নেতার রাগী মেয়ে

5 11

নেতার_রাগী_মেয়ে

#পর্ব ১৫+১৬

পরেরদিন ভার্সিটিতে গেলাম৷আর তখনই আরেকটা মজার ঘটনা ঘটল৷মিমের কথায় আমিও আবারও শকড খাইলাম৷আজকে নাকি ওরে ফুসকা খাওয়াতে হবে,শালার এই মাইয়াডা অনেক জ্বালাইতাছে এমনভাবে এমন সব আবদার করে যেন,ওনি আমার জিএফ

যাই হোক বেষ্টু বলে কথা৷তাই রাজি হলাম৷কিন্তু ফুসকা খেতে গিয়ে পড়লাম এক ঝামেলায়৷

কারন ঝামেলা তো হবেই৷যেই রাক্ষসির সাথে যাচ্ছি ,সে একাই তো সব খেয়ে ফেলবে৷এরই মধ্যে আমার হারামী ফ্রেন্ডগুলোও হাজির৷পকেটে তেমন টাকাও নাই,এখন কি যে করি?

যে টাকা আছে ওই গূলো নিয়েই গেলাম৷সাথে রনী,নিলা,জয়,সজীব,মীমসহ আরও অনেক হারামি বন্ধু৷প্রায় ৭-৮ জন গেলাম৷

ফুসকাওয়ালার মামার কাছে যেতেই বুকটা ধুরুধুরু করছে৷পকেটে টাকা না থাকলে তো করবেই৷ সাথে সাথেই একটা বুদ্ধি পেলাম৷সবাইকে খুব ভাল করেই বলে ঊঠলাম

.

--মামারা,আজকে একটু ঝাল করে ফুসকা খাবো,দেখি কে কত ঝাল খেতে পারে,যে বেশি ঝাল খেতে পারবে তার জন্য এক্সট্রা খাবার আছে(আমি)

--বলিস কি মামা?আরও খাওয়াবি?(জয়)

--হুম খাওয়াবো,কিন্তু ঝাল তো তোরা বেশি খেতে পারিস না৷(আমি)

--যদি খেতে পারি তাহলে ,আরও খাওয়াবি কিন্তু(মিম)

--হায় আল্লাহ,এই রাক্ষসি না জানি কি করে ফেলে(মনে মনে বললাম)

--কি রে কি ভাবছিস,আমরা রাজী,(মিম)

--কিছুনা,তোরা রাজী থাকলে আমিও রাজি৷

বলেই ফুসকাওয়ালা মামার সামনে গেলাম৷

আর মামাকে কানের সামনে গীয়ে আস্তে আস্তে বললাম

(মামা সবার ঝালটা একটু বাড়িয়ে দিবেন৷আর একটা ফুসকায়,আপনার যত ঝাল আছে,সব দিবেন,)

ফুসকাওয়ালা তাই করল৷সবার সামনে ফুসকা দেওয়া হলো আর সবাই খাওয়া শুরু করল৷আর আমি মিমের খাওয়া দেখতে লাগলাম কারন মিমের ফুসকায় অনেক ঝাল দেওয়া আছে?

খাওয়া শুরু হলো,মিম এমন ভাবে খাওয়া শুরু করল আমার চোখ আসমানে উঠে গেল,শালার রাক্ষস কী জিনিস মিমকে না দেখলে বুজতেই পারতাম না৷ওই ঝাল ফুসকাই চেটে পুটে খেয়ে ফেলছে,আর অন্য দিকে যাদের কম ঝাল দেওয়া তারা সবাই ঝালের দাপটে কান্না করে দিছে৷

হঠাৎ মিম বলে উঠল

,

--কিরে তন্ময়,আমি তোর শর্ত পূরন করেছি,এবার আরও খাওয়া(মিম)

--হুম,বল কি খাবি(আমি)

--আমি এখন... প প প প প পা পান পানিইইইইইইইই খাবো

বলেই গরুর মত চিৎকার শুরু করে দিল

--এই কি হইছে মিম?(আমি)

--পা পা পানি দে,ঝ ঝা ঝাল,মরে গেলাম,ওরে বাবারে ,বাঁচা

.

