👨❤️👨মনের অজান্তেই ভালোবাসা🥰
মিস্টি রঙের শাড়ি,,, কোমড় পর্যন্ত চুল,,, হাতে সাদা রঙের চুড়ি,,, চোখে গাঢ় কাজল,,, কপালে একটা ছোট সাদা পাথরের টিপ,,, ঠোঁটে হালকা মিস্টি রঙের লিপিস্টিক,,,,
ব্যাস,,, এতটুকুতেই মিরাকে অপরুপ লাগছে,,,, মিরা নিজেকে আয়নায় দেখছিল তখনই কে যেন দরজায় নক করে,,,,
মিরা দরজা খুলতেই দেখে সাহেল দাঁড়িয়ে আছে,,, তাকে দেখা মাত্রই মিরা যেন ৩-৪ টা ক্রাশ খেয়ে ফেলে,,,সাদা ধুতি আর কালো পাঞ্চাবিতে বেশ মানিয়েছে সাহেলকে,,,,মিরা তো এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সাহেলের দিকে,,,,,
এদিকে,,,,
সাহেল রেডি হয়ে তাড়াতাড়ি মিরার বাসায় যায়,,,, মিরার বাসায় ঢুকতেই তার মিরার বাবা মার সাথে দেখা হয়,,, তাদের সাথে কুশল বিনিময় করার পর সাহেল মিরার রুমের উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়,,,,রুমের কাছে যেতেই দেখে দরজা লক করা,,,তাই দরজা নক করে,,, কয়েকবার নক করতেই মিরা দরজা খুলে দেয়,,,সামনে তাকাতেই সাহেল অবাক হয়ে যায়,,, এত নরমাল সাজে যে একটা মেয়েকে এত সুন্দর লাগবে সেটা হয়তো তার জানা ছিল না,,, তার মনে হচ্ছে ,,, সে হয়তো আবার নতুন করে মিরার প্রেমে পরেছে,,, যত দ্রুত সম্ভব নিজেকে সামলে নিয়ে সাহেল মিরাকে বলল,,,,
সাহেলঃ চ,,,ল ভার্সিটির অ,,,অনুষ্ঠানে দেরি হয়ে যাচ্ছে,,,,
মিরাঃ যাব,,,কিন্তু তুই আমাকে এখনও বললি না আমাকে কেমন লাগছে,,,, [ মুখ গোমড়া করে ]
সাহেলঃ তোকে,,,, [ বাঁকা হেসে ]
মিরাঃ হ্যাঁ,, আমাকে,,,[ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ]
সাহেলঃ তোকে আমার একদমই আমার ছোকিনার মত লাগছে,,,, 🤣🤣🤣
বলেই সাহেল জোড়ে জোরে হেসে দেয়,,,, মিরা তো রাগে গজগজ করতে করতে সাহেলের দিকে তাকিয়ে আছে,,, মিরাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে সাহেল খেপানোর জন্য বলে,,,,
সাহেলঃ ওলে আমাল বাবুটা,, আমাল ছোকিনাটা,,, তুই রাগ করছস,,,🤣🤣🤣😂😂
মিরাঃ হো,,, রাগ করসি,,, রাগে আমার নাগিন ডান্স দিতে মন চাইতেসে,,, 😡😡😠
সাহেলঃ ও রেয়লি,,,তাহলে তো অনেক ভালো,,,খাড়া আমার কাছে নাগিন নাগিন গানটা আসে,,,আমি প্লে করতাসি,,,,😂😂😂🤣
মিরাঃ হোর বেয়াদ্দপ পোলা,,,মজা নিবিনা একদম,,,আমারে তোর কাছে ছোকিনার মত লাগে না,,,, তুই কি মনে করস তোকে অনেক সুন্দর লাগতাসে,,,,😡😡😡
সাহেলঃ অবশ্যই আমাকে অনেক সুন্দর লাগতাসে,,,আমার মত হিরো তুই জীবনেও দেখছিস,,,😏😏
মিরাঃ হিরো না জিরো,,, তোরে দেখতে কালা বান্দরের মত লাগতাছে,,, বুঝছস,,,😡😡
সাহেলঃ আমি তোর কথা বিশ্বাস করি না,,, আমাকে যথেষ্ঠ সুন্দর লাগছে,,,, 😒😒
মিরাঃ কচু,,,তোরে আমার পৃথিবীর সেরা কালা আবালের মত লাগতাসে,,😎😎
সাহেলঃ এ্যা,,,তোরে কইসে,,,আচ্ছা তুই তো শাড়ি পরতে পারস না,,, তাহলে শাড়ি কে পরাইছে,,,,??
