বখাটে ছেলের ভালবাসা

15 43
Avatar for Ramisa-123
3 years ago

#_লেখক_রামিসা আফরোজ

#_পর্ব_০১

- আপা ফুল নেবেন?

- ফুলগুলো কত করে পিস?

- ১০ টাকা করে আপা!

- আচ্ছা তাহলে আমাকে দশটা ফুল দাও।

- এই নিন আপা।

- নাও টাকা....(তাই বলে 500 টাকার নোট বের করে দিল)

- আপা আমার কাছে তো ভাংতি নাই।

- আচ্ছা সমস্যা নাই ঐটা তোমার কাছে রেখে দাও।

- ঠিক আছে আপা।

তারপর মেয়েটির সেখান থেকে চলে যায়। এদিকে আনিকা সেখান থেকে চলে যায়। ঘটনাক্রমে মেয়েটি অনিকের কাছেও যায়। আনিকা সেটা লক্ষ্য করে অনিকের দিকে এগিয়ে গেল।তারপর আনিকার লক্ষ্য করলো অনিক মেয়েটিকে বলছে....

- কি অবস্থা রিয়া?

- এইতো ভাইয়া খুব ভালো তোমার কি অবস্থা?

- এইতো তোমাদের দোয়ায় আছি। আচ্ছা সবাইকে ডেকে নিয়ে আসো খেতে যাব।

- আচ্ছা ঠিক আছে ভাইয়া একটু অপেক্ষা করো...

- আচ্ছা।

তারপর মেয়েটিকে সব ছেলে মেয়েদের ডেকে নিয়ে আসলো যারা রাস্তায় ফুল বিক্রি করে। এটা দেখে তো আনিকা পুরো অবাক হয়ে যায়। আনিকা অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে সব কিছু দেখছে। এরপর অনিক তাদেরকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলো। আর সবাইকে পেটপুরে ইচ্ছামত খাওয়ালো। অনিক নিজেও পেটপুরে খেয়ে নিল। এরপর অনিক তাদের সাথে অনেকক্ষণ গল্প করল। অনিক তাদের সাথে অনেকক্ষণ গল্প করার পর তাদেরকে কিছু টাকা দিয়ে সেখান থেকে চলে গেল। সেটা দেখে তো আনিকা আরো অনেক অবাক হয়ে যায়। এটা সে কাকে দেখছে? এটা কি সেই অনিক যে বখাটে? এটা কি সেই অনিক যে কথায় কথায় মানুষ মেরে ফেলে!!

আনিকার মাথায় সব প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে। এরপর আনিকা চিন্তা করল ওই বাচ্চা গুলোকে ধরে অনিকের পরিচয় জানতে হবে। এরপর আনিকা অনেককে চলে যেতে দেখে ভাবল এবার বাচ্চা গুলোকে ধরে তার পরিচয় জানতে হবে।

কথা মতো আনিকা ওই বাচ্চা গুলোর মধ্যে একটা মেয়েকে ডেকে বলল...

- এই বাবু শোনো!

- জ্বি আপা বলেন।

- ওই ছেলেটা কে যে তোমাদের খাবার খাওয়ালো আবার টাকা দিল?

- ওহহ ওইটা! ওইটা তো আমাদের অনিক ভাইয়া। ঐযে বস্তিটা দেখছেন আমরা সবাই ওখানে থাকি। অনিক ভাইয়া প্রায় প্রতিদিনই আমাদের কাছে আসে। অনিক ভাইয়া আমাদের খাবার কিনে দেয়, অনেক রকম খেলনা কিনে দেই। অনিক ভাইয়া আমাদের পড়াশোনা করার জন্য একটা স্কুলের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। আমরা সবাই সেখানে পড়াশোনা করতে পারি।

- খুব ভালো তো।

- হ্যাঁ আপা অনেক ভালো কিন্তু ভাইয়াটার না অনেক কষ্ট জানেন!!

- তার আবার কিসের কষ্ট?

- আপা ভাইয়ার মা-বাবা তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। ভাইয়া মাঝে মাঝে অনেক কান্না করে। ভাইয়ার যখন কষ্ট হয় তখন আমাদেরও অনেক কষ্ট হয়। আমি প্রায় প্রতিদিনই চুপিচুপি দেখি ভাইয়ার কান্না করা।

পিচ্চি মেয়েটার মুখে অনিকের এমন কথা শুনে কখন যে আনিকার চোখ দিয়ে পানি ঝরে পড়ল সেটা সে বুঝতেও পারেনি। আনিকার অনিকের প্রতি এক অজানা ভালোলাগা কাজ করতে শুরু করে তখন থেকে। আনিকা কেমন যেন মায়ায় বন্দী হয়ে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। এরপর আনিকা সেখান থেকে চলে যায়।

অনুষ্ঠানের দিন খুব সকালে আনিকা তাড়াতাড়ি করে কলেজে চলে আসে। আনিকা কলেজে এসে অনিকের জন্য অপেক্ষা করছে। অনেকক্ষণ সময় পেরিয়ে গেল কিন্তু অনিকের কোন দেখা নেই। এদিকে অনুষ্ঠানের সময় হয়ে যাচ্ছে কিন্তু তবুও অনিকের দেখা মিলছে না। আনিকার এখন কেমন যেন অস্থির লাগছে। কিছু ভালো লাগছে না। আনিকা ভাবছে অনিক এখনো কেন কলেজে আসলো না?

