নেতার ছেলে Vs কমিশনারের মেয়ে
-রাকিবুল
পর্বঃ১
.
- কলেজ গেইট দিয়ে ঢুকতে যাবো,এমন সময় খেলাম ধাক্কা একটা মেয়ের সামনে, আমি ধপাস করে মাটিতে পড়ে গেলাম,মেয়েটা আমার উপর
আমি মেয়েটির দিকে তাকিয়ে দেখি এ তো কমিশনারের মেয়ে মিম,আল্লাহই জানে আমার কপালে কি আছে
- ওই ছোটলোক ক্ষেত ধাক্কা দিলি কেনো(মিম)
- আমি কখন ধাক্কা দিলাম (আমি)
- তুই ধাক্কা না দিলে, আমি কি এমনি এমনি মাটিতে পড়ে গেলাম(মিম)
- এমনি এমনিই পড়লেন (আমি)
- তোর তো সাহস কম না, ধাক্কা তো দিলি,আবার মুখে মুখে তর্ক করিস(মিম)
- এখানে সাহসের কি আছে (আমি)
- ওই ছোটলোক, এক্ষুনি আমার কাছে মাফ চা,নাহলে তোর খবর আছে (মিম)
- আমি তো ধাক্কা দি নি,তাহলে মাফ চাওয়ার প্রশ্নই আসে না(আমি)
একথা বলে আমি পাশ কেটে চলে আসলাম
ও এবার আপনাদের পরিচয় টা দিয়ে নি
আমি ইমরান,এখন থাক সম্পুর্ন পরিচয় পরে জানতে পারবেন
আর এতোক্ষন আমাকে যা তা বললেন সে হচ্ছে কমিশনারের মেয়ে মিম, মিম খুবিই আহামরি সুন্দুরী,অহংকার ও বটে,কলেজের সম ছেলের ক্রাশ এই মেয়ে
এই মেয়ের সাথে আমার কোনো শত্রুতা নেই,অযথা আমার সাথে লাগতে আসে,কারন আমি দেখতে ক্ষেত টাইপের
আসলেই আমি সেই রকম ঢিলাঢোলা পোশাক,নাই কোনো স্টাইল, দেখতে ও কালো
সাধারণ পরিবারের একটা ছেলের মতো আমি চলাফেরা করি, কিন্তু এতে মেয়ে টার সমস্যা কোথায়,সেটাই বুঝি না
_ এই ক্ষেত ছেলেটার এতো বড় সাহস,আমার কথা না শুনে চলে যায়,এর শাস্তি তো ও পাবেই(মিম)
_ তুই শুধু শুধু ছেলেটার সাথে লাগছিস,ধাক্কা তো তুই দিলি আমরা দেখলাম (রিনু,মিমের বান্ধুবী)
- চুপ তোরে ওর হয়ে কথা বলতে কে বলেছে,ওকেতো আমি শাস্তি দিবোই(মিম)
- সেটা তোর ইচ্ছা, কমিশনারের মেয়ে, যা ইচ্ছা তাই করতে পারে(রিনু)
- হুম অবশ্যই, আমি কমিশনারের মেয়ে যা ইচ্ছা তাই করতে পারি(মিম)
- চল ক্লাসে যাই[রিনু)
- হুম (মিম)
ক্লাসে-
- ওই দেখ ক্ষেত ছেলেটা ফাস্ট বেঞ্চে বসে আছে (মিম)
- তাতে তোর সমস্যা কি(রিনু)
- আমারি তো সমস্যা, ওই ক্ষেত টার জন্য কোনোদিন ক্লাসে 1st হতে পারি নি (মিম)
- তোর থেকে ওর মেধা বেশি,তাই ক্লাসে ১ম হয় বুঝলি(রিনু)
- এবার আর ১ম হতে দিবো না(মিম)
- কি করবি, ছেলেটার সাথে (রিনু)
- সেটা ভবিষ্যতে দেখতে পাবি(মিম)
ক্লাস শেষের পর আমি ক্যান্টিনে বসে বসে বসে বই পড়ছি,এমন সময় মিম ও তার বন্ধুরা আসলো
আমার দিকে তাকালো,আমাকে যে এখানে আশা করে নি,তা মুখ দেখে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে
- যেখানে যাই যেখানে এই ক্ষেত ছোটলোক ছেলেটা (মিম)
- মিম ক্যান্টিনের মালিকের কাছে গেলো
- আরে মিম মামুনি কী ব্যাপার এতো রাগান্বিত লাগছে কেনো (মালিক)
-ঐ যে ক্ষেত ছেলে টাকে (ইমরান)দেখছেন, ওকে ক্যান্টিন থেকে বের করে দিন (মিম)
.
