গল্পঃবেস্ট ফ্রেন্ড যখন বউ+অফিসের বস
#পর্বঃ০২
.
.
যেদিন জানতে পারলাম ওর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে সেদিন খুব খারাপ।। ।
ছোয়া ওর বিয়ের কার্ড যখন আমার হাতে দিল তখন কার্ডটা হাতে নিয়ে হাতটা কাপছিল,,,,
চোখ দিয়ে জল পরতে চাইছিল।। কিন্তু সেটা আটকে রেখে দিয়েছিলাম,,,,
এমনকি ছোয়ার বিয়ের সব কাজ আমাকে করতে হয়,,,,
ভেবেছিলাম এটা হয়তো আমার ভাগ্য যাকে ভালোবেসেছিলাম,,, তার বিয়ে দিতেছি,,,,
কিন্তু বিয়ের দিন বর আসে নি,,,,
কারনটা এখনো অজানা,,,,
তারপর ছোয়ার বাবা ওর বিয়ে আমার সাথে দেন,,,,
আমি প্রথমে না করি,,, কারন ওনাদের সাথে আমার যায় না,, কিন্তু তিনি হাত জোর করে বলতে লাগলেন তাই আর না করতে পারি নি,,,,
তারপর বাসর রাতের কথা ত আপনাদের বললাম,,,,
সেদিন বাসা থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম,,,,
আজ ৪মাস হয়ে গেল৷
ছোয়াকে দেওয়া কথার ১ মাস বেশি,,,,
পুরোনো শহরটা আজ আবার বসে আছি,,,
আকাশ মেঘলা,,, কখন যেন অঝোরে নামবে, বৃষ্টি,,
পুরোনো কথা গুলো খুব মনে পরর যাচ্ছে,,,
সেই চিরোচেনা ব্রিজে গেলাম৷ যেখানে আমি আর ছোয়া প্রায় রাতেই বসে থাকতাম,,
ব্রিজের এক কোনে গিয়ে বসলাম,,,,
এক সিগারেট ধরিয়ে পুরোনো গল্প খুনশুটির কথা গুলো ভাবতে লাগলাম,,,
নিজের অজান্তেই ঠোঁটের কোনে হাসি চলে আসল,,,
তখনই হালকা বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল,,,,
বৃষ্টি টা আজ খুব ভালো লাগছে তাই আর উঠলাম,,, না,,,
ছোয়ার সাথে কাটানো মুহুর্ত গুলো ভাবতে লাগলাম,,,
ছোয়া আমার বউ কিন্তু বাসর রাতের পর থেকে তাকে আমি দেখি নি হাস্যকর হলেও এটাই বাস্তব,,,
হয়তো ও এখন কোনো ভালো বড়লোক ছেল পেয়ে গেছে,,,
।
(গল্প পড়তে আমাদের "ভালোবাসার রোমান্টিক গল্প গুলি" পেজের সাথেই থাকুন)
.
কিন্তু ও কি আবার বিয়ে করছে,, কথাটা ভাবতে ভাবতে ব্যাগ থেকে ডিবোর্স পেপার টা বের করলাম,,,
এই চেনা শহরে ফিরে আসার দুইটা কারন,, তার মধ্যে এটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ,,,
হটাৎ করে জোরে বৃষ্টি শুরু হলো,,,,
কাগজ টা ব্যাগে ঢুকিয়ে সিগারেট টা ফেলেদিলাম,,,
তারপর হাটতে লাগলাম,,,
কোনো কিছু পাচ্ছি না যে উঠে যাব,,,,
ঝুম বৃষ্টিতে একলা রাস্তায় হেটে চলেছি,,,,
হটাৎ করে সামনে দিয়ে একটা টেক্সি আসল,,,
আমি জোরে ডাক দিলাম,,,
আমি, টেক্সি,,
আমার ডাক শুনে টেক্সিটা দারিয়ে গেলো,,,,
আমি দোউরে গিয়ে ওর দরজা খুলতেই একটা বড় ধরনের শক খেলাম
চার মাসে অনেকটা বদলে গেছে,,,
কিন্তু চিনতে অসুবিধা হলো না,,,
হ্যা ভেতরে ছোয়া বসে ছিল,,,,
আমাকে ওকে দেখে যতটা সাভাবিক ও হয়তো নয়,,,ওর চোখ মুখ দেখলে বুঝতে পারছিলাম,,
এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল,,,
স্যার যাবেন (((ড্রাইভার এর কথা বাস্তবে ফিরলাম,,))
না যাও
তারপর সেখান থেকে চলে আসলাম,,,
আগে থেকে একটা বাসা ভাড়া করে রেখেছিলাম,,,
হাটতে হাটতে বাসায় চলে আসলাম,,,
আসার সময় ছোয়ার মুখটা শুধু ভেসে আসছিল।।
অনেকটা বদলে গেছে ও,,,
চুল গুলো আগের মতো আর ছোট নেই বেস বড় রেখেছে,,,
ছেলেদের মতো আর প্যান্ট শার্ট পরে না হয়তো,,
কারন ওকে শাড়িতে দেখলাম,,,
বেস মানিয়েছে ওকে শাড়িটায়,,, একদন পড়ির মতো লাগছিল,,,
এসব ভাবতে ভাবতে বাসায় চলে আসলাম,