খেয়াল করলাম মিম তো কান্না করে দিতাছে,কি যে করি?

আল্লাহ বাঁচাও৷

ফুসকাওয়ালা মামার কাছেও বেশি পানি নাই৷

মিম পানি না পেয়ে শেষমেষ দোকানের ফুসকাই উরাধুরা খাওয়া শুরু করে দিল৷

একেবারে দোকানের বেশি অর্ধেক ফুসকা মিম ওই ভাবেই খেয়ে ফেলল৷

এবার কি করি?

অর্ধেক ফুসকা খাওয়ার পর মিম বলে উঠল.

.

--তন্ময় তুই বিলটা দিয়ে আয়,আমার ঝাল লাগছে মিষ্টি খেতে হবে(একটূ নরম সুরে)

--হুম,তোর ঝাল লাগতাছে?দাড়া আমি পানি আনতাছি(আমি)

--পানি ত আর লাগবেনা৷

--কেন তোর ঝাল শেষ হয়ে গেছে?

-মিষ্টি খাবো৷মিষ্টির দোকানে নিয়া যা

---পানি আনি?

--না৷তোর মিষ্টি খাওয়ানো লাগবো না৷আমি গেলাম

বলেই সেখান থেকে মিম চলে গেল৷আর আমি আমার পকেটের শেষ সম্বলটুকু শালার ফুসকাওয়ালাকে দিয়ে এলাম৷আল্লাহ গো?চাইলাম কি আর দিলা

কি?মনে করছি ঝালে ধরলে পানির জন্য এখান থেকে চলে যাবে কিন্তু তা না করে ফুসকা তো আরও খাইলো৷

২কেজি ২০০ গ্রাম কষ্ট নিয়ে ভার্সিটির মাঠে বসে রইলাম৷ঠিক তখনি পিছন থেকে বলে ঊঠল

--তন্ময়য়য়য়য়?

--কিরে এখনো ঝাল লাগছে?

--কিসের ঝাল?আমি তো ঐ সময় খাবার জন্যই অভিনয়টা করলাম৷

--মানে?

--তারমানে কিছুই না,আসলে আমাকে ঝাল ফুসকা দেওয়ার কথা থাকলেও ,ফুসকাওয়ালা মামা কিন্তু তা করেনি,ওনি আমাকে একদম ভালোভাবে ফুসকা বানিয়ে দিছে,আর আমি জানতাম তুই এমন টাই করবি?(মিম)

--মানে?(আমি)

--মানে টা খুব সহজ,তুই যখন ঝালের কথা বলছিলি ঠিক তখনই তোর মতি গতি বুঝে ফেলছি আর তখন মামাকে ইশারা দিলাম যেন তোর কথায় আমাকে ঝাল না দেয়৷আর তাই হলো,আর ওনাকে আমি আগে থেকেই চিনি,যার কারণে তোর কথা না শুনে.........হি হি হি

,

হায় আল্লাহ মুই কোনে যামু?মোরে বাঁচাও একটু৷নয়ত মুই পান খাইয়া মইরা যামু..

মিম চলে গেল আর আমি মাঠেই দাড়িয়ে রইলাম৷

না এর একটা উচিৎ জবাব দিতে হবে৷

আমার টাকাগুলো নষ্ট করছে ও....

পরেরদিন ও একটা নতুন আইফোন কিনছে৷আর আমাকে দেখাচ্ছে,আমি যতটুকু জানি মিম আইফোন সম্পর্কে বেশি ধারনা নাই৷তাই একটা ফন্দি আটমু৷আর প্রতিশোধ নিমু হি হি হি

--তন্ময়,দেখ দেখ,আমি আইফোন কিনছী(মিম)

--অনেক ভালো করছোছ৷দে তো দেখি একটু৷

তারপর ফোনটা হাতে নিয়া,লাগাইয়া দিলাম একটা লক ৷এবার মিমের কাছে কিছু খোয়াইতে পারমু৷ হি হি

বেশ আরামে দুপুরে ঘুম দিচ্ছিলাম। ঠিক তখনই পরানের বান্ধুবি ফোন দিয়া কইল,

- বিরাট প্রবলেম হইসে দোস্ত!