- কিন্তু কেনো (মালিক)
- এতো কথা বলতে পারব না,ওকে বার করতে বলছি বের করে দিন(মিম)
- ওকে,তুমি যেহেতু বলেছো,ওই রহিম, ছেলেটাকে ক্যান্টিন থেকে বের করে দে (মালিক)
- ওকে বস (রহিম)
- তোকে ছেলেটা এবার কি করেছে,যে তুই ওকে ক্যান্টিন থেকে বের করে দিচ্ছিস (রিনু)
- ওই ক্ষেত টাকে আমার সহ্য হয় না,তাই (মিম)
- এবার কিন্তু তুই বেশি বাড়াবাড়ি করছিস (রিমা, মিমের আরেক বান্ধুবী)
- ওই তোদের এতো ফাটছে কেনো(মিম)
- উচিত কথা বললেই দোষ (রিনু)
- চুপ থাক (মিম)
_ এই যে ছেলে (রহিম)
- জি আমাকে বলছেন (বইয়ের থেকে মুখ সরিয়ে ইমরান)
- হ্যা, তূমি এই মুহূর্তে এখান থেকে চলে যাও (রহিম)
- কেনো এখান থেকে যাবো(আমি)
_ যেতে বলেছি চলে যাও,এতো কথা বলো কেনো (রহিম)
- এখানে বসার সবার অধিকার আছে তাই আমি যাবো না (আমি)
- সোজা কথা না গেলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিবো (রহিম)
- দেখুন আপনি বেশি বাড়াবাড়ি করছেন কিন্তু, আমি আপনার মালিকের কাছে বিচার দিবো(আমি)
-মালিকের কাছে বিচার দিয়ে লাভ নাই,উনিই আপনাকে বের করে দিতে বলেছে (রহিম)
- কিইই, কোথায় আপনার মালিক(আমি)
- ঐ যে ওখানে (রহিম)
আমি দোকানের মালিকের কাছে গেলাম
- এই যে আংকেল আপনি নাকি আমাকে বের করে দিতে বলেছেন(আমি)
-উনি না, আমি বের করে দিতে বলেছি(মিম)
- আপনি, কিন্তু কেনো (আমি)
- তোকে আমার সহ্য হয় না তাই[মিম)
- দেখুন আপনি কিন্তু বেশি বাড়াবাড়ি করছেন,এর ফল ভালো হবে না (আমি)
- মিম এই কথা শুনে দিলো আমাকে এক ধাক্কা,আমি ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ে গেলাম
- ওই কি ভালো হবে না,তুই আমাকে হুমকি দিচ্ছিস,তোরতো সাহস কম না কমিশনারের মেয়েকে হুমকি দিচ্ছিস,ছোটলোক একটা(মিম)
আমি মাটি থেকে উঠে মিমকে এক থাপ্পড় দিতে গেলাম,কিন্তু দিলাম না
- ওই তোর এতো বড় সাহস, তুই আমাকে থাপ্পড় উঠাস,তোকে তো
ঠাস ঠাস ঠাস
মিম পুরো ক্যান্টিন এর সবার সামনে
আমার গালে দুইটা থাপ্পড় মারলো
সবাই থাপ্পড় এর শব্দ শুনে দাড়িয়ে গেলো,কেউ কিছু বলল না
কিছু বুলতে গেলো তো সমস্যা, কারণ সে কমিশনারের মেয়ে
আমি প্রচন্ড অপমানিত হলাম,কিন্তু তাকে কিছুই বললাম না
কারণ সত্যি কথা এই যে আমি মিমকে খুব পছন্দ করি
- এই খান থেকে যাবি,নাকি আরো দুইটা থাপ্পড় খাবি(মিম)
আমি মাথা নিচু করে বাড়িতে চলে আসলাম
- মিম ছেলেটাকে সবাইর সামনে এভাবে চড় মারলি, কাজটা একদম ঠিক করিস নি(রিনু)
- হুম ছেলেটা তো তোর কোনো ক্ষতি করছে না,শুধু শুধু,ছেলেটাকে থাপ্পড় দিতে গেলি (রিমা)
- ওই চুপ কর তোরা, এতো মহৎ বানী আমাকে দিতে আসিস না,ওই ক্ষেত ছোটলোক ছেলে টার সাহস কি করে হয় আমাকে হাত উঠার (মিম)
- হাত তুলছে মারে নাই তো,তুই তো মেরেই দিয়েছিস(রিনু)
- মেরে দিয়েছি,পুলিশে তো ধরিয়ে দি নাই,আর একটা কথা নয় এই ব্যাপারে(মিম)
.
