অটিজমে আক্রান্ত রোগির দাঁতের যত্ন

0 7
Avatar for Ostina1
3 years ago

অটিজমে আক্রান্ত রোগির দাঁতের যত্ন অটিজম আসলে কী, আর কেনইবা সামাজিকভাবে এর গুরুত্ব বেশি???

এক কথায় স্নায়ুগত গঠন ও বিকাশের সমস্যাকে অটিজম বলা হয়। অটিজমের সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে প্রধানত দু'টি কারণ গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়।

১. জেনেটিক কারণ।

২. গর্ভকালীন কোন জটিলতা। ছেলে শিশুর চেয়ে মেয়ে শিশুরা তিন থেকে চারগুণ বেশি অটিজমে ভুগে থাকে। কোনো পরিবারে যদি প্রথম শিশু অটিস্টিক হয় সেক্ষেত্রে পুনরায় সন্তান গ্রহণের ক্ষেত্রে শতকরা দুই থেকে আট ভাগ আশঙ্কা থাকে আরেকটি অটিস্টিক শিশু জন্ম নেয়ার। এ ধরনের শিশুদের শারীরিক নানা সমস্যা হতে পারে কারণ তারা নিজের ভালো মন্দের দিকে মনোযোগী হতে পারে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক জেদি হয় ও যা বলার চেষ্টা করা হয় তার উল্টোটা করতে চায়, বয়সের সঙ্গে তাদের মানসিক বিকাশ ঘটে না। এই জন্য বেশিরভাগ অভিভাবক অনেকটা অসহায় হয়ে পড়ে, কিন্তু তাদেরই বেশি সহনশীল ও স্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে সমস্যা মোকাবিলায়। অভিভাবকের সদিচ্ছা, চেষ্টা ও সঠিক জ্ঞানের মাধ্যমে শিশুকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেকটাই স্বাভাবিক করে তুলতে পারে।

◾অটিজমে আক্রান্ত রোগির দাঁত ও মুখের কি কি সমস্যা হতে পারে??

 অটিজম এ আক্রান্ত শিশু বা প্রাপ্তবয়স্ক রোগির মুখ ও দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা পরিলক্ষিত হয়। নিয়মিত বিবিধ ঔষধ সেবন এবং ঠিক মতো দাঁতের যত্ন না নিতে পারার কারনে, সাধারন মানুষের তুলনায় অটিস্টিক রোগির মুখে ক্যারিজ এবং মাড়ির বিভিন্ন রোগ বেশি দেখা যায়।

 অনেক সময় দেখা যায়, অটিজমে আক্রান্ত রোগীর নানাবিধ অভ্যাস রয়েছে যা দাঁত ও মুখের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। যেমনঃ দাঁতে দাঁত কাটা (Bruxism), জিহ্বা দিয়ে সামনের দাঁতকে ধাক্কা দেয়া (Tongue Thrusting), মাড়ি বা ঠোঁটে অযথা কামড়ানো বা খোঁচানো, মাটিতে পরে থাকা বিভিন্ন জিনিষ মুখে দেয়া (উদাহরণঃ সিগারেট, নূড়ি, কলম)

 দাঁতের ক্যারিজ অনেক বেশি লক্ষ করা যায় এধরনের রোগিদের মুখে। কারণ তারা মুখ পরিষ্কারের প্রয়োজনীয়তা বোঝে না, অতিরিক্ত মিষ্টি খাবারে আসক্তি থাকে, কারও কারও মুখ থেকে লালা ঝরে, আবার কারো কারো আঙুল চোষার অভ্যাস থাকে। তারা ব্রাশ বা ফ্লস করতে চায় না একদমই।

 মাড়ির রোগগুলো যেমন জিঞ্জিভাইটিস, পেরিওডন্টাইটিস এমন রোগগুলোও অটিস্টিক রোগিদের অনেক বেশি দেখা যায়।  অটিস্টিক শিশুদের দুধ দাঁত পরে স্থায়ী দাঁত উঠতে দেরি হয়।আঁকাবাঁকা দাঁতের সমস্যা তৈরী হয়।

 অটিজমে আক্রান্ত রোগির খিঁচুনি হলে বা কোন দুর্ঘটনায় শারীরিক ভারসাম্য হারিয়ে পরে গেলে মুখে ও দাঁত আঘাত লাগতে পারে। অটিজমে আক্রান্ত রোগির দাঁত ও মুখের যত্ন কিভাবে নেয়া যেতে পারে??

অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তির মুখের স্বাস্থ্যের বা ওরাল চেকআপ মধ্যে জরুরি।

 রোগির অভিভাবক বা শুশ্রুষাকারী (caregiver) কে সবসময় লক্ষ্য রাখতে হবে যে, অন্যান্য সকল কাজের পাশাপাশি দাঁত ও মুখের যত্ন নেয়া হচ্ছে কিনা অর্থাৎ নিয়মিত ব্রাশ করা, ফ্লস করা, মুখে কুল্কুচি করা বা করিয়ে দেয়া। মনে রাখতে হবে অটিজম এ আক্রান্ত রোগী নিজে এই কাজগুলো পারবে না, তাই ছোটবেলা অভিভাবককে ধৈর্যের সঙ্গে শেখাতে হবে। তার সামনে পরিবারের সবাই দাঁত ব্রাশ করবে, কুলি করবে, বিষয়টিকে সহজভাবে তুলে ধরতে হবে। প্রয়োজনে টুথপেস্ট ছাড়া নরম টুথব্রাশ দিতে হবে অথবা সুতি কাপড় দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করিয়ে দিতে হবে।

 মুখে ক্যারিজ দেখা গেলে প্রথমেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। প্রতিরোধক ব্যবস্থা হিসেবে ফ্লোরাইড এবং সিলেন্টে ব্যবহার করতে হবে।

 রোগির অভিভাবক বা শুশ্রুষাকারী (caregiver) কে সবসময় লক্ষ্য রাখতে হবে যে এমন কোন ঔষধ সেবন না করানো যা রোগির মুখের লালা নিঃসরণকে বাধাগ্রস্ত করে অথবা যেটিতে চিনির পরিমান বেশি। এবং প্রতিবার ঔষধ সেবনের পর মুখ ভালভাবে কুলি করাতে হবে।

 অটিস্টিক শিশুদের বাজারের জুস বা ফাস্টফুড এড়ানোর চেষ্টা করতে হবে, এর পরিবর্তের বাসায় তৈরী খাবার ও ফলমূল এ অভ্যস্ত করতে হবে।

 অটিজমে আক্রান্ত রোগির খিঁচুনি হলে বা কোন দুর্ঘটনায় শারীরিক ভারসাম্য হারিয়ে পরে গেলে মুখে ও দাঁত আঘাত পেলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। মনে রাখতে হবে অটিজমে আক্রান্ত শিশু বা ব্যক্তি আমাদের সমাজেরই অংশ, তাদের এবং তাদের পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। যেকোন পারিবারিক এবং সামাজিক অনুষ্ঠান অন্য সবার মতো তাদের অংশগ্রহণ অনুপ্রানিত করতে হবে।

2
$ 0.07
$ 0.07 from @TheRandomRewarder
Avatar for Ostina1
3 years ago

Comments