- কি হইসে রে ফকিন্নী?

- আমার মোবাইল কিভাবে যেন লক হয়ে গেছে। সিকুরিটি কোড চাচ্ছে!

- হাই হাই! তোর মোবাইল গেছে রে গেছে! সিকুরিটি কোড চাওয়া তো ভাল লক্ষণ না।

- মানে? গতকালই কিনলাম। আজ কি হল? ক্লাশেই তো তুই দেখলি মোবাইল ঠিক ছিল।

- হ্যাঁ। তখন তো ঠিকই ছিল।

- এখন কি হবে?

.

মিমের কাঁদো কাঁদো অবস্থা। আমি সান্তনা দিয়ে কইলাম, 'চিন্তা করিস না। বিকালে বের হ। দেখি কিছু করতে পারি কিনা।' ফোন কেটে দিয়ে মনে মনে চিক্কুর দিলাম। নতুন মোবাইল কিনসে মেয়েটে। কিছু জানে না! তাই বাঁশ দেয়ার উদ্দেশ্য ওর ফোনে কোড সেট করে দিলাম। যাক বিকালে ভরপেট খানাপিনা হবে। এর আগেও টুকিটাকি আমার টাকা মারছে ও। আজ বড়সড় ওর টাকা শেষ হবে। .হিহিহি

বিকাল ৫টা। মিমের ফোন চেক করে কইলাম,

-- সমস্যা জটিল।

- তুই দেখ পারবি পারবি।

- পারব কিনা জানি না। তবে দোকানে নিয়ে গেলে ২ হাজারের নিচে সারাবে না।

- এত টাকা নাই তো! তুই কিছু কর দোস্ত। .

মিমের আকুতি মিনতি দেখে পৈশাচিক মজা লাগতেসে।মনে মনে বললাম,আমার টাকায় বুদ্ধী কইরা ফোসকা খাইছোছ৷এবার বুঝ কেমন লাগে টাকা হারানোর যন্ত্রনা৷হা হি হি

- ঠিক আছে। যদি ঠিক করে দিতে পারি তাইলে খাওয়াতে হবে। মিনিমাম ৫০০! - তুইও আমাকে ছাড়লি না।

- রাজি থাকলে ১ চাপুন, নাহলে ২.. - ওকে যা রাজি। যা ইচ্ছা খাস। .

মিমের ফোন নিয়ে গুতাগুতি শুরু করলাম। ভাবটা এমন কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। পরে সঠিক কোড প্রবেশ করিয়ে লক খুলে দিলাম।

- মিম কাজ শেষ।

- ওয়াও। তুই কি ট্যালেন্ট। আমি জানতাম তুই পারবি।

- চল এখন খাওয়াবি।

- ওকে চল।

.

রেস্টুরেন্টে গেলাম। সেই খানাপিনা করলাম। একা খাওয়াটা খারাপ। বেচারিও কিছু খাক। ২০% এর মত খেতে দিলাম। বিল আসল ৪৯০! বান্ধুবী ব্যাগ থেকে ৫০০ টাকার নোট বের করে দিয়ে দিল।

.

রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে মিমকে রিকশা ঠিক করে দিলাম।

- তন্ময়, এই দশ টাকা তুই রাখ।

- ধুর বাদ দে।

- না না রাখ। তোর পকেটে টাকা নাই।

- আরে আছে। তুই যা।

- হিহি! নাইরে। বিশ্বাস নাহলে দেখ।

.

