ভূত চতুর্দশী আসার আগে ভুতের একটি ছোট্ট সিরিজ লিখি ভাবলাম। পরিচয় পর্ব হবে শুধু ছোট ছোট করে। তাদেরকে শুধু ভূত বললে তেনারা গোসা করেন। বিভিন্ন পদগুলি কষ্ট করে অর্জন করতে হয়েছে বৈকি।
১. শুরু করা যাক সবার পছন্দের 'পিশাচ' দিয়ে। যেটা স্নান না করলে বাঙালি বাড়ির মায়েরা তাদের সন্তানকে স্নেহপূর্বক ডেকে থাকেন।
পিশাচ পিউর মাংসাশী। এদের ফেভারিট মাংস মৃতদেহ। সাধারণত অন্ধকারে একা থাকে এরা। লোনলিনেস। জনমানবহীন স্থান বা কবরস্থানে ঘাপটি মেরে পড়ে থাকে। ইচ্ছামত রূপ ধারণ করতে পারে, গো এস ইউ লাইক। কোনো মানুষের চিন্তাভাবনা এরা কন্ট্রোল করতে পারে। মেয়ে পিশাচ হল, পিশিচিনী। এরা আবার সুন্দর দেখতে ছেলেদের বশে আনতে সুন্দরীর ছদ্মবেশে আসে। ছেলেরা সাবধান! এরা এক হাজার এবং এক রাত্রি বাঁচে।
পিশাচের সাধনা করলে শুনেছি, অনেক অর্থ, প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পায়। হামি গারীব হি আচ্ছা হ্যায়।
২. এই মানুষটি থুড়ি এই ভূত বাবাজির মার্কেটে বিশাল ডিমান্ড। ভূতেদের শহরের সুপার হিরো বলে কথা। বলে বলে ভ্যাম্পায়ার বা এই ওই ম্যানদের টক্কর দিতে পারে।
গা ছম ছম রাত। কে হাসে গাছের ওপর। এই বুঝি মটকালো ঘাড়। কিন্তু না! তিনি বড়োই সজ্জন ব্যক্তি। এসব তিনি করেন না। বড়জোর হুঁন হুঁ নাঁ নাঁ, হেঁ হেঁ নাঁ নাঁ গান গেয়ে আপনার আত্মারাম খাঁচা করে দিতে পারে।
ইনি হলেন ব্রহ্মদৈত্য বা বেম্মদত্যি, দ্য জেন্টলম্যান। এদের সাথে বাঙালির সম্পর্ক অনেক পুরনো। বহু গল্পকথায় হিরোর ভূমিকায় পাওয়া যায়। এরা খুবই দয়ালু। কারোর ক্ষতি তো করেই না, বরং বাকি পেঁচো ভূত যেমন, শাকচুন্নি, মামদো, মেছো এদের আসে পাশে ঘেঁষতেও দেয় না। মগডালে বসে পা ঝোলান। কিন্তু সকলে এই উপাধি পায় না। ব্রাহ্মণ বাড়ির সন্তান হাওয়া মাস্ট। অপঘাতে মৃত্যু হলে তবেই এই ক্যাটাগরিতে এনরোল করা যায়। পরনে ধব ধবে সাদা ধুতি, যেন শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। কাঁধে একগাছি ফটফটে সাদা পৈতে। পায়ে খড়ম পরে খট খট করে হেঁটে বেড়ায়। মাথায় তেল চকচকে টাক, আর পেছনে অবশ্যই একটি টিকি। ফেভারিট প্লেস বেলগাছ বা শিমুল গাছ।
পবিত্র ভূত হিসেবে নামডাক চারিদিকে। এই ভূত চতুর্দশীর আসে পাশে যদি ঘাড় ব্যাথা ব্যাথা করে, তাহলে সাবধান। তেনারা কিন্তু ঘাড়ে চেপে বসে থাকতে ভালোবাসেন খুব। খুশি হলে দেন বর , রেগে গেলে বিপদ। হইচই-তে সায়নী রিসেন্টলি অনলাইনে নাকি ব্রহ্মদৈত্য কিনেছে। প্রোডাক্ট রিভিউ কেমন কেউ জানেন?
বাকিরাও আসছেন...
Very nice article