দারোয়ানের কাছ থেকে চাবি নিয়ে ভিতরে গেলাম,,,
ফ্রেশ হয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে বসলাম,,,
একটা সিগারেট ধরলাম,,,।
আর মায়া মাখা বৃষ্টিটা উপভোগ করতে লাগলাম,,,
এখন আর ছোয়ার জন্য অতটা আবেগ আসে না
কারন আমার ভূলটা ও আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে,,,,
আগে ওর পিছনে কিভাবে ঘুরতাম,,, কথাগুলো ভাবলেও হাসি পাচ্ছে,,,
সারাদিন ওর কথা মতো উঠবস,,,
সিয়াম এটা কর ওটা কর এটা করবি না ওটা করবি না,,, দিনগূলো চোখের সামনে ভেসে উঠছে
কিন্তু তার জন্য আর আবেগ প্রকাশ পায় না,,আবেগটা আজ সিগারেটের ধোয়ার সাথে হারিয়ে গেছে একাকিত্তের বাতাসে,,,
সারা রাত ব্যালকোনী তে বসে থাকলাম,,,
শেষ রাতে সেখানেই ঘুমিয়ে পরেছি,,,,
সকলে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পরলাম,,,,
হাতে আছে আমার আর ছোয়ার ডিবোর্স পেপার।।
আমি নিজের কথাটা আজ রাখতে যাচ্ছি যেটা আমি ওকে বাসর রাতে দিয়েছিলাম,,,
একটা রিক্সা নিয়ে ছোয়ার বাসার সামনে গেলাম,৷
বাসাটা চিরচেনা,,, কিন্তু মানুষ গুলো হয়তো চিনতে পারি নি,,,
দরজায় গিয়ে কলিং বেল চাপলাম,,,
কিছুক্ষন পর একজন মহিলা এসে দরজা খুলে দিলেন,,,
হয়তো কাজের লোক,,,
অপরিচিতা, কাকে চাই
আমি, ম্যাডাম বাসায় আছেন
অপরিচিতা, হুম
আমি, একটু ডেকে দিবেন
আচ্ছা আপনি বসেন আমি ডাক দিচ্ছি,,,
বলেই মহিলাটি চলে গেলেন,,,
আমি দরজায় দারিয়ে রইলাম কারন ভেতরে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে আমার নেই,,,,
আমি পিছনে ঘুরে বাসার বাগানটা দেখতে লাগলাম,,,
একটু পর কে যেন পিছন থেকে ডাক দিল,,,
পিছনে তাকিয়ে দেখি ছোয়া,,,,
আমাকে দেখে অনেকটা অবাক হলো তা ওর চেহারা দেখে বোঝা যাচ্ছে,,,
ছোয়া, কেমন আছ
আমি, জি ভালো
ছোয়া, ভিতরে আস
আমি, না তার দরকার নেই এই নিন
ছোয়া, কি এটা?
যেটার জন্য আপনি এতদিন অপেক্ষা করে ছিলেন,,,
পেপারটা এগিয়ে দিয়ে পরে,,
পরে দেখে নিন ঠিক আছে কি না।। আর আমার সাইন দেওয়া আছে,,,
ছোয়া পেপারটা হাতে নিয়ে পরতে লাগলো,,,
একটু পর আমার দিকে মায়াবী দৃষ্টিতে তাকালো,,,
কি ঠিক আছে,,, আর সরি আপনাকে এক মাস বেশি দেরি করানোর জন্য আসলে পেপারের কাজটা করতে একটু ভেজাল হয়েছিল,,,,
আমি, আপনি খুশি ত আজ আপনি মুক্ত
চুপ,,,,
আমি, আজ আসি ভালো থাকবেন
বলে চলে আসলাম পিছনে ঘুরে আর ওর দিকে তাকাই নি,,,,
হয়তো ও আজ অনেক খুশি,,, আমিও খুশি কারন ভালোবাসার মানুষটা খুশি হয়েছে,,,,
ওখান থেকে বাসায় চলে আসলাম,,,,
সারাদিন বাসার টুকিটাকি গুছিয়েছি,,, বিকেলে বাজার করে এনে রান্না করলাম,,
একা থেকে রান্না করা শিক্ষে গিয়েছি কারন বাকিটা জীবন একাই কাটাতে হবে,,,
রাতে খেয়ে তারাতারি ঘুমিয়ে পরলাম,, সকালে অফিস যেতে হবে,,,
আমি এক্ষন একটা বড় কোম্পানি তে সিনিয়র ম্যানেজার এর পদে,,,
প্রমোশন পেয়ে এখানে এসেছি,,
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পরলাম অফিসের উদ্দেশ্য
অফিসে গিয়ে সবার সাথে কুশল বিনিময় করে নিজের কেবিনে গিয়ে কাজ করতে লাগলাম৷৷
একটু পর একজন কর্মকর্তা এসে বল্ল বস এসেছে আপনার সাথে দেখা করতে চায়৷
আমি বসের রুমে গিয়ে দরজা নক করলাম
আমি, May i come in sir
ওপাশ থেকে , yes come in
ভিতরে ঢুকতেই মাথায় আকাশ ভেংগে পরলো৷
,,,,চলবে...