আমি মানিব্যাগ খুলে দেখলাম টাকা নাই।

- এই আমার ৫০০টাকার নোট ছিল। কই গেল?

- ধান্দাবাজি কি তুমি একাই পারো। আমিও পারি তন্ময়

- মানে?

- মানে আর কি! সকালে যখন মোবাইল নিলি বুজলাম, তুই একটা আকাম করবি। পরে ব্ল্যাকমেইল করবি। তাই টুক করে তোর মানিব্যাগ থেকে ৫০০ টাকা সরিয়ে নিসি।

- কি কস?

- ইহাই সত্য বাছা। নে এই দশ টাকা দিয়ে বাড়ি যা।

.

মিম দশ টাকা হাতে দিয়ে চোখ টিপে চলে গেল। আমি ব্যাক্কল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম। এ কেমন বিচার!আমি মাথায় হাত দিয়া সেখানেই অজ্ঞান। আমাকে কেউ এক চা এনে দাও ,খাইয়া মইরা যাই। আপনেরা কেউ মেয়েদের বিশ্বাস কইরেন না।

মুই মিমরে বিশ্বাস কইরাই বাশ খাইতাছি,

চলবে...

১৫তম পর্বের পর থেকে.

,

মিমকে বিশ্বাস কইরাই বাশ খাইছি ঠিক পরক্ষনেই মনে হলো নিজের দোষের সাজা পাইছি,বিশ্বাস করে তো কোনো বাশ খাই নাই৷অতি চালাকি করতে গিয়া বাশ খাইছি,

কথায় আছে অতি চালাকের গলায় দড়ি

কিন্তু আমার তো দেখি পকেট খালি!

.

কি যে করমু?না আর এমন করমু না৷সহজ সরল ভাবেই আগের গেরাইম্মাল মাল হইয়া যামু

৷সবাই এক নামে আবার আমাকে চিনবো,

""গেরাইম্মা মাল,জেজাল ছাড়া অরিজিনাল""

.

রাতের প্রায় ২টার সময় হঠাৎ ফোনটা ক্রিং ক্রিং বেজে উঠল৷

খেয়াল করলাম মিম ফোন দিছে৷

কেন জানি ওর ওপর রাগ হলো৷হয়ত এখন ফোন দিয়া কইবো একটা গল্প শোনা,তাই ফোনটা রিসিভ করলাম না৷কয়েকবার ফোন আসলো কিন্তু রিসিভ করলামই না৷

একটু পরই মনটা খারাপ হয়ে গেল,""ধুরর ফোনটা রিসিভ করাই ভালো ছিলো"৷

মনে মনে নিজেকে একটু বকা দিতে লাগলাম৷

তখনি দেখি আবার কল,

ফোনটা ধরলাম,

,

--হ্যালো মিম,এত রাতে ফোন দিছোছ কেন(আলগা রাগ দেখাইলাম)

.

--ভাইয়া আমি মিম না,আপনি একটু তাড়াতাড়ি সদর হাসপাতালে আসেন(ওপাশ কান্নার আওয়াজ)

.

--কেন কি হইছে?

.

--যা বলছি তাড়াতাড়ি আসেন৷সময় নাই

.

বলেই ফোনটা কেটে দিল৷

তখন মনের ভিতর কেন জানি ভূমিকম্প শুরু হল,কি হইছে মিমের?কেন হাসপাতালে আমাকে যেতে বলছে?

মাথাটা পুরাই ওলট পালট হয়ে গেল৷

কি করব বুঝতেই পারছিনা৷আর

কোনো কিছু না ভেবে সদর হাসপাতালের উদ্দেশ্যে দৌড় দিলাম৷গুটি গুটি পায়ে যেন হাটছি,যেন পা চলছেই না,হাটার শক্তিও কেন জানি পাচ্ছি না,রাস্তায় তখন গাড়িও দেখছি না৷আজকে মনে হয়ে সব ড্রাইবার মরছে,

.

