নিজের স্মৃতিশক্তি বাড়ান ( the way to increase memory)

2 32
Avatar for Ridz
Written by
3 years ago

স্মৃতি বলতে বুঝি সাধারণত কোন কিছু মনে রাখা।সাধারণত যা স্মৃতিশক্তি যত বেশি সে ততো বেশি তথ্য মনে রাখতে পারে অর্থাৎ তার মস্তিষ্কে সংরক্ষণ করে রাখতে পারে।

আমাদের প্রত্যেকেরই একটা নির্দিষ্ট স্মৃতিশক্তি রয়েছে। এর বাইরে আমরা কিছু মনে রাখতে পারিনা। কারো স্মৃতিশক্তি অনেক বেশি প্রখর বিপরীত কারো স্মৃতিশক্তি অনেক কম।

আমার প্রশ্ন হচ্ছে কোন ভাবে কি স্মৃতিশক্তি বাড়ানো সম্ভব? অর্থাৎ অনেক বেশি সংখ্যক তথ্য কি আমরা মনে মনে রাখা সম্ভব?

স্মৃতি মনোবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে মনোবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন রকম গবেষণা করে গেছেন।

এই আর্টিকেলে আমি আমার জানা স্মৃতি শক্তি কিভাবে বাড়ানো যায় মনোবিজ্ঞানীদের বলে দেওয়া বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে লিখবো।আমি এই পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করি।এই পদ্ধতি গুলো আপনাদেরও অনেক বেশী তথ্য মনে রাখতে সাহায্য করবে।

তো চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে অনেক বেশী তথ্য আমরা মনে রাখতে পারি:

ছন্দ এবং আদ্যক্ষর বা প্রথম শব্দ (Acronyms) ব্যবহার করা:

আমাদের মস্তিষ্ক খুব জটিল কিছু বেশীদিন মনে রাখতে পারে না।তবে জটিল সেই বিষয়টাকে যদি ভেঙে ছোটো ছোটো অংশ করা যায় তাহলে তা মনে রাখতে অনেক বেশি সহায়ক হবে।

যেমন কবিতার আকারে ছোট ছোট ছন্দে কোন জটিল বিষয় কে ভাগ করা যেতে পারে। মনোবিজ্ঞানীরা নানা রকম গবেষণায় দেখেছেন একটা নির্দিষ্ট ছন্দ বদ্ধ শব্দ আমাদের মস্তিষ্কে অনেকদিন স্থায়ী থাকে।

আবার কোনো শব্দের প্রথম অক্ষর বা acronyms সেই বিষয়টাকে স্মরন রাখতে সাহায্য করে।

বিবরণমূলক পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে বিভিন্ন বিষয়ের শব্দের তালিকা আলাদা আলাদা ব্যবহার করে একটা গল্প বানানো হয়। জটিল জটিল সব সবথেকে একসাথে নিয়ে গল্প তৈরি করা হয়।

আপনি আপনি যে টপিকস মনে রাখতে পারছেন না বা সমস্যা হচ্ছে সে টপিকসের শব্দ গুলোকে দিয়ে একটি গল্প বানিয়ে ফেলুন। এভাবে আপনি অনেক বেশি মনে রাখতে পারবেন।

ছন্দ পদ্ধতি:

আমরা ছোটবেলায় ছড়া পড়তাম। সেই ছড়াগুলো অনেক বয়স হওয়ার পরেও আমাদের মনে থাকে। এগুলোতে একটা ছন্দ ব্যবহার করা হয় যেখানে প্রতিটি লাইনের সাথে একটা মিল থাকে। একই পদ্ধতি ব্যবহার করা যায় কোন কিছু মনে রাখতে।

বার বার পুনরাবৃত্তি করা:

আপনি যত বেশি একটা কথা বা একটা বিষয় অনুশীলন করবেন ততবেশি তা মনে থাকবে।আপনি যা মনে রাখতে পারছেন না তা বারবার অনুশীলন করুন অর্থাৎ বারবার তা মনে করার চেষ্টা করুন।

