🔲 সালাতুল হাজত / প্রয়োজন পূরনের নামাজ কি?
উত্তরঃ- সালাতুল হাজাত বা ‘প্রয়োজনের নামাজ’ একটি বিশেষ নফল ইবাদত।
🔲 বিশেষ কোন হালাল চাহিদা পূরনের জন্য আল্লাহ’র উদ্দেশ্যে দুই রাকাত নফল নামায আদায় করাকে “সালাতুল হাজত” বলা হয়। [ইবনু মাজাহঃ হাদীস নং- ১৩৮৫]
🔲 আমাদের যখন বিশেষ কোনো কিছুর প্রয়োজন হয় কিংবা আমরা শারীরিকভাবে অসুস্থ অথবা মানসিকভাবে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পরি তখন এ নামাজ আদায় করে আল্লাহ তা'য়ালার কাছে দোয়া করলে, আল্লাহ তা'য়ালা সেই জিনিসটি আমাদের দান করেন (যদি সেটি আমাদের জন্য মঙ্গলজনক হয়) 💖
🔲 হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ- নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হলে সালাত আদায় করতেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১৩১৯)
#সালাতুল_হাজতের_নির্দিষ্ট_কোনো_নিয়ম_নেই।
#নিয়মঃ-
স্বাভাবিক নামাজের মতোই উত্তমরূপে অজু করে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবেন। #নিয়ত_রাখবেনঃ- দুই রাকাত সালাতুল হাজত পড়ছি। যেহেতু কোরআন হাদীসে এটি আদায় করার আলাদা কোনো নিয়ম বর্ণনা করা হয়নি। তাই এই নামাজ সূরা ফাতিহার সাথে যেকোন সূরা মিলিয়ে পড়া যায়। অর্থাৎ অন্যান্য স্বাভাবিক নামাজের মতোই উত্তমরূপে অজু করে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবেন। নামাজ শেষে অর্থাৎ সালাম ফেরানোর পর আল্লাহ তায়ালার হামদ ও ছানা (নামাযের শুরুতে যেই দোয়াটি পড়া হয়→সুবহানাকাল্লহুম্মা ওয়াবিহামদিকা ওতাবারকাছমুকা,ওতা'য়ালাযাদ্দুকা ওলা-ইলাহা গয়রুক) পাঠ করে এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওপর দুরূদ শরিফ পাঠ করে, [যেকোন দুরূদ শরিফ পড়া যাবে, দুরূদে ইব্রাহিম অর্থাৎ নামাযের দুরূদ পড়া উত্তম]
#নিজের_মনের_কথাগুলো_আল্লাহর_নিকট_বলে_দোয়া_করবেনঃ- দোয়ার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে হাদিস শরিফে নিম্নোক্ত দোয়াটি এসেছে। .
দোয়াটি হলোঃ- ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺍﻟْﺤَﻠِﻴﻢُ ﺍﻟْﻜَﺮِﻳﻢُ ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺮْﺵِ ﺍﻟْﻌَﻈِﻴﻢِ ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠَّﻪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﻣُﻮﺟِﺒَﺎﺕِ ﺭَﺣْﻤَﺘِﻚَ ﻭَﻋَﺰَﺍﺋِﻢَ ﻣَﻐْﻔِﺮَﺗِﻚَ ﻭَﺍﻟْﻐَﻨِﻴﻤَﺔَ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺑِﺮٍّ ﻭَﺍﻟﺴَّﻼَﻣَﺔَ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺇِﺛْﻢٍ ﻻَ ﺗَﺪَﻉْ ﻟِﻲ ﺫَﻧْﺒًﺎ ﺇِﻻَّ ﻏَﻔَﺮْﺗَﻪُ ﻭَﻻَ ﻫَﻤًّﺎ ﺇِﻻَّ ﻓَﺮَّﺟْﺘَﻪُ ﻭَﻻَ ﺣَﺎﺟَﺔً ﻫِﻲَ ﻟَﻚَ ﺭِﺿًﺎ ﺇِﻻَّ ﻗَﻀَﻴْﺘَﻬَﺎ ﻳَﺎ ﺃَﺭْﺣَﻢَ ﺍﻟﺮَّﺍﺣِﻤِﻴﻦَ