মিরাঃ ক্যান আমার মা পরাইছে,,,, আচ্ছা ওয়েট,, তুই এত সুন্দর করে রেডি হইছস কেন,,,??🤨🤨
সাহেলঃ কেন আবার,,, অনুষ্ঠানের জন্য,,,,
মিরাঃ তাই বইলা এত সুন্দর কইরা রেডি হবি,,,?? সত্যি কইরা কো তো সাহেল,,,তুই কি কোনো শাকচুন্নির লগে প্রেম করস নাকি,,,??🤨🤨
সাহেলঃ আল্লাহ মাইয়ায় কয় কি,,?? এ,,এগুলা বলে না বাবু,,, পাপ হবে পাপ,,,,
মিরাঃ আরে রাখ তোর পাপ,,,,আগে যেইডা কইসি হেইডার উত্তর দে,,,,, 😡😡
সাহেলঃ আরে আমার ভুল হইসে,,, আমি আর জীবনেও সুন্দর কইরা রেডি হইতাম না,,, সবসময় রাস্তার পোলার মত থাকমু যা,,🙏🙏
মিরাঃ হেইডা কিন্তু ভালা সিদ্ধান্ত,,, কিন্তু আমি এখনও আমার উত্তর পাই নি,,, হু,,,,
সাহেলঃ আরে নাই রে বইন,,,
মিরাঃ হুমম,,,বুঝলাম,,,but I have a গভীর প্রশ্ন,,, তুই আমারে বউ বানাবি নকি বইন,,,??🤨🤨
সাহেলঃ মিরা আল্লাহর রস্তে আর একটাও কথা কইস না,,, নাহলে আমার সত্যি সত্যি পাবনায় যাইতে হইব,,,,
মিরাঃ তাই নাকি,,,,কোনো সমস্যা নাই,,, আমি তোকে সেখানে নিয়ে যাব,,,,ওকে,,,,
সাহেলঃ তোর যাইতে হইব না,,, আমি নিজেই যাইতে পারুম,,,, এখন চল দেরি হই যাচ্ছে,,,,
মিরাঃ ওকে মাই ডারলিং,,,😘😘😉
তারপর ওরা ২ জন একসাথে ভার্সিটি যায়,,, ভার্সিটিতে ঢুকতেই তারা অবেক হয়ে যায়,,, কারন পুরা ভার্সিটিটা অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে,,,,মিরা তো মুগ্ধ নয়নে চারপাশটা দেখছে,,,,, তার দেখার বেঘাট ঘতে সাহেলের ডাকে,,,,
সাহেলঃ দেখছস কি সুন্দর করে সাজাইসে,,,,,
মিরাঃ হো দেখসিতো,,, তোর এত কয়া লাগে,,, আমারও তো চোখ আসে তাই না,,, [ বিরক্তি নিয়ে ]
সাহেলঃ হুম,,,আচ্ছা শুন,,,,
মিরাঃ কি বল,,,,??
