সুখমন্থন❤💓

6 8
Avatar for Raihan09
3 years ago

মনে পড়ে তোমার সেই পাহাড়ের পথে একটুকরো সময়?

হাঁটার ছলে আমার হাতখানি ছুঁয়েছিলে, পারলে বোধহয় ঠিক কোলেই তুলে নিতে,

আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে ভালোবাসা আর শিহরন কী, তা অনুভব করতে!

দুটো পাহাড়ের মাঝে যে ছোট্ট লেকটা ছিল, ঠিক তার মতোই,

দু-পাশের পাহাড় যেমন দু-বাহুতে আঁকড়ে ছিল ওকে!

ঢালু পিচঢালা পথ, তার গা বেয়ে লজ্জাবতী গাছের সারি নেমে গিয়েছিল জলাশয়ের কোল ছুঁয়ে,

আমায় বলেছিলে, ওগুলোকে দাও না ছুঁয়ে, চুপসে যাক তোমার মতো, রাঙা মুখখানি আমি দেখব আজ!

লজ্জাবতীর শিহরন জাগতে আমি সেদিনই প্রথম দেখেছি,

তোমার চোখে চোখ পড়তেই কেঁপে উঠেছিলেম, কেন জানি না!

আর একটু হলে গড়িয়ে জলেই যেতাম পড়ে,

তুমি আসার আগেই মাহি আমার হাতটা ধরেছিল খপ করে,

ওকে হাসিমুখে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে, গাল ফুলিয়েছিলে খুব!

ভীষণ চটে গিয়েছিলে ওর উপর, যদিও কিছুই বলোনি মুখে,

তবু আমি যে তোমায় পড়তে পারি খুউব!

তোমার মুখটা রাঙার আগেই কান দুটো লাল টুকটুকে হয়ে উঠত…কখন, জানো?

যখন তোমার খুউব অভিমান হতো, মনে মনে খুব চটতে যখন!

আরেকটা জিনিস খেয়াল করেছি, আমি যত যা-ই বলতাম না কেন,

তুমি শুধু হুম হুম আর হুম করেই কথা চালিয়ে যেতে।

অনেকখানি পথ পাড়ি দিয়েছিলেম দুজনে মিলে,

একটি মুহূর্তের জন্যেও হাতছাড়া করোনি আমাকে কখনও,

পাহাড়ের শেষপ্রান্তে একটা বেঞ্চি ছিল, তার থেকে দু-এক পা এগোতে গেলেই

সোজা পাহাড়ের গর্ভে তলিয়ে যাবার জোগাড়!

তা-ও আমি উঠেপড়ে লেগেছিলাম সেখানে বসার জন্য,

তুমি আমায় দাওনি বসতে…মানে দাওইনি কোনওমতে!

দেখেই নাকি তোমার হার্ট-অ্যাটাক হবার জোগাড়,

যাবার কথা শুনেই ঘেমে প্রায় জুবুথুবু…

আমার আদুরে ভীতুর ডিম কোথাকার!

বলেছিলে আমায়, ‘এমন একটা পৃথিবী যদি থাকত,

আমি আমার দুষ্টু বুড়িটাকে নিয়ে সেখানে চলে যেতাম, সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে,

তোমায় যে আমি কোথায় লুকাব, কী যে করব…

আমি তোমাকে চিরদিনের জন্য ভালোবাসি গো!’

…প্রায়ই এসব ভেবে ভেবে ভীষণ কষ্ট পেতে,

সব কাজে ভুল করতে, আর বলতে,

‘একটা সময় পর তুমি আমায় কি আর ভালোবাসবে না গো?

আমায় কি ভুল বুঝবে তখন?

বলবে কখনও, তুমি খারাপ একটা মানুষ ছিলে?

জানো, আমার অনেক কিছু করতে ইচ্ছে করে তোমাকে নিয়ে,

অনেক আদর করতে, খুব জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করে…

শুধু যে তোমার হাত দুটোই আমার হাতে মিশেছে!

কোনও দিন স্বপ্ন দেখতাম না যেই আমি,

সেই আমার এখন রীতিমতো স্বপ্নের বহর নিয়ে বাঁচতে হয়!

আমি আমার স্বপ্নে-দেখা প্রতিটি মুহূর্ত সত্যি করতে চাই,

তবু পারি না, পারি না কিছুই আমি…

আমার ভীষণ ভয় হয় এই ভেবে,

আমার প্রতি তোমার যে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, তা যদি ক্ষুণ্ণ হয় কখনও ভুলে!

ওরকম কিছু হয় যদি, আমি সহ্য করতে পারবই না কিছুতে!’

তোমার মুখের এই কথাগুলো আমার কানে আজও বাজে…

আমি আজও সেই মুহূর্তগুলো অনুভব করতে পারি ঠিক আগের মতোই,

ভাবি, কেন ভেবেছিলে অমন করে?

আমার দৃষ্টি থেকে নিঃশ্বাস অবধি সবই যে তোমার ছিল,

তোমার জন্যই আছে, আমার এই হাতে যে আজও তোমার ছোঁয়া লেগে আছে,

আর কারও হাত স্পর্শ করতে দিইনি আমি,

আমি এখনও পারি না তোমাকে ছাড়া থাকতে, সত্যিই পারি না!

ভীষণ কষ্ট হয়…নিঃশ্বাসগুলো ভেতরে দানা বাঁধতে থাকে…

এত কেন ভালোবেসেছিলে, বলো?

