মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার “নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০২০” এর গ্লোবাল জাজমেন্টে প্রাথমিকভাবে মনোনীত ৪১৩ টিমের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশের ১৭ টি টিম। এর মধ্যে রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিম ফ্লাশিং রেড ও টিম প্রাইম স্পেস এক্স নামে দুইটি টিম।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই দুইটি টিম অনলাইন ট্রাফিক মনিটরিং সিস্টেম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে এই চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণ করেছে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১১ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী টিম ফ্লাশিং রেডের সদস্য রাকিব রায়হান এমসিজে নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রতিযোগিতায় যাত্রা সম্পর্কে বলেন, " নানা সীমাবদ্ধতা, বড় চ্যালেঞ্জ! আমাদের হয়তো মোকাবিলা করা সম্ভব না।
তবুও রেজিস্ট্রেশনের শেষের দিকে সব সীমাবদ্ধতাকে পেছনে ফেলে আমরা রেজিস্ট্রেশন করে ফেলি, প্রায় শেষ মুহূর্তেই শুরু হয় আমাদের প্রস্তুতি। করোনায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ, তাই অনলাইনেই গড়ে তুলি টিম।
রাকিব জানান, "আমাদেরকে সারা বাংলাদেশের ৯ টি রিজিয়ন থেকে আসা প্রতিযোগীদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হয়েছে। সেখান থেকে আমরা আমাদের এবং আমাদের শিক্ষকদের বিশেষ করে আমাদের ম্যান্টর পার্থ চক্রবর্ত্তী স্যারের সহযোগিতায় আলহামদুলিল্লাহ একটা ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা প্রাথমিকভাবে গ্লোবাল জাজমেন্টের জন্য মনোনীত হয়েছি। এটা খুব বড় একটি অর্জন আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে।"
এই প্রতিযোগিতায় দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে টিকে থাকা কেমন ছিলো? এই প্রশ্নের উত্তরে রাকিব জানান, "আমাদের সাথে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু আমরা সবসময় আমাদের সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আর তাদের সাথে এভাবে অবশ্যই প্রতিযোগিতা করতে পেরে ভালো লেগেছে।"
সাথে আরও যোগ করে তিনি বলেন, "আমরা যদি ভেবে থাকি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসর ছোট, রিসোর্সের ঘাটতি আছে, আমরা কিছু করতে পারবো না এটা একটা ভুল ধারণা। সীমাবদ্ধতা থাকবেই। কিন্তু নিজে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলে কখনোই ভালো কিছু অর্জন করতে পারবো না।
হ্যা, আমাদের অনেক রিসোর্সের ঘাটতি আছে। যেগুলো থাকলে হয়তো আমরা অনেকে আগ থেকেই নিজেদের প্রস্তুত করতে পারতাম আরো বড় কিছু অর্জনের জন্য।"
তবে, আমরা যদি আমাদের যতটুকু মেধা আছে, যতটুকু রিসোর্স আছে সেটা কাজে লাগিয়ে কিছু অর্জন করতে পারি সেটা অবশ্যই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে রিপ্রেজেন্ট করবে। আর সেটাই হবে সত্যিকার অর্থে আমাদের জন্য খুব বড় একটা অর্জন।"
তারপরও আমাদের শ্রদ্ধেয় ভিসি স্যারের কাছে একটা অনুরোধ থাকবে, আমাদের যেসব রিসোর্সের ঘাটতি রয়েছে সেগুলোর ব্যবস্থা করা। যাতে করে আমরা গবেষণার কাজ চালিয়ে যেতে পারি এবং আরও ভালো কিছু অর্জনের জন্য চেষ্টা করতে পারি।"
পাশাপাশি রিসোর্স নেই, অনেক সীমাবদ্ধতা এসব ভেবে বসে না থেকে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে রাকিব বলেন, " যে যেই বিভাগের হোক না সেই বিভাগের বিভিন্ন সেক্টরে নিজেদের পদচারণায় মুখরিত করুক। আমাদের রিসোর্স নেই এই ভেবে বসে থাকলে বা সীমাবদ্ধতা আছে এই ভেবে বসে থাকলে কখনোই ভালো কিছু অর্জন করা সম্ভব নয়।"
উল্লেখ্য,মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার “নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০২০” প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ১৫০ দেশ থেকে ৩ হাজার ৮ শত টিমের ২ হাজার ৩শ’র অধিক প্রজেক্ট জমা পড়ে। সেখান থেকে প্রাথমিকভাবে ৪১৩ টিমকে নাসা গ্লোবাল জাজমেন্টের মনোনয়ন দিয়েছে।
Nice article.