জিন প্রকৌশলের নতুন সফলতা,ওষুধ তৈরী হচ্ছে শুধুমাত্র আপনার জন্যই!

8 27
Avatar for Pluto.725
3 years ago

দিন দিন প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এ আই- এর সাহায্যে দেহকোষে জিনের গঠন বিন্যাস পরীক্ষা বা জিনোম সিকোয়েন্সিং এর মাধ্যমে বিশ্লেষণ যত সহজলভ্য ও আধুনিক হচ্ছে, তার উপর নির্ভর করে এখন শুধুমাত্র আপনার জন্যই বিশেষভাবে ওষুধ তৈরি করা সম্ভব।

ডিকোড জেনেটিক্স নামক একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানে অসংখ্য মানুষ প্রায় ৬০০ মার্কিন ডলার ব্যয় করে তাদের জিনের গঠন বিন্যাস জেনে নিচ্ছেন।

এর মাধ্যমে তারা জানতে পারছেন তারা ভবিষ্যতে কোন কোন রোগের শিকার হতে পারেন।

ইতোমধ্যে আইসল্যান্ডের প্রায় অর্ধেক মানুষের জিনের গঠন বিন্যাস ও বিশ্লেষন করা সম্পন্ন হয়েছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য শুধুমাত্র সাধারন মানুষের অসুখ-বিসুখ সম্পর্কে অগ্রীম জানতে পারাই নয়। বরং কোনো ব্যক্তির নির্দিষ্ট জেনেটিক গঠনের উপর নির্ভর করে শুধুমাত্র তার জন্য কিভাবে ওষুধ তৈরি করা যায় তার পদ্ধতি আবিষ্কার করাও এর একটি উদ্দেশ্য।

জিন বিশ্লেষণের মাধ্যমে ওষুধ তৈরি করা হলে কোনো ব্যক্তির সবধরনের শারীরিক বৈশিষ্ট্যের প্রতি লক্ষ্য রাখা সম্ভব হবে। যেমন যদি কারো হজমশক্তি অন্যদের তুলনায় বেশি হয়, সেক্ষেত্রে তার জন্য সেভাবেই ওষুধ তৈরি করা সম্ভব হবে। ডিকোড জেনেটিক্সের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কারি স্টেফানসন বলেছেন ,”এ বিষয়ে যে বিপুল পরিমাণ তথ্য আমাদের হাতে আসছে, তা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর মাধ্যমে বিশ্লেষন করে আমরা জানতে পারছি মানুষে মানুষে দেহগত পার্থক্য ও নানা ধরনের অসুখের প্রকারভেদ সম্পর্কে এবং কিভাবে ভিন্ন ভিন্নভাবে মানুষের চিকিৎসা করা যায়।“

মানবদেহের প্রথম জিনোম সিকোয়েন্সিং করতে প্রায় ১৩ বছর সময় লেগেছিলো আর ব্যয় হয়েছিলো প্রায় ২৭০ কোটি ডলার। এখন প্রযুক্তি উন্নত হবার সাথে সাথে জিন বিশ্লেষণের খরচও কমে গেছে। এমআরআই এর তুলনায় এই খরচ খুব বেশি না। মানুষের জিন বিন্যাসের তথ্য মজুদ রাখার জন্য সারা বিশ্বজুড়ে এখন গড়ে তোলা হচ্ছে “বায়োব্যাংক”। জিনোমিক্স ও রোগতত্ত্বকে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন এক গবেষণা প্রকল্প চালু হয়েছে।

এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল হিউম্যান জিনোম রিসার্চ সেন্টারের একজন পরিচালক ড. লুসিয়া হিনডর্ফ এবং তার সহোযোগীরা প্রায় ৫০,০০০ আমেরিকান-আফ্রিকান, লাতিন আমেরিকান, এশীয়, নেটিভ হাও্যাইয়ান ও নেটিভ আমেরিকানদের ডিএনএ তথ্য সংগ্রহ করছেন।

এ থেকে তারা উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস ,ধূমপান এবং জটিল কিডনি রোগের সাথে সম্পর্কিত ২৭ টি নতুন ধরনের জিনগত সমস্যা আবিষ্কার করেছেন।

হাওয়াই দ্বীপের আদি বাসিন্দাদের ডিএনএ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে তারা দেখেছেন প্রতিদিন যে কয়টা সিগারেট খাওয়া হচ্ছে তার সাথে জিনোম ভ্যারিয়েশনের একটা নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।

অন্য কোনো জনগোষ্ঠীতে এই ব্যপারটি লক্ষ্য করা যায়নি। একই ভাবে গবেষনাদলটি আফ্রিকান-আমেরিকানদের রক্তের হিমোগ্লোবিনে গ্লূকোজের পার্থক্য পেয়েছে।

এই গবেষণার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ এ নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির জন্য বিশেষভাবে ওষুধ তৈরির প্রক্রিয়াটা আরো সহজ হবে। প্রকল্পের কর্ণধারদের মতে, এমন একটা সময় আসবে যখন শিশুর জন্মের পূর্বে তার জিনোম সিকোয়েন্স করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে শিশুর বাবা-মায়ের জেনেটিক গঠন বিশ্লেষণ করে জন্মের আগেই তার সম্ভাব্য রোগ গুলো শনাক্ত করা ও তার প্রতিরোধ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।

16
$ 0.00
Avatar for Pluto.725
3 years ago

Comments

Nice

$ 0.00
3 years ago

$ 0.00
3 years ago

Wow

$ 0.00
3 years ago