এটি আপনার মস্তিস্কের স্মৃতিশক্তি ধারণক্ষমতার উন্নতি করে।

পুনরাবৃত্তির কারণে দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি বা লংটাইম মেমোরিতে (Long time) সে তথ্যটি জায়গা করে নেয়। আবার একই বিষয়ে যখন বারবার পুনরাবৃত্তি করা হয় তখন তা আরো বেশি বোধগম্য হয়।

জটিল কোনো কিছু মনে রাখতে আগে বুঝতে হবে। আপনি যত বেশি কোন কিছু বুঝবেন ততবেশি তা আপনার মস্তিষ্কে সংরক্ষিত থাকবে। তাহলে যা বোঝা গেল যে শুধু মুখস্থ করার চেষ্টা না করে আগে সে বিষয়টিকে বুঝতে হবে বা অনুধাবন করতে হবে।

পড়াশোনার পূর্বে সময় ভাগ করে নেয়া:

যেমন কোনো বিষয় সম্পূর্ণ ভাবে বুঝতে ৯ ঘন্টা সময় লাগবে।তো আপনি এক নাগাড়ে ৯ ঘন্টা সময় দিলে আপনি কোনো ভাবেই সেটা বুঝতে পারবেন না মনে রাখতে পারবেন না।

আমাদের মস্তিষ্ক একটা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে পারে না।পড়ার বিষয়টাকে আলাদা আলাদা করে ভাগ করে নিন।৯ ঘন্টা কে ৩ ঘন্টা করে ৩ দিন ভাগ করে নিন।আমি সাধারণত পরীক্ষার আগে,এই পদ্ধতি কাজে লাগাই।

পুরো বিষয়টাকে আলাদা আলাদা অংশে ভাগ করে ফেলি এবং সেগুলোর জন্যে নির্দিষ্ট সময় ভাগ করে ফেলি। টানা ৯ ঘন্টা পড়াশোনা করে আপনি যতো না কিছু মনে রাখতে পারবেন প্রতিদিন ৩ ঘন্টা করে পড়ে তার থেকে অনেক বেশী মনে রাখতে পারবেন।আর এটি বৈজ্ঞানিক ভাবেও প্রমাণিত।

যখন যে বিষয় নিয়ে পড়ছেন সেটাতে মনোযোগ দিন:

আমরা বিশেষ করে যারা ছাত্র আছি,দেখা যায় কোনো বিষয় নিয়ে পড়ার সময় সেটাতে কিছুক্ষণ মনোযোগ দেই এর পরে আরেকটা বিষয় নিয়ে পড়ি এরপরে আরেকটা বিষয় অর্থাৎ পড়াশোনার সময়টা নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে একটা লম্বা সময় দেই না।

তাই যখন পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে পড়ছি তখন শুধু পদার্থবিজ্ঞান নিয়েই চিন্তা করবো।ধরুন কালকে আপনার রসায়ন পরীক্ষা,তাহলে সম্পূর্ণ মনোযোগ এই বিষয়ে দিন।এক টপিকের মাঝখানে অন্য টপিক নিয়ে আসলে দেখা যায় কোনো টপিক শেষ পর্যন্ত মনে থাকে না।

আমাদের ছাত্র জীবনে এই ভুলটি সবসময় করি।সব বিষয় এক সাথে গলাধঃকরণ করতে যাই আর পরীক্ষার হলে গিয়ে দেখি কিছুই মনে নেই।

গভীর অধ্যয়ন বা Deep learning:

গবেষণায় এটি প্রমাণিত হয়েছে যে আপনার পড়া বিষয়টি আপনি কতটা গভীর ভাবে বুঝতে পেরেছেন তার উপরে সে বিষয়টি মনে রাখা বা স্মৃতিতে ধারণ করা নির্ভর করে। তাই যদি কোন বিষয়কে একটা লম্বা সময় ধরে মনে রাখতে চাই তাহলে তার অর্থ বুঝতে হবে।