সাহেলঃ আমাকে হয়তো এখন তোর বিরক্তি লাগে,,, কিন্তু দেখিস আমি যখন থাকব না তখন তুই আমাকে অনেক মিস করবি,,,,
সাহেলের কথা শেষ হতে না হতেই মিরা সাহেলকে থাপ্পড় মেরে দেয়,,, রাগে মিরার চোখ থেকে অনবরত পানি পরছে ,,,, মূহুর্তেই চোখ ২টো লাল হয়ে গেছে,,,সারা শরীর কাঁপতে শুরু করেছে মিরার,,, মিরার এমন অবস্থা দেখে সাহেল কিছু বলতে নিলে,,,মিরা সাহেলকে আবার আরেকটা থাপ্পড় মারে,,, তারপর সেখান থেকে দৌড়ে চলে যায়,,,,,
সাহেল এখনও সেখানে দাঁড়িয়ে আছে,,, সে মিরাকে কথাটা এভাবে বলতে চাই নি,,, কি থেকে কি বলে ফেলেছে সে হয়তো নিজেও জানে না,,,,
এদিকে,,,,,
মিরা দৌড়াতে দৌড়াতে ভার্সিটির মাঠ থেকে অনেক দূরে চলে এসেছে,,,,,লাইব্রেরির কাছাকাছি আসতেই কে যেন মিরাকে একটান দিয়ে লাইব্রেরির ভেতরে নিয়ে যায়,,,, তারপর দেয়ালের সাথে মিশিয়ে ঠোঁট দখল করে ফেলে,,,,
আচমকা এভাবে চুমু দেওয়ায় মিরার যেন আত্তা শুকিয়ে যায়,,,, চুমু করা ব্যক্তির দিকে তাকাতেই মিরার মাথায় আকাশ ভেংগে পরে,,,শরীরের সর্ব শক্তি দিয়ে মিরা তাকে ধাক্কা দেয়,,,, সাথে সাথে ছেলেটা কিছুটা দূরে সরে যায়,,,,মিরা রেগে ছেলেটাকে বলে,,,,
মিরাঃ আপনার সাহস তো কম না,,,, এভাবে একটা মেয়েকে কিস করতে আপনার লজ্জা করে না,,,, আপনি নিশ্চয়ই জানেন আমি সাহেলকে ভালোবাসি,,,তাহলে এসব করার অর্থ কি,,,?? 😡😡ও,,,আমি তো ভুলেই গেসি,,, মিস্টার রায়ান,,,আপনার তো প্রতি নিয়ত নতুন নতুন মেয়ে লাগে,,,,, এখন নিশ্চয়ই কোনো মেয়ে পাত্তা দিচ্ছে না বলে আমার কাছে এসেছেন,,,,😡😡😡
রায়ানঃ দেখ এমন কিছু না,, আমি তো জা,,,[ বলতে না দিয়ে ]
মিরাঃ ইউ নো ওয়াট মিস্টার রায়ান,,, আপনার সাথে কথা বলার আমার কোনো ইচ্ছা নেই,,, আর একটা অনুরোধ রইল,,,প্লিস আমার সামনে আর আসবেন না,,, 😡😡😡
রায়ানঃ মিরা আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি,,, আমি তোমাকে সারা জীবনের জন্য চাই,,, প্লিস আমাকে রেখে চলে যেও না,,,,, [ করুন কন্ঠে ]
মিরা চলে যেতে নিয়েছিল,,,কিন্তু রায়ানের কথা শুনে দাঁড়িয়ে যায়,,,, তার প্রচন্ড মাথা গরম হচ্ছে,,, একেতো সাহেলের ও-ই ফালতু কথা গুলো,,, এখন আবার রায়ান,,,তার সহ্যর সীমা পেরিয়ে যাচ্ছে,,, তবুও নিজেকে শান্ত রেখে মিরা এক তাচ্ছ্যিল্লের হাসি দিয়ে বলে,,,,
