ভাগ্যের_লিখন
#পর্ব_০২
.
কিছুক্ষণ পর একটা ফোন আসল বাবার ফোনে,
__হ্যালো
__হ্যা হ্যা হ্যালো খালু আমি,
__আমি কে?
__আমি অনু,
__ওহ্ কোথায় তুমি?
__কোথায় বলতে পারব না আমাকে বেধে রেখেছে খুব কষ্ট করে আপনার নাম্বারে কল দিলাম ভাগ্যিস আপনার নাম্বার মুখস্থ ছিল।
__আমার মেয়ে কোথায়?
__জী খালু এটা বলতেই লাইন কেটে গেল।
বাবা এটা শুনে অসুস্থ হয়ে পড়লেন।আমরা সবাই চিন্তায় পড়ে গেলাম। ঐ নাম্বারে কল দিলাম,দোকানদার বললো মেয়েটি একটু আগে এখান থেকে চলে গেছে। জিজ্ঞেস করলাম কোন জায়গা ওটা। শুনে মনে হলো বেশি দূরে নয়।ঘন্টা খানেক পর অনু আসল।আমরা অনুকে ঘিরে ধরলাম অনু বলতে শুরু করলো..
.
আপুর সাজানোর মাঝখানে কয়েকটা ছেলে আসল মুখোশ পরে। আমাকে আর আপুকে জোর করে তুলে নিয়ে গেল। কিছুক্ষণ যাওয়ার পর গাড়ি থামিয়ে আমাকে বেঁধে একটা ফাঁকা জায়গায় ফেলে দিল।অনেক সময় চেষ্টা করে বাঁধন খুলে আমি একটা দোকানদারকে বুঝিয়ে একটা ফোন দিলাম খালুর নাম্বারে। এখন কোথায় নিয়ে গেছে আপুকে তা জানি না।ইতিমধ্যে চিল্লাচিল্লি শুরু হয়ে গেল বর এসেছে বর এসেছে।
.
আমাদের মাথায় আসমান ভেঙে পড়ল বরযাত্রীর লোকদেরকে কি বলবো, বিয়ের দিন একটা মেয়ের যে কোন বিপদই আসুক না কেন সবাই ধারনা করে মেয়ে পালিয়েছে। আমাদের আত্মীয় স্বজনেরা মিলে ওদের খাওয়া দাওয়া শেষ করালো। এখন সবাই আসছে বৌ দেখবে বৌ দেখবে করে।আমার মা ছেলের ভাবীকে ডেকে বললো...
__দেখ মা কে বা কারা আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে গেছে। এখন এশা কোথায় আছে আমরা জানি না।
__কি হা হা হা হা। মেয়েকে তুলে নিয়ে গেছে নাকি ভেগেছে প্রেমিকের সাথে।
__না মা বিশ্বাস করো।
__কিসের বিশ্বাস হা,তুলে নিয়ে যাওয়ার আর দিন ক্ষন পেল না একদম আজকেই তুলে নিয়ে গেল?
সে চিৎকার দিয়ে বলাবলি শুরু করলো
আমি আগেই বলেছিলাম এই ফ্যামিলি থেকে মেয়ে নিতে হবে না এখন বোঝো ঠেলা। ছেলের বাবা লাফ দিয়ে উঠলেন। উনি তো আরো চেঁচামেচি শুরু করলেন বললো লাখ লাখ টাকা খরচ হয়েছে এই বিয়েতে, এখন বলছে মেয়েকে তুলে নিয়ে গেছে,আমার সব টাকা ফেরত দিবে এখন মেয়ের বাবা।
.
বর টি ভালো ছিল বললো
__ছি ছি বাবা এভাবে কেউ বলে ওনাদের মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ওনারা ও তো অনেক টেনশনে আছেন। আর এমন যদি বিয়ের পর হতো তো তখন কি করতে?
__তুই চুপ কর,
আমি এত কিছু বুঝিনা আমার টাকা ফেরত চাই নইলে কেস করবো মেয়ের বাবার নামে।
ছেলেটি তার ভাবীর কানে কানে কি যেন বললো। ভাবী মাকে বললো। মা আবার আমাকে একটি রুমে নিয়ে গেল আমাকে বললো।
__দিশা মা তুই আমাদের শেষ ভরসা।ছেলের ভাবী বললো তোকে বিয়ে করতে রাজি আছে ছেলে। তাহলে আমরা এই কলঙ্ক থেকে বাঁচি।এমনিতেই এশার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তার উপর তোর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এখন বল মা তুই কি করবি।
.
আমি ভাবনায় পড়ে গেলাম।
হায় রে কপাল সবসময় আপুর জিনিসপত্র ব্যবহার করতে করতে এখন তার বিয়ে হবে যেই পাত্রের সাথে তাকেই আমার বিয়ে করতে হবে।তারপর ভাবলাম আসলে সব ভাগ্যের লিখন। এখন আর কি করবো বাবা মায়ের সন্মান রাখতে আমার অনিচ্ছা সত্তেও বিয়ে করতে হবে। আমার জীবনটাই মনে হয় এরকম, পরিত্যক্ত যা থাকে তাই আমার কপালে জোটে।নিজের বিয়ে নিয়ে আর কোন স্বপ্ন দেখা হলো না। হলো না বিয়ের শাড়ি পড়া। যাক তারপরেও পরিবারের জন্য আমার এই বিয়েটা করতেই হবে।
.