শোনা এবং ছবি বা Visual image এর ব্যবহার:

দেখা যায় যে আমরা একটা কথা যতো বেশী শুনি ততো বেশী মনে রাখতে পারি।কেউ যদি আমাদের কানের কাছে একই কথা বারবার বলে সেটা আমাদের মস্তিষ্কে অনেকদিন স্থায়ী হয়।তাই আপনি যখন কোনো কিছু মনে রাখার চেষ্টা করছেন তখন তা জোরে জোরে পড়ুন।

পড়াশোনার মধ্যে ছবির ব্যবহার স্মৃতিশক্তিকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। পড়াশোনার টপিকস এর সাথে সম্পর্কিত ছবি বা সংকেত বা কোনো ডায়াগ্রাম( Diagram) কিংবা তথ্য বহুল কোনো গ্রাফ চার্ট এইগুলো অনেক বেশী মনে থাকে।

তাই বইয়ের পাতায় লাইনের পর লাইন মনে রাখার চেষ্টা না করে ছবি বা ডায়াগ্রাম আকার চেষ্টা করুন।

এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন উপাদানের সাথে একটা মিল খুঁজে ডায়াগ্রাম একে ফেলতে পারেন।

যেমন ধরুন আপনি কিছু ফলের নাম মুখস্ত করার চেষ্টা করছেন

কোন ফল গুলোর রং সবুজ সেগুলো ভাগ করে ফেলুন।কোন ফল গুলোর রং কমলা রঙের সেগুলো ভাগ করে ফেলুন।সবুজ রঙের ফল বলতে তখন আপনার মনে সবুজ রঙের আপেল মনে থাকবে।কমলা রঙের ফল বলতে কমলা মনে থাকবে।এইভাবে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।ভীষণ কাজে দিবে।

কোনো স্থানের সাথে সম্পর্কিত এমন যোগসুত্র স্থাপন করে মনে রাখতে পারেন।

যেমন আইফেল টাওয়ার, এর সাথে সম্পর্কিত স্থান প্যারিস।

মূল শব্দ বা Keyword পদ্ধতি ব্যবহার করে মনে রাখতে পারেন।

কারো নাম ধরলাম রোজমেরি,এখন তার নাম মনে রাখতে রোজমেরি ফুল নিয়ে আসা যায়।এখানে মূল শব্দটি হচ্ছে ফুল।এইভাবে একটি শব্দের সাথে আরেকটি শব্দ মিলিয়ে অনেক বেশী সংখ্যক তথ্য মনে রাখা যায়।

এলোমেলো ভাবে মনে রাখার চেষ্টা না করে তথ্য গুলো গুছিয়ে নিন:

যেমন আপনি সাল মনে রাখার চেষ্টা করছেন।সেক্ষেত্রে এলোমেলো ভাবে ১৯৭৮,১৯১০,১৯৪২ এইভাবে মনে রাখা খুবই কষ্টকর।বেশীরভাগ সময়ই আমরা ভুলে যাই।

এক্ষেত্রে তথ্য গুলোকে একটা ধাপে সাজিয়ে নিন।যেমন ছোটো থেকে বড় কিংবা বড় থেকে ছোটো।১৯১০,১৯৪২,১৯৭৮ এইভাবে সাজিয়ে নিতে পারেন।আমরা এলোমেলো তথ্য থেকে গোছানো তথ্য অনেক বেশি মনে রাখতে পারি।

উপরের সবগুলো পদ্ধতি বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানিত আর প্রতিটি ব্যবহার করে আমরা আমাদের স্মৃতি শক্তি অনেক গুন বাড়াতে পারি।

3
$ 0.29
$ 0.29 from @TheRandomRewarder
Sponsors of Ridz
empty
empty
empty
Avatar for Ridz
Written by
3 years ago

Comments

like comnt diyen amio dialm

$ 0.00
3 years ago

kub valo likhechen amar post o dekhe pase thakun

$ 0.00
3 years ago