মিরাঃ ইউ নো ওয়াট মিস্টার রায়ান,,,আপনার মত বেহায়া মানুষ আমি জীবনেও দেখিনি,,, আপনি জানেন আমি সাহেলকে ভালোবাসি,, তাও আপনি,,,,,, আবার বললেন কিনা,,, সারা জীবনের জন্য চান আমাকে,,, যে রায়ান ৩ দিনের বেশি কোনো মেয়েকে তার গফ বানায় না,,, সে কিনা আমাকে সারা জীবনের জন্য চায়,,, বিশ্বাস করা যায়,,,,
রায়ানঃ সত্যি আমি,,,[ বলতে না দিয়ে ]
মিরাঃ আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাচ্ছি না,,, প্লিস আমার থেকে দূরে থাকুন,,,,
বলেই মিরা চলে যেতে নে,,, কিন্তু তার আগেই রায়ান তার হাত ধরে ফেলে,,, তাতে মিরা রাগের বসে রায়ানকে থাপ্পড় মেরে দেয়,,,,
মিরাঃ আপনই দেখি চরম বেহায়া,,, কোন সাহসে আমাকে ধরেছেন আপনি,,,,, আপনার কোনো অধিকার নেই আমাকে ধরার,,,আর যদি থাকে তাহলে সেটা শুধু সাহেলের,, শুধুই সাহেলের,,,,
বলেই মিরা চলে যায়,,,, মিরা যাওয়ার সাথে সাথে রায়ান দেওয়ালে খুব জোরে পাঞ্চ করে,,, তারপর মাটিতে বসে চিল্লিয়ে ওঠে,,,,
রায়ানঃ ইউ উইল পে ফর ইট মিরা,,, ইউ ইউল পে ফর ইট,,,, আমাকে রিজেক্ট করা তাও আবার ও-ই সাহেলের জন্য তাই না,,,, ও-ই সাহেলকেই আমি থাকতে দিব না,,, থাকতে দিব না আমাদের মাঝে,,,,,
এদিকে,,,,,
মিরা কাওকে কিছু না বলেই তার বাসায় চলে যায়,,,, পুরা অনুষ্ঠানে সাহেল মিরাকে অনেক খুঁজে কিন্তু পায় না,,,, ফোন দেয় তাও সুইট অফ ,,,,,, অবশেষে অনেক খুঁজার পরে জানতে পারে মিরা বাসায় চলে গেছে,,,, তাই সেও চলে যায়,,,,,
🖊🖊🖊💙🖊🖊🖊💙🖊🖊🖊💙🖊🖊🖊
ঐদিনেরপর থেকে মিরা রায়ানের সাথে কথা বলে না,,, নিজেকে যথাসম্ভব দূরে রাখে রায়ানের কাছ থেকে,,, রায়ান কথা বলতে আসলে তাকে পাত্তা না দিয়েই তাড়াতাড়ি সেখান থেকে চলে যায়,,,,
মিরার এভাবে তাকে ইগনোর করা রায়ান একদমই সহ্য করতে পারে না,,,,মিরার তার সাথে ঝগড়া করা সে খুব মিস করে,,, তার যে অভ্যেসে পরিণত হয়েছে এটা,,,,
এদিকে,,,
মিরা কিছুদিন ধরে সাহেলের কোনো খোঁজখবর পাচ্ছে না,,,, ফোন দিলেও ফোন সুইট অফ দেখায়,,,, অবশেষে মিরা সাহেলের বাসায় যায়,,,,
কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারে যে সাহেল আর তার বাবা দেশের বাহিরে চলে গেছে,,,, কেন গেছে অথবা কোথায় গেছে এটা কেওই জানে না,,,,,
এটা শুনা মাত্রই মিরার মাথায় যেন বাজ পরে,,, খুব কান্না করতে ইচ্ছে করছে,,,, দাঁড়ানোর শক্তিটুকু নেই তার,,, কোনোমতে বাসায় গিয়েই রুমে চলে যায়।।তারপর সাওয়ার ওন করে তার নিচে বসে পরে,,,,
