বিদেশ থেকে ফিরেছি বিয়ে করবো বলে। বহুদিন বিদেশ করার পর এবার বিয়েটা করাই উচিৎ মনে করলাম। মা বাবা ও খুব উৎসাহিত ছেলের বিয়ে নিয়ে। নানান মানুষ কে বলে মেয়ে দেখতে। নানান জায়গায় যেয়ে যেয়ে ছেলের প্রশংসা করে। ভাইসব ছেলে আমার লাখে একটা। নিজের ছেলের কথা বলতে লজ্জা লাগে তাও বলি, ছেলে আমার হীরার টুকরা। এতো বছর বিদেশ করে আসছে এবার বিয়েটা করাতে চাই। বিয়ের পর বৌ নিয়ে চলে যাবে আবার। ছেলের একটাই কথা। ছেলে আমাকে আর ওর মাকেও নিতে চায়। কিন্তু ওর মা আবার দেশ ছেড়ে যাবে না।
.
এইসব আজেবাজে আলোচনা আমার বাবা আজকাল হরহামেশাই সবার কাছে করছে। পাত্রী দেখার ব্যাপারে আমিও একটু আগ্রহী । নিজের বিয়ে বলে কথা। লজ্জা লাগে আবার ভেতরে ভেতরে খুবই আনন্দিত। কিভাবে জানিনা বাবা একটা মেয়ে দেখতে যাবার ব্যবস্থা করলো। আমি রাগারাগি শুরু করলাম। মাত্র দেশে আসছি আমাকে একটু সময় দেন আপনারা। কি শুরু করেন। আমার একটা মানসিক প্রস্তুতির দরকার আছে ত নাকি? কিন্তু সত্যি বলতে ভিতরে ভিতরে খুব খুশি আমি। বাবা বললো, রাগ করিস কেন। এই আমরা যাবো আর আসবো শুধু। তোর যেতে ইচ্ছে না হলে তুই থাক। আমরা আগে দেখে আসি। আমি পরলাম মানিকের চিপায়। আমার বিয়ে আমি মেয়ে দেখতে যাবো না তা কি হয়..!!! নিজের উপর প্রচন্ড রাগ হলো। কি করা যায় ভেবে ভেবে বলেই দিলাম, না থাক আমিও যাই ঘুরে আসি। দেশে আসার পর ঘর থেকে ত তেম বের হচ্ছি না৷।
.
আমরা মেয়ে দেখতে মেয়ের বাড়িতে গেলাম। যাওয়ার পর মনে হলো যে জীবনের সব চেয়ে বড় ভুল কাজটা আমি করেছি৷ আমার গলা বার বার শুকিয়ে যাচ্ছে। আর পানি খাচ্ছি। এমন একটা পরিস্থিতি আমি উঠতেও পারছি না। কিছুক্ষণের মধ্য একজন রূপবতী মেয়ে নাস্তা নিয়ে আসলো। নাস্তা দিয়েই সে চলে গেলো। আমি মা বাবার মুখের দিকে তাকালাম। মা বাবার মুখ হাসি হাসি। আমার মনের ভিতরেও লাড্ডু ফুটেছে। কারণ মেয়ে আমার মশাআল্লাহ পছন্দ হয়েছে। আমার মা বাবার প্ল্যান ছিলো মেয়ে পছন্দ হলে আংটি পরিয়ে ফেলবে৷ এই চক্রান্ত আমি জানতাম না যদিও। মেয়ের মা বাবা আর আমার মা বাবা নানা বিষয়ে কথা বলছে। মেয়ের বড় ভাই সেও এসে আমাদের সাথে কথাবার্তা বলছে। ঐসময় মেয়েও এসে সোফায় বসলো তার বড় ভাইয়ের পাশে৷ আমি মনে মনে ভাবলাম বাহ মেয়ের ত সাহস আছে। এই যুগের মেয়ে সাহস ত থাকবেই। আমি মেয়ের দিকে আড়চোখে তাকাই। আর আমার মনের ভেতরে শালিক পাখি নাচানাচি করে৷। এক পর্যায়ে আমার আম্মা জিগ্যেস করলো মা তোমার নাম কি?
মেয়ে বলল, তাহমিনা।
বাবা বললো বাহ বাহ বেশ সুন্দর নাম।
আমার বাবা বললো, মেয়ে আমাদের পছন্দ হয়েছে আমরা আজকেই আংটি পরিয়ে ফেলতে চাচ্ছিলাম। দেখি মা তোমার হাতটা দাও ত। আমার আম্মা এই বলে মেয়ের হাত টেনে কাছে নিয়ে আসলো। আংটি পরিয়ে দিতে। এমন সময় মেয়ের বাবা আর ভাই লাফ দিয়ে বলে উঠলো আপনাদের ভুল হচ্ছে। আমরা মেয়ে এখনো আপনাদের সামনে নিয়ে আসিনি। এটা আমার বড় ছেলের বউ৷ বৌমা যাও ওকে নিয়ে আসো জলদি............
আমি মা বাবা হা করে তাদের দিকে তাকিয়ে বললাম। আচ্ছা আচ্ছা.
সাদিদুল ইসলাম খান নিষাদ
All funds raised will deliver mental fitness workshops & training, by our local partners including communities that need it most. Huge thanks to @kaptorprojects for donating their amazing video, time and skills to this cause, which we know is close to their heart @WeaveYouthFamily