আমি এমন একটা মেয়ে ছিলাম, যে শুধু জিততে জানত,

প্রতিযোগিতা, প্রতিশোধ আর একাকিত্ব ভালোবাসত।

তুমি কেন এসে সব এলোমেলো করে দিলে?

ভালোবাসতে কেন শিখিয়ে গেলে?

আমায় ওই একাকিত্বের জগত থেকে কেন স্বেচ্ছানির্বাসনে পাঠালে?

আমি তো ভালোই ছিলেম, বেশ কাটছিল

সেই প্রতিযোগিতা, প্রতিশোধ আর হার-জিতের খেলায়!

আমায় কেন তুমি অনুভবে মোড়ালে অমন করে?

আমার সমস্ত আত্মবিশ্বাস কেন তুমি নিজের সাথে নিয়ে গেলে?

নিজের ভেতরে শক্তি আমি আর পাই না এখন,

নিজেকে সামলে রাখার এক তুমি ছাড়া কোনও পথ যে আমার কাছে আর খোলা নেই,

কেঁদেও আর হয় না এখন, ডায়েরির পাতায় অনুভূতির বুনন ছিঁড়ে তবেই নিজেকে শান্ত করি!

আমার মনে হয়, ছেঁড়া টুকরোগুলোর সাথে আমার প্রতিটি ফোঁটা চোখের জল যেন উবে গেল,

অনুভূতিগুলো একটি একটি করে নিস্তেজ হলো,

ক্ষতবিক্ষত শব্দের মতোই কষ্টগুলোর মৃত্যু হলো।

তোমায় ছাড়াও আমি বেশ আছি, আমি পারব থাকতে,

নিজের ভেতরে একটা শক্তি আমি পাই…অনুভব করি।

নিজেকে শান্ত রাখার অন্য কোনও পথ যদি আমি পাই,

তাহলে আমি অনেক অনেক লিখব…

আমার কলম আরও পরিপক্ব হবে, আরও বুঝতে শিখবে,

দাঁড়াতে শিখবে শব্দের গোড়ায় অনুভূতিগুলো,

আমিও জন্ম দেবো হাজার কবিতা,

আমি লালন করব এক-একটি সদ্যোজাত মুখ,

আমার যাচ্ছেতাই লেখাগুলো মরে যাবে না অন্তত,

বেঁচে তো থাকবে কোথাও-না-কোথাও!

আমি আজকাল লিখতেও বসি না, জানো!

যখনই বসি, ঠিকই তুমি এসে পড়ো!

আমার ভেতর-ঘরে সাজানো লাইব্রেরিতে আগুন জ্বলে ওঠে,

পুড়ে ছাই হয়ে যায় সবগুলো বইয়ের পাতা,

স্মৃতির পাতাগুলো থেকে পোড়া পোড়া গন্ধ বের হয়!

আমি ভাবতে পারি না, কোনওভাবেই না---তুমি আমার অতীত!

এ যে হতেই পারে না! পারে না মানে, পারেই না!

‘অতীত’ শব্দটা আমার গলায় কাঁটার মতো এসে এসে বিঁধে,

চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করে,

তোমার নামের পাশে বসা ‘প্রাক্তন’ শব্দটাকে

আমার ছিঁড়ে কুঁড়ে গিলে ফেলতে ইচ্ছে করে,

আমার নিজেকে তখন বদ্ধউন্মাদ মনে হয়!

এতটা অসহায় আমার পানিতে ডুবে গেলেও লাগে না!

এই যে এতগুলি কথা লিখে লিখে ডায়েরির পাতা ভিজিয়ে ফেললাম,

তাতেও আমার স্মৃতিগুলো রেহাই পায়নি!

দগ্ধ-হওয়া পাতাগুলো থেকে পোড়া পোড়া গন্ধ আমাকে এখনও যন্ত্রণা দিচ্ছে…

তুমি এসো না কিন্তু!

ভুল করেও পা ফেলো না আর আমার ঘরে, আমার কষ্ট হচ্ছে ভেবেও!

আমার সয়ে গেছে সব যন্ত্রণা…

আমি ঠিকই একটু পরে আবার হাসব, অনেক হাসব!

খুব ঘুড়ি ওড়াব,

গাছে চড়ে ঠিক বাবুইপাখির বাসায় খাবার দিয়ে আসব!

Sponsors of Raihan09
empty
empty
empty

4
$ 0.00
Sponsors of Raihan09
empty
empty
empty
Avatar for Raihan09
3 years ago

Comments

পুরাই অস্থির। কাজের মাঝে যখন এই রকম গল্প পড়ি খুব ভালো লাগে। মনে একটু শান্তি শান্তি লাগে। খুব সুন্দর একটা গল্প আপু। অনেক ভালো লাগছে।

$ 0.00
3 years ago

অসাধারণ প্রিয় আপনি গল্পটি খুবই চমৎকার লিখেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের কী এত সুন্দর গল্প উপহার দেওয়ার জন্য। চালিয়ে যান আশা করি আপনি ভবিষ্যতে আরও বড় কিছু আমাদের উপহার দিবেন। এই আশায় রইলাম।

$ 0.00
3 years ago

ধন্যবাদ প্রিয়,

$ 0.00
3 years ago

Thanks . My life would be nothing without my mom. Even when I tell her to stop she just won't stop doing her best for us all.

$ 0.00
3 years ago

Thankx. Dear, Support

$ 0.00
3 years ago

Okay, stay connected

$ 0.00
3 years ago