#কিং_কোবরা (King cobra) যাকে বাংলায় শঙ্খচূড়, রাজগোখরা বলা হয়। এটি এলাপিডি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত একটি বিষধর সাপ। নামের মধ্যে কোবরা থাকলেও এটি কোবরা থেকে ভিন্ন। এটিকে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ পূর্ব-এশিয়া এবং চীনের দক্ষিণ বনাঞ্চলে দেখা যায়। বাংলাদেশে সুন্দরবনের গহীনে এই সাপ বেশি দেখা যায়।
বৈশিষ্ট্যঃ কিং কোবরা পৃথিবীর সর্ববৃহৎ বিষধর সাপ। এটি দৈর্ঘ্যে সর্বোচ্চ ১৯ ফুট এবং ভর ৩০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত হয়। এদের পুরো শরীরে সাদা-কালো ডোরাকাটা দাগ থাকে। সাধারণ কোবরার মতো এর ফনা এতো চওড়া নয় এবং সাধারণ কোবরার মতো এর ফনার পিছনে চিহ্ন থাকে না। কিং কোবরা নিজের শরীরের অর্ধেক উচ্চতায় দাঁড়িয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ একটা ১২ ফুট দৈর্ঘ্যের কিং কোবরা দাঁড়িয়ে আপনার কপালেও দংশন করতে পারবে।
ট্যাক্সোনমিঃ যেহেতু এটি একটি সাপ তাই এটির বিষের কথা খেয়াল রাখতে হবে। কিং কোবরার বিষ প্রধানত নিউরোটক্সিন। এই বিষ প্রাণীদেহের স্নায়ু কোষকে আক্রমণ করে। কিং কোবরার এক কামড়ে যতটুকু বিষ থাকে তা প্রাপ্ত বয়স্ক ২০ জন মানুষকে মেরে ফেলতে সক্ষম। কিং কোবরার দংশনে আক্রান্ত ব্যক্তি ৩০ মিনিটের মধ্যে মারা যায়। এই সাপের কামড়ে বাঁচার সম্ভাবনা ২৫%। উল্লেখ্য যে, কিং কোবরার কামড়ে হাতি মারা যায় ২-৩ ঘন্টার মধ্যে।
খাদ্য তালিকাঃ অন্যান্য সাপেদের থেকে কিং কোবরাদের দৃষ্টিশক্তি অনেক উন্নত। এরা চোখে খুব ভালোভাবে দেখতে পায়। কিং কোবরাদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে অন্যান্য সাপ। এরা কেবল সাপ-ই খায়। আর এজন্য একে কিং বলা হয়। এরা রেট স্নেক, পিট ভাইপার, ছোট আকৃতির পাইথন, কিল ব্যাক স্নেক ইত্যাদি সাপ খেয়ে থাকে। এছাড়া এরা নিজেদের প্রজাতির সাপও খেয়ে থাকে।
প্রজননঃ কিং কোবরা বছরে একবার প্রজনন করে। মার্চ-মে মাসে। এরা পৃথিবীর একমাত্র সাপ যারা শুকনো পাতা দিয়ে বাসা বানায়। সে বাসায় এরা ১০-৪০ টা ডিম পাড়ে এবং ডিমে তা দেয়। ডিম ফুটে বাচ্চা বের না হওয়া পর্যন্ত এরা বাসায় খুব সতর্ক অবস্থানে থাকে। আপনি যখন সে বাসার ১০-১২ মিটার কাছ দিয়ে যাবেন তখনি এরা বিদ্যুৎ বেগে বাসা থেকে বেড়িয়ে এসে আপনাকে আক্রমণ করে মহাশূন্যে পাঠিয়ে দিবে। এ-ক্ষেত্রে কিং কোবরা-রা প্রচন্ড হিংস্র হয়।
কিং কোবরা হচ্ছে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ বিষধর সাপ। তবুও এটি অনেক নিরীহ প্রকৃতির। কেবলমাত্র খাবার এবং আত্মরক্ষার জন্য এরা আক্রমণ করে থাকে।
Nice Article. Keep it up.