- হুম (রিনু)
- ইমরান বাড়িতে এসে ফ্রেশ হয়ে সবাইর সাথে এক সাথে লাঞ্চ করতে বসলো
- কি হলো, আমার দেবরটার গাল লাল হয়ে আছে কেনো (নীলা+ভাবী)
- দিছি রে দিছে ইজ্জতের ফালুদা বানাই দিছে,এই ভাবীর কাছে কিছু লুকানো যায় না (ইমরান মনে মন)
- সত্যি তো কীরে তোর গাল লাল কেনো (ভাই + আয়ান)
- আরে গালে মশা বসেছিলো,তাই থাপ্পড় দিছিলাম মশা মারার জন্য(ইমরান)
- তুই এই চৌধুরী বাড়িতে মশা পেলি কোথায়, সত্যি করে বল কি হইছে(আয়েশা চৌধুরী + মা)
- কিছু হয় নি তো (ইমরান)
_তোকে কী কেউ মারছে, তোকে কতো করে বললাম গার্ডদের সাথে করে নিতে(ইমদাদ চৌধুরী + বাবা)
- কী যে বলো বাবা,নেতার ছেলেকে মারার সাহস কারো আছে(ইমরান)
( হ্যা আমি আমার বাবা এই শহরের একজন নামকরা নেতা, আর আমি # নেতার ছেলে)
_ইস রে নেতার ছেলে,তোমাকে দেখলে কে বলবে নেতার ছেলে,কতো সুন্দর স্মার্ট দেবর টা আমার কী রকম পোশাক পড়ে, চেহারায় কালি মাখে,চুল গুলো কী রকম যেনো,তিনি নাকি নেতার ছেলে(ভাবী
- আচ্ছা তুই এভাবে ভার্সিটিতে যাস কেনো,তোর মতলব টা কি বলতো(ভাই)
- মতলব কিছুই না,আমার সময় হলেই আমি আমার আসল গেট আপে ফিরে আসবো (ইমরান)
- কী যানি তোমার ইচ্ছা (ভাবী)
-হুম (ইমরান)
পরের দিন কলেজে-
ইমরান ক্লাসের ফাস্ট বেঞ্চে বসলো,হঠাৎ করে মিম চিল্লাচিল্লি শুরু করলো
- স্যার আমার মোবাইল টা খুজে পাচ্ছি না (মিম)
_ কি বলো, সত্যি নাকি (স্যার)
- জি স্যার,সবাইকে চেক করেন,আমার মোবাইল টা নিশ্বই চুরি হয়েছে (মিম)
স্যারের ও কোনো উপায় নেয় কমিশনারের মেয়ে যা বলছে,তাই করতে হবে
একে একে সবাইর ব্যাগ সার্চ করা হয়েছে
এবারের ইমরানের পালা, ইমরানের ব্যাগ সার্চ করতেই মিমের মোবাইল টা পাওয়া গেলো
- স্যার এই তো আমার মোবাইল,এই ছোট লোক ছেলে টা আমার মোবাইল চুরি করেছে, স্যার ওকে এক্ষুনি কলেজ থেকে বের করে দিন(মিম)
-না স্যার আমি চুরি করি নি,এটা এই মেয়ের কোনো ষড়যন্ত্র (ইমরান)
_ মোবাইক টা যেহেতু তোমার ব্যাগে পাওয়া গেছে,সেহেতু আমি আর কি করবো (স্যার)
_ চল এক্ষুনি প্রিন্সিপাল এর রুমে
ইমরানের প্রিন্সিপালের রুমে নিয়ে যাওয়া হলো
প্রিন্সিপাল ইমরানকে যা তা বলে বের করে দিয়েছে, এবারের মতো মাফ করে দিলো
আর এরকম কোনো ঘটনা ঘটালে কলেজ থেকে বের করে দিবে
ইমরান প্রিন্সিপালের রুম থেকে বের হয়ে দেখে মিম হাসছে 😊
ইমরানের আর বুঝতে বাকি নেই এটা মিমের কাজ
ইমরান মিমের দিকে একবার তাকিয়ে কলেজ থেকে বাসায় চলে আসল
- কী গো আমার দেবর টার মন খারাপ,এই অবেলায় শুয়ে আছে যে (ভাবী)
- মনটা খুব খারাল ভাবী [ইমরান)
- কেনো কি হয়েছে আমাকে বলোতো[ভাবী)
তারপর ইমরান ভাবীকে প্রথম থেকে মিমের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা থেকে আজকের ঘটনা সব বলল
- ভাবী আমাকে মেয়ে টা দু চোখে দেখতে পারে না, শুধু শুধু অপমান করে(ইমরান)
- এরকম ক্ষেত কে কে পছন্দ করবে,তুমি মুখের এই সব কালি টালি মুছে মিমকে শায়েস্তা করতে পারো না (ভাবী)
চলবে....
khub sundor story..carry on