উওম কুমার

19 39
Avatar for Pias
Written by
3 years ago

তিনি স্টার, শুধু স্টার নন, সুপারস্টার! এবং তিনি জানতেন কীভাবে স্টার হতে হয় এবং কীভাবে এই স্টারডম ধরে রাখতে হয়। একটা ছোট্ট ঘটনা বলি, একদিন স্টুডিওর সামনে থেকে গাড়িতে পেট্রোল নিচ্ছিলেন অভিনেতা শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়। গাড়িতে বসে না থেকে তিনি গাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ ঘটনা দেখে পরে উত্তমকুমার তাঁকে বলেন, নায়করা যদি এভাবে রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়, তবে দর্শকের সেই নায়কের সম্পর্কে আগ্রহ কমে যায়।এরকম নায়কোচিত ব্যবহার উত্তম কুমারই শিখিয়েছেন ভেতো বাঙালিকে।

এবার আরেকটা ঘটনার কথা বলি, কোনো এক অনুষ্ঠানে উত্তমকুমারের নিরাপত্তার জন্য অনেক উঁচু মঞ্চ করা হয়েছিলো। মঞ্চে উঠে উত্তমকুমার দেখতে পান এক নারী তাঁকে দেখার জন্য একটি বাড়ির কার্নিশ ধরে ঝুলছেন। তিনি তাকে নেমে আসতে বলেন। ওই নারী জানান তার পড়ে যাওয়ার ভয় নেই, কারণ তিনি তার স্বামীর ঘাড়ে পা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন শুধু উত্তম কুমারকে দেখার জন্য! এই হলো "উত্তম কুমার"!

আরেকবার (সালটা মনে নেই) বন্যার সময় ত্রাণ সংগ্রহের জন্য শিল্পী সংস্থার লোকজন তাঁকে অনুরোধ করলেন যে, তাদের সঙ্গে একদিন তাকে বেরোতে হবে। উত্তম কুমার বেরিয়েছিলেন এবং তিনি কোথাও গিয়ে বলেননি যে, বন্যার্তদের জন্য সাহায্য দিন। পিছনে ব্যানার, সামনের সারিতে উত্তম কুমার দুহাত উপরের দিকে তুলে (নমস্কারের ভঙ্গিতে) কোলকাতার রাস্তায় হাঁটছেন। আর তাতেই রাস্তার দুধারের বাড়ি থেকে লোকজন দেদারসে টাকাপয়সা দিচ্ছেন, দোতলা বাড়ির বারান্দা থেকে মহিলারা হাতের বালা, মালা, দুল খুলে ছুঁড়ে দিচ্ছেন। যার কাছে টাকাপয়সা নেই, তিনি জামাকাপড় ফেলে দিচ্ছেন।

এই হলেন উত্তম কুমার!

তাঁর অভিনয় নিয়ে কথা বলার যোগ্যতা বা জ্ঞান কোনটাই আমার নেই। আমি শুধু মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি তাঁর চোখের চাহনির দিকে, ভুবনজয়ী হাসির দিকে আর দেশলাই কাঠিতে ফস করে আগুন জ্বালিয়ে সিগারেট ধরানোর দিকে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, "ও যদি বিশাল কোন ক্রাইম করে এসে আমার সামনে দাঁড়িয়ে একটা হাসি দেয়, তাতেই আমি ওকে ইনোসেন্ট ভাবতে বাধ্য হবো"। আহ্.... এ হাসি দেখেও শান্তি!

তিনি এমন এক বহ্নিশিখা যার আলোয় আলোকিত হয় চারপাশ। সত্যজিৎ রায় একবার বলেছিলেন, "যদিও বা পরিচালকের দক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ থাকে, কিন্তু উত্তম তার আন্তরিকতা ও একাগ্রতা দিয়ে সেটিকে এমনভাবে জয় করেন যে শেষ পর্যন্ত কাজটি পরিপূর্ণতা লাভ করে।"

আসলে তাঁকে নিয়ে বলতে বা লিখতে গেলে তা কখনো শেষ হবে না। শেষ হওয়ার কথাও নয়। মহানায়ক সর্বদাই বলতেন, “আমার কাজের ব্যস্ততার ফাঁকে যদি কখনও কোনো মৃত্যু সংবাদ আসে, আমি কিছুটা থমকে যাই। আবার আমি আমাকে বোঝাই যে, মৃত্যুই তো একমাত্র সত্য।"

হ্যাঁ, মৃত্যুই সত্য, কিন্তু তা কি সবাইকে কেড়ে নিতে পারে? এই যেমন আপনাকেই পারেনি!

আপনি ছিলেন, আপনি আছেন, আপনি থাকবেন।

আপনি বাঙালির স্বপ্নের,গর্বের, অহংকারের মহানায়ক উত্তম কুমার।

সপ্তপদী'র "এই পথ যদি না শেষ হয়..." এখনো গুনগুন করে গাই। আপনি কি জানেন সত্যিই আপনার পথচলা শেষ হয়নি। আপনি আজও হেঁটে চলেছেন আমাদের হৃদয়ের অলিগলিতে।

(ছবিটি ততটা প্রচলিত নয়। ষাটের দশকে মর্নিং ওয়াকে মহানায়ক। দেখুন আর ভাবুন। আজ আমরা যে শর্ট মোজা পারি, তিনি তা ৫০ বছর আগে পরতেন! আরও দেখুন..)

18
$ 0.00
Avatar for Pias
Written by
3 years ago

Comments

kfdui bjitsetu. iyfd

$ 0.00
3 years ago

Nice

$ 0.00
3 years ago

Onar somporke onek kisu jante parlam..

$ 0.00
3 years ago

অনেক ভাল অভিনেতা ছিলেন তিনি...

$ 0.00
3 years ago

Wow

$ 0.00
3 years ago

Amazing article

$ 0.00
3 years ago

This article is very nice

$ 0.00
3 years ago

Nice Article Please subscribe me I am subscribe you.

$ 0.00
3 years ago

Okay

$ 0.00
3 years ago

Keep Going Well Written

$ 0.00
3 years ago

থ্যাংকস

$ 0.00
3 years ago