অঝরে কান্না করছে মিরা,,,খুব কষ্ট হচ্ছে তার,,,ইচ্ছে করছে চিৎকার করে বলতে,,, "" কেন করলি সাহেল,,, একবার বলে গেলে কি হত,,, তুই তো আমাকে ছোট খাট সব কথা বলিস,,, তাহলে এটা বললি না কেন??,,,২ টা থাপ্পড়ই তো মেরেছিলাম আমি,, এতে এত রাগের কি আছে,,,এভাবে শাস্তি দেওয়ার তো মানে হয় না সাহেল,,,তুই জানিস আমি তোকে ছাড়া থাকতে পারি না,, তাহলে কেন গেলি আমাকে রেখে,,, প্লিস চলে আয় সাহেল,, প্লিস চলে আয়,,, ""
তারপর বেশকিছুক্ষন পরে মিরা ওয়াশরুম থেকে বের হয়,,, তার কিছুই ভালো লাগছে না,,, মাথাটা অনেক ব্যথা করছে,,, বিছানায় শুতেই সে যেন ঘুমের দেশে তোলিয়ে যায়,,,,
,
,
,
,
,
এভাবে কেটে যায় প্রায় ১ মাসেরও বেশি,,,, এ ১ মাসে মিরা নানাভাবে সাহেলের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে,,,, কিন্তু কোনোভাবেই তা হয়ে ওঠে না,,,
এখন মিরা আর সাহেলের খোঁজ করে না কিংবা যোগাযোগ করার চেষ্টা করে না,,, তার বিশ্বাস হয়ত সাহেল আবার আসবে মিরার কাছে,,,, কিন্তু অপেক্ষার প্রহর যেন শেষই হচ্ছে না,,,, মিরা নিজেকে একেবারে ঘর বন্দি করে ফেলেছে,,, ঠিক মত খাওয়া দাওয়াও করে না,,,,
মিরার বাবা মার ওর এমন করার কারন কিছুটা হলেও জানে,,, তারাও কম চেষ্টা করে না সাহেলের সাথে যোগাযোগ করার,,, কিন্তু ফল সেই একটাই,,,, এখন সব আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়েছে তারা,,,,
এরই মাঝে মিরার জন্য বিয়ের প্রস্তাব আসে,,,, মিরার বাবা মা এ বিয়েতে রাজি।। এখন শুধু মিরাকে রাজি করানই বাকি,,,,
মিরা তার রুমে বসে ছিল তখনই মিরার বাবা মা তার রুমে আসে,,,,
মিরার বাবাঃ মিরা আমাদের তোর সাথে কথা আছে,,,
মিরাঃ কি বলবা বাবা,,, তাড়াতাড়ি বল,,,,,
বাবাঃ আসলে আমরা তোর বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে চাচ্ছি,,,
মিরাঃ আমি বিয়ে করব না বাবা,,,,[ বেশ শান্ত কন্ঠে]
মিরার মাঃ কেন করবি না,,, ও-ই সাহেলের জন্য যে তোকে রেখে চলে গেছে,,,,,
মিরাঃমা প্লিস,,, আমি এ নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না,,,,
বাবাঃ এভাবে আর কতদিন থাকবি মিরা,,, তোর এ অবস্থা দেখে আমাদেরও তো কষ্ট হয়,,,,
মিরাঃ বাবা আর কয়েকটা দিন অপেক্ষা কর প্লিস,,,,
বাবাঃ অনেক সময় দিসি আমি তোকে,,, এখন আর না,,,,আর তুই যদি বিয়ে না করস,,, তাহলে তুই তোর মা বাবার মরা মুখ দেখবি,,,,,
মিরাঃ বাবা প্লিস আর একটু সময় দিলে কি হয়,,,??
