"আর্সেনিক দূষণ"

0 7
Avatar for Riaz
Written by
3 years ago

ভূমিকা: আর্সেনিক দূষণ বর্তমানে বাংলাদেশে একটি ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ।১৯৯৬ সালে ৭ জেলায় প্রায় অধিকাংশ নলকূপের পানি আর্সেনিক দূষণে চিত্র করা হয়েছিল। ১৯৯৭ সালে ৩৪ টি জেলায় এবং বর্তমানে ৫৯ জেলায় দূষণের শিকার। ধারণা করা হচ্ছে মোট জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ বিষাক্ত আর্সেনিকের কবলে।

আর্সেনিক কি: আর্সেনিক এর রাসায়নিক সংকেত হল অঝ। এটি ভূত্বকে অবস্থিিত ২০ টি প্রয়োজনাতিরিক্ত উৎপাদনের অন্যতম। এর পারমাণবিক সংখ্যা ৩২। আর্সেনিকমুক্ত একটি স্বাদধহীন ভঙ্গুর ধাতু কল্পধাতু যার রং ধূসর রুপালি। এটি দানাদার পদার্থ যা বায়ুতে এটি কালো রঙের পরিণত হয়।

আর্সেনিক এর উৎস: মাটির উপরে ভাগের তুলনায় মাটির নিচে আর্সেনিকের পরিমাণ বেশি। মাটির নিচে পাথরের একটি স্তর রয়েছে। এতে ফাইরাইট (pes2) নামে একটি যৌগ রয়েছে। এই যৌগটি আর্সেনিক পাথরের সাথে ধরে রাখে। মাটির অভ্যন্তরে ভূ রাসায়নিক আর্সেনিক নিজস্ব আস্তানাা থেকে বেরিয়ে আসে এবং পানিতে দ্রবীভূত হয়ে নলকূূপ বা পাম্পের সাহায্যে উঠেে আসছে পৃথিবীর উপরিভাগে।

আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে পানিতে প্রতি লিটারে ০.০১ মি: গ্রাম আর্সেনিক থাকলে তা পান করা যায়।তবে বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক গঠন অনুসারে প্রতি লিটারে 100 ভাগ বেশি আর্সেনিক মিশ্রণ পাওয়া গেছে । এতে প্রায় সাড়ে চার কোটি লোক আর্সেনিকের বিষাক্ততা আক্রান্ত।

আর্সেনিক বিষের লক্ষণ: আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করলে মানুষের শরীরে নতুন কিছু লক্ষণ দেখা যায় যেমন-

১. আর্সেনিকের আক্রান্ত রোগীদের হাত দুই পায়ের তালুতে এক ধরনের গুটি দেখা যায়। এই গুটিগুলো থেকে অসহ যন্ত্রণা হয়।

২. শরীরের চামড়া ফেটে যায়। এবং যন্ত্রণা সৃষ্টি হয়।

৩. পেটে ব্যথা, মাথা ধরা, কাশি অসহনীয় যন্ত্রণা সৃষ্টি হয়।

৪. চোখের মনি সাদা হয়ে যায় এবং চোখ থেকে পানি ঝরতে থাকে।

৫. বমি ও ডায়রিয়ার লক্ষণ দেখা যায়।

বাংলাদেশের আর্সেনিক আক্রান্ত এলাকা সমূহ: বাংলাদেশের প্রথম আর্সেনিিক ধরা পড়ে প্রথম ১৯৯৩ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। দেশের অন্যান্য জেলা গুলোতেও এর প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চল ও উপকূলীয় এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে আর্সেনিক আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা জানা গেছে। ইউনিসেফের আর্থিক সাহায্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের একটি জরিপের মাধ্যমে সারা দেশের ২৫০০০ টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষা করাা হয়েছে এবংং দেখা গেছে যেে প্রতিটি নলকূপের আর্সেনিক উপস্থিতি।

আর্সেনিক দূষণের কারণ: বিজ্ঞানীরা আর্সেনিক দূষণের জন্য যে সমস্ত কারণকে দায়ী করেছেন তা প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করাা যায়। প্রথমত: প্রাকৃতিক কারণ ও দ্বিতীয়তঃঃ মনুষ্যসৃষ্ট কারণ। প্রাকৃতিক কারণ হিসেবেে তারা চিহ্নিত করেছেন বাংলাদেশের পলোল শিলায় পর্যাপ্ত পরিমাণ আর্সেনিক সমৃদ্ধধ খনিজ পাইরাইট আছে। এই পাইরাইট দ্রবীভূত হয়েে ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিক দূষণ ঘটাচ্ছে। বর্ষার আগে ও পরে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ওঠানামা এবং মনুষ্যসৃষ্ট কারণ হিসেবে তারা ফারাক্কা বাঁধের প্রভাব এবং অধিক হারে ভূগর্ভস্থ পানি উঠানো কে দায়ী করেছেন। তাছাড়াা চিকিৎসা ইলেকট্রনিক শিল্প ধাতু শিল্প হাঁস মুরগির খামার ইত্যাদি কেউ দায়ীী করেছেন।

আর্সেনিক প্রতিকারের উপায়: আর্সেনিক বিষক্রিয়া সঠিক পদ্ধতি আজো আবিষ্কার হয়নি। বাংলাদেশকে আর্সেনিক দূষণ থেকেে মুক্তির জন্য কয়েকটি পদ্ধতি গ্রহণ করা যেতে পারে।

১. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও প্রচার মাধ্যমে আর্সেনিক সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার জন্য প্রচারণা চালানো যেতে পারে।

২. বর্ষাকালে পানি সংরক্ষণ করে খাবার পানি হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে । বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ২০০৩ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টির পানি জলাধারে ধরে রেখে সারা বছর ব্যবহার করা যায়।

৩. আর্সেনিক কবলিত এলাকায় বোরো ধানের চাষ না করে রবি খড়িপ চাষাবাদ করলে আর্সেনিক কম হবে।

আমাদের করণীয়: আর্সেনিক দূষণ বর্তমানে ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করেছে। এতে পরিবেশের যেমন ক্ষতিি হচ্ছে তেমনি ক্ষতি হচ্ছে ভূমন্ডলের । এজন্য আমাদের সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে পদক্ষেেপ গ্রহণ করতে হবে। সর্বোপরি জনগণকে সচেতন হতে হবে। তাহলে এ বিষ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

1
$ 0.02
$ 0.02 from @TheRandomRewarder
Avatar for Riaz
Written by
3 years ago

Comments