আমি দৌড়াচ্ছি কিন্তু পা বেশি চালাতে পারছিনা৷

কোনোভাবে দৌড়ে হাসপাতালে ডুকলাম৷

ঠিক তখনই সামনে দেখি নিলা,

-আরে নিলা,তুমি এখানে?মিম কই?ওর কিছু হয়নি তো?

.

--(নিলা চুপ করেই আছে)

.

--কথা বলছো না কেন?

.

-ভাইয়া তাড়াতাড়ি ভিতরে যান

,

--আরে কি হইছে সেটা তো বলবা(মাথা ঘাবরে যাচ্ছে)

.

---আসলে রাতের বেলা মিম যখন রুমে গিয়ে ঘুমাচ্ছিল ঠিক সেই মুহূর্তে একটা আওয়াজ পায়,আর সেখানে গিয়েই দেখে মিমের বাবা মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে৷

আর মিম তখনই আমাকে কল করল আর সবাই মিলে ওর বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে আসছে(কান্না করতে করতে নিলা বলল)

.

--কিন্তু মিমের বাবার কি হইছে?

--হয়ত কেউ ছুড়ি দিয়ে আঘাত করে চলে গেছে

.

--আরে ,বাসার ভিতর কিভাবে আর দাড়োয়ান কই ছিল?

.

--ভাইয়া এখন এত কিছু বলার সময় নেই৷চলুন ওদের কাছে আর মিমের বাবাকে বাঁচাতে হবে

.

--হুম

.

তখনই মিমের বাবার কাছে যাবো ঠিক তখনই দেখলাম মিম জ্ঞান হারিয়ে বেডরুমে পড়ে আছে আর ওকেও ডাক্তাররা চিকিৎসা করছে৷

এই মুহুর্তে মাথাটা একদমই ঠিক রাখতে পারছিনা৷বুকের ভিতর অনেক কষ্ট হচ্ছিল৷

তখন নিলাকে বললাম

,

--মিমের বাবা কোথায়,আর ওনি এখন কেমন আছে?

.

ঠিক তখনই নিলা হাউমাউ করে কেদে উঠল

.

--আরে কান্না করছো কেন?না বললে কিছু বুঝব কি করে?(আমি চিৎকার করে বলে উঠলাম)

,

--আসলে ভাইয়া মিমের বাবাকে নাকি রক্তের অভাবে মরে যেতে হবে(কান্না করতে করতে)

.

--মানে?কি বলছো এগুলো?

.

--হুম ভাইয়া,ওর বাবার রক্তের গ্রুপ কারো সাথেই মিলছে না৷আর প্রায় সব হাসপাতালে খোজ করেও রক্ত পাওয়া যায়নি৷

.

--কি বলছো?ওনার রক্তের গ্রুপ কি?

.

--আসলে ভাইয়া আধাঘন্টার মধ্যে যদি ২ ব্যাগ (O-)ও নেগেটিভ রক্ত না যোগাড় করা যায়,মিমের বাবাকে আর বাঁচানো সম্ভব হবে না

.

--এটা হতে পারেনা৷মিমের বাবা বাঁচবে,ওনার কিছু হতে পারেনা

.

--ভাইয়া আমরাও তো তাই চাই কিন্তু এই গ্রুপের রক্ত কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না?আর এত কম সময়ে কিভাবে পাবো?

.

বলেই নিলা আবারও কান্না করে দিল

.

--একদম কান্না করবে না৷রক্ত আমি দিবো৷আমার রক্তের গ্রূপ ও নেগেটিভ৷

,

--তাহলে ভাইয়া এক্ষনি চলুন

,

আর দেড়ি করলাম না৷

রক্ত দেওয়ার জন্য ভিতরে গেলাম৷

এক ব্যাগ রক্ত নিয়ে ডাক্তাররা অপারেশন রুমে চলে গেল৷কিন্তু মুহুর্তেই আবার ডাক্তার আসল৷আর বলে উঠল আরও এক ব্যাগ রক্ত লাগবেই লাগবে৷তাও আবার ১৫মিনিটের মধ্যে৷

মাথাটা এমনিতে ঘুরাচ্ছে,আর রক্ত দেওয়ার পর আরও বেশি৷

সব বন্ধুকে ফোন দিলাম সবাই আসতেছে কিন্তু কারও এই গ্রূপের রক্ত নেই৷

আস্তে আস্তে ১৫মিনিট প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে,ডাক্তার এসেই বলল

,

--রক্ত কি যোগার হইছে(ডাক্তার)

.

