শিশুর দেরিতে কথা বলা সমস্যা ও আমাদের করণীয় *

1 12
Avatar for Ostina1
4 years ago

শিশুর দেরিতে কথা বলা সমস্যা ও আমাদের করণীয় *

শিশু যখন থেকে কথা বলার চেষ্টা করা শুরু করবে, ঐ সময় পরিবারের সকলকেই শিশুকে বেশি সময় দিতে হবে। শিশুর আধো আধো বুলির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মা-বাবা এবং পরিবারে যদি অন্য কোন সদস্য থাকে তাদেরকেও তার সঙ্গে অনেক কথা বলতে হবে।

স্পষ্ট এবং শুদ্ধ উচ্চারণে যতটা সম্ভব।শিশু কোনো কথা ঠিকভাবে বলতে না পারলে নিজের মতো করেই উচ্চারণ করে। এতে বাড়ির মানুষেরা অনেক সময় খুশি হয়ে থাকেন এবং সবাই দেখা যায় আদরের শিশুটির সাথে তাল মিলিয়ে ভুল উচ্চারণেই শব্দগুলো উচ্চারণ করতে থাকেন। কিন্তু এতে করে কিন্তু ক্ষতিটা শিশুরই হয়। সে ভুল বললে বড়রা সেটা অবশ্যই ঠিক করে বলবে যেন শিশুটি শুনতে শুনতে ঠিক করে বলে। *শিশুকে কথা না বলতে পারা বা ভুলভাবে বলার জন্য ধমক দেয়া যাবে না। এতে শিশুর মধ্যে ভয় দানা বাঁধে এবং পরে সে কথা বলতে অনাগ্রহী হয়ে যেতে পারে। তার আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়। শিশুর কথা বলা শেখার জন্য তার সঙ্গে বেশি করে কথা বলার কোনো বিকল্প নেই। শিশুকে বারবার শোনাতে হবে নানা ধরণের ছড়া বা ঘুমপাড়ানি গান।

একসময় সে হয়তো নিজের মতো করেই ওগুলো বলতে চেষ্টা করবে।তাকে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চেনাতে হবে। বিভিন্ন রঙিন বই নিয়ে বইয়ের ছবিগুলোর নাম স্পষ্ট উচ্চারণে বলতে হবে। তাহলে শিশু শুনে শুনে দ্রুত কথা বলা শিখবে। কারণ, শিশুরা শুনে শুনেই কথা বলা শেখে। * শিশুরা খেলতে খেলতেও অনেক কিছু শেখে।

সঠিক খেলনা বাছাই করাও কিন্তু কথা বলা শেখানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ব্যাটারিচালিত খেলনাগুলোর শিক্ষামূলক উপযোগিতা তুলনামূলক অনেক কম। রঙিন লেগো সেট, কিচেন সেট, রঙিন বই এগুলো বেশ ভালো খেলনা। খেলনাগুলোর কোনটা কী রং সেগুলো বারবার শিশুকে বলবেন। মা রান্না করার সময় শিশুকে কাছে কিন্তু নিরাপদ দূরত্বে বসিয়ে বিভিন্ন সবজির নাম বলা, মসলার নাম বলা, রং চেনানো, এটাও কিন্তু কথা বলা শেখানোর জন্য ভালো একটা পন্থা। দেরীতে কথা শেখা এক মায়ের পরামর্শ শেয়ার করছিঃ

১. বাচ্চার সাথে প্রচুর কথা বলতে হবে।

২.মোবাইল সহ যেকোন ডিভাইস দেখা একদম বন্ধ করতে হবে। যদি স্বল্প সময়ের জন্য দেখান তাহলে, অবশ্যই interaction এর মাধ্যমে শিশুর সাথে মজা করে উপভোগ করবেন।

৩. শিশু যখন তার চাহিদা প্রকাশের জন্য Adult Hand অথবা pointing করে, তাৎক্ষণিক ভাবে শিশুকে কাঙ্ক্ষিত বিষয়টির নাম বলবেন এবং বস্তুটি যখন শিশুর হাতে দিবেন তখন আবার নাম বলবেন।

৪.সবচেয়ে কার্যকর হচ্ছে... বাচ্চাদের সাথে মিশতে দেয়া। এটা খুব অল্প সময়ে ৮০% কাজ করবে।

৫. বাচ্চার সাথে ২/৩ শব্দ ব্যাবহার করে সুস্পষ্ট উচ্চারণে অপেক্ষাকৃত ধীরে ধীরে অর্থপূর্ণ নির্দেশনার মাধ্যমে কথা বলবেন।

৬.কোন বস্তু বা খেলনা পাওয়ার জন্য শিশু যদি জিদ করে, তাহলে জিদ চলাকালীন সময়ে কখনও কাঙ্ক্ষিত বস্তুটি প্রদান করবেন না বরং যদি দেওয়ার হয় শিশু শান্ত হলে প্রদান করবেন।

৭.প্রতিদিন বিকালে শিশুকে নিয়ে ঘুড়তে বের হবেন এবং চারিপাশ সম্পর্কে ব্যাখ্যা করে বলবেন।

৮.শিশুকে কোন প্রি স্কুল এ ভর্তি করার ব্যাবস্থা করবেন এবং সেখানে নিয়মিত যাওয়ার জন্য সহযোগিতা করবে এছাড়াঃ

★ বাশি বাজাতে দিবেন

★ বেলুন ফোলাতে দিবেন

★ দাত,মাড়ি, জিহবা পরিষ্কার করে দিবেন

★যে জিনিস টা হাতে দিবেন, সেইটার নাম স্পষ্ট করে বলে দিবেন

★ বাচ্চার সাথে ছোট ছোট শব্দে কথা বলবেন

★ আয়নার সামনে বসিয়ে Body parts চেনাবেন এবং বলতে উৎসাহিত করবেন

★ বাচ্চার সামনে বসে চোখে চোখ রেখে ছড়া, গান, গল্প শোনাবেন

★ টয়লেটের সময় ওকে যেকোন একটি শব্দ নির্দিষ্ট করে দিবেন

★ বাচ্চাকে ছবিতে রঙ করা শেখাবেন এবং বিভিন্ন রঙ সম্পর্কে অবগত করবেন।

1
$ 0.00
Avatar for Ostina1
4 years ago

Comments

শিশুদের দেরিতে কথা বলা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় আপনার প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। আশাকরি আপনার প্রবন্ধটা অনেক উপকারী আমাদের সবার জন্যই ।অনেকেই এই সমস্যাটি দেখা যায় যে অনেক শিশু দেরিতে কথা বলে এবং আমরা অভিভাবকরা অনেক চিন্তায় পড়ে যাই এই সমাধান নিয়ে এবং অনেকে ডাক্তারের কাছে যাই। অনেক চমৎকার লিখেছেন, ভবিষ্যতে আরো ভালো লিখবেন আশা করি ।ধন্যবাদ

$ 0.00
4 years ago