়ে থেকে বলল
-তুমি ......অপু বউ ?
নীষা কিছু বলল না । কেবল একটু হাসলো ! সেই হাসিতে আর কারই বোঝার বাকি রইলো না যে আসলেই সে আমার বউ । বিয়ে করা বউ !
সবাই আমার দিকে তাকালো এক ভাবে ! আমি তাকিয়ে রয়েছি বদ মেয়েটার দিকে । আমার বিয়ের কথা প্রকাশ করে দিয়ে মেয়েটা যেন খুব মজা পাচ্ছে ! থাপড়ায়া দাঁত ফেলে দেওয়া উচিৎ !
বদ মেয়ে কোথাকার !এবার ঈদে গ্রামের বাসায় গিয়ে সময় বেশ ভাল করেই কারছিল । বাবাও অনেক দিন পরে গ্রামে গিয়ে যেন পুরানো সব বন্ধুরদের সাথে মিলে মিলেশিসে একাকার হয়ে গেল ! ঠিক এমন সময় আসল ঘটনা আমার সামনে এল । আমাদের গ্রামের নীষারা থাকতো ! বাবার খুবই ভাল বন্ধু ছিলেন নীষার বাবা ! আমিও ওকে চিনতাম ! আমার থেকে কয়েক বছরের জুনিয়র !
রাতে খাওয়ার সময় বাবা নীষার কথা বলল ! মেয়েটা নাকি এবার আমার ভার্সিটিতে চান্স পেয়েছে, ফার্মেসীতে ! মেয়েটাও পড়ালেখায় ভাল খুব কিন্তু মেয়েটার কেবল একটা সমস্যা ! মেয়েটা কিছুতেই রাতে একা একা ঘুমাতে পারে না ! ভয় পায় ! তাও আবার রুমে থাকলে হবে না, তার খাটে কাউকে ঘুমাতে হবে ! জন্মের পর থেকে মেয়েটা নাকি এখনও মায়ের সাথে ঘুমায় রাতে !
মেয়ে এইজন্য ক্লাস করতে পারছেনা ! কারন ঢাকায় ওদের এমন কোন আত্মীয় নেই যেখানে ও থাকতে পারবে ! হলেও থাকতে পারবে না এখন ! মেয়েটা কয়েকদিন ঢাকায় ছিল তারপর ফিরে এসেছে ! আর ওর বাবার এরকম পরিস্থিতি নেই যে ওরা ঢাকায় গিয়ে থাকবে !
এই পর্যন্ত ঠিকই ছিল ! কিন্তু এরপর বাবা যা বলল তার জন্য আমি মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না ! বাবা ঠিক করেছে মেয়েটার ভবিষ্যৎ তিনি এভাবে নষ্ট হতে দিবে না !
অতি উত্তম কথা ! একটা না একটা উপায় বের করতেই হবে ! এভাবে একটা মেয়ের জীবন নষ্ট হতে দেওয়া যায় নাকি !
বাবা বলল
-আমি অনেক দিন থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম রকিবের মেয়ের সাথেই তোর বিয়ে দেব ! কদিন পরেই দিতাম ! এখন কদিন আগে বিয়ে টা হবে ! এই আর কি !
ঠিক আছে ! কোন সমস্যা ! বিয়ে যখন হবে তখন কদিন আগে আর পরে কি !! এ্যা ......
কেবল
.
2
9
Ieieie Kdkdkd.kdk Ldkdk Ldkk