--না,এখনও তো হয়নি(আমি)

.

--দেখুন আর মাত্র কয়েক মিনিট সময় পরে আমরা আর কিছুই করতে পারব না

.

কথাটা শুনে মাথাটা আরও ঘুরে গেল,আজ যদি নিজের বাবা হত?পারতাম নিজের জীবন ভালো রেখে বাবাকে মরে যেতে দিতাম নাকি?পারতাম না৷আর মিমের বাবা মানে তো আমারও বাবার মতই৷তাহলে এত কিছু ভাবছি কেন?তখনি সিদ্ধান্ত নিলাম৷আরেক ব্যাগ রক্ত আমি নিজেই দিবো৷আর তখনি ডাক্তার কে বললাম

,

--ডাক্তার আর দেড়ি করার দরকার নেই৷আমার কাছ থেকে আরেক ব্যাগ রক্ত নেন(আমি)

.

--আপনি কি পাগল হইছেন নাকি?

আরেক ব্যাগ রক্ত নিলে,আপনার জীবন নাশেরও আশংকা আছে৷(ডাক্তার)

.

--ভাইয়া,আপনি এত বড় ঝুকি কেন নিচ্ছেন(নিলা)

,

--তন্ময়,এত বড় ঝুকি নেওয়া ঠিক না৷চল রক্তের খোজ করি(রনী)

.

--না রে৷আর দেড়ি করা একদমই ঠিক হবে না৷ডাক্তার আপনি আমার রক্ত নেন

.

--না আমি পারব না(ডাক্তার)

,

--আপনাকে নিতেই হবে,নাহলে আপনার অবস্থাও অনেক খারাপ হয়ে যাবে,ওনার যদি কিছু হয় আপনাকে আমরা ছাড়ব না(আমি)

.

অনেক বার বলার পর রাজি হলো৷

আমার শরীর থেকে আরও এক ব্যাগ রক্ত নেওয়া হলো৷

মিমের বাবার অপারেশন করা হলো৷

কিন্তু আমার আর কিছুই মনে নেই৷

যখন জ্ঞান ফিরল

তখন সামনে দেখি মিম,রনি,নিলা সবাই কান্না করছে,আর আমার হাতে ,পায়ে স্যালাইন লাগানো৷

.

আমার জ্ঞান ফিরার পর রনি এসে বলল

--ভাই তুই ঠিক আছিস তো?এখন কেমন লাগছে?(রনী)

,

--হুম ভালো৷

.

তখন খেয়াল করলাম মিম কান্না করেই যাচ্ছে,

আমি মিম কে ডাক দিলাম

--এই মিম,তুই কান্না করছীস কেন?দেখ

আমি ঠিক আছি তো,আর আংকেল কেমন আছে?ভালো আছে তো?

.

--আংকেল পরে দেখ!আগে নিজে ঠিহ(মিম)

.

--দেখ এসব বলবি না,আংকেল ঠিক আছে কি না সেটা বল

.

--তোর পাশের সীটে দেখ

.

--আমার পাশের সীটে দেখব কেন?

.

--আরে পাশের সীটে দেখ তো

.

তখন খেয়াল করলাম একজন মধ্যবয়স্ক মানুষ বেডে বসে আছে আর আমার দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ছেড়ে দিছে

.

--একি আপনি কান্না করছেন কেন আংকেল?(এক বেডে শুয়ে অন্য বেডের আংকেলকে বললাম)

.