গল্প কেউ কেটে পড়বেন না।যারা বলছেন গল্পের আগের অংশ পাচ্ছেন না তারা গ্রুপে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন পরবর্তী পর্ব পেতে আমাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট কিংবা ফলো করে রাখুন তাহলে মিস হবে না।
গল্পে মাঝে বিরক্ত করার জন্য দুঃখিত।
আমি মা কে বলে দিলাম আমি রাজি ওদের বলে দাও। ছেলের ভাবীকে জানিয়ে দিল। ছেলের বাবা তো রাজিই হচ্ছে না তার ক্ষতিপূরণ চাই। আসলেই পৃথিবীতে মেয়ের বাবাদের অপমান হতে হয় ছেলের বাবার কাছে এইটাই হয়তো নিয়ম।
.
কিন্তু আমি কথা শুনতে দিব না আমার বাবাকে। ছেলে আর ভাবী বোঝাচ্ছেন ঐ মুরুব্বিকে। অনেক সময় পর রাজি হলেন, যে গহনা এনেছেন তা কিছুই মেয়েকে পড়ানো হবে না। এক কাপড়ে মেয়েকে নিয়ে যাবে। কারণ ছেলেরা একদিক দিয়ে ভালো ছিল ওদের কোন ডিমান্ড ছিল না। শুধু মেয়ে চেয়েছিল।
.
আমার মা কেঁদে কেঁদে বললো আমার এই লক্ষী মেয়েটার কপালে এমন বিয়ে জুটবে ভাবতেও পারি নি সাথে সাথে মায়ের গলার চেন খুলে আমাকে পড়িয়ে দিল।আর বললো মা তুই অনেক সুখী হবি আমার দোআ রইল তোর উপর।
.
বিয়ে হয়ে গেল। বাবা এত অসুস্থ হয়ে পড়লেন বিদায় পর্যন্ত দিতে পারলেন না। কত সখ ছিল বাবার, মেয়ের বিয়ে ধুমধাম করে দিবে, শেষ জীবনের কিছু টাকা দিয়ে। তা আর হলো না। অনেক কেঁদে কেঁদে গাড়িতে উঠলাম। একপাশে ভাবী অন্য পাশে ও। ওর নাম নাফিস। বেশি একটা কথা হয় নি। আপুর সাথে কয়েকবার বলেছে। তবে নাফিস একটা ভালো ছেলে নইলে বড় বোনকে বিয়ে করতে এসে ছোট বোনকে কেউ বিয়ে করে।
.
বাড়িতে ঢোকার সময় কেউ কেউ ধিক্কার দিয়ে বললো ইশ্ বড় বোন বিয়ের আগে পালিয়েছে, এটা দেখ আবার বিয়ের পর পালায় নাকি। ফালতু ফ্যামিলি যত্তসব। কান বন্ধ রেখে সব সহ্য করতে হলো।
.
কিছুক্ষণ পর ভাবী অন্য একটা রুমে নিয়ে গেল। এটা বোধহয় বাসর ঘর।অনেক ফুল দিয়ে সাজানো। বিছানায় ফুল দিয়ে A+N লিখা। হায় রে কপাল
বাসরের স্বপ্ন দেখেছে একজনকে নিয়ে আর এখন আরেকজনকে বিয়ে করতে হলো। রাত দশটার দিকে লোকটি রুমে ঢুকলো।
.
আমি খাটে বসে আছি ওনাকে দেখে আমি বললাম।
__দেখুন সবকিছুর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আর আপনার প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। আজ আপনি আমাদের সন্মান রক্ষা করেছেন।
__হয়েছে এত বাড়িয়ে বলতে হবে না।আসলে সব কিছুর জন্য দায়ী ছিলাম আমি আর উদ্ধার ও করেছি আমি।
__কী! কী!বলছেন আপনি?
__জী আপনার বোনকে আমিই আমার লোক দিয়ে তুলে আনছি।
__আল্লাহ্ কি শুনছি আমি? যা বলছেন ঠিক বলছেন তো?
__জী একদম ঠান্ডা মাথায়
সুস্থ মস্তিষ্কে বলতেছি..............
.
.
আমি খাটে বসে আছি ওনাকে দেখে আমি বললাম।
__দেখুন সবকিছুর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আর আপনার প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। আজ আপনি আমাদের সন্মান রক্ষা করেছেন।
__হয়েছে এত বাড়িয়ে বলতে হবে না।আসলে সব কিছুর জন্য দায়ী ছিলাম আমি আর উদ্ধার ও করেছি আমি।
__কী! কী!বলছেন আপনি?
__জী আপনার বোনকে আমিই আমার লোক
0
2
Written by
Nurbegum
Nurbegum
4 years ago
Written by
Nurbegum
Nurbegum
4 years ago
গল্পটা ভালো হয়েছে, আসলে কখন যে কার ভাগ্যে কি থাকে সেটা মহান আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।