বাবাঃ এতদিন কি কম সময় দিয়েছি,,,,আর তাছাড়া ছেলেটা অনেক ভালো,,, আমরা চাই না এ ছেলেটা হাত ছাড়া হোক,,,,
মিরাঃ আচ্ছা আমি ভেবে বলব,,,এখন প্লিস যাও তোমরা,, আমার ভালো লাগছে না,,, একা থাকতে দাও একটু,,,,[ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ]
তারপর মিরার বাবা মা চলে যায়,,,, তারা যেতেই মিরা কেঁদে ওঠে,,,, তার সবকিছু অসহ্য লাগছে,,, সে চায় না সাহেল ছাড়া কাওকে নিজের জীবন সংগি করতে,,,, কিন্তু তার বাবা মা ও তো তাকে বুঝে না,,,,,
এরকিছুদিন পরেই মিরার নামে একটা চিঠি আসে,,, চিঠিটা পরা মাত্রই মিরার যেন পুরা পৃথিবীটা শেষ হয়ে যায়,,, কারন চিঠিটা সাহেলের,,, আর সেখানে লেখা ছিল,,,,
প্রিয় মিরা,,,
কেমন আছিস,,,আমি কিন্তু অনেক ভালো আছি,,, কতদিন আর এ বাংলাদেশে পরে থাকব বল,,, তাই USA তে চলে এসেছি,,, এখানে বেটার এডুকেশন আছে প্লাস বেটার লাইফ,,, যা বাংলাদেশে ছিল না,,, আর সরি তোকে না বলে যাওয়ার জন্য,,,, আসলে কি বলত,, তোকে বলে যেতে ইচ্ছে করে নি,,, নাহলে তোর ওই কান্না,,উফফ অসহ্যকর,,,যাই হোক আমার জন্য টেনশান করিস না,,, আমি বিন্দাস আছি,,, আচ্ছা এখন আর লিখতে পারব না,,,, খুব ব্যস্ত তো তাই,,,, নিজের খেয়াল রাখিস,,,""
মিরা আর কষ্ট সহ্য করতে পারল না,,, জোড়ে জোড়ে চিল্লিয়ে কেদে উঠে,,,, কান্না আওয়াজ পেয়ে মিরার রুমে তার মা বাবা চলে আসে,,, মেয়েকে এভাবে কাঁদতে দেখে মিরার মা তাকে শান্তনা দেয়,,,,
মাঃ মিরা মা কান্না করছিস কেন,,,??
মিরাঃ মা,,,মা,,,সাহেল,,,[ কান্না করার জন্য মিরা কথাই বলতে পারছে না ]
মাঃ কি করেছে সাহেল,,, আমাকে বল,,,,
মিরাঃ মা সা,,,হেল,,,আমা,,,কে ইচ্ছা,,,করে,, রেখ,,খে,,,গেসে,,,
বাবাঃ তুই কেমনে জানস,,,??
মিরা তার বাবা কে চিঠিটা দেখায়,,, চিঠিটা দেখে মিরার বাবা ভীষণ রেগে যায়,,,, রেগে বলে,,,
বাবাঃ তোর বিয়ে আমার পছন্দ করা ছেলের সাথেই হবে,,, তাও এক সপ্তাহের মধ্যে,,,
মিরাঃ কিন,,,,[ বলতে না দিয়ে ]
বাবাঃ কোনো কথা না,,, আর কত তুই ওর জন্য বসে থাকবি,, ও তোকে ধোকা দিসে মিরা,,,আর যাই হোক একটা ধোকা বাজের কারনে আমি এ-ই ছেলেকে হাত ছাড়া করতে পারবনা,,,, [ বলেই চলে গেল ]
,
,
,
অবশেষে মিরা তার বরের সর্ম্পকে কিছু না জেনেই বিয়েতে রাজি হয়ে যায়,,,, জেনেই বা কি করবে,, তার তো ইচ্ছে ছিল সে সাহেলের বউ হবে,,, হয়ত ভাগ্য সেটা চায় না এজন্যই সাহেল হয়ত তাকে ছেড়ে চলে গেছে,,,,
,
,
,
,
,
,
কোনো ঝামেলা ছাড়াই মিরার বিয়েটা খুব সুষ্ঠু ভাবে হয়ে যায়,,, এখন মিরা বাসর ঘরে বসে আছে,,, নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছে তার,,, ইচ্ছে করছে দৌড়ে সাহেলের কাছে চলে যেতে,,, কিন্তু সব ইচ্ছে তো আর পুরোন হয় না,,, মিরার ক্ষেত্রেও তাই,,,
মিরার ধ্যান ভাংগে দরজা খোলার শব্দে,,,ঘোমটার আরালেই দেখতে পায় তার বর তার কাছে এগুচ্ছে,,,,মিরার কেন যেন অনেক ভয় লাগছে,,, সে তো এরকমটা চায় নি,,, সাহেলের সাথে নিজের জীবনটা কাটিয়ে দিতে চেয়েছিল,,,তাহলে কেন সাহেল তার সাথে এমন করল,,,,
হঠাৎ মিরা তার বরের কথা শুনে চমকে উঠে,,,, এ তো রায়ানের কন্ঠ কিন্তু ও এখানে কেন আসবে,,,,
রায়ানঃ কি হল,,, বাসর ঘরে বরকে সালাম করতে হয়,,, তুমি জানো না,,,,,??