এরপর আনিকা হঠাৎই হাসানকে দেখতে পায়। আনিকা হাসানকে দেখেন ডেকে বলল....

- হাসান অনিক কোথায়?

- সেতো অনুষ্ঠানে আসবেনা।

- কেন আসবে না কেন?

- তার তো এসব অনুষ্ঠান ভালো লাগেনা। যদিও অনুষ্ঠানে আসে তাহলে কিছুক্ষণ থেকেই চলে যায়।

- আচ্ছা তুমি ওকে একটু আস্তে বল না!!

- ওকে বলে কোন লাভ হবে না ও আসবে না।

এটা শুনে আনিকার অনেক মন খারাপ হয়ে যায়। সে ভেবেছিল আজকে অনিকের কাছে মাফ চাইবে কালকের ব্যবহারের জন্য। কিন্তু আজকে তার কোন পাত্তা নেই।আর আনিকার এসব ভেবে কোন লাভ নেই কারণ অনিক তাকে একদম‌ই পাত্তাই দেয় না।

এরপর খুব ভালো করে অনুষ্ঠান টা শেষ হয়ে যায়। অনুষ্ঠান শেষে আনিকা হাসান এর কাছে থাকে অনিকের মোবাইল নাম্বারটা নেয়। এরপর আনিকা ভাবে তার পরিচয় গোপন করে অনিকের সাথে ফোনে কথা বলবে।

কথামতো আনিকা বাসায় গিয়ে রাতে অনিকের ফোনে কল করে। অনিক তার ফোনে আননোন নাম্বার দেখে একটু অবাক হয়ে যায়। তারপর সে ফোনটা রিসিভ করে। ফোনটা রিসিভ করে অনিক বলতে লাগলো...

- হ্যালো কে বলছেন?

- আমি তোমার স্বপ্নের রানী বলছি। কেমন আছো আমার স্বপ্নের রাজকুমার টা?

- ওই কে আপনি আর এসব কি ফালতু কথা বলছেন?

- আমি ফালতু কথা বলছি না গো আমি তোমার রানী বলছি। তুমি আমাকে চিনতে পারছ না?

- সরি আমি আপনাকে চিনতে পারছিনা। আপনার পরিচয়টা দেন না হলে আমি ফোনটা রাখলাম....

- আরে সত্যি বলছি আমি তোমার রাজকুমারী।। কেন আমাকে চিনতে পারছো না তুমি?

- শোনেন আমার ফাজলামো করার সময় নেই। যদি কিছু বলার থাকে সরাসরি বলে ফেলেন আর না হলে ফোনটা রেখে দিলাম...

- আরে আরে এত রাগ করো কেনো। রাগলে কিন্তু তোমায় একটুও ভালো দেখায় না। ছেলেদের রাগ করা মানায় না। উল্টো মেয়েরা রাগ করবে আর ছেলেরা মেয়েদের রাগ ভাঙ্গাবে।

- এই মিস শুনেন আপনার ফালতু বকবক শোনার সময় আমার নেই। বাই আর ফোন দিবেন না...

- হ্যালো অনিক..... এই অনিক... হ্যালো.......

যা ফোনটা কেটে দিয়েছে। আনিকা এবার বেশ রেগে গেল।আনিকা অনিকের কাছে কোনভাবেই পাত্তা পাচ্ছে না, না সামনাসামনি না পরিচয় গোপন রেখে। এবার সে কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না। আনিকা এবার ভাবলো তার আসল পরিচয় দিয়ে কথা বলার চেষ্টা করবে যা হবার হবে দেখা যাবে। এটা ভেবে আনিকা আবার ফোন করল....

- কি ব্যাপার আপনি আবার ফোন করছেন মানে?

- আরে অনিক তুমি আমাকে চিনতে পারলে না? আমি আনিকা!

- কোন আনিকা?

- তুমি কয়টা আনিকাকে চেনো হ্যাঁ?

- সরি! ভালো করে পরিচয় দেন না হলে কথা বলবো না।

- আরে কথায় কথায় এত রাগ করো কেনো হ্যাঁ? আরে আমি চেয়ারম্যানের মেয়ে। আমার কণ্ঠ শুনে আমাকে চিনতে পারছ না?

