অনিমেষ বলল, আপনি এত বেঁকিয়ে কথা বলেন কেন । সবসময় মানুষকে বিদ্ধ করে কীআনন্দ পান কে জানে ? কোথায় থাকেন আপনি।
কেন। এখন কি আপনার ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আমাদের দেখাশােনা করার?
যদি বলি তাই। অবশ্য আপনার আপত্তি থাকলে আলাদা কথা।
এটাও কি সংগ্রামী পদক্ষেপ ।
আর কিছু বলবেন? তা হলে একবারে বলে ফেলুন।
আপনাদের কান্ডকারখানা দেখে মাথা ঠান্ডা রাখা মুশকিল ।
'একটু ক্লিয়ার করে বলুন কোন দিকে যাবেন।
মেয়েটি একটুক্ষণ অনিমেষের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, 'সেদিন বলছিলেন না যে মফস্বলের
ছেলে আপনি। ওটা তাে সহানুভূতি আদায়ের ছল, কিন্তু এর মধ্যেই। কথাটা শেষ না করে হেসে
অনিমেষ দেখল ঠাস দাঁতের সারির একটা দিকে গজ্দাতের আদল, যেটা হাসিটাকে আরও
সুন্দর করেছে। সেটা চোখে পড়ায় অনিমেষ একটুও রাগতে পারল না কথাটা শুনেও। বল একনাগাড়ে বগড়া করে যাচ্ছেন।
মেয়েটি আবার গ্জীর হওয়ার চেষ্টা করল। কলেজ প্রিটের দিকে মুখ করে সে জিজ্ঞাসা করল,
'এদিক দিয়ে যাওয়া যাবে না।
আপনি কোথায় যাবেন এখনও বলেননি। যদি আপত্তি থাকে তবে।
আপনি
আপত্তির কী আছে। আমাদের বাড়ি বেলঘরিয়া। শিয়ালদা দিয়ে গেলে সুবিধে হয়। আপনি
ওনিকে গেছেন।
না। আমি যদি শিয়ালদা অবধি যাই তা হলে।
চলুন।
কলেজ স্ট্রিট দিয়ে যেতে অনিমেষের একটু অস্বস্তি ছিল। কারণ এখনও প্রচুর পুলিশভ্যান ও দিকে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের মধ্যে কেউ নিশ্চয়ই গােলমালের সময় তাকে মাঝেরাস্তায় টিয়ারগ্যাসের
শেল কুড়ােতে দেখে থাকতে পারে। সুতরাং এখন মুখােমুখি হলে ওকে ধরে ফেলা বিচিত্র নয়। কিন্তু মেয়েটির কাছে এ সব কথা বলতে স্কোচ হচ্ছিল তার। সত্যিই তাে শিয়ালদা যাওয়ার জন্যে সেন্ট্রাল
অ্যাভিন্যু ঘােরার কোনও মানে হয় না।
দু-একজন মানুষ সন্তর্পণে ফুটপাত ধরে হাঁটছে। পােড়া ট্রামটিকে সরিয়ে নেবার ব্যবস্থা হচ্ছে।