মিরাঃ আপ,,,নি,,,[ঘোমটা উঠিয়ে]
রায়ানঃ হ্যাঁ আমি,,,, বাসর ঘরে নিজের বরকে ছাড়া কাকে মনে করছিলে তুমি,,, 😉😉
মিরাঃ আপ,,,আপনি আমার বর,,,, [ অবাক হয়ে ]
রায়ানঃ অবশ্যই,,,বিয়েতে নাম বলার সময় তুমি কই ছিলে,,,???
মিরাঃ যাকে আমি এক মূহুর্তও সহ্য করতে পারি না সে এখন আমার বর,,, মানে তার সাথে সারা জীবন থাকতে হবে,,, লাইক সিরিয়ালি,,,
রায়ানঃ দেখ মিরা,,,আমি তোমাকে ভালোবাসি,,,
মিরাঃ কিন্তু আমি আপনাকে ভালোবাসি না,,,,
রায়ানঃ কিন্তু কেন,,,?
মিরাঃ আমি জানিনা,,,,
রায়ানঃ দেখ মিরা এখন আমাদের বিয়ে হয়ে গেসে।। তাই এখন আর কিছু করার নেই,,, যা হচ্ছে তা মেনে নিলে তোমার আর আমার ২ জনেরই ভালো হবে,,, গট ইট,,,
মিরাঃ হুমম,,,কিন্তু আমার সময় লাগবে,,,,,
রায়ানঃ আমি তোমাকে জোড় করছি না মিরা,, তোমার যত সময় লাগে তুমি নিতে পার,,,,
মিরাঃ থ্যাংকিউ আমাকে বুঝার জন্য,,,
রায়ানঃ হুমম,,,এখন তুমি শুয়ে পর,,, আমি সোফায় শুচ্ছি,,,,
মিরাঃ [ যাক রায়ানকে যত খারাপ ভেবে ছিলাম ও অতো খারাপ না ]
তারপর মিরা বিছানায় আর রায়ান সোফায় শুয়ে পরে,,,,,,
এরপর কেটে যায় প্রায় ১ বছর,,,,
এ ১ বছরে অনেক কিছু পালটে গেছে,,,,,
মিরা আর রায়ানের সর্ম্পক অনেকটা এগিয়েছে,,,মিরা এখন রায়ানকে ভালোবাসে,,, অনেক বেশিই ভালোবাসে,,,, রায়ানের কেয়ার আর ভালোবাসা তাকে রায়ানকে ভালোবাসতে বাদ্ধ করেছে,,,,,,
,
,
,আজ মিরা অনেক খুশি,,, কারন তার আর রায়ানের অস্তিত্ব আসতে চলেছে,,,, রায়ানকে এ কথা বলতেই রায়ান মিরাকে জোড়িয়ে কান্না শুরু করে দেয়,,, তবে এ কান্না দুঃখের না সুখের,,,,
কিন্তু একজন ঠিকই বলেছে,,,, ভাগ্য যে কোনো সময় পাল্টাতে পারে,,,মিরা আর রায়ান এর ক্ষেত্রেও তাই ঘটে।,
,
👉চলবে,,,,,,,,।
Good post