- সরি আপনাকে চেনার জন্য আমি বসে নেই। কি বলার জন্য ফোন করেছেন সেটা বলেন.....

আনিকা অনিকের মুখে এমন কথা শুনে অনেক রেগে যায়। আনিকা মনে মনে ভাবছে,,(কিসের এত ভাব হ্যাঁ! নিজে থেকে কথা বলতে গিয়েছি এই জন্যে তার এতো অহংকার দেখাতে হবে? আমার সাথে একটু ভালো করে কথা বললে কি হয় হ্যাঁ?)

- কি হলো আপনি কিছু বলবেন নাকি আমি ফোনটা রেখে দেবো?

- আরে ফোনটা রাখবে কেন? কথা বলার জন্য ফোন দিছি না?

- তাহলে চুপ করে আছেন কেন? যা বলার তাড়াতাড়ি বলেন আমার কাজ আছে...

- আচ্ছা কালকে একটু কলেজে আসতে পারবে?

- না কালকে একটু কাজ আছে। কাল কলেজে যেতে পারবো না।

- আচ্ছা তাহলে অন্য কোথাও দেখা করতে পারবে?

- না আমার হাতে একদম সময় নেই। আমি কারো সাথে দেখা করতে পারবোনা। বাই কাজ করছি এখন ডিস্টার্ব করবেন না।

তাই বলে অনিক ফোনটা কেটে দিলো। এরপর অনিক তার কাজে লেগে পড়ল। অপরদিকে আনিকা তো পুরাই রেখে শেষ হয়ে যাচ্ছে।মনে হচ্ছে আনিকা এখন যদি অনিক কে সামনে পেত তাহলে তাকে লবণ ঝাল ছাড়াই কাঁচায় চিবিয়ে খেয়ে ফেলত। আনিকার রেগে বোম হয়ে আছে।

এদিকে পরের দিন সকালে চেয়ারম্যান এর গোডাউনে এক ট্রাক সরকারি অনুদানের চাল আসবে। যা গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দেওয়ার কথা কিন্তু চেয়ারম্যান সেগুলো আত্মসাৎ করে। আর তাই জন্য পরের দিন সকালে অনিক এবং তার লোকজন গিয়ে রাস্তার মাঝখান থেকে অনুদানের গাড়ি লুটতরাজ করে নিয়ে যায়। এরপর সেই অনুদান গুলো এলাকার সব গরীব অসহায় মানুষদের মাঝে বিলিয়ে দেয়।

অপরদিকে চেয়ারম্যান যখন এই খবরটা জানতে পারে তখন পুলিশের ফোর্স পাঠিয়ে অনিককে গ্রেফতার করায়। এ নিয়ে অনিককে অনেক বার চেয়ারম্যান সাহেব পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করায় কিন্তু বারবারই সে কোনো-না-কোনোভাবে জেলখানা থেকে বেরিয়ে আসে। কিন্তু এইবার একটু জটিল ভাবে অনিককে গ্রেফতার করায়।

পুলিশ তাকে জেলখানায় নিয়ে গিয়ে ইচ্ছামত মারতে শুরু করে। তার কাছে থেকে অনুদানের ট্রাক কোথায় রাখা হয়েছে সেটা জানতে চাই কিন্তু সে কিছুতেই বলে না। এদিকে অনেকক্ষণ পর চেয়ারম্যান থানায় এসে অনিকের কাছে গিয়ে বলল....

চলবে?

11
$ 0.33
$ 0.33 from @TheRandomRewarder
Avatar for Ramisa-123
3 years ago

Comments

WOW it's amazing writing carry on

$ 0.00
3 years ago

Nice article loveu bro

$ 0.00
3 years ago

Apnake subscribe korechi..plz back .amio.support korbo..thank you

$ 0.00
3 years ago

osadaron post

$ 0.00
3 years ago

Every love story has meaning but i don't know what is lovr

$ 0.00
3 years ago

Wow very nice article...

$ 0.00
3 years ago

I subscribe you.please subscribe me back.

$ 0.00
3 years ago

Apu Apnar Lekha gulo shobshomoy impresive, emon aroo aroo lekha cai, ami waiting e thaki apnar article er jonno

$ 0.00
3 years ago

Thank you sharing your important article

$ 0.00
3 years ago

Keep it up☺! And plz back me too!

$ 0.00
3 years ago

Wow nice story. Our writer sister can write such a beautiful story. I hope you will present such a beautiful story. Thanks last. Go ahead. We are with you. Best of luck.

$ 0.00
3 years ago

Your story is so amazing carry on

$ 0.00
3 years ago

বাহ,অনেক সুন্দর গল্প লিখেছেন।আপনি এভাবে লিখতে থাকুন,আশা করি আরো ভালো লিখতে পারবেন,,,,

$ 0.00
3 years ago

Onk vlo likhco... Carry on

$ 0.00
3 years ago