--জানিনা বাবা,তুমি কোন মায়ের সন্তান,তোমার বাবা কেমন?কিন্তু তোমাকে দেখার পর যা বুঝেছি,কোনো ছেলেও তার বাবার জন্য এত বড় ঝুকি নিয়ে অন্যজনকে বাঁচাবে না৷ আর তুমি......

.

--আংকেল এগূলো বলে লজ্জা দিবেন না৷আপনিও আমার বাবার মতই,আর সব

চাইতে বড় কথা এটা আমার কর্তব্য৷

আর আপনাকে কেন ?আর কে মেরেছে?

.

--বাবা,ওইটা বুঝবেনা,রাজনীতী করলে এমনই,

আচ্ছা তুমি এখন রেস্ট নাও৷

এমনিতেই ১৫দিন ধরে অজ্ঞান ছিলে,

.

--কিহহহহহহ?পনের দিনননননননননন!আল্লাহ বাসায় তারমানে পনেরদিন ধরে কথা বলিনি?মা বাবা কত চিন্তা করবে?কে জানে?

রনি আমার ফোনটা দে,বাসায় একটু কথা বলি,এমনিতেই অনেক চিন্তায় আছে রে(আমি)

-

--আরে ওইটা নিয়া চিন্তা করিস ণা,যা বলার আন্টিকে বলে দিয়েছি,ওরা চিন্তা করছেনা৷সব ঠিক করে রাখছিরে(রনি)

.

--ওপস বাচাইলি৷

.

--তন্ময় ,তুই এখন রেস্ট নে (রনি)

বলেই সবাই চলে গেল৷আমি শুইয়ে আছি৷ঠিক তখনই মিম বলে উঠল

,

--এই পাগল,এত বড় ঝুকি নিলে কেন?

.

--এখন এসব কথা বাদ দাও৷

.

--হুম৷তুমি রেষ্ট নাও

.

--আর কত রেষ্ট নিমু?১৫দিন ধরে নাকি অজ্ঞান হয়ে আছি,তাহলে তো অনেক রেষ্টই নিয়েছী৷কীন্তু আমার হয়েছিল কি?

.

--আসলে তোমার শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্ত নেওয়ায় তুমী রক্তশূন্যতায় পড়ে গিয়েছিলে,

তাই এমন হইছে, আর চিন্তা করো না,সব ঠিক হয়ে যাবে,

.

--হুম

.

এর পর আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে পড়ি

আর এর পরই একদিন মিম বলে উঠে

.

--তন্ময়,তোর এই ত্যাগ কিভাবে যে শোধ করবো?

.

--দেখ মিম!এগুলো বলবি না,আমরা ফ্রেন্ড,আর ওনার জায়গায় আমার বাবা থাকলে.তুই চুপ করে থাকতে পারতি?

.

-কিন্তু?

.

--কোনো কিন্তু না৷এগুলো বাদ দে৷আর আমরা আবার আগের মত মজা,আড্ডা সব করব৷বুঝেছিস?

.

--হুম.

.

কিছুদিন পর.

এখন আমি মিমের বাবার চোখের মনি হয়ে গেলাম৷

মিমের বাবা আমাকে এখন অনেক আদর করে৷নিজের সন্তানের মতই৷

যাই হৌক,সুস্থ হয়ে ভার্সিটিতে গেলাম৷আর আবারও আগের মতই দুষ্টুমী শুরু করলাম৷কিন্তু একটা জীনিস খেয়াল করলাম ,মিম এখন আমার সাথে আরও ঘনিষ্ট হতে চাচ্ছে,

কিন্তু কেন৷তাহলে কি মিম আমাকে ভালোবাসে?

