আজ ১৬ অক্টোবর, বিশ্ব খাদ্য দিবস। এই উপলক্ষে আমি এখানে এমন কিছু খাবারের তালিকা উপস্থাপন করছি, যা পুষ্টিগুণে অতুলনীয় কিন্তু দামে খুবই সস্তা ও সহজলভ্য।
এই তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে যুক্তরাজ্যের একদল গবেষকদের তৈরি করা ১০০০ খাবারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পুষ্টিগুণ রয়েছে এমন ১০০ টি খাদ্যের তালিকা থেকে৷
১. অ্যামন্ড ও আখরোট: দুই জাতের বাদাম, যা ১০০ টি খাবারের তালিকায় শীর্ষস্থান পেয়েছে। ফ্যাটি এসিডের সবচেয়ে ভালো উৎস এটি। হার্ট ভালো রাখতে ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে এই খাবারের জুরি নেই।
২. আতাফল: তালিকায় দ্বিতীয় শীর্ষ খাবার হিসেবে রয়েছে আতাফল৷ এতে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি, ভিটামিন-এ, সি, বি-১, বি-২ ও পটাসিয়াম।
৩. বিভিন্ন ধরণের সামুদ্রিক মাছ: সামুদ্রিক কই বা পোয়া মাছ সবচেয়ে উচ্চ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবারগুলোর মধ্যে একটি।
এছাড়া কড মাছ, নীল পাখনার টুনা, বিভিন্ন ধরণের স্যামন, ইল, সামুদ্রিক চিতল বা ফ্ল্যাট ফিশ পুষ্টিগুণের জন্য এই তালিকায় স্থান পেয়েছে।
৪. চিয়া সীড তা তিশি বীজ: বিভিন্ন ধরনের ডায়েটারি ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন, লিনোলেনিক এসিড ও ফেনোলিক এসিড রয়েছে এতে।
৫. মিষ্টি কুমড়া ও বীজ: মিষ্টি কুমড়া ও বীজ আয়রন ও ম্যাঙ্গানিজের ভালো উৎস। কাঁচা কিংবা পাকা যেটাই হোক বা যে জাতেরই হোক না কেন মিষ্টিকুমড়ার পুষ্টিগুণের কোনো কমতি নেই৷
৬. শুকনো ধনিয়াপাতা/ ধনিয়াপাতা: ধনিয়াপাতার গুড়ো, তাজা ধনিয়াপাতা কিংবা এর ডাটা- পুরো গুল্মটিই আসলে পুষ্টিগুণে ভরপুর।
এতে থাকে ক্যারোটিনয়েডস যা হজমে সমস্যা, কাশি, বুকের ব্যথা এবং জ্বর উপশমে সাহায্য করে।
৭. মটরশুঁটি ও বরবটি : প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার মিনারেল এবং দ্রবণীয় ভিটামিন রয়েছে মটরশুটিতে। বরবটি সবজি এবং বীজ বা ডাল সবকিছুতেই রয়েছে পুষ্টি। উচ্চমাত্রায় কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিন রয়েছে এতে।
এছাড়া বিভিন্ন ধরনের শিমের বীজের কথাও এসেছে এই তালিকায়।
৮.পাতাসহ পেঁয়াজ: পাতাসহ বিভিন্ন ধরনের পেঁয়াজ, ডগাসহ ফুলে প্রচুর ভিটামিন রয়েছে৷ বিশেষ করে ভিটামিন এ ও ভিটামিন কে এর ভালো উৎস এটি। এছাড়া পেয়াজ পাতায় এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে।
৯. লাল ও সবুজ বাধাকপি: সব ধরনের বাঁধাকপি পুষ্টিগুণে ভরপুর, তবে লাল বাঁধাকপিতে পুষ্টিগুণ বেশি।
এছাড়া রয়েছে চাইনিজ বাঁধাকপি, যা একটু লম্বাটে ধরণের হয়। এতে ক্যালরির পরিমাণ অনেক কম থাকে।
১০. পালংশাক: হিমায়িত পালংশাক মূলত সালাদ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এটি ম্যাগনেসিয়াম, ফলেট, ভিটামিন এ এবং বেটা ক্যারোটিন, জিজ্যানথিনের ভালো উৎস। হিমায়িত পালং শাক পুষ্টি নষ্ট হওয়া রোধ করে এবং ধরে রাখে।
এজন্যই তাজা পালং শাকের তুলনায় এটিতে বেশি পুষ্টি গুণ থাকে বলে ধারণা করা হয়। তবে তাজা পালংশাক ও কম যায় না।
ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং আয়রন থাকে প্রচুর পরিমাণে। এতে এত এত পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে যে সেরা পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় দুইবার করে উঠে এসেছে পালং শাকের নাম।
১১. মরিচ: মরিচের গুঁড়োয় বিভিন্ন ধরনের ফাইটোকেমিক্যাল যেমন ভিটামিন সি, ই এবং এ থাকে। সেই সাথে থাকে বিভিন্ন ধরনের ফেলোনিক উপাদান ও ক্যারোটিনয়েডস।
এছাড়া বিভিন্ন ধরনের মরিচ যেমন ইয়ালাপিনো কাঁচামরিচে এন্টিঅক্সিডেন রয়েছে।
১২. পুদিনা: এটি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ যা মূলত হৃদপিন্ড ভালো রাখে। এতে রয়েছে এন্টিফাংগাল ও এন্টিব্যাক্টোরিয়াল উপাদান।
১৩. সরিষা শাক: সরিষা শাকে সিনিগ্রিন নামে এক ধরনের উপাদান থাকে, যা যেকোন ধরনের প্রদাহ দূর করে।
১৪. লেটুস/ বাটার লেটুস/ গ্রিন লেটুস: পুষ্টিগুণে ভরপুর লেটুস পাতাও রয়েছে এই তালিকায়। যত তাজক তত পুষ্টি৷
১৫. কলা: বিভিন্ন ধরণের কলায় রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট, এন্টি মাইক্রোবায়াল ও ডায়াবেটিক প্রতিরোধী উপাদান। যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।
১৬. টমেটো: কাচা ও পাকা দুই ধরনের টমেটোই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন৷ পাকা টমেটোতে রয়েছে ফলেট, পটাসিয়াম, ভিটামিন এ , ভিটামিন সি এবং ই।
তবে কাচা টমেটো পাকা টমেটোর তুলনায় বেশি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বলে বিজ্ঞানীরা বলছেন৷
১৭. ডালিম: ডালিম লাল বর্ণের ছোট্ট আকৃতির একটি ফল। কিন্তু এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ এন্থোসায়ানিন এবং এন্টি অক্সিডেন্টের উৎস। এছাড়া প্রদাহরোধী উপাদানও রয়েছে এতে।
বিশ্বের শীর্ষ পুষ্টিমান সমৃদ্ধ কিন্তু দামে সস্তায় এই খাবারের তালিকায় রয়েছে আদা, ডুমুর, মিষ্টি আলু ও শুকনো খেজুর, গাজর, কচু শাক, ব্রুকলি, ফুলকপি, কমলা ও এ জাতীয় ফল।