উচ্চারণঃ ‘‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লহুল 'হালিমুল কারিম, সুবহা-নাল্লহি রব্বিল 'আরশীল 'আউযীম। আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল 'আলামিন, আছআলুকা মুজিবাতি রহমাতিক; ও'আজাইমা মাগফিরতিক, ওয়াল 'গনিমাতা মিং কুল্লি বিররিউ ওয়াছ ছালামাতা মিং কুল্লি ইছমিন লা- তাদা'আলি- জাম্বান ইল্লা- গফারতাহু ওলা হাম্মান ইল্লা- ফাররজতাহু ওলা হা-জাতান হিয়ালাকা রিদং ইল্লা ক্বদইত্বহা- ইয়া-আর'হামার র-হিমি--ন৷” (- মানে এক আলিফ টান) অর্থঃ- “আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই। তিনি অতি সহিষ্ণু ও দয়ালু, সকল দোষ-ক্রটি থেকে পবিত্র তিনি, মহান আরশের প্রভু। সকল প্রশংসা আল্লাহর, তিনি সারা জাহানের রব। আপনার কাছেই আমরা যাঞ্ছা করি, আপনার রহমত আকর্ষণকারী সকল পূণ্যকর্মের ওসীলায়, আপনার ক্ষমা ও মাগফিরাত আকর্ষণকারী সকল ক্রিয়াকাণ্ডের বরকতে, সকল নেক কাজে সাফল্য লাভের এবং সব ধরনের গুনাহ থেকে নিরাপত্তা লাভের। আমার কোন গুনাহ যেন মাফ ছাড়া না থাকে। কোন সমস্যা যেন সমাধান ছাড়া না যায় আর আমার এমন প্রয়োজন যাতে রয়েছে আপনার সন্তুষ্টি তা যেন অপূর্ণ না থাকে, হে রহমানুর রহীম; হে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।”(ইবনু মাজাহ ১৩৮৪, তিরমিজী ৪৭৯)
#তবে_এই_দোয়াটিই_যে_পড়তে_হবে_এমনটি_নয়। যারা দোয়াটি পড়তে পারেন পড়বেন, তবে চেষ্টা করবেন উচ্চারণ দেখে না পড়ার জন্য। আপনি হাজতের ২ রাকাত নামাজ শেষ করে আপনার মন মতো দোয়া করতে পারবেন, এতে কোনো অসুবিধা নেই।
#সালাতুল_হাজত_কখন_পড়া_যাবে_নাঃ- যেসময় কোনো নামাজই পড়া যায় নাঃ- যেমন (ফরজ/সুন্নত/নফল) ১- সূর্যোদয়ের সময় থেকে ১০-১৫ মিনিট পর্যন্ত। ২- দ্বিপ্রহর অর্থাৎ দুপুর ১২ঃ০০ টার দিকে, যখন সূর্য মাথার উপরে থাকে এবং তার আগে ও পরে ৫ মিনিট করে মোট ১০ মিনিট। ৩- সূর্যাস্ত ও তার পূর্বের ১০ মিনিট।
এই ৩ টি সময়ে সকল প্রকার নামাজ পড়া নিষিদ্ধ। #যেসময়_কোন_নফল_নামাজ_পড়া_যায়_নাঃ-
১- সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ ব্যতীত কোন সুন্নত বা নফল নামাজ পড়া যাবে না এবং
২- আসরের ফরজ নামাজের পরে আর কোন সুন্নত বা নফল নামাজ পড়া যাবে না। তবে এ সময় আসরের কাজা নামাজ ও তেলাওয়াতের সিজদা আদায় করা যাবে।
#সালাতুল_হাজত_কত_দিন_পড়বেনঃ-
যেহেতু বিশেষ কোন হালাল চাহিদা পূরনের জন্য আল্লাহ’র উদ্দেশ্যে দুই রাকাত নফল নামায আদায় করাকে সালাতুল হাজত বলে, তাই আপনার চাহিদা পূর্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত যতদিন আপনি পড়তে চান পড়তে পারেন। হ্যা, দিনে একাধিকবারও এই নফল নামাজ পড়া যাবে। দোয়া কবুলের জন্য সালাতুল হাজতের পাশাপাশি তাহাজ্জুদের নামাজ পড়েও দোয়া করতে পারেন। 🔲 হে আল্লাহ