পরক্ষনেই নিজেকে পাগল বললাম,আর ভাবছি বড় লোকের মেয়ে,তারওপর আবার নেতার মেয়ে,

না এটি হতেই পারেনা৷আর মিমের সাথে আমার হয়না৷আমি গ্রামের ছেলে৷আর মিম ....,,.....থাক আপনারা তো জানেনই,বলে লাভ নাই৷

হঠাৎ একদিন সব বন্ধুরা আড্ডা দিতে যাবো ঠিক তখনই নিলা ,আর সজীব সামনে এসে একটা গোপন প্লানের কথা বলল,

প্লানটা শুনে তো হেব্বি মজা লাগছে,এবার আগের মত একটা দূষ্টমি করার সুযোগ পাইলাম৷কাজে লাগাবো৷হি হি হি

তারপর নিলা আর সজীবকে নিয়ে আরেকটা প্লান করলাম৷

এবার খেলা জমবে!!!!!!!!!

শালার এত দূষ্টু বুদ্ধী ?তাও আমার সাথে?

একটু মজা নেওয়া যাক৷

,

তারপর ভার্সিটির মাঠে গিয়ে সবাই আড্ডা দিচ্ছিলাম৷

আর তখনই সবার সামনে মিম হঠাৎ বলে উঠল

.

--তন্ময়,I love U

.

--(কথাটা শুনার পর নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছিনা,স্বপ্ন দেখছি না তো?)

.

--কিরে তন্ময়,চুপ কেন?(মিম)

.

--মিম,আবার বল.

.

--I love u tannoy

.

---I love u to mim

.

সাথে সাথেই মিম হেসে বলে উঠল

.

--দেখেছিস সবাই?বলেছিলাম না তোরা বাজিতে হারবি,দেখেছিস তন্ময় রাজি হয়ে গেল হি হি হি

.

--কিরে তন্ময় এত সহজেই পটে গেলি?আর শালা,আমাদের বাজিতে হারিয়ে দিলি?(রনি)

.

সবাই যখন মজা করছিলো ঠিক তখন আবার মিম বলে উঠল.

--তোরা তো দেখলি ,আমি প্রপ্রোজ করা মাত্রই তন্ময় রাজি হইছে,এবার ১হাজার দে রনি,

আর তন্ময় তুই আমার সাথে পটে গেলি দেখছি?

তখনই আমি

.

--হা হা হা হা৷ নিলা,সজীব কই তোরা,এবার আমার ৫হাজার দে(আমি)

.

---কিহহহহহহ?৫ হাজাররররররররররররর(মিম হা করে রইল)

.

--হুম ৫হাজার!তোরা মাত্র ১হাজার টাকার বাজি ধরেছিস,আর আমি ৫ হাজাররররররর(আমি)

.

--কিন্তু সেটা কিভাবেএএএএএ(মিম)

.

.

.

..

চলবে...........

5
$ 0.00

Comments

অনেক সুন্দদর একটা গল্প এর জন্য লেখককে ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটা গল্প লেখার জন্য। চালিয়ে যান ভাই

$ 0.00
3 years ago

গল্প লেখককে অনেক ধন্যবাদ, বেশ সুন্দর গল্প, পর্বের গল্পগুলো পড়তে বেশ মজা লাগে। কারণ কাহিনীর মজাটা ধীরে ধীরে আসে।। এই ধরনের গল্প আরো লিখেন। আপনার পরবর্তী গল্পের জন্য অপেক্ষা করবো।।

$ 0.00
3 years ago

আসলে নেতার মেয়ের কোন রাগ নেই । সে শুধু ক্ষমতার বড়াই করে।গল্পটি পড়ে অনেক মজা পাইছি ধন্যবাদ আপনাকে পরবর্তী গল্পের অপেক্ষায় থাকলাম।

$ 0.00
3 years ago

নেতার মেয়েদের অননেক ভাব বেশি, খালি বাপের পাওয়ার দেখায় কিন্তু কোনো কাজের বেলায় কিছুই না তারা। তবে গল্পটা অনেক সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ

$ 0.00
3 years ago

This article is very beautiful . I am very excited to read out . Your creativity is very widely. I hope your writing style is well.

$ 0.00
3 years ago